হুযূর পূর নূর (ﷺ) এর তাঁর হায়া-শরম ও দৃষ্টি অবনতকরণ


হায়া-শরম ও দৃষ্টি অবনতকরণ হচ্ছে এমন এক মহৎ গুণ, যা কোনো ব্যক্তিকে তার অপছন্দনীয় কোনো কিছু ঘটলে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নিতে বা (ওই বিষয়টিকে) সেই অবস্থায় ছেড়ে দিতে প্রবৃত্ত করে। মানুষ স্বভাবতঃ যাকে বেমানান মনে করে তা হতে দৃষ্টিকে সংযত রাখাই দৃষ্টি অবনতকরণ।


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন সকল মানবের মাঝে সবচেয়ে হায়া-শরমসম্পন্ন এবং তাদের গোপন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রতি দৃষ্টিপাত না করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক তৎপর। 


❏ আল্লাহ (ﷻ) ইরশাদ ফরমান: “নিশ্চয় তাতে নবী (ﷺ)-এর কষ্ট হতো; অতঃপর তিনি তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে সংকোচবোধ করতেন।” [আল-কুরআন, ৩৩:৫৩]


❏ হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) বলেন, “মহানবী (ﷺ) ছিলেন কোনো নিঃসঙ্গ কুমারীর চেয়েও লাজুক। তিনি কখনো কোনো কিছু অপছন্দ করলে আমরা তা তাঁর চেহারা মোবারক দেখে বুঝতে পারতাম।” [আবূ দাউদ]


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) চারিত্রিকভাবে খুবই সংবেদনশীল ছিলেন। তাঁর হায়া-শরম ও উদারতার কারণে তিনি কখনোই কারো কাছে তার অপছন্দনীয় কোনো কথা বলতেন না। 


❏ হযরত মা আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, “হুযূর পূর নূর (ﷺ) যখন কারো সম্পর্কে এমন কথা শুনতেন যা তিনি অপছন্দ করতেন, তৎক্ষণাৎ তিনি এ কথা বলতেন না ‘অমুক এরকম কাজ করার বা এমনটি বলার ব্যাপারে তোমার কী মত?’ বরঞ্চ তিনি বলতেন, ‘এরকম কাজ করে বা এমনটি বলে যেসব লোক, তাদের সম্পর্কে তোমার কী ধারণা?’ এতে তিনি কারো নাম উল্লেখ না করেই নিষেধাজ্ঞা দিতে পারতেন।” [সর্ব-ইমাম মুসলিম, বুখারী, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ]


❏ হযরত আনাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন যে, একবার এক ব্যক্তি মহানবী (ﷺ)-এর কাছে জাফরানের চিহ্ন নিয়ে উপস্থিত হয়। কারো অপছন্দনীয় কোনো কিছু সম্পর্কে জানাতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যেহেতু লজ্জা পেতেন, সেহেতু তিনি তাকে কিছুই বল্লেন না। ওই ব্যক্তি প্রস্থান করলে তিনি বলেন, “তাকে এটা ধুয়ে ফেলতে বলতে পারবে কি?” এ-ও বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছিলেন, “তাকে এটা অপসারণ করতে বলো।” [আবূ দাউদ]


❏ হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) ‘সহীহ’ রওয়ায়াতে বলেন, “রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইতর (অশ্লীল) প্রকৃতির ছিলেন না, তিনি গালিগালাজ-ও করতেন না। বাজারে তিনি উচ্চস্বরে চিৎকার করতেন না, আর মন্দকে মন্দ দ্বারা ফিরিয়েও দিতেন না। তিনি ক্ষমা করতেন এবং দেখেও না দেখার মতো ছেড়ে দিতেন।” আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (رضي الله عنه) ও আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস্ (رضي الله عنه) হতে একটি বর্ণনায় তৌরাতেও এরকম একটি ঘটনার কথা উল্লেখিত হয়েছে।

মহানবী (ﷺ) নিজ লজ্জার কারণে কারো মুখের দিকে চোখ তুলে তাকাতেন না। উপরন্তু, কোনো অপছন্দনীয় কিছুকে নিষেধ করতে তাঁকে বাধ্য করা হলে তিনি রূপকের ব্যবহার করতেন।


❏ হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, “আমি কখনোই রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর গোপন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দেখিনি।” [তিরমিযী]।

________________

কিতাবঃ আশ শিফা [অসম্পূর্ণ]

মূল: ইমাম কাজী আয়াজ (رحمة الله)

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন


সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন