হযরত আবু সালমাহ্ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন:
عَنْ أَبِي سَلْمَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللّٰهِ -صلى الله عليه وسلم- لَا يَأْكُلُ الصَّدَقَةَ وَيَأْكُلُ الْهَدِيَّةَ، فَأَهْدَتْ إِلَيْهِ يَهُوْدِيَّةُ شَاةً مَصْلِيَةً فَأَكَلَ رَسُوْلُ اللّٰهِ -صلى الله عليه وسلم- مِنْهَا هُوَ وَأَصْحَابُهُ، فَقَالَتْ: إِنِّي مَسْمُوْمَةٌ، فَقَالَ: لِأَصْحَابِهِ: اِرْفَعُوْا أَيْدِيَكُمْ فَإِنَّهَا قَدْ أَخْبَرَتْ اَنَّهَا مَسْمُوْمَةٌ، قَالَ: فَرَفَعُوْا أَيْدِيَهُمْ، قَالَ: فَمَاتَ بِشَرُ بْنُ الْبَرَاءِ، فَأَرْسَلَ إِلَيْهَا رَسُوْلُ اللّٰهِ -صلى الله عليه وسلم- فَقَالَ: مَا حَمْلُكِ عَلٰى مَا صَنَعْتِ؟ قَالَتْ: أَرَدْتُّ أَنْ أَعْلَمَ إِنْ كُنْتَ نَبِيًّا لَمْ يَضْرُرْكَ. وَإِنْ كُنْتَ مَلِكاً أَرْحَتَ النَّاسُ مِنْكَ، قَالَ: فَأَمَرَ بِهَا فَقُتِلَتْ
-“রাসুল পাক (ﷺ) সদকা/যাকাত ভক্ষন করতেন না, বরং হাদিয়া গ্রহণ করতেন। (খায়বর যুদ্ধে যয়নব বিনতে হারেসা নামের) জনৈকা ইহুদি রমনী বকরির ভূনা গোশতে বিষ মিশ্রিত করে হুযুর পাককে হাদিয়া পাঠায়। আর তা থেকে রাসুল পাক ও তাঁর সাহাবিগণ কিছু খেয়েও নিলেন। তখন স্বয়ং ভূনা গোশত তাঁকে জানিয়ে দেয় যে, আমি বিষ মিশ্রিত গোশত। অতঃপর নবীজি সাহাবাগণকে বললেন, এ খাবার থেকে তোমাদের হাত উঠিয়ে নাও। কেননা, তা আমাকে জানিয়েছে যে, এগুলো বিষ মিশ্রিত। বর্ণনাকারী বলেন, সকলে তাঁদের হাত উঠিয়ে নিল। তবে, সাহাবি হযরত বিশর ইবনু বারা ঐ বিষক্রিয়ায় তখনই শাহাদাত বরণ করেন। তখন নবী পাক ওই ইহুদি মহিলাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এরূপ করেছ কেন? উত্তরে মহিলা বলল, আমি জানতে চেয়েছি, আপনি নবী না বাদশাহ! যদি নবী হন, তবে এই বিষ আপনার কোন ক্ষতি করবে না; আর যদি না হন, আপনার হাত থেকে মানুষজন স্বস্তি পাবে। যাহোক, ঐ ইহুদি মহিলাকে তাঁর নির্দেশে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।” ৩১
৩১ - ইবনু সা‘দ, আত-তবাক্বাতুল কুবরা, ১/১৭২।
আল্লামা ইমাম আহমাদ কাসতালানী এ বিষয়ে উল্লেখ করেন যে:
وَقَدْ ثَبَتَ اَنَّ نَبِيَّنَا صلي الله عليه وسلم مَاتَ شَهِيْدًا لِاَكْلِهِ يَوْمَ خَيْبَرَ مِنْ شَاةٍ مَسْمُوْمَةٍ سَمًّا قَاتِلًا مِنْ سَاعَتِهِ حَتَّي مَاتَ مِنْهُ بِشَرُ بْنُ الْبَرَاءِ وَصَارَ بَقَاؤُهُ صلي الله عليه وسلم مُعْجِزَةٌ فَكَانَ أَلَمُ السَّمِّ يَتَعَاهَدُهُ اِلَي أَنْ مَاتَ بِهِ
-“নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হলো, আমাদের প্রিয় নবী শহিদি ওফাত লাভ করেছেন। কেননা তিনি খায়বরের দিন এমন তীব্র বিষ মিশ্রিত বকরির গোশতের কিছু খেয়ে ছিলেন, যে বিষের প্রতিক্রিয়ায় মানুষের ততক্ষনাৎ মৃত্যু হয়। যেভাবে সে বিষক্রিয়ায় বিশর ইবনে বারা সেই মূহুর্তেই প্রাণ ত্যাগ করেছিলেন। আর হুযুর পাকের বেঁচে থাকা (অর্থাৎ তখনই বিষ ক্রিয়ায় আক্রান্ত না হওয়া) তাঁর অন্যতম মু‘জিযা ছিল। কিন্তু সেই বিষ তাঁকে প্রায়শঃ যন্ত্রণা দিতে থাকত। এমনকি শেষ পর্যন্ত এরই প্রভাবে তাঁর ওফাত সংঘটিত হয়।” ৩২
৩২ - আল্লামা আহমাদ কাসতালানী, আল-মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ, ৩/৪১৫।
সুতরাং সুস্পষ্ট হলো, হুযুর পাকের জানের কুরবানি হযরত ইবরাহিম থেকেও উত্তম ছিল। কেননা হযরত ইবরাহিম কুরবানির পরেও জীবিত ছিলেন, আর নবী পাক কুরবানি করেছেন এবং জাহেরিভাবে ওফাতও বরণ করেছেন। নবীজি আরও ইরশাদ করেন:
مَا أَوْذَي نَبِيٌّ مِثْلُ مَا أَوْذَيْتُ
-“আল্লাহ’র রাহে আমি যতটা যাতনাগ্রস্থ হয়েছি, আর কোন নবী তেমনটি হন নি।” ৩৩
৩৩ - মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ৩/১৩০।
_________________
কুরবানি (ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও আহকাম)
গ্রন্থনা ও সংকলন:
মুফতি মুহাম্মদ আলমগীর হোসাইন আন-নাজিরী
অধ্যক্ষ, জামি‘আ-এ-‘ইলমে মদীনা, নেত্রকোণা
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন