বর্তমানে আমরা অনেকে দু'টি সন্তান বা তিনটি সন্তানের চেয়ে বেশি গ্রহণ করি না। এটা শরীয়তের দৃষ্টিতে কতটুকু জায়েজ?

 প্রশ্নকারী : আবদুল কাদের

শিক্ষার্থী- হযরত শাহচান্দ আউলিয়া কামিল মাদরাসা, চট্টগ্রাম।

প্রশ্ন: বর্তমানে আমরা অনেকে দু'টি সন্তান বা তিনটি সন্তানের চেয়ে বেশি গ্রহণ করি না। এটা শরীয়তের দৃষ্টিতে কতটুকু জায়েজ?

উত্তর: কম সময়ের ব্যবধানে এবং অধিক সন্তান জন্মদানের কারণে মা ও দুগ্ধ শিশুর স্বাস্থ্য ও শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তখন ঔষধের মাধ্যমে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা বিশেষ প্রয়ােজনে জায়েয বা বৈধ।এটা হলাে সাময়িক জন্মনিয়ন্ত্রণ। তবে স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ তথা পুরুষ ও স্ত্রীর অপারেশনের মাধ্যমে জন্মনিয়ন্ত্রণ, এটা সম্পূর্ণ হারাম।

বিশেষ করে সন্তানের ভরণ-পােষণ, সু-শিক্ষা দিতে না পারার আশংকায় এবং রিফিক সংকটের শঙ্কায় জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা নাজায়েয। কেননা রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহর কুদরতী হাতে নিয়ন্ত্রিত। 

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা'আলা পবিত্র কুরআন মজীদে ইরশাদ করেন-অর্থাৎ আর পৃথিবীতে বিচরণকারী সকল প্রাণীর রিযিকের বা জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ্ তা'আলার জিম্মায়। সূরা হদ, আয়াত নং-৬]

বিশেষ প্রয়ােজনে সাময়িক ঔষধের মাধ্যমে জন্মনিয়ন্ত্রণ গ্রহণের সময় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যেন ঔষধ সেবন/ব্যবহারের ফলে গর্ভে থাকা সন্তান নষ্ট না হয় বা মারা না যায়। খানাপিনার ভয়ে ঔষধ ব্যবহার, সেবন করে গর্ভের সন্তান রূহ/প্রাণ আসার পর নষ্ট করা কবিরা গুনাহ্ এবং হত্যার নামান্তর।

 এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন মাজীদে আল্লাহ্ তা'আলা ইরশাদ করেছেন- অর্থাৎ তােমরা তােমাদের স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্রের শঙ্কায় হত্যা করাে না, আমি তােমাদেরকে ও তাদেরকে রিজিক দান করি। সূরা আনআম, আয়াত নং-১৫১]

অপর আয়াতে মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন- অর্থাৎ দারিদ্রের ভয়ে তােমরা তােমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করাে না। তাদের ও তােমাদেরকে আমিই রিযিক দান করে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা কবিরা গুনাহ্ বা মহাপাপ। (সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত নং-৩১]।

অতএব, গর্ভের সন্তান নষ্ট করা জঘন্য ও মহাপাপ। উল্লেখ্য যে, গর্ভধারণের ১২০ দিন তথা চার মাস পূর্ণ হওয়ার পর গর্ভের সন্তানের মধ্যে আল্লাহর হুকুমে রূহ প্রদান করা হয়। তখন ঔষধ সেবনের মাধ্যমে গর্ভ নষ্ট করা জীবন/জান নষ্ট করার নামান্তর। যা কখনোে শরীয়ত সমর্থিত নয়। তবে মা জাতি এবং কোলের দুগ্ধপােষ্য শিশু সন্তানের শারীরিক ক্ষয়-ক্ষতি হতে বাঁচার জন্য বিশেষ প্রয়ােজনে গর্ভধারণের ১২০ দিনের পূর্বে ঔষধ সেবনের মাধ্যমে গর্ভ নষ্ট করা ফকীহগণ বিশেষ প্রয়ােজনে মা এবং কোলের সন্তানের রক্ষার্থে বৈধ বলে ফতােয়া প্রদান করেছেন। [মালা বুদ্দা মিনহ, কৃত- কাজী সানাউল্লাহ্ পানি পাথি রহ. ইত্যাদি]।(মাসিক তরজুমান,রবিউস সানী - ১৪৪২হি:,পৃষ্ঠা - ৪৪,৪৫)।

উত্তর দিয়েছেন: অধ্যক্ষ মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান। 

অধ্যক্ষ,জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া,চট্টগ্রাম।








Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন