৭নং হাদিস:
❏ ইমাম আহমদ (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-
حَدَّثَنَا حَسَنٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، حَدَّثَنَا حُيَيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ: يَطَّلِعُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلَى خَلْقِهِ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، فَيَغْفِرُ لِعِبَادِهِ إِلَّا لِاثْنَيْنِ: مُشَاحِنٍ، وَقَاتِلِ نَفْسٍ
-‘‘হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, শাবানের মধ্য রজনীতে আল্লাহ্ তা‘য়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ করুনার দৃষ্টি প্রদান করেন এবং তাঁর সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন, কিন্তু দুই শ্রেণীর মানুষ ব্যতীত। বিদ্বেষ পোষণকারী ও আত্ম হত্যাকারী।’’ ৪৪
➥{(১) ইমাম আহমদ বিন হাম্বল : আল-মুসনাদ : ১১/২১৬ পৃ. হা/৬৬৪২ (২) ইমাম ইবনে মুনযিরী : আত-তারগীব ওয়াত তারহীব : ৪/২৩৯ (৩) খতীব তিবরীজী : মিশকাতুল মাসাবীহ : ২/২৫৫ পৃ. হা/১৩০৭ (৪) ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ : ৮/৬৫ পৃষ্ঠা, হা/১২৯৬১ (৫) মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ৩/৪৬৭পৃ. হা/৭৪৬৫}
সনদ পর্যালোচনা:
❏ উক্ত হাদিস সম্পর্কে আল্লামা হাফেয ইবনে হাজার হাইসামী বলেন-
رَوَاهُ أَحْمَدُ، وَفِيهِ ابْنُ لَهِيعَةَ وَهُوَ لَيِّنُ الْحَدِيثِ، وَبَقِيَّةُ رِجَالِهِ وُثِّقُوا
-‘‘উক্ত হাদিসটি আহমদ বিন হাম্বল (رحمة الله) তার ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে এটি বর্ণনা করেন, উক্ত সনদে ‘ইবনে লাহি‘আহ’ রয়েছেন, তিনি হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে নরম প্রকৃতির, তবে সনদের বাকী সকল রাবী সিকাহ বা বিশ্বস্ত।’’ ৪৫
➥{আল্লামা ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ : ৮/৬৫ পৃষ্ঠা, হা/১২৯৬১}
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! ইবনে লাহি‘আহ’ (ওফাত. ১৭৪ হি.) একজন বিতর্কিত রাবী, মুহাদ্দিসগণের সিদ্ধান্ত হলো তার বর্ণনাকৃত হাদিসের যদি শাওয়াহেদ থাকে তাহলে সেটার মান ‘হাসান’। যেমন-
❏ আল্লামা ইবনে হাজার হাইসামী এ বিষয়ে লিখেন-
فِيهِ ابْنُ لَهِيعَةَ، وَفِيهِ ضَعْفٌ، وَهُوَ حَسَنُ الْحَدِيثِ، وَبَقِيَّةُ رِجَالِهِ ثِقَاتٌ.
-‘‘বর্ণনাকারী ইবনে লাহিয়া কিছুটা দুর্বল হলেও তার বর্ণিত উক্ত হাদিসটি ‘হাসান’ পর্যায়ের।’’ ৪৬
➥{আল্লামা ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ : ৬/৪২ পৃ. হা/৯৮৭৬, হা/১২৩২৪, হা/১২৩৩৪ এবং হা/১৩১৯২}
❏ আল্লামা ইবনে হাজার হাইসামী (رحمة الله) তার বিষয়ে আরও অনেক উপমা তুলে ধরেন যে-
وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ غَيْرَ ابْنِ لَهِيعَةَ، وَهُوَ حَسَنُ الْحَدِيثِ.
-‘‘উক্ত হাদিসের সমস্ত রাবী সহীহ (বুখারী, মুসলিমের ন্যায়) গ্রন্থের ন্যায় সিকাহ বা বিশ্বস্ত, তবে ইবনে লাহিআহ ছাড়া। তার উক্ত হাদিসটি (শাওয়াহেদ থাকায়) ‘হাসান’ পর্যায়ের।’’ ৪৭
➥{ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ : ১০/১৭০ পৃ. হা/১৭৩৪৭}
❏ যেমন তিনি তার কিতাবে আরেক স্থানে লিখেন-
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ، وَفِيهِ ابْنُ لَهِيعَةَ وَهُوَ حَسَنُ الْحَدِيثِ عَلَى ضَعْفِهِ.
-‘‘তাবরানী হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, সনদে ইবনে লাহি‘আহ রয়েছে, তার দুর্বলতাসহ এ হাদিসটি (শাওয়াহেদ থাকায়) হাসান।’’
(হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ : ৭/৩০৭ পৃ. হা/১২৩৫৪)
এ ধরনের বহু উদাহরণ ইমাম হাইসামী (رحمة الله)-এর কিতাব থেকে বহু দেয়া যায়।
(দেখুন-হা/৫১১৪, হা/৫৪৬০, হা/৫৫৭২, হা/৬৫৯৮, হা/৯৪৭০, হা/১০২২৬, হা/১০৭৬২, হা/১১৬৪৫, হা/১১৬৯৫, হা/১২১৩৬, হা/১২৯০০, হা/১৬৪৭৯, হা/১৬৬৪২, হা/১৭২৭৬, হা/১৭৩৪৭, হা/১৭৪০৫, হা/১৭৪৬৬, দারুল কুদ্স, কায়রু, মিশর।)
❏ এ বিষয়ে ইমাম যাহাবী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-
قَالَ حَنْبَلٌ: سَمِعْتُ أَبَا عَبْدِ اللهِ يَقُوْلُ: مَا حَدِيْثُ ابْنِ لَهِيْعَةَ بِحُجَّةٍ، وَإِنِّيْ لأَكْتُبُهُ أَعْتَبِرُ بِهِ، وَهُوَ يَقْوَى بَعْضُهُ بِبَعْضٍ.
-‘‘মুহাদ্দিস আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) বলেন, আমি আমার পিতা আবু আব্দুল্লাহ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله)-কে বলতে শুনেছি, তার একক হাদিস হুজ্জাত নয়, আমি কেবল তার শুধু ঐ হাদিসগুলোই লিপিবদ্ধ করেছি যেগুলো অপর কোনো বর্ণনা দ্বারা শক্তিশালী করেছে।’’ ৪৮
➥{ক.ইমাম যাহাবী, মিযানুল ই‘তিদাল, ২/৪৭৮ পৃ. ক্রমিক.৪৫৩০ এবং সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/১৬ পৃ. ক্রমিক.৪}
❏ তাই ইমাম আহমদ (رحمة الله) শবে বরাতের ইবনে লাহিয়াহ এর হাদিসের অনেক শাওয়াহেদ রয়েছে বিধায় এটি সংকলন করেছেন, যা তাঁর বক্তব্যের সাথে সংকলনের মিল পাওয়া যায়।
❏ এ বিষয়ে আল্লামা ইবনে হাজার হাইসামী অন্য স্থানে এক হাদিসের সনদ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে লিখেন-
وَإِسْنَادُ أَحْمَدَ أَصَحُّ، وَفِيهِ ابْنُ لَهِيعَةَ، وَقَدِ احْتَجَّ بِهِ غَيْرُ وَاحِدٍ.
-‘‘ইমাম আহমদের সনদটি অধিক বিশুদ্ধ, তবে সনদে ‘ইবনে লাহি‘আহ’ নামক রাবী রয়েছেন। আর তাঁর হাদিস দিয়ে মুহাদ্দিসদের একটি দল দলীল গ্রহণ করেছেন।’’ ৪৯
➥{ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ : ১/১৬ পৃ.}
রাবী ইবনে লাহি‘আহ-এর বিষয়ে মুহাদ্দিসদের বক্তব্য:
ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) তার পরিচয় তুলে ধরে বলেন- المصري الفقيه القاضي -‘‘তিনি মিশরের অধিবাসি, কাযি ও ফকীহ ছিলেন।’’
❏ ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার জীবনীতে লিখেন-
القَاضِي، الإِمَامُ، العَلاَّمَةُ، مُحَدِّثُ دِيَارِ مِصْرَ مَعَ اللَّيْثِ
-‘‘তিনি ছিলেন তৎকালীন কাযি, ইমাম, আল্লামা, ইমাম লাইসের সাথে মিশরের মুহাদ্দিস।’’
(ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/১১ পৃ. ক্রমিক.৪)
❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-
وَكَانَ اللَّيْثُ أَكْبَرَ مِنْهُ بِسَنَتَيْنِ.
-‘‘ইমাম লাইস (رحمة الله) ইবনে লাহিয়া (رحمة الله) থেকে দুই বছরের বড় ছিলেন।’’
(ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/১৫ পৃ. ক্রমিক.৪)
❏ তিনি তার আরেক গ্রন্থে লিখেছেন-
عَالِمُ الدِّيَارِ الْمِصْرِيَّةِ وَقَاضِيهَا وَمُفْتِيهَا وَمُحَدِّثُهَا، أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحَضْرَمِيُّ الْمِصْرِيُّ.
-‘‘তিনি ছিলেন মিশরের সম্মানিত আলিমদের একজন, তিনি ছিলেন কাযি, মুফতী, মুহাদ্দিস, তার উপনাম আবূ আব্দুর রহমান হাদ্বরামী, তিনি মিশরের অধিবাসী ছিলেন।’’
(যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৪/৬৬৮ পৃ. ক্রমিক. ১৫৯)
১. উক্ত রাবী সম্পর্কে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) বলেন,
وقال ابن شاهين قال أحمد بن صالح بن لهيعة ثقة وما روى عنه من الأحاديث فيها تخليط يطرح ذلك التخليط
-‘‘ইমাম ইবনে শাহীন (رحمة الله) এবং ইমাম আহমদ ইবন ছালেহ (رحمة الله) বলেন, ‘ইবনে লাহি‘আহ’ বর্ণনাকারী হিসেবে সিকাহ বা বিশ্বস্ত। তবে তার থেকে বর্ণিত হাদিসগুলো সংমিশ্রিত আছে (অর্থাৎ- সহীহ, হাসান, দ্বঈফ সব মিলিয়েই রয়েছে)।’’ ৫০
➥{ইবনে হাজার আসকালানী : তাহযীবুত তাহযীব : ৫/৩৩১ পৃ.}
২. ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার জীবনীতে লিখেন-
أَبُو الطَّاهِرِ بنُ السَّرْحِ: سَمِعْتُ ابْنَ وَهْبٍ يَقُوْلُ: حَدَّثَنِي -وَاللهِ- الصَّادِقُ البَارُّ عَبْدُ اللهِ بنُ لَهِيْعَةَ.
-‘‘ইমাম ইবনে ওয়াহাব (رحمة الله) বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আব্দুল্লাহ ইবনে লাহিয়া হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে সত্যবাদী এবং সৎ ব্যক্তি।’’ ৫১
➥{ক.ইমাম যাহাবী, মিযানুল ই‘তিদাল, ২/৩৬৮ পৃ. ক্রমিক.৪৯০৭
খ.ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযীবুত-তাহযীব, ৫/৩২৯ পৃ.
গ. যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/১১ পৃ. ক্রমিক.৪}
৩. ইমাম যাহাবী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-
قَالَ ابْنُ حِبَّانَ: كَانَ ابْنُ لَهِيعَةَ شَيْخًا صَالِحًا
-‘‘ইমাম ইবনে হিব্বান (رحمة الله) বলেন, তিনি ছিলেন হাদিসের শায়খ, হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে তিনি একজন সৎ বর্ণনাকারী।’’ ৫২
➥{ক.ইমাম যাহাবী, মিযানুল ই‘তিদাল, ২/৩৬৮ পৃ. ক্রমিক.৪৯০৭ এবং তারিখুল ইসলাম, ৪/৬৬৮ পৃ. ক্রমিক. ১৫৯}
❏ ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন- وقال بن حبان كان صالح -‘‘ইমাম ইবনে হিব্বান (رحمة الله) বলেন, তিনি সৎ ব্যক্তি।’’
(ইবনে হাজার, তা‘রিফু আহলিল তাকদীস, ৫৪ পৃ. ক্রমিক. ১৪০)
৪. বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম আবু দাউদ বলেন,
وَقَالَ أَبُو دَاوُدَ: سَمِعْتُ أَحْمَدَ بنَ حَنْبَلٍ يَقُوْلُ: مَا كَانَ مُحَدِّثَ مِصْرَ، إِلاَّ ابْنُ لَهِيْعَةَ.
-‘‘আমি ইমাম আহমদ (رحمة الله) কে বলতে শুনেছি, মিশরের মধ্যে (তৎকালিন সময়ে) ‘ইবনে লাহিয়া’ ছাড়া কোনো মুহাদ্দিস ছিল না।’’ ৫৩
➥{ক.ইমাম যাহাবী, মিযানুল ই‘তিদাল, ২/৪৭৮ পৃ. ক্রমিক.৪৫৩০ এবং সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/১১ পৃ. ক্রমিক.৪ এবং তারিখুল ইসলাম, ৪/৬৬৮ পৃ. ক্রমিক. ১৫৯}
৫. ইমাম যাহাবী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-
وَقَالَ زَيْدُ بنُ الحُبَابِ: قَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ: عِنْدَ ابْنِ لَهِيْعَةَ الأُصُولُ، وَعِنْدَنَا الفُرُوْعُ.
-‘‘ইমাম সুফিয়ান সাওরী (رحمة الله) বলেন, ইবনে লাহি‘আহ এর নিকট ছিল اصول বা হাদিসের মূল ভিত্তি (কারণ তিনি ছিলেন মিশরের কাযি বা বিচারপতি), আর আমাদের নিকট হল তাঁর শাখা-প্রশাখা।’’ ৫৪
➥{ইমাম যাহাবী, মিযানুল ই‘তিদাল, ২/৪৭৮ পৃ. ক্রমিক.৪৫৩০ এবং সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/১১ পৃ. ক্রমিক.৪ এবং তারিখুল ইসলাম, ৪/৬৬৮ পৃ. ক্রমিক. ১৫৯}
৬. ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) লিখেন-
قلت قال الحاكم استشهد به مسلم في موضعين
-‘‘আমি (ইবনে হাজার) বলি, ইমাম হাকেম (رحمة الله) বলেন, ইমাম মুসলিম (رحمة الله) তার হাদিস সহীহ মুসলিমের সাক্ষ্য হিসেবে দুটি সংকলন করেছেন।’’
(ইবনে হাজার, তাহযিবুত তাহযিব, ৫/৩৭৭ পৃ. ক্রমিক. ৬৪৮, ইমাম মুগলতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৮/১৪৩ পৃ. ক্রমিক. ৩১৫০)
❏ ইমাম হাকেম (رحمة الله) তার হাদিস সহীহ হিসেবে ১০০টির বেশী সনদে তার ‘আল-মুস্তাদরাকে’ এনেছেন, একটি সনদ প্রসঙ্গে ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার সাথে একমত পোষণ করে লিখেছেন- استشهد به مسلم -‘‘ইমাম মুসলিম (رحمة الله) সহীহ মুসলিমে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।’’
(যাহাবী, তালখীছ, হা/৭৩৭-এর আলোচনা।)
৭. ইমাম যাহাবী (رحمة الله)সহ অনেক মুহাদ্দিস তার জীবনীতে উল্লেখ করেছেন-
وَعَنْهُ: حَفِيْدُهُ؛ أَحْمَدُ بنُ عِيْسَى بنِ عَبْدِ اللهِ، وَعَمْرُو بنُ الحَارِثِ، وَالأَوْزَاعِيُّ، وَشُعْبَةُ، وَالثَّوْرِيُّ
-‘‘তার থেকে হাদিস বর্ণনা করতেন, .....ইমাম আওযায়ী, ইমাম শু‘বা, ইমাম সুফিয়ান সাওড়ী (رحمة الله)।’’
(যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/১১ পৃ. ক্রমিক.৪)
নির্ভরযোগ্য সকল হাদিস গবেষক মুহাদ্দিসদের নিকট একটি বিষয় সুস্পষ্ট যে, ইমাম শু‘বা ইবনে হাজ্জাজ (رحمة الله) কোন যঈফ রাবী থেকে হাদিস বর্ণনা করতেন না। বুঝা গেল ইবনে লাহিয়াহ তাঁর নিকট সিকাহ ছিল।
৮. ইমাম যাহাবী (رحمة الله) লিখেন-
لاَ رَيْبَ أَنَّ ابْنَ لَهِيْعَةَ كَانَ عَالِمَ الدِّيَارِ المِصْرِيَّةِ، هُوَ وَاللَّيْثُ مَعاً، كَمَا كَانَ الإِمَامُ مَالِكٌ فِي ذَلِكَ العَصْرِ عَالِمَ المَدِيْنَةِ، وَالأَوْزَاعِيُّ عَالِمَ الشَّامِ، وَمَعْمَرٌ عَالِمَ اليَمَنِ، وَشُعْبَةُ وَالثَّوْرِيُّ عَالِمَا العِرَاقِ، وَإِبْرَاهِيْمُ بنُ طَهْمَانَ عَالِمَ خُرَاسَانَ
-‘‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, মিশরের মধ্যে তৎকালিন সময়ে ইবনে লাহিয়াহ এবং তাঁর সাথে ইমাম লাইস (رحمة الله) বিজ্ঞ আলিম ছিলেন, এমনিভাবে ইমাম মালেক (رحمة الله) তাঁর যুগে ছিলেন মদিনায়, ইমাম আওযায়ী (رحمة الله) শামে, মা‘মার ছিলেন ইয়ামানে, ইমাম শু‘বা (رحمة الله) এবং সুফিয়ান সাওড়ী (رحمة الله) ছিলেন ইরাকে, উবরাহিম তাহমান (رحمة الله) ছিলেন খুরাসানে।’’
(ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/১৮ পৃ. ক্রমিক.৪)
৯. ইমাম যাহাবী (رحمة الله) আরও লিখেন-
قَالَ أَبُو دَاوُدَ: عَنْ أَحْمَدَ: مَا كَانَ مُحَدِّثَ مِصْرَ، إِلاَّ ابْنُ لَهِيْعَةَ.
-‘‘ইমাম আবু দাউদ (رحمة الله) ইমাম আহমদ (رحمة الله) হতে বর্ণনা করেন, মিশরে ইবনে লাহি‘আহ ছাড়া (তাঁর যামানায়) কোন মুহাদ্দিস ছিল না।’’
(যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/১৩ পৃ. ক্রমিক.৪)
১০. লিখেন-
قَالَ ابْنُ عَدِيٍّ : أَحَادِيْثُه أَحَادِيْثٌ حِسَانٌ، مَعَ مَا قَدْ ضَعَّفُوهُ، فَيُكْتَبُ حَدِيْثُهُ
-‘‘ইমাম ইবনে আদী (رحمة الله) বলেন, তার সামান্য দুর্বলতাসহ তার হাদিসের মান ‘হাসান’, অতএব আমরা তাঁর হাদিস লিপিবদ্ধ করতাম।’’
(যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ক্রমিক. ৮/২২ পৃ. ক্রমিক.৪)
১১. ইমাম যাহাবী (رحمة الله) লিখেন- قَالَ أَبُو حَاتِمٍ: لا بَأْسَ بِهِ -‘‘ইমাম আবু হাতেম (رحمة الله) বলেন, তার হাদিস গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই।’’
(যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৪/৬৬৮ পৃ. ক্রমিক. ১৫৯)
১২. ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله) তার ‘তা‘কিবাত’ গ্রন্থে লিখেছেন ইমাম মুসলিম (رحمة الله) তাঁর সহীহ মুসলিমে তার হাদিস মুতাবা‘আত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এমনকি আহলে হাদিসের অন্যতম গুরু নাসিরুদ্দিন আলবানী তার ‘সিলসিলাতুল আহাদিসুস সহীহাহ’ গ্রন্থে একে নির্ভরযোগ্য হাদিসে তালিকায় স্থান দিয়েছেন।
(আলবানী, ‘সিলসিলাতুল আহাদিসুস সহীহাহ, ৪/৮৬ পৃষ্ঠা, হা/১৫৬৩) তাই এ হাদিসটির মান কমপক্ষে ‘হাসান’ তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
৮নং হাদিস:
❏ ইমাম ইবনে মাযাহ (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-
حَدَّثَنَا رَاشِدُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ رَاشِدٍ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنْ ابْنِ لَهِيعَةَ، عَنْ الضَّحَّاكِ بْنِ أَيْمَنَ، عَنْ الضَّحَّاكِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَرْزَبٍ عَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ اللَّهَ لَيَطَّلِعُ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلَّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ -
-‘হযরত আবু মুসা আল আশ‘আরী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘য়ালা শাবানের ১৫ তারিখ রাতে সমস্ত সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকান এবং তাদের ক্ষমা করেন, হ্যা তবে মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত।’’ ৫৫
➥{ইমাম ইবনে মাজাহ : ১/৪৪৫ পৃ. হাদিস, ১৩৯০ (২) ইমাম আবু বকর কেনানী : মিসবাহুজ জুযযায়াহ্ : ১/৪৪৬ : হা/৪৮৭ (৩) বায়হাকী : শুয়াবুল ঈমান : ৩/৩৮২ পৃ. (৪) ইমাম বায়হাকী : ফাযায়েলে ওয়াক্ত : ১/১৩২ পৃ. হাদিস, ২৯ (৫) খতিব তিবরিযী : মিশকাতুল মাসাবীহ : ১/৪০৯পৃ. : হা/১৩০৬ (৬) মোল্লা আলী ক্বারী, মিরকাত, ৩/৩৪৮ পৃ. (৭) ইবনে মুনযিরী, আত্-তারগীব ওয়াত তারহীব, ৪/২৪০পৃ. (৮-৯) মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১২/৩১৫ পৃ. হা/৩৫১৮২ ও ১২/৩১৩পৃ. হা/৩৫১৭৪, (১০) যায়লাঈ, তাখরীজে আহাদিসুল আছার, ৩/২৬৫পৃ. (১১) ইবনে কাসির, জামিউল মাসানীদ ওয়াল সুনান, ১০/২৮২ পৃ. হা/১৩০৭৬, (১২) ইবনে হাজার হাইসামী, মাযমাউয যাওয়াইদ, ৮/৬৫ পৃ. হা/১২৯৬০ (১৩) কেনানী, মিসবাহুয্যুজ্জাহ, ২/১০পৃ. হাদিস, ৮০ (১৪) শায়খ ইউসুফ নাবহানী, ফতহুল কাবীর, ১/৩২১ পৃ. হা/৩৪৬২, (১৫) মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১২/৩১৩পৃ. হা/৩৫১৭১ (১৬) সুয়ূতি, জামেউস সগীর, ১/২৭০০পৃ. হাদিস, ২৭০০ (১৭) আলবানী, সহিহুল জা‘মে, হা/১৮১৯ ও ৭৭১, ১৮৯৮, তিনি বলেন, সনদটি ‘হাসান’, সিলসিলাতুল আহাদিসুল সহীহা, হা/১১৪৪}
সনদ পর্যালোচনা
❏ এ হাদিসের সনদটিও উপরের সনদের ন্যায় ‘হাসান’ পর্যায়ের। তবে আহলে হাদিসের অন্যতম আলেম মোবারকপুরী লিখেছেন-
قُلْتُ فِي سَنَدِ حديث أبي موسى الأشعري عند بن ماجه بن لَهِيعَةَ وَهُوَ ضَعِيفٌ
-‘‘আমি বলি, হযরত আবূ মূসা আশ‘আরী (رحمة الله)-এর বর্ণনা যা ইমাম ইবনে মাযাহ (رحمة الله) সংকলন করেছেন তা রাবী ‘ইবনে লাহি‘আহ’ এর কারণে যঈফ।’’ ৫৬
➥{মোবারকপুরী : তুহফাতুল আহওয়াজী : ৩/৩৬৬ পৃ.)}
ইবনে লাহি‘আ-এর হাদিসের গ্রহণযোগ্যতা ‘হাসান’, এ বিষয়ে ইতোপূর্বের হাদিসের আলোচনায় বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে, পাঠকবৃন্দের সেখানে দেখে নেয়ার অনুরোধ রইল।
৯নং হাদিস:
أَخْبَرَنَا أَبُو طَاهِرٍ الْفَقِيهُ، أَخْبَرَنَا أَبُو حَامِدِ بْنُ بِلَالٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْأَحْمَسِيُ، حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ، عَنِ الْأَحْوَصِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنِ الْمُهَاصِرِ بْنِ حَبِيبٍ، عَنِ مَكْحُولٍ، عَنْ أَبِي ثَعْلَبَةَ أَنَّ النَّبِيَّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ:يَطَّلِعُ اللَّهُ إِلَى عِبَادِهِ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، فَيَغْفِرُ لِلْمُؤْمِنِينَ وَيُمْهِلُ الْكَافِرِينَ، وَيَدَعُ أَهْلَ الْحِقْدِ لِحِقْدِهِمْ حَتَّى يَدْعُوهُ-
-‘‘হযরত আবু ছালাবাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। প্রিয় নবী (ﷺ) ইরশাদ করেন, আল্লাহ্ স্বীয় বান্দাদের প্রতি শাবানের মধ্য রজনীতে (শবে বরাত) করুনা ভরা হৃদয়ে ক্ষমার দৃষ্টিতে তাকান, ফলে মুমিনদের ক্ষমা করে দেন এবং কাফিরদেরকে ঈমান আনার সুযোগ দেন, আর হিংসুকদেরকে তাদের হিংসার মাঝে ছেড়ে দেন, যতক্ষণ না তারা তাদের হিংসা বিদ্বেষ ত্যাগ করে।’’ ৫৭
➥{ইমাম বায়হাকী : সুনানে সগীর : ২/১২২পৃ. : হা/১৪২৬ (২) ইমাম মুনযিরী : আত-তারগীব ওয়াত তারহীব : ৪/২৪০ পৃ. হা/২২ (৩) ইমাম বায়হাকী : ফাযায়েলে ওয়াক্ত : ১/পৃ- ১২০ : হা/২৩ (৪) ইমাম বায়হাকী : শুয়াবুল ঈমান : ৫/৩৫৯ পৃ. হা/৩০৫৫১ (৫) ইমাম তাবরানী : মু‘জামুল কাবীর, (৬) ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ : ৮/৬৫ পৃষ্ঠা, হা/১২৯৬২ (৭) আবি আছিম, আস্-সুন্নাহ, ১/২২৩পৃ. হা/৫১১ (৮) শায়খ ইউসুফ নাবহানী, ফতহুল কাবীর, ১/১৩৮পৃ. হা/১৪১৭ (৯) মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ৩/৪৬৪পৃ. হাদিস, ৭৪৫১ (১০) ও ১২/৩১৫ পৃ. হাদিস, ৩৫১৮৩ (১১) সুয়ূতি, জামেউস সগীর, ১/৭৭৩পৃ, হা/৭৭৩ (১২) ও তাঁর জামিউল আহাদিস, ৩/৪৮৩ পৃ. হা/২৬২০ ও ৮/২৭২ পৃ. হা/৭২৮৩ (১৩) ইবনে কূনী, আল-মুসনাদ, ১/১৬০ পৃ. (১৪) ইবনে কাসীর, জামিউল মাসানীদ ওয়াল সুনান, ৭/৫৩০ পৃ. হা/৯৬৯৬ (১৫) ইবনে হাজার আসকালানী, ইত্তিহাফুল মুহরাহ, ১৩/২৮৩ পৃ. হাদিস, ১৬৭২৯ (১৬) সালিম র্জারার, ইমা ইলা যাওয়াইদ, ৬/১২৫ পৃ. হাদিস, ৫৩৮৫ (১৭) আলবানী, সহীহাহ, ৪/৮৬ পৃ. হা/১৫৬৩, তিনি বলেন, সনদটি ‘হাসান’।}
সনদ পর্যালোচনা:
❏ উক্ত হাদিস সম্পর্কে আল্লামা ইবনে হাজার হাইসামী (رحمة الله) বলেন,
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ، وَفِيهِ الْأَحْوَصُ بْنُ حَكِيمٍ وَهُوَ ضَعِيفٌ.-
-‘‘ইমাম তাবরানী (رحمة الله) হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, উক্ত সনদে ‘আহওয়াছ ইবনে হাকীম’ তিনি দুর্বল রাবী।’’ ৫৮
➥{আল্লামা নুরুদ্দীন ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ : ৮/৬৫ পৃ.}
আমি বলবো, ইমাম হাইসামী (رحمة الله)-এর একক সিদ্ধান্ত বাস্তবতার বিপরীত, কেননা অনেক ইমাম তাকে সিকাহ বা বিশ্বস্ত বলেছেন।
❏ আল্লামা মুগলতাঈ (رحمة الله) লিখেন-
وفي كتاب الثقات لابن خلفون
-‘‘ইমাম ইবনে খালফুন (رحمة الله) তাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন।’’
(মুগলতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৪/১২৩ পৃ. ক্রমিক.১৩১৭, ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ২/৪৫০ পৃ. ক্রমিক.৭৮২)
❏ ইমাম ইজলী (ওফাত. ২৬১ হি.) লিখেন-
الْأَحْوَص بن حَكِيم شَامي لَا بَأْس بِهِ
-‘‘তিনি শাম দেশের অধিবাসী ছিলেন, তাঁর হাদিস গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই।’’
(ইজলী, তারিখুস সিকাত, ১/২১৩ পৃ. ক্রমিক.৫০, ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল, ২/২৯২ পৃ. ক্রমিক.২৮৭)
❏ ইমাম ইবনে আবি হাতেম (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন- وكان ثقة. -‘‘তিনি সিকাহ বা বিশ্বস্ত ছিলেন।’’
(ইবনে আবি হাতেম, জারহু ওয়া তা‘দীল, ২/৩২৭ পৃ. ক্রমিক. ১২৫২)
❏ তবে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন- وقال أبو حاتم لا بأس به -‘‘ইমাম আবু হাতেম (رحمة الله) বলেন, তার হাদিস গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই।’’
(ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ২/৪৫০ পৃ. ক্রমিক.৭৮২)
❏ ইমাম ইবনে সা‘দ (ওফাত. ২৩০ হি.) বলেন-
وكان معروفًا قليل الحديث. وهو أبو الأحوص بن حكيم الشامي.
-‘‘তিনি খুব পরিচিত মুহাদ্দিস, তবে তিনি খুব কম হাদিস বর্ণনা করতেন,......তিনি শাম (সিরিয়া) দেশের অধিবাসী ছিলেন।’’
(আত-তবকাতুল কোবরা, ক্রমিক.৭/৩১৩ পৃ. ক্রমিক. ৩৮৪৮)
❏ ইমাম ইবনে আদী বলেন-
قَالَ عَلِيّ وسمعت يَحْيى بْنَ سَعِيد يَقُولُ عندي ثقة.
-‘‘মুহাদ্দিস আলী ইবনে মাদীনী (رحمة الله) বলেন, আমি ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ (رحمة الله) কে বলতে শুনেছি, আমার নিকট আহওয়াছ সিকাহ রাবী।’’
(ইবনে আদী, আল-কামিল, ২/১১৩ পৃ. ক্রমিক. ২২৮, ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল, ২/২৯২ পৃ. ক্রমিক.২৮৭)
❏ ইমাম মিয্যী (رحمة الله) আরও উল্লেখ করেন-
وَقَال في موضع آخر : والأَحوص ثقة.
-‘‘ইমাম আলী ইবনে মাদীনী (رحمة الله) থেকে আরেক সূত্র রয়েছে যে, তিনি বলেন, আহওয়াছ রাবী হিসেবে বিশ্বস্ত।’’
(ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল, ২/২৯২ পৃ. ক্রমিক.২৮৭)
❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-
وَقَال يعقوب بْن سفيان : كان - زعموا - رجلا، عابدا، مجتهدا
-‘‘মুহাদ্দিস ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান (رحمة الله) বলেন, আমার ধারণা তিনি আবেদ (ইবাদত পরায়ন), মুজতাহিদ ব্যক্তি ছিলেন।’’
(ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল, ২/২৯২ পৃ. ক্রমিক.২৮৭)
কোনো রাবী হাদিসে অত্যন্ত দুর্বল হলে তিনি কখনো মুজতাহিদ হতে পারে না।
❏ শুধু তাই নয় তিনি আরও উল্লেখ করেন-
وَقَال الدَّارَقُطْنِيُّ: يعتبر به إذا حدث عنه ثقة. وَقَال أبو أحمد بْن عدي : له روايات ، وهو ممن يكتب حديثه، وقد حدث عنه جماعة من الثقات
-‘‘ইমাম দারাকুতনী (رحمة الله) বলেন, তাঁর সে হাদিসের উপর নির্ভর করা হবে যে হাদিস তার থেকে সিকাহ বা বিশ্বস্ত রাবীর মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন। ইমাম আবু আহমদ ইবনে আদী (رحمة الله) বলেন, তার হাদিস আমরা লিপিবদ্ধ করতাম, তাঁর থেকে এক জামাত বিশ্বস্ত মুহাদ্দিস হাদিস বর্ণনা করেছেন।’’
(ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল, ২/২৯৩ পৃ. ক্রমিক.২৮৭)
আমাদের কতিপয় ভাই তাকে হেফ্যে বা স্মরণশক্তিতে ক্রুটি ছিল বলে উল্লেখ করে থাকেন। যেমন- বলে থাকেন,
❏ ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) লিখেছেন-
ضعيف الحفظ من الخامسة وكان عابدا
-‘‘তাঁর দুর্বলতা হেফযে বা স্মরণশক্তিতে, তবে তিনি আবেদ ব্যক্তি ছিলেন।’’
(ইবনে হাজার, তাক্বরীবুত তাহযিব, ৯৬ পৃ. ক্রমিক.২৯০)
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আমি এ কিতাবের শুরুতে আলোকপাত করেছি যে, কোন রাবীর হেফ্যে সামান্য ক্রটি বা দুর্বলতা থাকলে তার হাদিসের মান ‘হাসান’ স্তরের বলা হবে। তাই এটির মান সেই হিসেবেই কমপক্ষে ‘হাসান’ বলা উচিত ছিল তাদের, কিন্তু আহলে হাদিসগণ কি তাই বলেছেন! এ সনদ শক্তিশালী তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ইমাম হাইসামী (رحمة الله)-এর তাহকীক ভুল।
❏ আহলে হাদিসের অন্যতম আলেম মোবারকপুরী ইমাম মুনযিরের বক্তব্যকে এভাবে উলেখ করেন-
قَالَ الْبَيْهَقِيُّ وَهُوَ أَيْضًا بَيْنَ مَكْحُولٍ وَأَبِي ثَعْلَبَةَ مُرْسَلٌ جَيِّدٌ
-‘‘ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) উক্ত হাদিস সম্পর্কে বলেন, উক্ত সনদটি মুরসাল, তবে শক্তিশালী।’’ ৫৯
➥{মোবারকপুরী : তুহফাতুল আহওয়াজী : ৩/৩৬৫ পৃ. হা/৭৩৯, ইমাম মুনযির : আত-তারগীব ওয়াত তারহীব : ৪/২৪০ পৃ.}
━━━━━━━━━━━━━━━━
🌍 তথ্যসূত্রঃ [শহিদুল্লাহ বাহাদুর গ্রন্থসমগ্র এপ্স]
ডাউনলোড লিংকঃ bit.ly/Sohidullah
অথবা, এপ্সটি পেতে প্লে স্টোরে সার্চ করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন