“হাদীসের নামে জালিয়াতি” গ্রন্থের ৫৮২ পৃষ্ঠায় উক্ত হাদিসটিকে জাল প্রমাণ করার জন্য অনেক অপচেষ্টা চালিয়েছেন।
প্রথম সূত্র:
ইমাম বায়হাকী (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-
أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، أَخْبَرَنِي عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ الْحَافِظُ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْحَافِظُ، حَدَّثَنِي دَاوُدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ التِّرْمِذِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْجُدِّيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَوَّارِ بْنِ مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ قَزَعَةَ، عَنْ رَجُلٍ مِنْ آلِ الْخَطَّابِ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ زَارَنِي مُتَعَمِّدًا كَانَ فِي جِوَارِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ
-“হযরত খাত্তাবের বংশধরের এক ব্যক্তি রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছাপূর্বক আমার জিয়ারত করবে, কিয়ামতের দিন সে আমার প্রতিবেশী হবে।’’ ১৮
➥১৮. ইমাম বায়হাকী : শুয়াবুল ঈমান : ৬/৪৭ পৃ: হা/৩৮৫৬, আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী : লিসানুল মিযান : ৬/১৮০ পৃঃ, ইমাম যাহাবী : মিযানুল ই‘তিদাল, ৪/২৬২ পৃ: রাবী নং : ৯৬৬৫ (উক্ত রাবীর আলোচনায়, খতিব তিবরিযী : মেশকাতুল মাসাবীহ : ২/৫১২ পৃ : হা/২৭৫৫, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : মেরকাত : ৫/৬৩৮ পৃঃ হা/২৭৫৫, ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ৪১৯ পৃঃ হা/১১২৫, আল্লামা আজলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২২৪ পৃঃ হা/২৪৮৭
এ হাদিসেও তিনি হাতেব (رضي الله عنه)-এর বংশের লোকের নাম রাবী ‘হারুন ইবনে কাযা‘আ’ উল্লেখ করেননি, তিনি তাবেয়ী, তাই তার মুরসাল বর্ণনা হিসেবে এটি গ্রহণযোগ্য। আর তিনি সিকাহ তাবেয়ী, যা এ বিষয়ক অষ্টম হাদিসের পর্যালোচনায় বিস্তারিত উল্লেখ করেছি। তাই এটি মুরসাল শক্তিশালী।
দ্বিতীয় সূত্র:
এ হাদিসটির আরেকটি সূত্র রয়েছে, ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) সংকলন করেন-
أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، أَخْبَرَنِي عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ الْحَافِظُ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْحَافِظُ، حَدَّثَنِي دَاوُدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ التِّرْمِذِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْجُدِّيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَوَّارِ بْنِ مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ قَزَعَةَ، عَنْ رَجُلٍ مِنْ آلِ الْخَطَّابِ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ زَارَنِي مُتَعَمِّدًا كَانَ فِي جِوَارِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ
-‘‘তাবেয়ী হারুন ইবনে কুযা‘আহ (رحمة الله) তিনি হযরত উমর (رضي الله عنه)-এর বংশের এক লোকের মাধ্যমে রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন, তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছাপূর্বক আমার জিয়ারত করবে, কিয়ামতের দিন সে আমার প্রতিবেশী হবে।’’ (ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, ৬/৪৭ পৃ. হা/৩৮৫৬, ইবনে হাজার, লিসানুল মিযান, ৮/৩০৯ পৃ. ক্রমিক. ৮২০৬)
এ সনদটির মান ‘হাসান’ পর্যায়ের। তাবেয়ী ‘আবু কুযা‘আহ’ এটি মুরসাল রূপে বর্ণনা করেছেন। ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার গ্রন্থের ৫৮৭ পৃষ্ঠায় এ সূত্রের সবচেয়ে আপত্তিকর দিক হিসেবে রাবী ‘আবূ কুযা‘আহ’ এর ছাত্র ‘সিওয়্যার ইবনে মায়মুন’ কে দোষী করেছেন, তার দাবী তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। আসমাউর রিজাল সম্পর্কে যাদের জ্ঞান আছে তারা জানেন যে ইমাম শু‘বা (رحمة الله) কোনো যঈফ, মাজহুল রাবী থেকে হাদিস বর্ণনা করতেন না, তাহলে তিনি কিভাবে সিওয়্যার থেকে বর্ণনা করলেন!
ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার গ্রন্থের ৫৮৭ পৃষ্ঠায় এ সূত্র সম্পর্কে লিখেছেন-‘‘এ সনদটি প্রথম সনদের চেয়েও দুর্বল।’’ পাঠকবর্গ! এবার আমরা তার গবেষণার বাস্তবতা দেখবো। বায়হাকীর সনদের ‘সিওয়্যার ইবনে মায়মুন’ নামক রাবী সম্পর্কে লিখেন- سَوَّارُ بْنُ مَيْمُونٍ، وَقِيلَ مَيْمُونُ بْنُ سَوَّارٍ -‘‘সিওয়্যার ইবনে মায়মুন কে মুহাদ্দিসগণের কেউ কেউ তাকে মায়মুন ইবনে সিওয়্যারও বলে থাকেন।’’ (বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, ৬/৪৬ পৃ. হা/৩৮৫৫)
বুঝা গেল মুহাদ্দিসগণ তাকে দুই নামেই চিনতেন। বিখ্যাত আসমাউর রিজালবিদ, হাদিসের ইমাম, ইমাম ইবনে হিব্বান (رحمة الله) রাবী ‘মায়মুন ইবনে সিওয়্যার’ কে সিকাহ রাবীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন। (ইমাম ইবনে হিব্বান, কিতাবুস সিকাত, ৯/১৭৩ পৃ. ক্রমিক.১৫৮৩৮)
বুঝা গেল এ রাবী মাজহুল নন বরং সুপরিচিত এবং সিকাহ।
━━━━━━━━━━━━━━━━
🌍 তথ্যসূত্রঃ [শহিদুল্লাহ বাহাদুর গ্রন্থসমগ্র এপ্স]
ডাউনলোড লিংকঃ bit.ly/Sohidullah
অথবা, এপ্সটি পেতে প্লে স্টোরে সার্চ করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন