(৬১) শায়খ মুহাম্মদ রশীদ বিন আরী রেযা কালমুনী হুসাইনী (رحمة الله) তাঁর তাফসিরে লিখেন-
(قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ) فِي الْمُرَادِ بِالنُّورِ هُنَا ثَلَاثَةُ أَقْوَالٍ: أَحَدُهَا: أَنَّهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
-‘‘সূরা মায়িদার আয়াতের ‘নূর’ দ্বারা কি উদ্দেশ্য এ বিষয়ে মুফাস্সিরগণের তিনটি অভিমত পাওয়া যায়, প্রথম অভিমত হল. এ নূর দ্বারা উদ্দেশ্য হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)।’’
(তাফসীরে আল-মানার, ৬/২৫১ পৃষ্ঠা)
(৬২) এমনকি দেওবন্দীদের অন্যতম আলেম মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী সাহেব [১৯০৫ খৃ.] তার “এমদাদুস সুলুক” গ্রন্থে উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা করেন এভাবে-
حق تعالى درشان حبيب خود صلى الله عليه و سلم فرمود كه آمده نزد شما از طرف حق تعالى نور و كتاب مبين و مراد از نور ذات پاك حبيب خدا صلى الله عليه و سلم است و نيز
-‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর হাবীব (ﷺ)-এর শানে বলেন, তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ হতে এসেছে এক নূর ও স্পষ্ট কিতাব। উক্ত আয়াতে নূর দ্বারা হাবীবে খোদা (ﷺ) এর পবিত্র সত্ত্বাকে বুঝানো হয়েছে।’’ ২৮
➥{রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী : এমদাদুস সুলুক : ৮৫ পৃ. (বাংলায় অনূদিত এটির নাম এরশাদুল মূলুক, মাকতাবায়ে হাকিমুল উম্মত, ইসলামি টাওয়ার, আন্ডার গ্রাউন্ড, বাংলাবাজার)}
(৬৩) দেওবন্দী আলেম মাওলানা আব্দুল মজিদ দরিয়াবাদী তার (তাফসীরে মাজেদী” এর ২/৫০৯ পৃষ্ঠায় সূরা মায়েদা, আয়াত নং ১৫, হাশিয়া নং ৭৩ যা ইসলামিক ফাউন্ডেশন হতে প্রকাশিত) এ বলা হয়েছে-
-‘‘নূরে’র অর্থ হল মুহাম্মদ (ﷺ) এবং “কিতাবুম মুবিন” এর অর্থ হল ঐ কুরআন, যা নবী করীম (ﷺ) এর প্রতি নাযিল করা হয়েছিল। (ইবনে জারীর) ইমাম যুজ্জাজ (رحمة الله) বলেন, নূর হল মুহাম্মদ (ﷺ), কিতাবুম মুবিন হল- আল-কুরআন, কেননা তা হুকুম আহকামকে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে।
(কুরতুবী)’’
(৬৪) আল্লামা ড. শায়খ মুস্তফা জুহাইলীও উক্ত আয়াতের তাফসীরে লিখেন-
قَدْ جاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ هو النبي صلّى الله عليه وسلّم وَكِتابٌ مُبِينٌ قرآن
-‘‘তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে মহান নূর, উল্লেখিত আয়াতে নূর দ্বারা উদ্দেশ্য নবী করীম (ﷺ) এবং কিতাব দ্বারা উদ্দেশ্য কুরআনুল কারীম।’’
(তাফসিরুল মুনীর, ৬/১৩২ পৃ.)
(৬৫) আল্লামা শায়খ তানতাভী তার তাফসিরে লিখেন-
من الله نور هو محمد صلّى الله عليه وسلّم الذي أنار الله به الحق، وأظهر به الإسلام ومحق به الشرك
-‘‘আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে নূর, আর এটি হচ্ছে হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) যার মাধ্যমে আল্লাহ্ তা‘য়ালা সত্যকে আলোকিত করেছেন এবং ইসলামকে জাহির (বিকাশিত) করেছেন এবং শিরকে মিটিয়ে দিয়েছেন।’’
(তাফসিরুল ওয়াসীত, ৪/৯০ পৃ.)
(৬৬) আল্লামা শায়খ আসআ‘দ হুমাদ উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন-
نُورٌ - هُوَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم.
-‘‘উক্ত ‘নূর’ দ্বারা রাসূল(ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে।
(আয়সারুত তাফাসীর, ১/৬৮৫ পৃ. শামেলা)
(৬৭) আহলে হাদিসদের অন্যতম শায়খ জাবের বিন আবু বকর আল-জাযায়েরী এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেন-
النور: محمد صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، والكتاب: القرآن الكريم.
-‘‘আল্লাহর বাণী : তোমাদের নিকট মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে এক মহান নূর। আর সে নূর হলেন হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) আর কিতাবুম মুবিম হলো কুরআন।’’
(আয়সারুল তাফাসির লিকালামিল উলাউল কাবীর, ১/৬১০ পৃ. মাকতুবাতুল উলূম ওয়াল হিকাম, মদিনা মুনোওয়ারা, সৌদি আরব।)
(৬৮) শায়খ আলী বিন নায়েফ শুহুদ এর লিখিত সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থ (بابا الفاتيكان في الميزان) এর ২০ পৃষ্ঠায় লিখেন-
قال تعالى : [ قَدْ جَاءكُمْ مّنَ الله نُورٌ وكتاب مُّبِينٌ ] وفيه أقوال : الأول : أن المراد بالنور محمد ، وبالكتاب القرآن ،
-‘‘আল্লাহর বলেন : তোমাদের নিকট মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে এক মহান নূর এবং প্রকাশ্য কিতাব। এ আয়াতের বিষয়ে কয়েকটি অভিমত থাকলেও প্রথম অভিমত হলো, নূর দ্বারা হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এবং কিতাবুম মুবিম দ্বারা কুরআন উদ্দেশ্য।’’
(৬৯) দেওবন্দী আলেম মাওলানা আবদুল কাদের রচিত তাফসীরে কাদেরীর ১ম খণ্ডের ২১৭ পৃষ্ঠায়ও নূর দ্বারা রাসূল (ﷺ) কে উদ্দেশ্য করেছেন।
(৬৭) মাওলানা আবদুল কাদের দেহলভীর রচিত ‘তাফসীরে মূদ্ধিহুল কোরআন’ এর ১/১০৩ পৃষ্ঠায় ‘নূর’ দ্বারা রাসূল (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে।
(৬৮) শুধু তাই নয় বাংলাদেশের অন্যতম দেওবন্দী আলেম মাওলানা মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম তিনি তার তাফসীরে সুরা মায়েদার ১৫ নং আয়াত-
قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ
-‘‘তোমাদের নিকট আল্লাহ হতে এসেছে নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব।’’ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন-‘‘আলোচ্য আয়াতে ‘নূর’ দ্বারা নূরে মুহাম্মদী (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে।’’ ২৯
➥{আমিনুল ইসলাম,তাফসীর নূরুল কোরআন, ৬/১৬৭ পৃষ্ঠা, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন, বাংলাদেশ।}
খ. তিনি এ আয়াতের অনূরুপ অভিমত পেশ করেন তার লিখা আরেকটি পুস্তকে। যেমন এ আয়াত উল্লেখ করে তিনি বলেন-‘‘এ আয়াতে ‘‘নূর’’ শব্দ দ্বারা হযরত রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে, আর কিতাব দ্বারা পবিত্র কোরআনকে বোঝানো হয়েছে।’’ ৩০
➥{মওলানা আমিনুল ইসলাম, নূরে নবী (দ.), প্রথম খণ্ড, ৫ পৃষ্ঠা, আল বালাগ পাবলিকেশন্স, ঢাকা, জুন, ১৯৯৯ ইং, রবিউল আউয়াল, ১৪২০হি.}
❏ তিনি একই পৃষ্ঠায় লিখেছেন যে-‘‘মূলতঃ পবিত্র কোরআন যেমন নূর, তেমনি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামও নূর।’’ ৩১
➥{মওলানা আমিনুল ইসলাম, নূরে নবী (দ.), প্রথম খণ্ড, (ভূমিকার ৫ পৃষ্ঠা) আল বালাগ পাবলিকেশন্স, ঢাকা, জুন, ১৯৯৯ ইং, রবিউল আউয়াল, ১৪২০হি.}
(৬৯) আহলে হাদিসদের প্রধান মুফতি আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (মৃত. ১৪২০ হি.) তার ফাতওয়ার গ্রন্থে লিখেন-
كما قال الله سبحانه وتعالى: [قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ] هذا النور هو محمد صلى الله عليه وسلم
-‘‘মহান আল্লাহু সুবহানাহু তা‘য়ালা (রাসূল (ﷺ) এর শানে) ইরশাদ করেন, তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে নূর, আর এ আয়াতের নূর যাকে বলা হয়েছে তিনি হচ্ছেন হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)।’’
(ইবনে বায, মাজমূআয়ে ফাতওয়ায়ে ইবনে বায, ২৫/১৩০ পৃ.)
(৭০) আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ মাহমুদ আল-হাজ্জাযিহ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেন-‘‘
قد جاءكم من الله نور هو النبي محمد
-‘‘তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে নূর, আর সে নূর হচ্ছে হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)।’’
(তাফসীরে আল-ওয়াদ্বাহ, ১/৪৯৫ পৃ. দারুল জালীলুল জাদীদ, বয়রুত, লেবানন।)
━━━━━━━━━━━━━━━━
🌍 তথ্যসূত্রঃ [শহিদুল্লাহ বাহাদুর গ্রন্থসমগ্র এপ্স]
ডাউনলোড লিংকঃ bit.ly/Sohidullah
অথবা, এপ্সটি পেতে প্লে স্টোরে সার্চ করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন