হযরত সায়্যিদুনা আবু আবদুল্লাহ্ জাবির বিন আবদুল্লাহ্ (رضي الله عنه) বলেন: রাহমাতুল্লিল আলামীন, শফিউল মুযনিবীন, রাসুলে আমীন, হুযুর পুরনূর (ﷺ) আমাদের (৩০০ জন) কে কুরাইশদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করলেন আর হযরত সায়্যিদুনা আবু উবাইদা (رضي الله عنه) কে আমাদের সিপাহসালার নিযুক্ত করলেন এবং আমাদেরকে খেজুরের একটি বস্তা পথ খরচা স্বরূপ প্রদান করলেন। হযরত সায়্যিদুনা আবু উবাইদা (رضي الله عنه) আমাদেরকে (প্রতিদিন) একটি করে খেজুর দিতেন। জিজ্ঞাসা করা হল, “আপনারা عليم الر رضون একটি খেজুর দ্বারা কিভাবে জীবনধারণ করতেন?" তখন বললেন: “আমরা এটাকে চুষতাম যেভাবে শিশু (কোন বস্তু) চুষে এবং এরপর পানি পান করে নিতাম। তখন তা ঐ দিন ও রাত পর্যন্ত আমাদের জন্য যথেষ্ট হত। আমরা নিজেদের বর্শা দ্বারা গাছের পাতা (যেগুলাে উট আহার করে) নীচে ফেলতাম আর সেগুলাে পানিতে ভিজিয়ে খেয়ে নিতাম।" তিনি বলেন: “আমরা সমুদ্রের কিনারা দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম তখন (দূর থেকে) এক পার্শ্বে বালির বড় টিলার ন্যায় কিছু একটি দৃষ্টিগােচর হল। আমরা যখন কাছে পৌছলাম তখন দেখতে পেলাম যে, সেটা একটা প্রাণী (যা মৃত), যেটাকে আম্বর (মাছ) বলা হয়।” হযরত সায়্যিদুনা আবু উবাইদা (رضي الله عنه) বলেন: “এটাতাে মৃত বস্তু।” অতঃপর নিজেই বললেন: “না, বরং আমরা আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর পক্ষ থেকে প্রেরিত আর আমরা আল্লাহর পথে (ঘর থেকে বের হয়েছি) আর আপনারা এই উপায়হীন অবস্থায় রয়েছেন, তাই (এটা) খেয়ে নিন।” আমরা তিনশত জন একমাস এটা খেয়ে কাটিয়েছি। এমনকি আমরা হৃষ্টপুষ্ট হয়ে গেলাম। আমার স্মরণ আছে, আমরা সেটার চোখের গর্ত থেকে বড় মটকা ভরে ভরে চর্বি বের করতাম। আর আমরা ঐ (মাছ) থেকে ষাড়ের ন্যায় বড় বড় টুকরা কেটে নিতাম। (এ মাছের চোখের বৃত্ত এত বড় ছিল,)। হযরত সায়্যিদুনা আবু উবাইদা (رضي الله عنه) আমাদের মধ্য থেকে ১৩ জন কে সেটার চোখের গর্তে বসালেন। (আর তাতে সহজে সবার বসার জায়গা হয়ে গেল।) এটার একটি পাঁজরের হাড় ধরে (কামানের মত) দাঁড় করালাম অতঃপর একটি বড় উটের উপর বসার ঘর স্থাপন করলাম আর ঐ উট এর নীচ দিয়ে চলে গেল। আমরা সেটার শুকনাে মাংসের টুকরা পথ খরচের জন্য সাথে রাখলাম। যখন আমরা মদীনায়ে মুনাওওরায় পৌছলাম তখন আল্লাহর প্রিয় হাবীব, হাবীবে লবীব (ﷺ) এর নিকট হাজির হলাম এবং হুযুর (ﷺ) এর নিকট এটার আলােচনা করলাম। তখন হুযুর (ﷺ) ইরশাদ করলেন: “সেটা রিযিক ছিল, যা আল্লাহ্ তাআলা তােমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তােমাদের নিকট ঐ মাংসের কোন অংশ আছে কি? (যদি থাকে) তবে আমাদেরকেও খাওয়াও। আমরা হুযুর পাক (ﷺ) এর নিকট ঐ মাছের মাংস পেশ করলাম। তখন রাসূলে পাক (ﷺ) তা খেলেন।
(সহীহ মুসলিম, ২য় খন্ড, ১৪৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-১৯৩৫)।
আল্লাহ্ তাআলার রহমত তাঁদের উপর বর্ষিত হােক এবং তাঁদের সদকায় আমাদের ক্ষমা হােক।
_______________
কিতাব : ফয়যানে সুন্নাত
লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন