“হাদীসের নামে জালিয়াতি” গ্রন্থের ৫৮১ পৃষ্ঠায় উক্ত হাদিসটিকে জাল প্রমাণ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন মুহাদ্দিস উক্ত হাদিসটিকে জাল বা বানোয়াট বলেননি। কোন মুহাদ্দিস জাল বলেছেন তার প্রমাণও ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর উলেখ করতে পারেন নি।
প্রথম সূত্র:
ইমাম আবূ দাউদ তায়লসী (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-
حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ قَالَ: حَدَّثَنَا سَوَّارُ بْنُ مَيْمُونٍ أَبُو الْجَرَّاحِ الْعَبْدِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي رَجُلٌ مِنْ آلِ عُمَرَ، عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ زَارَ قَبْرِي أَوْ قَالَ: مَنْ زَارَنِي كُنْتُ لَهُ شَفِيعًا أَوْ شَهِيدًا وَمَنْ مَاتَ فِي أَحَدِ الْحَرَمَيْنِ بَعَثَهُ اللَّهُ فِي الْآمِنِينَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
-‘‘হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী করীম (ﷺ) কে একথা বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আমার রওযা যিয়ারত করবে, তার জন্য আমি শাফায়াতকারী এবং সাক্ষী হব। যে ব্যক্তি দুই হারামাঈন শরীফের মাঝে মৃত্যুবরণ করবে আল্লাহ্ তা‘য়ালা তাকে নিরাপত্তা সহ হাশরে উঠাবেন।’’ ১৭
➥১৭. ইমাম তায়লসী : আল-মুসনাদ : ১/৬৬ পৃ : হা/৬৫, ইমাম বায়হাকী : আস সুনানে কোবরা : ৫/২৪৫ পৃঃ, ইমাম উকাইলী : আদ-দ্বঈফাহ : ৪/৩৬২ পৃঃ ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান : ৬/৪৮ পৃঃ হা/৩৮৫৭, ইমাম তকী উদ্দিন সুবকী : আস-সুনান : ১৫ পৃঃ, ইমাম কাস্তাল্লানী : মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া : ৪/৫৭১ পৃঃ ইমাম জুরকানী : শরহুল মাওয়াহেব : ১২/১৮০ পৃঃ, ইমাম দারেকুতনী : আস সুনান : ১/২১৭ পৃ : হা/২৬৬৮, আল্লামা কাস্তাল্লানী : মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া : ৩/১৮৪ পৃঃ, ইমাম তকি উদ্দিন সুবকী : সিফাউস সিকাম : ১৮ পৃঃ, মোল্লা আলী ক্বারী : শরহে শিফা : ২/১৫০ পৃঃ, কাযী আয়ায : শিফা শরীফ : ২/১০২ পৃঃ, ইমাম আবু ই‘য়ালা : আল-মুসনাদ, আল্লামা আজলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২২৪ পৃঃ হা/২৪৮৭, ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ৪১৯ পৃঃ হা/১১২৫, ইমাম ইবনুল মুলাক্কিন : আল-বদরুল মুনীর : ৬/২৯৮ পৃঃ ইবনে আসাকির, ইত্তাহাফুল যায়েরাহ ওয়াতরাফাল মুকিম, ১/২৩ পৃঃ কেনানী, ইত্তেহাফুল খায়রাত, ৩/২৫৮ পৃঃ হাদিস:২৬৯১।
সনদ পর্যালোচনা:
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! এ হাদিসের সনদের সমস্ত রাবী সিকাহ, শুধু ‘সিওয়্যার ইবনে মায়মুন’ তার শায়খের নাম এখানে প্রকাশ করেননি, কিন্তু এখানে তিনি পরিপূর্ণ গোপনও করেননি, কে হতে পারে তার তিনি আভাসও দিয়েছেন। এই হাদিস সম্পর্কে আল্লামা আবুল আব্বাস বুছুরী কেনানী (رحمة الله) বলেন,
وَلَهُ شَاهِدٌ مِنْ حَدِيثِ سُبَيْعَةَ رَوَاهُ أبو يعلى والطبراني في الكبير بسند صحيح.
-“ইহার জন্য ৭টি হাদিস সাক্ষ্য রয়েছে, ইমাম আবু ইয়ালা (رحمة الله) এবং ইমাম তাবারানী (رحمة الله) তার কবীরে সহীহ্ সনদে বর্ণনা করেছেন।” (ইত্তেহাফুল খাইরাতিল মিহরাত, হাদিস নং ২৬৯১)
দ্বিতীয় সূত্র:
আরেকটি সূত্রে সামান্য শাব্দিক ব্যবধানে ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী (رحمة الله) এভাবে বর্ণনা করেছেন,
حَدَّثَنَا أَبُو مُحَمَّدِ بْنُ حَيَّانَ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ سُلَيْمَانَ الْهَرَوِيُّ، ثنا مُسْلِمُ بْنُ حَاتِمٍ الأَنْصَارِيُّ، ثنا مُسْلِمُ بْنُ سَالِمٍ الْجُهَنِيُّ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ يَعْنِي: الْعُمَرِيَّ حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ جَاءَنِي زَائِرًا لَمْ تَنْزِعْهُ حَاجَةٌ إِلا زِيَارَتِي، كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ أَكُونَ لَهُ شَفِيعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ
-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) ইরশাদ করেন: যে ব্যক্তি আমার কাছে শুধু যিয়ারতের উদ্দেশ্যে আসবে অন্য কোন উদ্দেশ্যে নয়, তাহলে কেয়ামতের দিন তার জন্য শাফায়াত কারী হওয়া আমার জন্য আবশ্যক হয়ে যাবে।” (ইমাম আবু নুয়াইম: তারিখে ইস্পাহান, ২য় খণ্ড, ১৯০ পৃ:)
দুইটি সুত্র মিল হাদিসটি আরো শক্তিশালী হবে। ফলে হাদিসটি সহীহ্ হওয়াতে কোন বাধা থাকবে না। সনদে রাবী ‘মুসলিম বিন সালেম’ রয়েছেন, তিনিও নির্ভরযোগ্য, তাঁর বিষয়ে চতুর্থ হাদিসে আলোকপাত করা হয়েছে।
উক্ত হাদিসের যে দুটি সূত্র রয়েছে তার দুটি সূত্রেই দুর্বলতা ধরে নেওয়া হলেও তার একটি সূত্র অপর সূত্রকে শক্তিশালী করেছে। তাই হাদিসটি লিগাইরিহি হওয়াতে কোনো বাঁধা নেই।
━━━━━━━━━━━━━━━━
🌍 তথ্যসূত্রঃ [শহিদুল্লাহ বাহাদুর গ্রন্থসমগ্র এপ্স]
ডাউনলোড লিংকঃ bit.ly/Sohidullah
অথবা, এপ্সটি পেতে প্লে স্টোরে সার্চ করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন