(৭১) আল্লামা মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন নঈমী উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় তাঁর একাধিক পুস্তকে ‘নূর’ দ্বারা রাসূল কে বুঝানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
(রিসালায়ে নূর, পৃ. ৪-৭, তাফসীরে নাঈমী, খণ্ড, পৃ.)
(৭২-৭৩) এছাড়া আল্লামা করম শাহ আযহারী (رحمة الله)-এর লিখিত ‘তাফসিরে যিয়াউল কোরআন এবং শাইখুল ইসলাম মাদানী মিয়া আশরাফী (رحمة الله)-এর লিখিত ‘তাফসিরে আশরাফী’ তেও উক্ত আয়াতের নূর দ্বারা রাসূল (ﷺ)এর নূরানী সত্ত্বাকে উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করেছেন।
❏ অনুরূপ মোট ৮০টিরও বেশী তাফসীরে উল্লেখ রয়েছে যে উক্ত আয়াতে নূর বলতে রাসূল (ﷺ)-এর নূর নূরানী সত্ত্বাকেই বুঝানো হয়েছে। সম্মানিত পাঠকবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে যে, যারা এই আয়াতের মনগড়া ব্যাখ্যা করে থাকেন তাদের কাছে আপনারা দাবি দাবী করবেন যে, আয়াতে যদি অন্যটা বুঝিয়ে থাকে তো আপনারা আমাদেরকে কমপক্ষে ৮১ টি তাফসীর দেখান এবং এর মধ্যে সাহাবি, তাবেয়ীদের ব্যাখ্যাও থাকতে হবে, যেহেতু আমরা তা দেখাতে সক্ষম হয়েছে। তাহলেই বুঝতে পারবো যে আপনারা পূর্বসূরি মুফাস্সিরগণের ব্যাখ্যা অনুসরণ করছেন।
(৭৪) আহলে হাদিস ও দেওবন্দীদের শাইখুল ইসলাম এবং ইমাম, আল্লামা ইবনে তাইমিয়া তার সুপ্রসিদ্ধ ফাতওয়া কিতাবে লিখেন-
قَوْلُهُ: [قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ] قِيلَ: النُّورُ هُوَ مُحَمَّدٌ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ
-‘‘মহান রবের বাণী, নিশ্চয় তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব। কোনো কোনো মুফাসসিরগণ বলেছেন, এ আয়াতের নূর বলতে উদ্দেশ্য হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)।’’
(ইবনে তাইমিয়া, মাজমাউল ফাতওয়া, ১৩/১০ পৃ.)
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আহলে হাদিস এবং দেওবন্দী ভাইগণ নিজেদের ইমামকেই মানে না, আর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকাবীরদের কথা মানা তো বহু দূরে!
(৭৫) শুধু তাই নয় রাসূল (ﷺ) নূর হওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশের দেওবন্দী সুপ্রসিদ্ধ শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক যিনি অসংখ্য কওমী দেওবন্দী আলেমদের উস্তাদ। তিনি সুপ্রসিদ্ধ দেওবন্দী পত্রিকা মাসিক ‘আদর্শ নারীর’ ২০১২ ঈসায়ীর জানুয়ারী তথা রবিউল আউয়ালের সংখ্যার ‘‘মহানবীর (সা.) অলৌকিক বিলাদাত’’ শিরোনামের ১০ পৃষ্ঠায় লিখেছেন-‘‘রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হিদায়াতের নূরে সারাবিশ্ব আলোকিত হবে, তাই তাঁর শুভাগমন লগ্নে এসব নূরের বিকাশ ছিল। নবীজী (সা.) নিজেই ঐ নূরের আকর-নূরে মুজাস্সাম।’’
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আজিজুল হক সাহেব খুব সুন্দর করেই রাসূল (ﷺ) কে নূরে মুজাস্সাম অর্থাৎ নবিজীর দেহ মোবারক নূরের তা বলে দিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় তার ছাত্র এবং তার ছাত্রের ছাত্ররা আজ রাসূল (ﷺ) কে নূর বললেই আমাদেরকে কাফের ফাত্ওয়া দিতে শুরু করে। এখন তাদের সে ফাতওয়ায় তাদের পূর্বসূরী আকাবিরগণ কি হন? আপনারাই বলুন।
শুধু তাই নয়, একই পৃষ্ঠায় সুরা মায়েদার ১৫ নং আয়াত উল্লেখ করে তিনি বলেন-‘‘আলোচ্য আয়াতে যে নূরের উল্লেখ আছে, সেই নূর হলেন হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)।’’ বর্তমানে তার নামধারী ছাত্ররা এ মতের বিরুদ্ধে মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। তার বুখারী শরিফের অনুবাদ গ্রন্থের ৫ম খণ্ডের ৩ পৃষ্ঠায়ও (যা হামিদিয়া প্রকাশনী চকবাজার, ঢাকা হতে প্রকাশিত) অনুরূপ ব্যাখ্যা করেছেন।
(৭৬) মাওলানা শাব্বির আহমদ উসমানী তিনি ওলামায়ে দেওবন্দের সুপ্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস। আলেম। তিনি নিজে কুরআনের একটি তাফসীর গ্রন্থও লিখেছেন। তিনি সূরা মায়েদার ১৫ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেন-
(قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ) شايد نورى خود نبى كريم صلى الله عليہ وسلم اوركتاب مبين سے قران كريم مراد-
-‘‘নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে এক নূর এবং প্রকাশ্য কিতাব এসেছে। এখানে এ আয়াতে নূর দ্বারা স্বয়ং হুযুর (ﷺ) কে উদ্দেশ্য এবং কিতাবুম মুবিন দ্বারা পবিত্র কুরআনুল কারিম কে উদ্দেশ্য।’’ ৩২
➥{ছাব্বির আহমদ উসমানী, তাফসীরে উসমানী, ১/১৪২ পৃ.}
মহান রব আমাদেরকে সঠিক আক্বিদার উপর অবিচল থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন
━━━━━━━━━━━━━━━━
🌍 তথ্যসূত্রঃ [শহিদুল্লাহ বাহাদুর গ্রন্থসমগ্র এপ্স]
ডাউনলোড লিংকঃ bit.ly/Sohidullah
অথবা, এপ্সটি পেতে প্লে স্টোরে সার্চ করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন