নবী করীম (ﷺ)-এর ইন্তেকাল হতে কিয়ামত পর্যন্ত সংঘটিতব্য ফিতনা ও তার সংখ্যা সম্পর্কে অভিহিত করণ - ২

 

নবী করীম (ﷺ)-এর ইন্তেকাল হতে কিয়ামত পর্যন্ত সংঘটিতব্য ফিতনা ও তার সংখ্যা সম্পর্কে অভিহিতকরণ (২)


হাদিস - ১১

হযরত উসাইদ ইবনে মুতাশাসি ইবনে মুয়াবিয়া  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু মুসা  (رضي الله عنه) কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামত আসার পূর্বে মুসলমানদের মধ্য হতে ফিতনা ও হত্যা সংঘটিত হবে। এমনকি মানুষ তার দাদা,চাচাতো ভাই, পিতা ও আপন ভাইকে হত্যা করবে। আল্লাহর শপথ! আমি আশংকা করছি যে, না জানি আমি এবং তোমরা তাতে জড়িত হয়ে যাই।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১১]


হাদিস - ১২

হযরত আবু মুসা আশআরী  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয় তোমাদের সম্মুখে ঘোর অন্ধকার রাত্রির একাংশের ন্যায় ফিতনা সংঘটিত হতে থাকবে,তাতে কোন ব্যক্তি সকালে মুমিন ও বিকালে কাফের এবং বিকালে মুমিন ও সকালে কাফেরে পরিণত হতে থাকবে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১২]


হাদিস - ১৩

হযরত মুজাহিদ (رحمة الله) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন, অন্ধকার রাত্রির টুকরোর মত ফিতনা দেখা দিবে। সে সময় সকালে একজন মুমিন হলে বিকালে কাফের হয়ে যাবে। বিকালে মুমিন হলে সকালে কাফের হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে কেউ পার্থিব সামান্য সামগ্রির বিনিময়ে তার দ্বীন বিক্রি করে বসবে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১৩]


হাদিস - ১৪

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এই ফিতনা ঘোর অন্ধকার রাত্রির একাংশের ন্যায় ছায়া ফেলবে। যখনই কোন এক প্রকার ফিতনা চলে যাবে, তখনই আরেক প্রকার ফিতনা প্রকাশ পাবে। তাতে কোন ব্যক্তি সকালে মুমিন হলে বিকালে কাফের হয়ে যাবে, এবং বিকালে মুমিন হলে সকালে কাফের হয়ে যাবে। আর তখন লোকেরা পার্থিব সামান্য সামগ্রির বিনিময়ে তাদের দ্বীনকে বিক্রি করে দিবে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১৪]


হাদিস - ১৫

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেছেন, নিশ্চয় ফিৎনা আল্লাহর শহরগুলোতে এমনভাবে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকবে তার লাগামকে সাড়ানো হবে। কারো জন্য তাকে জাগ্রত করা জায়েয হবেনা। ধ্বংস ঐসব ব্যক্তির জন্য যারা তার লাগাম ধরে টানাটানি করবে।

আবুয্ জাহিরিয়্যাহ বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর  (رضي الله عنه) বলেন, নিঃসন্দেহে তোমরা এ জগতে নানান ধরনের বালা-মসিবত এবং ফিৎনা-ফাসাদই দেখতে পাবে। ধীরে ধীরে মানুষের যাবতীয় অবস্থা কঠিনই হতে থাকবে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১৫]


হাদিস - ১৬

রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর রহস্য সম্বন্ধে অবগত সাহাবী হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান  (رضي الله عنه) এরশাদ করেন, ফিৎনার সাথে সংশ্লিষ্ট লোক থেকে প্রায় তিনশতজন পর্যন্ত এমন রয়েছে, আমি ইচ্ছা করলে তাদের নাম, তাদের পিতা এবং গ্রামের নাম পর্যন্ত বলতে পারবো। যারা কিয়ামত পর্যন্ত। তার সবকিছুই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে জানিয়ে গিয়েছেন।

উপস্থিত লোকজন জিজ্ঞাসা করলো, সরাসরি কি তাদেরকে দেখানো হয়েছে? উত্তরে তিনি বললেন, তাদের আকৃতি দেখানো হয়েছে। যাদেরকে ওলামায়ে কেরাম এবং ফুকাহায়ে এজাম চিনতে পারবেন। হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান  (رضي الله عنه) বলেন, তোমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে কল্যাণ সম্বন্ধে জানতে চাও, কিন্তু আমি জানতে চেষ্টা করি অকল্যাণ বা খারাপী সম্বন্ধে আর তোমরা তাঁর কাছে জানতে চাও ঘটে যাওয়া বিষয় সম্বন্ধে, আমি জানতে চাই ভবিষ্যতে যা হবে সে সম্বন্ধে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১৬]


হাদিস - ১৭

হযরত হুজাইফা  (رضي الله عنه) এরশাদ করেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, আমার ওম্মতের মধ্যে এমন তিনশত লোক প্রকাশ পাবে যাদের সাথে তিনশত পতাকা থাকবে, যদ্বারা তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাবে। বংশীয়ভাবে এরা খুবই পরিচিত হবে। তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের কথা প্রকাশ করলেও যুদ্ধ করবে সুন্নাতের বিপরীত পথভ্রষ্টার উপর।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১৭]


হাদিস - ১৮

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হুজাইফা ইবনুল এমান  (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যাবতীয় ফিৎনা ফাসাদ আমি যা জানি, সেগুলো যদি তোমাদেরকে বয়ান করি তাহলে তোমরা আমার সাথে বিনিদ্র অবস্থায় থাকতে পারবে না।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১৮]


হাদিস - ১৯

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস  (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমাদের ওপর ফিৎনা-ফাসাদ, অব্যাহত থাকবে এবং মোয়ামালা ধীরে ধীরে আরো কঠিন আকার ধারন করবে। যখন কোনো রাষ্ট্রপ্রধান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে দেশ পরিচালনা করে না এবং রাষ্ট্রনায়কগণ আল্লাহ তাআলার এবাদত করেনা তখন তোমরা আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হওয়াকে খুবই ভয় কর। কেননা, আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হওয়া মানুষের অসন্তুষ্ট হওয়া থেকে মারাত্মক।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১৯]


হাদিস - ২০

আবু ইদরীস হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি, আবু সালেহ এবং আবু মুসলিম একসাথে ছিলাম। তারা দুইজনের একজন অপরকে বলল, তোমরা কি কোনো বিষয়ের ভয় করছ? তারা বলল, আমরা মানুষের লোভ সম্বন্ধে শংকিত। অতঃপর আমি বললাম, এমন লোভ একমাত্র আখেরী যামানার মানুষের মাঝে প্রকাশ পাবে।

উত্তরে তার বলল, তুমি ঠিকই বলেছ, কেউ লোভবিহীন কখনো ছিনতাই ডাকাতী করতে পারেনা এবং মানুষ সবচেয়ে বেশি ছিনতাই ইত্যাদির সম্মুখিন হবে একমাত্র ইসলামের ক্ষেত্রে। নিঃসন্দেহে যাবতীয় ফিৎনা ফাসাদ ইসলামের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে এবং উক্ত ফিৎনা আখেরী যামানাতেই ব্যাপক আকার ধারন করবে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ২০]

_______________

আল ফিতান

কৃত:নুয়াইম বিন হাম্মাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন