‘আল কাউলুল জলী’র মুছান্নিফ আল্লামা বরযঞ্জি হইতে মুহাদ্দিছ ও মুতাকালিমের পদ্ধতি ছাবেত করিয়াছেন যে, হযরত আবু তালেব ঈমানের সহিত মর্যাদাবান ছিলেন। কেননা, শুধু অন্তরে বিশ্বাস করার নামই ঈমান এবং তাহা আবু তালেব হইতে পাওয়া গিয়াছে। যদিও তিনি কাফেরদের ভয়ে ঈমানকে প্রকাশ্যমুখে স্বীকার করেন নাই যেহেতু আল কাউলুল জলী’র মুছান্নিফ লিখিতেছেন: প্রকাশ্য বশ্যতা করার যেই বাধাসমূহ রহিয়াছে উহার মধ্যে একটি অনাচারীর ভয়। যদি ইসলাম প্রকাশ করা যায় অথবা ইসলামের অনুসরণ করা যায় তখন অনাচারীগণ তাঁহাকে শহীদ করিয়া দিবে অথবা তাঁহাকে এই ধরণের কষ্ট দিবে যাহা তিনি সহ্য করিতে পারিবেন না অথবা সন্তান-সন্ততি কিংবা আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কাহারো সহিত এই রকম কার্যকলাপ করিবে। অতএব, এই রকম মানুষের পক্ষে ইসলামকে গোপন করা জায়েয আছে।
قال الزجاج ان ابا طالب قال عند موته يا معشر بن عبد مناف اطيعوا محمدا وصدقوه تفلحوا وتر شدوا فقال عليه السلام ياعم تامرهم بالنصح لانفسهم وتدعها لنفسك قال فما تريد يا ابن اخى قال اريد منك كلمة واحدة فانك فى اخر يوم من ايام الدنيا ان تقول لا الٰه الّا الله اشهدلك بها عند الله تعالى قال يا ابن اخى قد علمت انك صادق ولكن اكره ان يقال ضرع عند الموت ولو لا ان يكون عليك وعلٰى بنى ابيك غضاضة وسبة بعدى لقلتها ولا قررت بها عينك عند الفراق لما ارى من شدة وجدك ونصحك ولكن سوف اموت علٰى ملة الا شياخ عبد المطلب وهاشم وعبد مناف هكذا فى التفسير الكبير.
❏ অর্থাৎ- যুজাজ (رحمة الله) বলিয়াছেন যে, আবু তালেব তাঁহার মৃত্যুর সময় বলিয়াছেন, হে আবদে মোনাফের বংশধর! তোমরা মুহাম্মদ (ﷺ) এর অনুসরণ কর এবং তাঁহাকে অন্তরে বিশ্বাস কর, তাহাতে তোমরা সফলকাম ও পথ প্রদর্শিত হইবে। অতঃপর হুজুর করিম (ﷺ) বলিলেন, হে চাচা! আপনি তাহাদিগকে তাহাদের কল্যাণের জন্য উপদেশমূলক হুকুম করিতেছেন এবং আপনি নিজের জন্য উহা ছাড়িয়া দিতেছেন।আবু তালেব বলিলেন, অতঃপর হে ভাতিজা! আপনি কি ইচ্ছা করিতেছেন? নবী করিম (ﷺ) উত্তরে বলিলেন, আমি আপনার পক্ষ হইতে একটি কলমা আল্লাহ্ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই ইহার স্বীকৃতি চাহিতেছি। উক্ত কলমার মাধ্যমে আমি খোদার দরবারে আপনার জন্য সুপারিশমূলক সাক্ষী দিব। যেহেতু আপনি ইহকালীন জীবনের শেষ দিনে পৌঁছিয়াছেন। আবু তালেব বলিলেন, হে ভাতিজা! আমি নিশ্চয় জানিয়া নিয়াছি যে, আপনি সত্য, কিন্তু মৃত্যুকালে সে বিনয় বা নীচতা স্বীকার করিয়া এই রকম বলাকে আমি ঘৃণা করিতেছি এবং আমার পরে আপনার ও আপনার বাপের বংশগণের উপর অসম্মানি ও গালি-গালাজের ভয় না হইত তাহা হইলে আমি উহা অবশ্যই বলিতাম এবং নিশ্চয় আপনার অত্যাধিক প্রেম ও উপদেশ দেখিতেছি বিচ্ছেদের সময় আপনার চক্ষু মোবারককে ঠান্ডা করিতাম, কিন্তু আমি অচিরেই মুরব্বিগণের অর্থাৎ আবদুল মোত্তালিব, হাশেম ও আবদে মোনাফের ধর্মের উপর মৃত্যুবরণ করিব! এই রকম তাফসীরে কবীরে উল্লেখ রহিয়াছে। বরং কোন জালেম যদি তাহাকে কুফুরী কলমাও প্রকাশ করিবার জন্য বাধ্য করে তখন কুফুরী কলমা উচ্চারণ করা তাহার জন্য জায়েয হইবে।
❏ উহার প্রমাণ আল্লাহ তায়ালার বাণী:
إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (سورة النحل: ১০৬)
কিন্তু যাহাকে কুফুরী কলমার উপর বাধ্য করা হয় এমতাবস্থায় তাহার অন্তরে ঈমানের সহিত শান্ত হয়। আর কিন্তু যাহার বক্ষকে কুফুরীর জন্য খুলিয়া দিয়াছে, অতঃপর তাহাদের উপর খোদার পক্ষ হইতে অভিশাপ অবতরণীয় এবং তাহাদের জন্য রহিয়াছে কষ্টদায়ক শাস্তি।
_______________
নবী করীম (ﷺ) এর চাচা আবু তালেবের নাজাত সম্পর্কে বর্ণনা
রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল-কাদেরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন