হযরত গাউছে পাক (رحمة الله) এর কারামত ও বুজুর্গীর বর্ণনা

 

হযরত গাউছে পাক (رحمة الله) এর কারামত ও বুজুর্গীর বর্ণনা


হুজুরে গাউছে পাক (رحمة الله) বলেছেন, ইসলাম ধর্মের সত্যতা মুহাম্মদ মুস্তফা (ﷺ) এর জীবন ব্যবস্থার সত্যায়নের নিমিত্তে আল্লাহ্ তায়ালা দলীল হিসাবে আমাকে প্রেরণ করেছেন। হুজুরে গাউছে পাক জগদ্বিখ্যাত মুহাদ্দিস, মুফাস্সির এবং মুফ্তীও ছিলেন এবং নিজে জগদ্বিখ্যাত মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মহাপরিচালক ছিলেন। জাহেরী শিক্ষাদানের সাথে সাথে বাতেনী বা আধ্যাত্মিক শিক্ষাদানের নিমিত্তে খানকাহ্ শরীফও প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি অসাধারণ গ্রন্থকার ছিলেন। বাস্তবিক পক্ষে তিনি পীরানে পীর ও শায়খুল মাশায়েখ ছিলেন।


অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ও সর্বজন গৃহীত ‘বাহ্জাতুল আসরার’ কিতাবে উল্লে­খ রয়েছে:

اَخْبرنَا الشّيْخ العَارِف اَبُو مُحَمَّد عَلى بِن اِدْرِيْس اليَعْقُوْبِى بِهَا سنة سبع عَشَرَة  وسِتَّمائة قَالَ سَمِعت الشّيخ عَبْدُ الْقَادِر يَقُوْلُ الْاِنْس لَهُمْ مَشَائِخ والجن لَهُمْ مشائخ وَالْمَلَئِكَة لَهُمْ مَشَائِخ وَ اَنَا سَيْخ الكل.    

(صـ২৩ صبع مصر)



অনুবাদ: আমাকে সংবাদ প্রদান করেছেন শায়খ আরেফ আবু মুহাম্মদ আলী ইবনে ইদ্রিস ইয়াকুবী ৬১৭ হিজরী সালে বলেছেন, আমি শায়খ আবদুল কাদের (رحمة الله)কে বলতে শুনেছি- মানুষের মধ্যে মাশায়েখ হয়ে থাকেন, জীনদের মধ্যে মাশায়েখ হয়ে থাকেন এবং ফেরেশতাদের মধ্যেও মাশায়েখ হয়ে থাকেন। আর আমি হচ্ছি তাদের সকলের শায়খ।



وَكَانَ رَضِىَ اللهُ عَنْه يَقُوْلُ اِنَّمَا اِمْرِئٍ مُّسْلِمٍ عَبَرَ عَلٰى بَابِ مَدْرَسَتِىْ خَفَّفَ اللهُ عَنْه الْعَذَابَ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ .                             (نور الابصار، صـ ২৫৭ )



অনুবাদ: যে কোন মুসলমান ব্যক্তি আমার মাদ্রাসার দরজায় অর্থাৎ আমার মাদ্রাসার আশেপাশে এবং আমার খানকাহের আশেপাশে খালেছ মুহাব্বত নিয়ে ঘুরাফেরা করবে আল্লাহ্ তায়ালা তাকে শাস্তি থেকে মুক্ত দিবেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত সে শান্তিতে অবস্থান করবে।



হযরত আহমদ আলমারদিনী বর্ণনা করেছেন, আমার কাছে আমার শ্রদ্ধেয় পিতা, তাঁর থেকে আমার দাদাজান বর্ণনা করেছেন, তিনি অর্থাৎ গাউছে পাক অধিকাংশ সময়ে রসূলে মকবুল (ﷺ) এর সাথে দীদার লাভ করতেন। তিনি দোয়া করার সাথে সাথে রসূলে মকবুল (ﷺ) দর্শন দান করতেন।



বর্ণিত আছে যে, যখন গাউছে পাককে কবরস্থ করা হয় তখন তিনি উঠে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া আরম্ভ করলেন এবং তাঁর কবর মুবারক চতুর্দিকে সুপ্রশস্ত হয়ে গেল। যারা তাঁর কবর মুবারকের ভিতরে দণ্ডায়মান ছিলেন এ আশ্চর্য দৃশ্য দেখে সাথে সাথে বেহুশ হয়ে যায়। (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি এবং আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন।)



গাউছে পাক (رحمة الله) মুহাক্বেকীন ওলামাগণের অন্যতম ছিলেন। তাঁর উপাধি ছিল ‘মুফতিয়িল ইরাকিয়্যিন’ বাগদাদের বিশ্ববিখ্যাত নেজামিয়া মাদ্রাসায় বহুকাল যাবত অধ্যাপনার দায়িত্ব পালন করেছেন।



হুজুর গাউছে পাক (رحمة الله) বলেন, যে কোন ব্যক্তি প্রত্যেক বুধবার এভাবে চলি­শ বুধবার পর্যন্ত আমার মাযার যেয়ারত করবে যেয়ারতের শেষ দিবসে আল্লাহ্ তায়ালা তাকে দোযখের আগুন থেকে মুক্তি দিবেন। তিনি আরও বলেন যে, আমি আল্লাহ্ তায়ালা থেকে প্রতিশ্র“তি নিয়েছি।



قَالَ اَخَـذْتُ مِنْ رَّبِّـىْ عَـزَّوَجَلَّ عَهْدًا اَنَّ النَّارَ لَا تَحْرِقُ جَسَدًا دَخَلَ حَرَمِىْ هٰذا



অনুবাদ: যে দেহ অর্থাৎ ব্যক্তি আমার মাযারে প্রবেশ করবে তাকে আগুন জ্বালাতে পারবে না। যেমন বর্ণিত আছে মাছ বা অন্য কোন জীবিত বস্তু তাঁর মাযারে পাকে আনা হয়েছিল।



انَّـه مَا دَخَلَ حَرَمَـه يعنى تُرْبَتَـه سَمَك وَلَا لَحْمَّ اِلَّا وَلَمْ يَنْضَج بِالنَّارِ لَا طَبْخًا وَلَاشَيْئًا .



অতঃপর আগুনে রান্না করার জন্য দেয়া হলে রান্না বা ভুনা কিছুই হয়নি।



অনেক মাশায়েখে কেরাম যেমন শায়খ মুহাম্মদ আশ্ শাম্বকী প্রমুখগণ তাঁর বরকতময় সাহচর্যে থেকে উপকৃত হয়েছেন। হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানী (رحمة الله) বলেন, হযরত শায়খ আবদুল কাদের জিলানী বলেছেন, তক্দীরে মুবরাম অর্থাৎ অখণ্ডনীয় তাকদীর পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারো নেই। কিন্তু যদি আমি খণ্ডন করার ইচ্ছা করি াহলে তাও খণ্ড করতে পারি। অতঃপর মুজাদ্দিদ (رحمة الله) আল্লাহ্ তায়ালার দরবারে আরজ করেন, হে পরওয়ার দিগারে আলম আপনি আপনার এক বান্দাকে যে দানে ধন্য করেছেন আপনার একান্ত করুণায় এ দুর্বল বান্দাকেও ঐ দৌলত দানের মাধ্যমে ধন্য করুন।

_____________

কালামুল আউলিয়া ফি শানে ইমামিল আউলিয়া

রহমাতুল্লাহে তায়ালা আলাইহিম আজমাঈন

রচনায়:মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্-কাদেরী

অনুবাদ: অধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ নুরুল আলম খাঁন

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন