হুযূর পূর নূর (ﷺ) এর তাঁর দয়া ও করুণাশীলতা


সৃষ্টিকুলের প্রতি মহানবী (ﷺ)-এর দয়া-মায়া ও করুণাশীলতা সম্পর্কে 


❏ আল্লাহ (ﷻ) ইরশাদ ফরমান:

“নিশ্চয় তোমাদের কাছে তাশরীফ এনেছেন তোমাদের মধ্য থেকে ওই রাসূল, যাঁর কাছে তোমাদের দুঃখকষ্টে পড়াটা কষ্টদায়ক, (যিনি) তোমাদের কল্যাণ অতিমাত্রায় কামনাকারী, (আর যিনি) মুসলমানদের প্রতি পূর্ণ দয়ার্দ্র, দয়ালু” [আল-কুরআন, ৯:১২৮; তাফসীরে নূরুল এরফান]।


❏ আল্লাহ আরো ফরমান: “এবং আমি আপনাকে সমগ্র জগতের জন্যে রহমত (করুণা)-রূপেই প্রেরণ করেছি” [আল-কুরআন, ২১:১০৭]।


রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর শ্রেষ্ঠত্বের অংশবিশেষ এই ছিল যে, আল্লাহ (ﷻ) তাঁকে নিজের দুটি মোবারক নাম দান করেছিলেন এ কথা বলে, “ঈমানদারদের প্রতি তিনি পূর্ণ দয়ার্দ্র, দয়ালু।”


❏ ইবনে শিহাব (رحمة الله) বলেন, “মহানবী (ﷺ) এক সামরিক অভিযানে বের হন [আর বর্ণনাকারী ‘হুনায়নের’ যুদ্ধের কথাই উল্লেখ করেন]। তিনি সাফওয়ান ইবনে উমাইয়াকে একশটি উট দান করেন, এরপর আরো একশটি, অতঃপর আরো একশটি উট দান করেন।” ইবনে শিহাব বলেন, “সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব (رضي الله عنه) সাফওয়ান (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন, “আল্লাহর কসম! তিনি আমাকে দান করেছিলেন যা তিনি দান করেছিলেন, যখন তিনি ছিলেন আমার কাছে সবার চেয়ে ঘৃণিত; আর তিনি দান করতে থাকেন যতোক্ষণ না তিনি আমার কাছে সবার চেয়ে পছন্দনীয় হন।”


❏ বর্ণিত আছে যে, এক বেদুঈন আরবীয় লোক হুযূর পূর নূর (ﷺ)-এর কাছে এসে কিছু একটা চেয়েছিলেন। তিনি তাকে কিছু একটা দিয়ে জিজ্ঞেস করেন, “আমি কি তোমার প্রতি এহসান (মানে অনুগ্রহ) করিনি?” ওই বেদুঈন বলেন, “না, অনুগ্রহ করেননি, আর আপনি ভালাই-ও করেননি।” সেখানে উপস্থিত সাহাবা-এ-কেরাম (رضي الله عنه) এতে রাগান্বিত হন এবং তার দিকে ছুটে যান। মহানবী (ﷺ) তাঁদের থামতে ইশারা করেন এবং উঠে গিয়ে নিজ গৃহে প্রবেশ করেন। অতঃপর তিনি ওই বেদুঈনকে তলব করেন এবং তাকে প্রদত্ত উপহারের সাথে আরো কিছু একটা (উপহার) যোগ করেন, আর তাকে তিনি জিজ্ঞেস করেন, “আমি কি তোমার ভালাই করিনি?” বেদুঈন আরব লোকটি এবার বলেন, “হ্যাঁ, আল্লাহ (ﷻ) যেন আপনাকে সেরা পরিবার ও গোত্র দ্বারা পুরস্কৃত করেন।” এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “তুমি বলেছিলে যা তুমি বলেছিলে এবং তাতে আমার সাথীবৃন্দ অসন্তুষ্ট হয়েছিল। তুমি যদি চাও, তবে আমার উপস্থিতিতে যা তুমি বল্লে তা ওদের সামনে গিয়েও বলতে পারো, যাতে ওদের অন্তরে তোমার প্রতি যে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়েছে তা অপসারিত হয়।” লোকটি বলেন, “হ্যাঁ (অর্থাৎ, ঠিক আছে, তা-ই করবো)।” তিনি পরের দিন ফিরে এলে মহানবী (ﷺ) বলেন, “এই বেদুঈন আরব বলেছিল যা সে বলেছিল, অতঃপর আমরা তাকে আরো বেশি দিয়েছিলাম। সে দাবি করছে এখন সে পরিতৃপ্ত। তাই নয় কি?” বেদুঈন উত্তরে বলেন, “হ্যাঁ, আল্লাহ পাক যেন আপনাকে সেরা পরিবার ও গোত্র দ্বারা পুরস্কৃত করেন।” হুযূর পাক (ﷺ) বলেন, “আমার এবং এই লোকের উদাহরণ হলো সেই ব্যক্তির মতো, যাঁর মালিকানাধীন উটনী তাঁর কাছ থেকে পিছু সরে থাকে। মানুষজন সেটাকে তাড়া করে, আর তাতে ওই মাদী উট আরো দূরে সরে থাকে। মালিক তখন মানুষদের বলেন তারা যেন তাঁর এবং তাঁর উটনী হতে দূরত্ব রাখে; তিনি তাদের বলেন, ‘আমি এই প্রাণিটির প্রতি তোমাদের চেয়েও বেশি দয়ালু ও কল্যাণকামী।’ তিনি উটনীর সামনে যান এবং কিছু মাটির ঢেলা নিয়ে সেটাকে ফিরে আসতে বাধ্য করেন, যতোক্ষণ না সেটা হাঁটু ভেঙ্গে বসে আর তিনি তাতে জিন বসিয়ে চড়ে বসেন। এই ব্যক্তি যখন ওই কথা বলেছিল যা সে বলেছিল, তখন আমি যদি তোমাদেরকে ছেড়ে দিতাম তাহলে তোমরা তাকে হত্যা করতে, আর সে জাহান্নামে প্রবেশ করতো।” [হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে আল-বাযযার]


❏ বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ ফরমান: “আমার সাহাবাদের মধ্যে কারো বিরুদ্ধে কোনো মন্দ কথা নিয়ে তোমরা আমার কাছে আসবে না, কেননা আমি তোমাদের কাছে প্রশান্ত অন্তর ছাড়া যেতে চাই না।” [হযরত ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) হতে আবূ দাউদ ও আত্ তিরমিযী]


[অসম্পূর্ণ]

________________

কিতাবঃ আশ শিফা [অসম্পূর্ণ]

মূল: ইমাম কাজী আয়াজ (رحمة الله)

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন


সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন