মি‘রাজের রজনীতে রাসূল (ﷺ)-এর তাশাহহুদ লাভের ঘটনা



ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার ‘হাদীসের নামে জালিয়াতি গ্রন্থের ৩৫৪ পৃষ্ঠায় তাশাহুদের একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন, অথচ ঘটনাটিই বিশুদ্ধ উল্লেখ করতে সক্ষম হননি। সে ঘটনা বর্ণনা করে লিখেছে-‘‘এই গল্পটির কোনো ভিত্তি আছে বলে জানা যায় না।’’


উক্ত মিথ্যা বক্তব্যের জবাব:


এটা স্বাভাবিক যে, যার যতটুকু জ্ঞান সে ততটুকু জানতে পারেন। আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছার পর প্রথমে নবী করীম (ﷺ) আল্লাহর প্রশংসা করলেন এভাবে-

التَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ

-‘‘আমার জবান, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ও ধন-সম্পদ দ্বারা যাবতীয় প্রশংসা ইবাদত আল্লাহর জন্য হাদিয়া স্বরূপ পেশ করছি।’’ এর উত্তরে আল্লাহ্ তা‘য়ালা প্রিয় নবীকে সালাম দিয়ে বললেন-

السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

অর্থ: হে আমার প্রিয় নবী,  তোমার প্রতি আপনার সালাম, রহমত ও বরকত সমূহ বর্ষিত হোক।’


উক্ত সালামের জবাবে নবী করীম (ﷺ) আরজ করলেন, 

السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللّٰهِ الصَّالِحِينَ

অর্থ: হে আল্লাহ! তোমার সালাম আমি ও আমার গুনাহগার উম্মতের উপর এবং তোমার অন্যান্য নেককার বান্দাদের উপরও বর্ষিত হোক।’


আল্লাহ্ ও আল্লাহর রাসূলের এই সালাম বিনিময়ের কৌশলপূর্ণ উক্তি ও ভালোবাসার নমুনা এবং জিবরাঈল সহ আকাশের মোর্কারাবীন ফেরেস্তাগণ সমস্বরে বলে উঠলেন-

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللّٰهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

উক্ত ঘটনাটি রাসূল (ﷺ) এর সীরাত সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ, মা‘আরিজুন নবুয়্যত” এর ৩য় খণ্ডের ১৪৯ নং পৃষ্ঠায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরকে তা পড়ার জন্য অনুরোধ থাকবে।


❏ বিশ্ববিখ্যাত ফকীহ আল্লামা ইমাম আল্লামা আলাউদ্দিন হাসকাফী (رحمة الله) ‘দুররুল মুখতার’ গ্রন্থে প্রথম খণ্ডের كيفية الصلوة  শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণনা করেন,

وَيَقْصِدُ بِأَلْفَاظِ التَّشَهُّدِ الْإِنْشَاءَ كَأَنَّهُ يُحَيِّي اللَّهَ تَعَالَى وَيُسَلِّمُ عَلَى نَبِيِّهِ وَعَلَى نَفْسِهِ

-“নামাযে তাশাহহুদ এর শব্দগুলি উচ্চারণ করার সময় নামাযীর এ নিয়ত থাকা চাই যে, কথাগুলো যেন তিনি নিজেই বলেছেন, তিনি নিজেই যেন আপন প্রতিপালকের প্রতি শ্রদ্ধার্য নিবেদন করেছেন ও নবী (ﷺ) প্রতি সালাম পেশ করছেন।


❏ এ ইবারতের ব্যাখ্যায় ফাতাওয়ায়ে শামীতে বলা হয়েছে-

أَيْ لَا يَقْصِدُ الْإِخْبَارَ، وَالْحِكَايَةَ عَمَّا وَقَعَ فِي الْمِعْرَاجِ مِنْهُ - ﷺ- وَمِنْ رَبِّهِ سُبْحَانَهُ وَمِنْ الْمَلَائِكَةِ  عَلَيْهِمْ السَّلَامُ

-‘‘তাশাহহুদ পাঠের সময় নামাযীর যেন এ নিয়ত না হয় যে, তিনি শুধু মাত্র মি‘রাজের অলৌকিক ঘটনাটি স্মরণ করে সে সময় মহাপ্রভু আল্লাহ, হুযূর (ﷺ) ও ফিরিশতাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত কথোপকথন এর বাক্যগুলোই আওড়িয়ে যাচ্ছেন এবং তার নিয়ত হবে কথাগুলো যেন তিনি নিজেই বলেছেন। (ফতোয়ায়ে শামী ১ম খণ্ড, ৫১০ পৃ.)।


তাই অতএব প্রমাণিত হল তাশাহুদ মিরাজের রজনীতেই লাভ হয়েছে। যা বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাব ফতোয়ায়ে শামী ও দুররুল মুখতার গ্রন্থ দ্বারা প্রমাণ হলো।

━━━━━━━━━━━━━━━━
🌍 তথ্যসূত্রঃ [শহিদুল্লাহ বাহাদুর গ্রন্থসমগ্র এপ্স]
ডাউনলোড লিংকঃ bit.ly/Sohidullah
অথবা, এপ্সটি পেতে প্লে স্টোরে সার্চ করুন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন