কুস্তুনতুনিয়া শহরে প্রথম অভিযান: ৩২ হিজরি (কুস্তুনতুনিয়ার যুদ্ধে এজিদের অন্তর্ভুক্তি)



আমি ইতোপূর্বে আলোচনা করেছি যে, সাগর পথে প্রথম যুদ্ধে এজিদ ছিল না। এমনকি কায়সারের শহর বলতে যদি হিমস বুঝায় সেখানেও এজিদ ছিল না। এখন বাকি থাকল কায়সারের শহর দ্বারা যদি কুস্তুনতুনিয়া বুঝায় তাহলে সেখানে এজিদের অন্তর্ভুক্তি সম্বন্ধে আলোচনা। ইনশায়াল্লাহ আমিপ্রমাণ করব যে, কুস্তুনতুনিয়ার শহরে প্রথম অভিযানেও এজিদ ছিল না। হ্যাঁ পরবর্তীতে ৫০ হিজরির পরে একবার জোরপূর্বক এজিদকে সেখানে প্রেরণ করা হয়েছিল। সে ব্যাপারে আমি পরবর্তীতে আলোচনা করব। আসুন কয়েকটি কিতাব দেখি।


✦ হাফিজ ইবনে কাসির বেদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে বর্ণনা করেন:

ثم دخلت سنة ثنتين وثلاثين- وفيها غزا معاوية بلاد الروم حتى بلغ المضيق مضيق القسطنتنية ومعه زوجته عاتكه-

অর্থ: অতঃপর ৩২ হিজরি শুরু হল। এ বৎসর মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু রোম দেশে অভিযান পরিচালনা করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি কুস্তুনতুনিয়া শহর পর্যন্ত পৌঁছে যান। সে সময় তাঁর স্ত্রী আতিকাহ ও সাথে ছিলেন। (বেদায়া ১০/২৪৩ পৃষ্ঠা)


সম্মানিত পাঠকবর্গ ইবনে কাসিরের উক্ত বর্ণনায় সুষ্পষ্ট বলা হয়েছে যে, ৩২ হিজরিতেই মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু কুস্তুনতুনিয়া পর্যন্ত পৌঁছে যান। সে সময় এজিদ সবেমাত্র ৬ বৎসরের অবুঝ শিশু।


✦ আল্লামা ইবনুল আসির আল কামিল গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন:

ثم دخلت سنة اثنتين وثلاثين- قيل هذه السنة غزا معاوية بن ابى سفيان مضيق القسطنتنية ومعه زوجته عاتكه بنت قرظة-

অর্থ: অতঃপর ৩২ হিজরি শুরু হল। কেউ কেউ বলেছেন এই বৎসর মুয়াবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ান কুস্তুনতুনিয়া শহরে অভিযান পরিচালনা করেন। তখন তাঁর স্ত্রী আতিকাহ বিনতে কুরযাহও তার সাথে ছিলেন। (আল কামিল ৩/২৫ পৃষ্ঠা)


✦ ইমাম আবু জাফর আত তাবারী বর্ণনা করেন:

ثم دخلت سنة اثنتين وثلاثين- فمن ذالك غزوة معاوية بن ابى سفيان المضيق مضيق القسطنتنية ومعه زوجته عاتكه بنت قرظة-

অর্থ: অতঃপর ৩২ হিজরি শুরু হল। এ বৎসরেই মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু কুস্তুনতুনিয়া শহরে অভিযান পরিচালনা করেন। তাঁর সাথে তাঁর স্ত্রী আতিকাহও ছিলেন। (তারিখে তাবারী ৪/৩০৪ পৃষ্ঠা)


✦ ইমাম শামসুদ্দিন যাহাবী স্বীয় তারিখুল ইসলাম গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন:

سنة اثنتين وثلاثين فيها كانت وقعة المضيق بالقرب من قسطنتنية واميرها معاوية-

অর্থ: ৩২ হিজরি সনে কুস্তুনতুনিয়া শহরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ বাহিনীর আমির ছিলেন মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু (তারিখুল ইসলাম। ২/২০২ পৃষ্ঠা)


সম্মানিত পাঠকবর্গ উপরোল্লেখিত আলোচনা দ্বারা দিবালোকের ন্যায় প্রমাণিত হল যে, কুস্তুনতুনিয়া শহরে প্রথম অভিযান হয়েছিল ৩২ হিজরি সনে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু এর নেতৃত্বে। আর এজিদের জন্ম হয়েছে ২৬ হিজরি সনে। অতএব কুস্তুনতুনিয়ার প্রথম অভিযানে এজিদের অন্তুর্ভুক্তি অসম্ভব।

হাফিজ ইবনে কাসির, ইবনুল আসির ইবনুল খালদুন, ইমাম তাবারীসহ সকল মশহুর ঐতিহাসিকগণের বর্ণনা মতে দেখা যায় ৩২ হিজরির পর থেকে ৫০ হিজরি পর্যন্ত প্রায় প্রতি বৎসরেই কুস্তুনতুনিয়া শহরে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু এর কোনটাতেই পাপিষ্ট এজিদের নাম উল্লেখ নেই। তাহলে আসুন আরো কয়েকটি অভিযান পর্যালোচনা করি।


_____________

কিতাব: কুস্তুনতুনিয়ার যুদ্ধে এজিদের অন্তর্ভুক্তি
লেখকঃ হাফিজ মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ ইকরাম উদ্দিন
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন