(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
*********
১০। হাজেরিয়া শিয়া: হাজের একটি পাহাড়ের নাম। একদল শিয়ার আক্বীদা হচ্ছে - ”ইমাম বাকের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর অপর এক পুত্র যাকারিয়া তাঁর স্থলাভিষিক্ত। ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নহেন। এই যাকারিয়া হাজের নামক পাহাড়ে আত্মগোপন করে আছেন। নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি আত্মপ্রকাশ করবেন না”।
১১। নাউছিয়া শিয়া: বসরা অধিবাসী আবদুল্লাহ ইবনে নাউছ নামীয় জনৈক ব্যক্তির অনুসারী দলকে নাউছিয়া বলা হয়। এরা বিশ্বাস করে - ”ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এখনও জীবিত এবং আত্মগোপনকারী। ভবিষ্যতে তিনিই, ইমাম মাহদী রুপে আবির্ভূত হবেন”।
১২। আম্মারিয়া শিয়া: আম্মার নামের নেতার অনুসারী এই দল। এদের ধারণা নাউছিয়া শিয়াদের বিপরীত। এদের মতে- ”ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইনতিকাল করেছেন। তাঁর পরে ইমাম হচ্ছেন তাঁর ছেলে মুহাম্মাদ”। ১৪৫ হিজরীতে (৭ ও ৮ নম্বর শিয়াদের সমসাময়িক কালে) এই দলের সৃষ্টি হয়।
১৩। মুবারকিয়া শিয়া: এই দলটি মুবারকের অনুসারী। এরা ইসমাঈলি গোত্রেরই একটি শাখা। এদের বিশ্বাস মতে - ”ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বড় ছেলে ইসমাঈল তাঁর স্থলাভিষিক্ত। এরপর অপর ছেলে মোহাম্মাদ হলেন ইমাম”। এদের মতে - উক্ত মোহাম্মাদ হলেন প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী।
১৪। বাতিনিয়া শিয়া: শিয়াদের এ উপদলটি কোরআন মজিদের প্রকাশ্য অর্থ মতে আমল করে না। এদের আক্বীদা মতে - ”কোরআনের বাতিনী অর্থের উপরই আমল করা ওয়াজিব। এরা ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর পর তাঁর বড় ছেলে ইসমাঈল এবং তার বংশধরগণকেই ইমাম বলে মান্য করে।”
১৫। ইসমাঈলী কারামাতা শিয়া: ইসমাঈলী পন্থী শিয়াদেরই একটি অতি উগ্র দল হলো কারামাতা শিয়া। কুফার অধিবাসী কারামাত নামীয় শিয়া এই দলের নেতা। ২৭০ হিজরী সালে এই ইসমাঈলী কারামাতা শিয়ার সৃষ্টি হয়। এরা ইমাম জাফর সাদেকের পূর্বে ইসমাইলকে শেষ ইমাম বলে। সমস্ত হারাম বস্তুকেই এরা হালাল বা মোবাহ বলে বিশ্বাস করে। এরাই মক্কা শরীফের খানায়ে কাবার হাজরে আসওয়াদকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং ৩৫ বৎসর পর্যন্ত তাদের নিকট রাখে। সংক্রামক ব্যাধিতে এদের অসংখ্য লোক মারা যেতে থাকে। ভয়ে ভীত হয়ে এরা হাজরে আসওয়াদ ফেরত দেয় - দ্বিখন্ডিত অবস্থায়। এরা ভারতবর্ষের মুলতান থেকে সিন্ধু পর্যন্ত এককালে (সুলতান মাহমুদের পূর্বে) রাজত্ব করেছিল। এদের ফিতনার জের হিসাবে এখনও আগাখানী ইসমাইলিয়া শিয়ারা ফিতনা সৃষ্টি করে চলছে। এরা খুবই হিংস্র।
১৬। শামিতিয়া শিয়া: ইসমাইলী শিয়াদের আর একটি উপশাখার নাম শামিতিয়া শিয়া। ইয়াহইয়া ইবনে আবু শামীত এদের নেতা। এদের মতে ইমাম জাফর সাদেকের পর তাঁর পাঁচ পুত্র - ইসমাইল, মুহাম্মাদ, মুছা কাযেম, আবদুল্লাহ ও ইসহাক ক্রমানুসারে তাদের ইমাম।
১৭। মায়মুনিয়া শিয়া: আহওয়াজের বাসিন্দা আবদুল্লাহ ইবনে মায়মুন - এর অনুসারী এই দল। এরা ইসমাইলকে ইমাম মানে এবং আল্লাহর কুরআন ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীসের প্রকাশ্য অর্থের উপর আমল করাকে হারাম বলে আক্বীদা পোষণ করে। এরা পরকালের পুনরুন্থানকে অস্বীকার করে।
১৮। খালাফিয়া শিয়া: খালাফ নামক জনৈক শিয়া নেতার অনুসারী এই দল। এরা মায়মুনিয়াদের মত আল্লাহর নিকট পুন: প্রত্যাবর্তনকে (বা'ছ) অস্বীকার করে এবং ইসমাইলকে ইমাম বলে স্বীকার করে। তবে কুরআন ও হাদিসের শাব্দিক অর্থ অনুযায়ী এরা আমল করে। শরীয়তের পরিভাষায় বিশেষ প্রক্রিয়ায় ইবাদত করাকে ছালাত বা নামায বলে। এরা শুধু দোয়া করে।
১৯। বারকিয়া শিয়া: মুহাম্মাদ ইবনে আলী বারকেয়ীর অনুসারী এই দল ইমামতের ক্ষেত্রে খালাফিয়াদের মত আক্বীদা পোষণ করে এবং পরকালকে তাদের মত এরাও অস্বীকার করে। কুরআন হাদীসের ব্যাখ্যা তাদের ইচ্ছামত করে। কোন কোন নবীকেও তারা অস্বীকার করে। এমনকি - তাঁদেরকে লা'নত পর্যন্ত করে থাকে (নাউযুবিল্লাহ)।
২০। জান্নাবীয়া শিয়া: ইমামী শিয়াদের ৩৫ দলের মধ্যে আবু তাহের জান্নাবীর এই দলটি কারামাতা শিয়াদের অনুরূপ আক্বীদায় বিশ্বাসী। এরা শরীয়তের কোন বিধি নিষেধকেই স্বীকার করেনা। বরং - যারা শরীয়তের বধি বিধান মেনে চলে, তাদেরকে কতল করা ওয়াজিব বলে। এ কারনেই তারা মক্কার হাজীদেরকে কতল করতো এবং কারামতাদের যোগ সাজছে হাজরে আসওয়াদ অপহরণ করে নিজ দেশে (ইরানে) নিয়ে গিয়েছিল।
২১। সাবইয়া শিয়া: কারামাতা শিয়াদের একটি উপদল এরা। এরা সাত নবীকে শরীয়তের বিধান দাতা বলে বিশ্বাস করে। এদের মতে - ”তাঁরা হলেন - হযরত আদম, অপর পাঁচজন বিশিষ্ট নবী ও ইমাম মাহদী। এদের মতে এই সাতজনের মধ্যে ইসমাইল আলাইহিস সালাম একজন।”
২২। মাহদুভীয়া শিয়া: আফ্রিকায় মাহদী খিলাফতের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ মাহদী বিল্লাহকে এরা ইমাম মানে। এদের মতে ইমামের সংখ্যা অনেক। ইসমাইলের পর তাঁর ছেলে মুহাম্মাদ, তাঁর ছেলে আহম্মদ ওয়াফী, তার ছেলে মুহাম্মাদ তকী, তার ছেলে মুহাম্মাদ রাযী, তার ছেলে আবুল কাশেম আবদুল্লাহ, তার ছেলে মুহাম্মাদ মাহদী (খিলাফত প্রতিষ্ঠাতা), তার ছেলে কায়েস বি - আমরিল্লাহ, তার ছেলে মানসুর বি - কুয়াতিল্লাহ, তার ছেলে মুয়েজ লি - দীনিল্লাহ, মানসুর আজিজ বিল্লাহ, তার ছেলে হাকেম বি - আমরিল্লাহ, জাহের বি - দীনিল্লাহ, তার ছেলে মুসতানসির বিল্লাহ প্রমুখ ইমাম। এদের জন্ম হয় ২৯৯ হিজরীতে
২৩। নেজারিয়া শিয়া: মাহদুভিয়া শিয়াদের ইমাম হচ্ছে মুসতানসির বিল্লাহ। তাঁর পরে এরা দুই শাখায় বিভক্ত হয়। এক শাখার ইমাম হলেন তার ভাই নেজার। তার অনুসারীদেরকেই নেজারিয়া শিয়া বলা হয়। এদের আক্বিদা হলো - ”ইমামই সর্বেসর্বা। শরীয়তের যে কোন বিধি বিধান তিনি রহিত করতে পারেন”। এই শাখার মধ্যে পরবর্তীকালে রুকন উদ্দিন ইমাম নিযুক্ত হন। তার আমলেই চেংগিস খান তাবারিস্তান ধবংস করে। রুকনউদ্দিন তাতারিদের হাতে নিহত হয়। তার ছেলে জাদীদ উদ্দৌলা নিজেকে ইমাম বলে দাবী করে। তাতারীগণ তাকেও বিতারিত করে। তিনি তাবারিস্তানের কোন এক গ্রামে গিয়ে আত্মগোপন করেন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। এই গোত্র এখানেই ইমামশূণ্য হয়। এদের প্রভাবেই মোগল সম্রাট আকবর ”দ্বীনে ইলাহী” প্রবর্তন করেন এবং নিজেকে ইমামে আদিল বলে দাবী করে শরীয়তের বিধি বিধানে পরিবর্তন আনয়ন করেন। উল্লেখ্য, আকবরের মাতা হামিদা বানু ছিলেন শিয়া এবং প্রধাণমন্ত্রী বৈরাম খাঁও ছিলেন শিয়া। ”দ্বীনে ইলাহী” শিয়াদের প্রভাবে প্রবর্তিত হয়। এ কারণেই হযরত মুজাদ্দেদ আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আজীবন এই শিয়াদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন এবং মাকতুবাত শরীফে শিয়া সম্প্রদায়ের আক্বীদা সম্পর্কে তাঁর খলিফাদের সতর্ক করেছেন।
(চলবে)
উস্তাজুল উলামা আল্লামা আবদুল জলীল রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর 'শিয়া পরিচিতি' থেকে প্রকাশিত হচ্ছে।
*********
১০। হাজেরিয়া শিয়া: হাজের একটি পাহাড়ের নাম। একদল শিয়ার আক্বীদা হচ্ছে - ”ইমাম বাকের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর অপর এক পুত্র যাকারিয়া তাঁর স্থলাভিষিক্ত। ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নহেন। এই যাকারিয়া হাজের নামক পাহাড়ে আত্মগোপন করে আছেন। নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি আত্মপ্রকাশ করবেন না”।
১১। নাউছিয়া শিয়া: বসরা অধিবাসী আবদুল্লাহ ইবনে নাউছ নামীয় জনৈক ব্যক্তির অনুসারী দলকে নাউছিয়া বলা হয়। এরা বিশ্বাস করে - ”ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এখনও জীবিত এবং আত্মগোপনকারী। ভবিষ্যতে তিনিই, ইমাম মাহদী রুপে আবির্ভূত হবেন”।
১২। আম্মারিয়া শিয়া: আম্মার নামের নেতার অনুসারী এই দল। এদের ধারণা নাউছিয়া শিয়াদের বিপরীত। এদের মতে- ”ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইনতিকাল করেছেন। তাঁর পরে ইমাম হচ্ছেন তাঁর ছেলে মুহাম্মাদ”। ১৪৫ হিজরীতে (৭ ও ৮ নম্বর শিয়াদের সমসাময়িক কালে) এই দলের সৃষ্টি হয়।
১৩। মুবারকিয়া শিয়া: এই দলটি মুবারকের অনুসারী। এরা ইসমাঈলি গোত্রেরই একটি শাখা। এদের বিশ্বাস মতে - ”ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বড় ছেলে ইসমাঈল তাঁর স্থলাভিষিক্ত। এরপর অপর ছেলে মোহাম্মাদ হলেন ইমাম”। এদের মতে - উক্ত মোহাম্মাদ হলেন প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী।
১৪। বাতিনিয়া শিয়া: শিয়াদের এ উপদলটি কোরআন মজিদের প্রকাশ্য অর্থ মতে আমল করে না। এদের আক্বীদা মতে - ”কোরআনের বাতিনী অর্থের উপরই আমল করা ওয়াজিব। এরা ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর পর তাঁর বড় ছেলে ইসমাঈল এবং তার বংশধরগণকেই ইমাম বলে মান্য করে।”
১৫। ইসমাঈলী কারামাতা শিয়া: ইসমাঈলী পন্থী শিয়াদেরই একটি অতি উগ্র দল হলো কারামাতা শিয়া। কুফার অধিবাসী কারামাত নামীয় শিয়া এই দলের নেতা। ২৭০ হিজরী সালে এই ইসমাঈলী কারামাতা শিয়ার সৃষ্টি হয়। এরা ইমাম জাফর সাদেকের পূর্বে ইসমাইলকে শেষ ইমাম বলে। সমস্ত হারাম বস্তুকেই এরা হালাল বা মোবাহ বলে বিশ্বাস করে। এরাই মক্কা শরীফের খানায়ে কাবার হাজরে আসওয়াদকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং ৩৫ বৎসর পর্যন্ত তাদের নিকট রাখে। সংক্রামক ব্যাধিতে এদের অসংখ্য লোক মারা যেতে থাকে। ভয়ে ভীত হয়ে এরা হাজরে আসওয়াদ ফেরত দেয় - দ্বিখন্ডিত অবস্থায়। এরা ভারতবর্ষের মুলতান থেকে সিন্ধু পর্যন্ত এককালে (সুলতান মাহমুদের পূর্বে) রাজত্ব করেছিল। এদের ফিতনার জের হিসাবে এখনও আগাখানী ইসমাইলিয়া শিয়ারা ফিতনা সৃষ্টি করে চলছে। এরা খুবই হিংস্র।
১৬। শামিতিয়া শিয়া: ইসমাইলী শিয়াদের আর একটি উপশাখার নাম শামিতিয়া শিয়া। ইয়াহইয়া ইবনে আবু শামীত এদের নেতা। এদের মতে ইমাম জাফর সাদেকের পর তাঁর পাঁচ পুত্র - ইসমাইল, মুহাম্মাদ, মুছা কাযেম, আবদুল্লাহ ও ইসহাক ক্রমানুসারে তাদের ইমাম।
১৭। মায়মুনিয়া শিয়া: আহওয়াজের বাসিন্দা আবদুল্লাহ ইবনে মায়মুন - এর অনুসারী এই দল। এরা ইসমাইলকে ইমাম মানে এবং আল্লাহর কুরআন ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীসের প্রকাশ্য অর্থের উপর আমল করাকে হারাম বলে আক্বীদা পোষণ করে। এরা পরকালের পুনরুন্থানকে অস্বীকার করে।
১৮। খালাফিয়া শিয়া: খালাফ নামক জনৈক শিয়া নেতার অনুসারী এই দল। এরা মায়মুনিয়াদের মত আল্লাহর নিকট পুন: প্রত্যাবর্তনকে (বা'ছ) অস্বীকার করে এবং ইসমাইলকে ইমাম বলে স্বীকার করে। তবে কুরআন ও হাদিসের শাব্দিক অর্থ অনুযায়ী এরা আমল করে। শরীয়তের পরিভাষায় বিশেষ প্রক্রিয়ায় ইবাদত করাকে ছালাত বা নামায বলে। এরা শুধু দোয়া করে।
১৯। বারকিয়া শিয়া: মুহাম্মাদ ইবনে আলী বারকেয়ীর অনুসারী এই দল ইমামতের ক্ষেত্রে খালাফিয়াদের মত আক্বীদা পোষণ করে এবং পরকালকে তাদের মত এরাও অস্বীকার করে। কুরআন হাদীসের ব্যাখ্যা তাদের ইচ্ছামত করে। কোন কোন নবীকেও তারা অস্বীকার করে। এমনকি - তাঁদেরকে লা'নত পর্যন্ত করে থাকে (নাউযুবিল্লাহ)।
২০। জান্নাবীয়া শিয়া: ইমামী শিয়াদের ৩৫ দলের মধ্যে আবু তাহের জান্নাবীর এই দলটি কারামাতা শিয়াদের অনুরূপ আক্বীদায় বিশ্বাসী। এরা শরীয়তের কোন বিধি নিষেধকেই স্বীকার করেনা। বরং - যারা শরীয়তের বধি বিধান মেনে চলে, তাদেরকে কতল করা ওয়াজিব বলে। এ কারনেই তারা মক্কার হাজীদেরকে কতল করতো এবং কারামতাদের যোগ সাজছে হাজরে আসওয়াদ অপহরণ করে নিজ দেশে (ইরানে) নিয়ে গিয়েছিল।
২১। সাবইয়া শিয়া: কারামাতা শিয়াদের একটি উপদল এরা। এরা সাত নবীকে শরীয়তের বিধান দাতা বলে বিশ্বাস করে। এদের মতে - ”তাঁরা হলেন - হযরত আদম, অপর পাঁচজন বিশিষ্ট নবী ও ইমাম মাহদী। এদের মতে এই সাতজনের মধ্যে ইসমাইল আলাইহিস সালাম একজন।”
২২। মাহদুভীয়া শিয়া: আফ্রিকায় মাহদী খিলাফতের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ মাহদী বিল্লাহকে এরা ইমাম মানে। এদের মতে ইমামের সংখ্যা অনেক। ইসমাইলের পর তাঁর ছেলে মুহাম্মাদ, তাঁর ছেলে আহম্মদ ওয়াফী, তার ছেলে মুহাম্মাদ তকী, তার ছেলে মুহাম্মাদ রাযী, তার ছেলে আবুল কাশেম আবদুল্লাহ, তার ছেলে মুহাম্মাদ মাহদী (খিলাফত প্রতিষ্ঠাতা), তার ছেলে কায়েস বি - আমরিল্লাহ, তার ছেলে মানসুর বি - কুয়াতিল্লাহ, তার ছেলে মুয়েজ লি - দীনিল্লাহ, মানসুর আজিজ বিল্লাহ, তার ছেলে হাকেম বি - আমরিল্লাহ, জাহের বি - দীনিল্লাহ, তার ছেলে মুসতানসির বিল্লাহ প্রমুখ ইমাম। এদের জন্ম হয় ২৯৯ হিজরীতে
২৩। নেজারিয়া শিয়া: মাহদুভিয়া শিয়াদের ইমাম হচ্ছে মুসতানসির বিল্লাহ। তাঁর পরে এরা দুই শাখায় বিভক্ত হয়। এক শাখার ইমাম হলেন তার ভাই নেজার। তার অনুসারীদেরকেই নেজারিয়া শিয়া বলা হয়। এদের আক্বিদা হলো - ”ইমামই সর্বেসর্বা। শরীয়তের যে কোন বিধি বিধান তিনি রহিত করতে পারেন”। এই শাখার মধ্যে পরবর্তীকালে রুকন উদ্দিন ইমাম নিযুক্ত হন। তার আমলেই চেংগিস খান তাবারিস্তান ধবংস করে। রুকনউদ্দিন তাতারিদের হাতে নিহত হয়। তার ছেলে জাদীদ উদ্দৌলা নিজেকে ইমাম বলে দাবী করে। তাতারীগণ তাকেও বিতারিত করে। তিনি তাবারিস্তানের কোন এক গ্রামে গিয়ে আত্মগোপন করেন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। এই গোত্র এখানেই ইমামশূণ্য হয়। এদের প্রভাবেই মোগল সম্রাট আকবর ”দ্বীনে ইলাহী” প্রবর্তন করেন এবং নিজেকে ইমামে আদিল বলে দাবী করে শরীয়তের বিধি বিধানে পরিবর্তন আনয়ন করেন। উল্লেখ্য, আকবরের মাতা হামিদা বানু ছিলেন শিয়া এবং প্রধাণমন্ত্রী বৈরাম খাঁও ছিলেন শিয়া। ”দ্বীনে ইলাহী” শিয়াদের প্রভাবে প্রবর্তিত হয়। এ কারণেই হযরত মুজাদ্দেদ আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আজীবন এই শিয়াদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন এবং মাকতুবাত শরীফে শিয়া সম্প্রদায়ের আক্বীদা সম্পর্কে তাঁর খলিফাদের সতর্ক করেছেন।
(চলবে)
উস্তাজুল উলামা আল্লামা আবদুল জলীল রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর 'শিয়া পরিচিতি' থেকে প্রকাশিত হচ্ছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন