আল্লাহর আজাব ও শাস্তি হতে যা সর্বাধিক মুক্তি দিতে পারে তা হল আল্লাহর যিকির
হাদিস শরীফে হুজুর (ﷺ) এরশাদ করেছেন-
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُنَادِي مُنَادٍ يَوْم الْقِيَامَةِ اَين الو الالباب يُرِيدُ قَالَ الَّذِيْنَ يَذْكُرُوْنَ اللهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِهِمْ . الخ
অর্থাৎ- কিয়ামত দিবসে একজন আহবানকারী ডেকে বলবে, কোথায় জ্ঞানী লোকেরা? জিজ্ঞাসা করা হবে আহুত জ্ঞানী কারা? উত্তর আসবে, “সে সব ব্যক্তি; যাঁরা আল্লাহর যিকির করতেন- দন্ডায়মান হয়ে, বসে এবং শয়নকালে অর্থাৎ সর্বদাই যাঁরা আল্লাহ্ এক স্মরণ করতেন। অতঃপর তাঁদেরকে বলা হবে, “তোমরা বেহেশতে প্রবেশ কর এবং স্থায়ীভাবে সেখানে অবস্থান কর।”
অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে যে, আল্লাহর নিকট তাঁর যিকিরই সর্বাপেক্ষা উত্তম।
হযরত আবু মুছা আশআরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত হুজুর (ﷺ) এরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকির করেন আর যে ব্যক্তি তা থেকে বিরত থাকে, তাদের উভয়ের উদাহরণ জীবিত ও মৃত ব্যক্তিরই সাদৃশ। অর্থাৎ যে ব্যক্তি যিকির করে সে জীবিত আর যে তা বর্জন করে সে মৃতের ন্যায়।
مَثَلُ الَّذِي يَذْكُرُ رَبَّهُ وَالَّذِي لَا يَذْكُرُ رَبَّهُ مَثَلُ الْحَيِّ وَالْمَيِّتِ . (صحيح البخارى)
অর্থাৎ- যে স্বীয় প্রভুকে স্মরণ করে আর যে তা থেকে বিরত থাকে তারা যথাক্রমে জীবিত ও মৃতের ন্যায়।
তাই হাদিস বেত্তাদের (মুহাদ্দেছীন) কেউ কেউ বলেছেন, আল্লাহর যিকির কারীদের কারো উপর অত্যাচার করা, এক জীবিত ব্যক্তির উপর অত্যাচার করারই নামান্তর মাত্র। সুতরাং তার প্রতিশোধ নেয়া যুক্তযুক্ত হবে।
ইমাম তিরমিযী (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন- আল্লাহকে স্মরণ (যিকির) করলে অন্তর সজীব হয় এবং তাতে অন্তরে বিনয়ের সঞ্চার হয়।
আ’লা হযরত মৌলানা শাহ আহমদ রেজা খাঁন (رحمة الله) ফত্ওয়া আফ্রিকায় উল্লেখ করেছেন- জানাজার সাথে চলার পথে কলেমা ও দরূদ শরীফ অথবা না’তে রসূল পাঠ করায় কোন ক্ষতি নাই। কারণ এসব তো আল্লাহর যিকিরেরই নামান্তর মাত্র।
এক হাদীসে বর্ণিত-
مَامنْ شَيْءٌ أَنْجَى مِنْ عَذَابِ اللهِ مِنْ ذِكْرِ اللهِ .
অর্থাৎ- নিশ্চয়ই, আল্লাহর আজাব বা শাস্তি থেকে যা সর্বাধিক মুক্তি দিতে পারে, তা হল, আল্লাহর যিকির বা তাঁরই স্মরণ।
তাছাড়া আল্লাহ্ তায়ালার যিকিরের ফলে তাঁর রহমতও বর্ষিত হয়।
উপরোলেখিত হাদিস ও উদ্ধৃতিসমূহ দ্বারা সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, যিকির সর্বদাই রহমত বর্ষণে সহায়ক। তদুপরি তাতে বরকত নাজিল হয়; আজাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তা সরবে হউক আর নীরবেই হউক। তাছাড়া, স্থান এবং সময়েরও কোন শর্ত তাতে নেই।
উপরন্তু, হাদিস শরীফে সাধারণভাবে যিকিরের নির্দেশ বা অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্ হউক কিংবা আল্লাহু রাব্বী, মুহাম্মদ নবী (ﷺ) হউক- যেকোন যিকির উচ্চরবে পাঠরত অবস্থায় জানাজার সাথে পথ চলার প্রচলন নবী করীম (ﷺ) এর জমানায় যদিও ছিল না, পরবর্তী যুগে এ মুহূর্তে এ ধরণের যিকির অবৈধ হবার পক্ষে কোরআন মজিদে এবং হাদিস শরীফে কোন নিষেধ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় না। বরং হুজুর (ﷺ) এ ধরনের নব প্রচলিত কার্যাদির ক্ষেত্রে একটা সাধারণ নিয়ম এরশাদ করেছেন- من سن سنة حسنة الخ অর্থাৎ- যে ব্যক্তি ইসলামে একটা ভাল কর্মপন্থার প্রচলন করবে... (আল-হাদিস)।
যাতে পরবর্তী যুগের আলেম (ফকীহ)গণ জনসাধারণের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ভাল কাজের হুকুম দিতে পারেন।
_____________
আল্-ক্বাওলুল হক্ব
(জানাজায় উচ্চরবে যিকির জায়েয প্রসঙ্গে)
রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল-কাদেরী (رحمة الله)
অনুবাদঃ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মন্নান (এম.এম.এম.এফ)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন