সম্রাট শাহজাহান এবং কদমরছুল
**************
নদীবহুল বঙ্গদেশে সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে বিরাট নৌবহর নিয়ে সেনাপতি নিযুক্ত
হয়ে এসেছিলেন ইহতিমাম খাঁন । ইহতিমাম খাঁন কুমিল্লা জেলার সরাইল গ্রামে
প্রাণত্যাগ করার পর তাঁকে কদমরছুল দরগাহ প্রাঙ্গণে কবরস্থ করা হয় ।
পরবর্তীকালে ইহতিমাম খানের পুত্র মির্জা নাথান নৌসেনাপতি নিযুক্ত হয়ে আসেন
বঙ্গদেশে । মির্জা নাথান প্রথম হাজীগঞ্জের কেল্লা বা দূর্গ পরে শীতলক্ষ্যা নদী পার
হয়ে কদমছুল আক্রমণ করে সােনারগাঁ অভিমুখে ধাবিত হন এবং সােনারগাঁও দখল
করেন। মির্জা নাথানকে নৌসেনাপতি হিসাবে এদেশের তৎকালীন অনেক কিছু
দেখতে হয়েছে । তাহাদের দেখা এবং কর্মবহুল জীবনে অনেক ঘটনা ফার্সী ভাষায়
লিখিত 'বাহারিস্তানে গায়েবী' নামক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
লাইব্রেরী এবং বাংলা একাডেমী লাইব্রেরীতে যথাক্রমে উক্ত পুস্তকের ইংরেজী ও
লিখিত বাংলা অনুবাদ পাওয়া যায় ।
মােগল রাজধানী দিল্লীতে গুজব রটেছিল সম্রাট জাহাঙ্গীরের কনিষ্ঠ পুত্র জাহাঙ্গীরের
স্ত্রী বেগম নুরজাহানের পূর্বের স্বামী শের আফগানের কন্যার সঙ্গে পরিণয় হওয়ায়
শাহরিয়ারই দিল্লীর সিংহাসনে আরােহণ করিবেন । শাহজাদা খুররম (শাহজাহান)
তখন দাক্ষিণাত্যের সুবেদার । তিনি শ্বশুরের (আসাফুদৌলার) পরামর্শে দাক্ষিণাত্য
থেকে পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘােষণা করেন।
শাহ জাহান বাংলা বিহার উড়িষ্যার রাজধানী জাহাঙ্গীর নগরে (ঢাকা) আসেন । এই
অঞ্চলে সিংহাসন আরােহনের সমর্থন লাভের জন্য ৭ (সাত) দিন তিনি ঢাকাতে
অবস্থান করেন। এই সময় বিভিন্ন লােকদের নিমন্ত্রণ দিয়ে তিনি খেতাব দিতেন এবং।
মসজিদ তৈরী থেকে শুরু করে অনেক ধর্মীয় কাজে সাহায্য করিতেন।
ঢাকা হইতে সরাসরি আসার নদীপথ ছিল তখন ধােলাইখাল । শীতলক্ষ্যার উত্তর দিক
হতে ঢাকায় আসার পথে শাহজাহান ঐতিহাসিক কদমছুল পরিদর্শন করেন।
পেইজ নং- ১১
(চলবে)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন