মেয়েদের নামাযের সঙ্গে পুরুষের নামাযের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। এ সম্পর্কে নীচে বর্ণনা করা হলো-
তাকবীরে তাহরীমা
পুরুষ: হাত চাদরের ভেতরে থাকলে বের করে নিতে হবে। প্রথম তাকবীর উচ্চারণের সময় পুরুষেরা দুই হাত কান বরাবর তুলে নাভির নীচে হাত বাঁধবে। নামায বিশেষ জোরে বা চুপে চুপে তাকবীর উচ্চারণ করতে পারে। অর্থাৎ যে নামাযে চুপে চুপে তাকবীর বলতে হয় তাতে চুপে চুপে তাকবীর বলবে। আর যে নামাযে উচ্চস্বরে তাকবীর বলতে হয় তাতে উচ্চস্বরে তাকবীর বলবে।
মহিলা: প্রথম তাকবীর উচ্চারণের সময় মেয়েরা দুই হাত কাঁধ বরাবর তুলবে। কাপড়ের ভিতর থেকে হাত বের করবে না। তাকবীরে তাহরীমার পর বাম হাত বুকের উপর রেখে তার উপর ডান হাত আলতো করে রেখে নামায শুরু করবে দু‘আ ও সূরা ইত্যাদি পুরুষের মতই পড়বে। কিন্তু কোন কিছুই শব্দ করে পড়তে পারবে না।
পোশাক
পুরুষ: যাতে সতর ঢাকা থাকে এবং শালীনতা বজায় থাকে এরকম পরিচ্ছন্ন পোশাকে পুরুষেরা নামায পড়বে।
মহিলা: মেয়েদের সমস্ত শরীরই সতর মুখমন্ডল এবং উভয় হাত ও পায়ের পাতা ব্যতীত সমস্ত শরীর এমনকি মাথার চুলও নামায পড়ার সময় ঢাকা থাকতে হবে। শাড়ী দিয়ে যদি সমস্ত শরীর ঢাকা না যায় তবে চাদর দিয়ে ঢেকে নিতে হবে। গলা, হাত ও চুলসহ সমস্ত শরীরই ঢেকে রাখতে হবে।
ক্বেরাত
পুরুষ: পুরুষের নামায বিশেষ উচ্চস্বরে বা নিম্নস্বরে সূরা-ক্বেরাত পড়তে পারবে।
মহিলা: মহিলারা নামাযে কোনো অবস্থাতেই শব্দ করে সূরা, ক্বেরাত পড়তে পারবে না। নামাযে উঠা-বসার সময় তাদের আল্লাহু আকবরও নিম্নস্বরে পড়তে হবে। উচ্চস্বরে পড়তে পারবে না।
ক্বিয়াম
পুরুষ: ক্বিয়ামের সময় পুরুষেরা দুই পা কমপক্ষে চার আঙ্গুল, বেশীপক্ষে বার আঙ্গুল পরিমাণ ফাঁক রেখে দাঁড়াবে। অথবা শারীরিক গঠন অনুযায়ী উভয় পা ফাঁক করে দাঁড়াবে।
মহিলা: মহিলারা পা ফাঁক রেখে দাঁড়াতে পারবে না। দুই পায়ের পাতা মিলিয়ে দাঁড়াতে হবে। অথবা শারীরিক গঠন অনুযায়ী উভয় পা ফাঁক করে দাঁড়াবে। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সকলেই সব ওয়াক্তের ফরয নামায দাঁড়িয়ে পড়তে হবে।
রুকু
পুরুষ: রুকুর সময় পুরুষেরা হাত, পা ফাঁক রেখে দুই হাত দিয়ে হাঁটু চেপে ধরে রুকু করবে। মাথা, পিঠ ও নিতম্ব সমান্তরাল রাখতে হবে।
মহিলা: মহিলারা রুকুর সময় দুই হাত শরীরের সঙ্গে লাগিয়ে ঝুঁকে পড়ে হাতের আঙ্গুলের অগ্রভাগ দিয়ে হাঁটু স্পর্শ করে রুকু করতে হবে। রুকুতে পুরুষদের মত তাদেরও তাসবিহ পড়তে হবে। রুকুতে পুরুষদের মত অত মাথা ঝুকতে হবে না।
সিজদা
পুরুষ: সিজদার সময় পুরুষেরা সোজাসুজি সিজদায় যাবে এবং সিজদায় সব অঙ্গ পরস্পর থেকে আলাদা রাখবে। শুধু পা দুটো মিলিত থাকবে। হাতের কব্জির উপরের অংশও মাটি থেকে উপরে উঠিয়ে রাখবে।
মহিলা: মহিলারা শরীরের সব অঙ্গ একসাথে মিলিয়ে রেখেই সিজদায় যাবে এবং সিজদা অবস্থাতেও সব অঙ্গ একত্রে মিলিয়ে হাত কনুই পর্যন্ত মাটিতে বিছিয়ে দিয়ে সিজদা করবে।
বৈঠক
_________
পুরুষ: পুরুষ বসার সময় ডান পায়ের পাতা খাড়া রেখে আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কেবলামুখী রাখতে হবে।
মহিলা: মহিলারা বসার সময় দুই পা ডান দিকে বের করে দিয়ে নিতম্বরের উপর বসতে হবে। সামান্য ঘাড় ঘুরিয়ে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করতে হবে।
___________________
গাউছিয়া আজিজিয়া নামায শিক্ষা
রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্-কাদেরী (রহ)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন