পবিত্র আশুরার আমলসমূহ
সংকলক: মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী
________________
হিজরী বর্ষের প্রথম মাস পবিত্র মুহাররম। চারটি হারাম মাসের একটি। আল্লাহ তা'আলার নিকট অত্যন্ত সম্মানিত মাস মহররম। সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত অসংখ্য ঘটনাবলি সংগঠিত হয়েছে এ মাসের ১০ তারিখ অর্থাৎ পবিত আশুরার দিনে। এ দিনের ফযীলত অনেক বেশি।
নিম্নে পবিত্র আশুরার বিভিন্ন আমলের বর্ণনা করা হলো।
________________
হিজরী বর্ষের প্রথম মাস পবিত্র মুহাররম। চারটি হারাম মাসের একটি। আল্লাহ তা'আলার নিকট অত্যন্ত সম্মানিত মাস মহররম। সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত অসংখ্য ঘটনাবলি সংগঠিত হয়েছে এ মাসের ১০ তারিখ অর্থাৎ পবিত আশুরার দিনে। এ দিনের ফযীলত অনেক বেশি।
নিম্নে পবিত্র আশুরার বিভিন্ন আমলের বর্ণনা করা হলো।
কুরআন তিলাওয়াত ও দো'আ
১) হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে - এ দিনে দশটি আয়াত তিলাওয়াতকারী সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ তিলাওয়াতের সাওয়াব পাবে।২) এ পবিত্র দিনে যে ব্যক্তি ১০০০ বার সূরা ইখলাস পাঠ করবে আল্লাহ পাক তার প্রতি বিশেষ রহমত নাযিল করবেন।
৩) বর্ণিত আছে যে, আশুরার দিন যে ব্যক্তি ৭০ বার "হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকী-ল নি'মাল মাওলা ওয়া নি'মান্নাসীর" পাঠ করবে আল্লাহ তাআলা তার সমুদয় গুনাহ মার্জনা করবেন এবং তার প্রতি বিশেষ সন্তুষ্ট হবেন।
রোজা
১) হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম মদীনা মুনাওয়ারায় হিজরত করলে মদীনা মুনাওয়ারার ইহুদীদেরকে রােযা পালন করতে দেখলেন। এর কারণও সবার জানা আছে। অতঃপর হুযুর নিজেও রােযা রেখেছেন এবং মুসলমানদেরকেও রােযা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। অবশ্য, ইহুদীরা শুধু আশূরার দিনের রােযা পালন করে। তাদের বিরোধিতায় আমাদেরকে দু'টি রােযা পালন করার বিধান দেওয়া হয়েছে।২) হযরত সায়্যিদুনা আবু হােরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; হুযুরে আকরাম, নূরে মুজাস্সাম, শাহে বনী আদম, রাসূলে মুহতাশাম,শাফিয়ে উমাম ; ইরশাদ করেন: "রমযানের রোযার পর মুহাররমের রােযাই সর্বোত্তম। আর ফরয নামাযের পর রাত্রি বেলার নফল নামাযই উত্তম।" (সহীহ মুসলিম, ৮৯১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১১৬৩) (২)
৩) আল্লাহর হাবীব হাবীবে লাবীব ; ইরশাদ করেন: "মুহাররমের প্রতিদিনের রােযা এক মাসের রােযারই সমতুল্য।" (তাবরানী ফিস সাগীর, ২য় খন্ড, ৮৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৫৮০)
৪) হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন: আমি সুলতানে দো-জাহান শাহিনশাহে কওনাে মকান, রহমতে আলামিয়ানকে আশুরার দিনের রােযা ও রমযান মাসের রােযা ব্যতীত অন্য কোন দিন বা মাসের রােযাকে গুরুত্ব দিয়ে খোঁজখবর নিতে দেখিনি। (সহীহ বুখারী, ১ম খন্ড, ৬৫৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ২০০৬)।
৫) নবীয়ে রহমত, শফীয়ে উম্মত, শাহিনশাহে নুবুওয়ত, তাজেদারে রিসালাত ইরশাদ করেছেন: "তােমরা আশুরার দিনের রােযা রাখাে এবং এতে ইহুদীদের বিরোধীতা করোে। আশুরার দিনের আগের দিন বা পরের দিনও রােযা রাখাে।" (মুসনাদে ইমাম আহমদ, ১ম খন্ড, ৫১৮ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ২১৫৪)
আশুরার দিনের রােযার সাথে ৯ই মুহররম বা ১১ই মুহররমের রােযা রাখাও উত্তম।
৬) হযরত সায়ি্যদুনা আবু কাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; রাসূলুল্লাহ্ ইরশাদ করেছেন: "আমার বিশ্বাস,আশুরার দিনের রােযা দ্বারা আল্লাহ্ তাআলা পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।" (সহীহ মুসলিম, ৫৯০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১১৬২)।
৭) আরাে একটি রেওয়ায়েতের সূত্রে আল্লামা ইবনুল জাওযী লিখেছেন যে, হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম বলেছেন- তাওরীতে লিপিবদ্ধ আছে যে, যে ব্যক্তি আশূরার দিন
রােযা রাখল, সে যেন গােটা যামানা রােযা রাখল।
২) আশূরার দিন দুই রাকআত করে চার রাকআত নামায পড়বেন। প্রতি রাক'আতে সূরা ফাতিহার পর একবার সূরা কাফিরুন ও একবার সূরা ইখলাস পাঠ করবেন।
৩) অন্য এক বর্ণনায় আরাে চার রাকআত নামাযের নিয়ম পাওয়া যায়; যাতে প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহার সাথে পঞ্চাশবার সূরা ইখলাস পাঠ করবেন। নামাযান্তে কমপক্ষে ১০০ বার দুরূদ শরীফ পড়বেন ও মুনাজাত করবেন।
৪) যে ব্যক্তি এ দিনে এভাবে চার রাকআত নফল নামায পড়ে, আল্লাহ ওই ব্যক্তির পঞ্চাশ বছর আগের ও পঞ্চাশ বছর পরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন- প্রত্যেক রাক'আতে সে সূরা ফাতিহার পর ১৫ (পনের) বার সূরা ইখলাস শরীফ পড়বে। তদুপরি, তাঁর জন্য আল্লাহ তা'আলা হাজার নূরী মিম্বর তৈরী করাবেন।
২) আল্লামা গাযী শেরে বাংলা রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আনহু এ প্রসঙ্গে তাঁর মাজমূ"আহ-ই- ফাতাওয়া-ই আযীযিয়ায় লিখেছেন- মাযাহির-ই-হক : ২য় খণ্ড কিতাবুয যাকাত, সাদকাহর ফযীলত শীর্ষক অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে- হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- অর্থাৎ : "যে ব্যক্তি আপন পরিবার-পরিজনের জন্য খরচের বেলায় আশুরার দিন প্রশস্থতা অবলম্বন করে,আল্লাহ তা'আলা গােটা বছরই তার জন্য প্রাচুর্য দান করেন।"
হযরত সুফিয়ান সওরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, অর্থাৎ আমরা এর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং এর অনুরূপই পেয়েছি।
মুহাদ্দিস আবদুল হক দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি তাঁর মা-সাবাতা বিসসুন্নাহয়, আল্লামা ইসমাঈল হক্কী হানাফী রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলায়হি তাঁর 'তাফসীর-ই
রুহুল বয়ান ১ম খণ্ডে প্রায় কাছাকাছি বিষয়বস্তুর বর্ণনা উল্লেখ করেছেন।
৩) শরহে শির'আতুল ইসলাম'-এ আশূরার দিনের সুন্নাতসমূহের বিবরণ শীর্ষক পরিচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে- ফকীর-মিসকীনদেরকে কাপড় ইত্যাদি দান করা, যিকর (আলােচনা) মাহফিলে হাযির হওয়া, শরবৎ পান করানো, নিজ পরিবার-পরিজন ও অন্যান্যকে খাদ্যাহার করানো, ইয়াতীমদের মাথায় হাত বুলানো ও গােসল করা এ পবিত্র দিনের সুন্নাত সম্মত কার্যাদি। "
ওহাবীদের হাকীমুল উম্মত মৌং আশ্রাফ আলী থানভী সাহেবের 'বেহেশতী জেওর'; ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৯৩ পৃষ্ঠায়ও আশুরা পালনের সমর্থন রয়েছে।
এ দিনে দশটি সুন্নাত রয়েছে- ১. রােযা রাখা ২. নফল নামায পড়া ৩. ইয়াতীমের মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দেওয়া ৪. গােসল করা ৫. বিরোধ মিটিয়ে পরস্পর সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হওয়া ৬. রােগীর পরিচর্যা করা ৭. পরিবার -পরিজনের জন্য এবং মিসকীন ও গরীবদের উন্নত মানের খাদ্যাহারের ব্যবস্থা করা ৮. আলিমে দ্বীনের যিয়ারতের জন্য গমন করা ৯, সুরমা লাগানাে এবং ১০. আল্লাহর মহান দরবারে বিশেষ দোআ মুনাজাত করা।
২) আল্লামা ইবনুল জাওযী হুযূর-ই পাকের হাদীস শরীফের বরাতে আরাে লিখেছেন- "যে ব্যক্তি আশূরার দিন (বিশেষ) গােসল করবে, মৃত্যু ব্যতীত তাকে অন্য কোন
রােগ স্পর্শ করবে না, যে ব্যক্তি এ দিনে সুরমা (ইসমাদ) লাগাবে, গােটা বছর তার চোখে ছানি পড়বে না, যে ব্যক্তি আশূরার দিনে রােগীর পরিচর্যা করে, সে যেন সমস্ত বনী আদমের পরিচর্যা করে, যে ব্যক্তি এ দিনে মুমিন বান্দাকে শরবৎ পান করায় সে যেন সমস্ত বনী-আদমকে পিপাসার্ত অবস্থায় তৃপ্তি সহকারে পানি পান করায়।
৩) ১০ই মুহররম গােসল করলে সারা বছর রােগ ব্যাধি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা সেদিন জমজমের পানি সারা দুনিয়ার পানির সাথে মিশ্রিত হয়ে থাকে। (তাফসীরে রুহুল বয়ান, ৪র্থ খণ্ড, ১৪২ পৃষ্ঠা, কোয়েটা। ইসলামী জিন্দেগী, ৯৩ পৃষ্ঠা)
৪) ছরকারে কায়েনাত, শাহে মওজুদাত, হুযুর ইরশাদ করেছেন: "যে ব্যক্তি আশুরার দিন ইসমাদ নামক সুরমা নিজ চোখে লাগাবে, তার চোখে কখনও রােগ হবে না।" (শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩৬৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৭৯৭)
আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে আশুরার দিনে বেশি বেশি নেক করার তাওফিক্ব দান করুক,আমিন।
তথ্যসূত্র : গাউসিয়া তারবিয়াতি নেসাব-ইসলামী অনুষ্ঠানমালা ও ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু আনহু।
৬) হযরত সায়ি্যদুনা আবু কাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; রাসূলুল্লাহ্ ইরশাদ করেছেন: "আমার বিশ্বাস,আশুরার দিনের রােযা দ্বারা আল্লাহ্ তাআলা পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।" (সহীহ মুসলিম, ৫৯০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১১৬২)।
৭) আরাে একটি রেওয়ায়েতের সূত্রে আল্লামা ইবনুল জাওযী লিখেছেন যে, হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম বলেছেন- তাওরীতে লিপিবদ্ধ আছে যে, যে ব্যক্তি আশূরার দিন
রােযা রাখল, সে যেন গােটা যামানা রােযা রাখল।
নামাজ
১) যে ব্যক্তি আশূরার দিন চার রাক'আত নফল নামায পড়বে, প্রতি রাকআতে সুরা ফাতিহার সাথে ১৫ বার সূরা ইখলাস পড়বে এবং এ নামাযের সাওয়াব হযরত হাসান ও হযরত হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমার পবিত্র রূহে বখশিস করবে তার জন্য ক্বিয়ামত দিবসে তাঁরা সুপারিশ করবেন।২) আশূরার দিন দুই রাকআত করে চার রাকআত নামায পড়বেন। প্রতি রাক'আতে সূরা ফাতিহার পর একবার সূরা কাফিরুন ও একবার সূরা ইখলাস পাঠ করবেন।
৩) অন্য এক বর্ণনায় আরাে চার রাকআত নামাযের নিয়ম পাওয়া যায়; যাতে প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহার সাথে পঞ্চাশবার সূরা ইখলাস পাঠ করবেন। নামাযান্তে কমপক্ষে ১০০ বার দুরূদ শরীফ পড়বেন ও মুনাজাত করবেন।
৪) যে ব্যক্তি এ দিনে এভাবে চার রাকআত নফল নামায পড়ে, আল্লাহ ওই ব্যক্তির পঞ্চাশ বছর আগের ও পঞ্চাশ বছর পরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন- প্রত্যেক রাক'আতে সে সূরা ফাতিহার পর ১৫ (পনের) বার সূরা ইখলাস শরীফ পড়বে। তদুপরি, তাঁর জন্য আল্লাহ তা'আলা হাজার নূরী মিম্বর তৈরী করাবেন।
ভাল খাবারের ব্যবস্থা
১) হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলতেন, তােমরা আশূরার রাত ও দিনের মধ্যে তােমাদের ঘরগুলাের কল্যাণ বৃদ্ধি করাে। আর তােমাদের পরিবার- পরিজনের জন্য উন্নতমানের হালাল পানাহারের ব্যবস্থা করো।২) আল্লামা গাযী শেরে বাংলা রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আনহু এ প্রসঙ্গে তাঁর মাজমূ"আহ-ই- ফাতাওয়া-ই আযীযিয়ায় লিখেছেন- মাযাহির-ই-হক : ২য় খণ্ড কিতাবুয যাকাত, সাদকাহর ফযীলত শীর্ষক অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে- হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- অর্থাৎ : "যে ব্যক্তি আপন পরিবার-পরিজনের জন্য খরচের বেলায় আশুরার দিন প্রশস্থতা অবলম্বন করে,আল্লাহ তা'আলা গােটা বছরই তার জন্য প্রাচুর্য দান করেন।"
হযরত সুফিয়ান সওরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, অর্থাৎ আমরা এর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং এর অনুরূপই পেয়েছি।
মুহাদ্দিস আবদুল হক দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি তাঁর মা-সাবাতা বিসসুন্নাহয়, আল্লামা ইসমাঈল হক্কী হানাফী রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলায়হি তাঁর 'তাফসীর-ই
রুহুল বয়ান ১ম খণ্ডে প্রায় কাছাকাছি বিষয়বস্তুর বর্ণনা উল্লেখ করেছেন।
৩) শরহে শির'আতুল ইসলাম'-এ আশূরার দিনের সুন্নাতসমূহের বিবরণ শীর্ষক পরিচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে- ফকীর-মিসকীনদেরকে কাপড় ইত্যাদি দান করা, যিকর (আলােচনা) মাহফিলে হাযির হওয়া, শরবৎ পান করানো, নিজ পরিবার-পরিজন ও অন্যান্যকে খাদ্যাহার করানো, ইয়াতীমদের মাথায় হাত বুলানো ও গােসল করা এ পবিত্র দিনের সুন্নাত সম্মত কার্যাদি। "
ওহাবীদের হাকীমুল উম্মত মৌং আশ্রাফ আলী থানভী সাহেবের 'বেহেশতী জেওর'; ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৯৩ পৃষ্ঠায়ও আশুরা পালনের সমর্থন রয়েছে।
এ দিনে আরো অন্যান্য আমল
১) হুযুর এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সুন্নাত সম্মত উপায়ে এ দিন উদযাপন করলাে, সে যেন হাজার বছর আল্লাহর ইবাদত করলাে।এ দিনে দশটি সুন্নাত রয়েছে- ১. রােযা রাখা ২. নফল নামায পড়া ৩. ইয়াতীমের মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দেওয়া ৪. গােসল করা ৫. বিরোধ মিটিয়ে পরস্পর সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হওয়া ৬. রােগীর পরিচর্যা করা ৭. পরিবার -পরিজনের জন্য এবং মিসকীন ও গরীবদের উন্নত মানের খাদ্যাহারের ব্যবস্থা করা ৮. আলিমে দ্বীনের যিয়ারতের জন্য গমন করা ৯, সুরমা লাগানাে এবং ১০. আল্লাহর মহান দরবারে বিশেষ দোআ মুনাজাত করা।
২) আল্লামা ইবনুল জাওযী হুযূর-ই পাকের হাদীস শরীফের বরাতে আরাে লিখেছেন- "যে ব্যক্তি আশূরার দিন (বিশেষ) গােসল করবে, মৃত্যু ব্যতীত তাকে অন্য কোন
রােগ স্পর্শ করবে না, যে ব্যক্তি এ দিনে সুরমা (ইসমাদ) লাগাবে, গােটা বছর তার চোখে ছানি পড়বে না, যে ব্যক্তি আশূরার দিনে রােগীর পরিচর্যা করে, সে যেন সমস্ত বনী আদমের পরিচর্যা করে, যে ব্যক্তি এ দিনে মুমিন বান্দাকে শরবৎ পান করায় সে যেন সমস্ত বনী-আদমকে পিপাসার্ত অবস্থায় তৃপ্তি সহকারে পানি পান করায়।
৩) ১০ই মুহররম গােসল করলে সারা বছর রােগ ব্যাধি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা সেদিন জমজমের পানি সারা দুনিয়ার পানির সাথে মিশ্রিত হয়ে থাকে। (তাফসীরে রুহুল বয়ান, ৪র্থ খণ্ড, ১৪২ পৃষ্ঠা, কোয়েটা। ইসলামী জিন্দেগী, ৯৩ পৃষ্ঠা)
৪) ছরকারে কায়েনাত, শাহে মওজুদাত, হুযুর ইরশাদ করেছেন: "যে ব্যক্তি আশুরার দিন ইসমাদ নামক সুরমা নিজ চোখে লাগাবে, তার চোখে কখনও রােগ হবে না।" (শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩৬৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৭৯৭)
আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে আশুরার দিনে বেশি বেশি নেক করার তাওফিক্ব দান করুক,আমিন।
তথ্যসূত্র : গাউসিয়া তারবিয়াতি নেসাব-ইসলামী অনুষ্ঠানমালা ও ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু আনহু।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন