রোজার ফযীলত


রোজার ফযীলত (১)

***  হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আওফা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,নবী করীম ﷺ এর
নূরানী বানী," রোযাদারদের ঘুমানো ইবাদত,তার নীরবতা হল তাসবীহ পাঠ করা,তার দু'আ কবুল এবং তার আমল মকবুল।" ( শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,
হাদীস নং- ৩৯৩৮,পৃ:- ৪১৫,রমযানের ফযীলত,পৃ:-৮৪)।

*** উম্মুল মু'মিনীন সায়্যিদাতুনা আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন,নবী করীম ﷺ এর মহান বানী," যে বান্দা রোযা পালনরত অবস্থায় ভোরে জাগ্রত হয়,তার জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়,তার অঙ্গ - প্রত্যঙ্গ তাসবীহ পড়ে এবং প্রথম আসমানের অবস্থানকারী ফিরিশতা তার জন্য সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত মাগফিরাতের দু'আ করে; যদি সে এক অথবা দুই রাকা'আত নামায পড়ে তবে আসমানে তার জন্য আলো উদ্ভাসিত হয়ে যায়।আর হুরদের মধ্য থেকে তার স্ত্রীরা বলে,"হে মহা মহিম আল্লাহ তায়ালা তাকে
আমাদের নিকট পাঠিয়ে দাও! আমরা তার সাক্ষাতের জন্য অত্যন্ত আগ্রহী।আর যদি সে " লা ইলাহা আল্লাল্লাহ" কিংবা ছুবহানাল্লাহ " অথবা "আল্লাহু আকবর" পড়ে,তবে সত্তর হাজার ফিরিশতা তার
সওয়াব সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত লিখতে থাকে।(শুআবুল
ঈমান,খন্ড - ৩য়, হাদীস নং- ৩৫৯১,পৃ:- ২৯৯,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৮৫)।

*** হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু
বলেন,নবী করীম ﷺ  বলেছেন," যে আল্লাহররাস্তায়
 ( অথবা আল্লাহর ওয়াস্তে) একটি রোযা রাখবে,আল্লাহ তায়ালা তার চেহারাকে দোযখের আগুন থেকে সত্তর
বছরের পথ দূরে রাখবেন।( অর্থাৎ,বহু দূরে রাখবেন)।
( বুখারী ও মুসলীম শরীফ,মিশকাত শরীফ,হাদীস নং- ১৯৫৫,পৃ:- ৩০৫)।

***  হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেক বর্ণিত,নবী করীম ﷺ  এর সুসংবাদরুপী বানী হচ্ছে," যে ব্যক্তি বুধবার ও বৃহস্পতি বার রোযা রাখে,তার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তি লিখে দেয়া হয়।( আবু ইয়ালা,খন্ড - ৫ম,হাদীস নং- ৫৬২০,পৃ:- ১১৫,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৪২৫)।

*** সারকারে আলা হযরত ইমাম আহমদ রযা খাঁন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন," বর্ণিত আছে যে, জুমাবারের রোযার সাথে বৃহস্পতিবার অথবা শনিবার রোযা মিলিয়ে রাখলে দশ হাজার বছরের রোযার সমান
সাওয়াব পাওয়া যায়।" ( ফাতাওয়ায়ে রযবীয়্যাহ,নতুন সংস্করন,খন্ড - ১০, পৃ:- ৬৫৩,নামাযের আহকাম
( হানাফী),পৃ:- ৩১০)।

*** নবী করীম ﷺ এর উৎসাহমুলক বানী, " যদি কেউ একদিন নফল রোযা রাখে আর যমিন পরিমান স্বর্ণ তাকে দেয়া হয়,তবু সেটার সওয়াব পূর্ণ হবে না। সেটার সওয়াব তো কিয়ামতের দিনই পাবে। ( মুসনাদে আবী ইয়া'লা,খন্ড - ৫ম,পৃ:- ২৫৩,ক্ষুধার ফযীলত,পৃ:- ১৮)।

***  হযরত হাসান বসরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত," মক্কা শরীফে একদিন রোযা রাখা এক লাখ রোযার সমান। এক দেরহাম দান করা এক লাখ দেরহাম দান করার সমান। এমনিভাবে প্রত্যেক সাওয়াবের কাজ এক লাখ সওয়াবের কাজের সমান।( ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন,পৃ:- ২০২)।

*** সায়্যিদুনা আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,নবী করীম ﷺ  এর রহমতপূর্ণ বানী হচ্ছে," যখন রমযান মাসের প্রথম রাত আসে,তখন আসমানগুলো ও জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। আর সেগুলো সর্বশেষ রাত পর্যন্ত বন্ধ হয় না।যে
কোন বান্দা এ বরকতময় মাসের যে কোন রাতে নামায পড়ে,তবে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতিটি সিজদার পরিবর্তে ( অর্থাৎ বিনিময় স্বরুপ) তার জন্য পনের শত নেকী লিপিবদ্ধ করেন।আর তার জন্য জান্নাতে লাল পদ্মরাগ পাথরের মহল তৈরী করেন।যার ষাট হাজার দরজা থাকবে,প্রতিটি দরজার কপাট স্বর্ণের তৈরী হবে; যাতে লাল বর্ণের পদ্মরাগের পাথর খচিত থাকবে।সুতরাং যে কেউ রমযানের প্রথম রোযা রাখে তার জন্য
আল্লাহ তায়ালা রমযানের শেষ দিন পর্যন্ত গুনাহ মাফ করে দেন এবং তার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফিরিশতা মাগফিরাতের দো'আ করতে থাকে। রাত ও দিনে যখনই সে সিজদা করে,তার ওই প্রতিটি সিজদার বিনিময়ে তাকে ( জান্নাতে) একেকটা এমন গাছ দান করা হবে,সেটার ছায়া অতিক্রম করতে ঘোড়ার আরোহীকে পাঁচশ বছর দৌঁড়াতে হবে।(শুআবুল ঈমান,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩৬৩৫,
পৃ:-৩১৪,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ৫)।

*** হযরত সায়্যিদুনা ইব্রাহীম নাখই রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,রমযান মাসে একদিন রোযা রাখা ( অন্য সময়) এক হাজার রোযা রাখার চেয়ে উত্তম।রমযান মাসে একবার ' তাসবীহ' পাঠ করা (ছুবহানাল্লাহ) অন্য মাসে এক হাজার বার তাসবীহ পাঠ করা ( অর্থাৎ ছুবহানাল্লাহ বলার) চেয়ে উত্তম।
রমযান মাসে এক রাকা'আত নামায পড়া, রমযান ব্যতিত অন্য মাসের এক হাজার রাকা'আত অপেক্ষা উত্তম।(আদ - দুররুল মানসুর,খন্ড - ১ম,পৃ:- ৪৫৪,
রমযানের ফযীলত,পৃ:-২৭)।

***  হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত,নবী করীম ﷺ  ইরশাদ করেন," যে ব্যক্তি মক্কা মুকাররমায় রমযান
মাস পেলো,রোযা রাখলো এবং রাতে যথাসম্ভব জেগে জেগে ইবাদত করলো,আল্লাহ তায়ালা তার জন্য অন্য
জায়গার এক লক্ষ রমযান মাসের সাওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন।আর প্রতিদিন একটা গোলাম মুক্ত করার সাওয়াব, প্রতি রাতে একটা গোলাম মুক্ত করার সাওয়াব, প্রতিদিন জিহাদে ঘোড়া সাওয়ারী দেয়ার সওয়াব এবং প্রতিটি দিনে ও রাতে সাওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন।( ইবনে মাজাহ,খন্ড - ৩য়,হাদীস নং- ৩১১৭,
পৃ:- ৫২৩,রমযানের ফযীলত,পৃ:- ২৪)।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন