নবী করীম (ﷺ)-এর ইন্তেকাল হতে কিয়ামত পর্যন্ত সংঘটিতব্য ফিতনা ও তার সংখ্যা সম্পর্কে অভিহিতকরণ (৯)

 

নবী করীম (ﷺ)-এর ইন্তেকাল হতে কিয়ামত পর্যন্ত সংঘটিতব্য ফিতনা ও তার সংখ্যা সম্পর্কে অভিহিতকরণ (৯)


হাদিস - ৮১

হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন, ফিতনা সংঘটিত হবে। অতঃপর জামাত হবে। অতঃপর ফিতনা হবে, অতঃপর জামাত হবে। অতঃপর এমন ফিতনা হবে যেখানে পুরুষদের বুদ্ধি থেমে যাবে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮১]


হাদিস - ৮২

হযরত আব্দুল্লাহ  (رضي الله عنه) থেকেত বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে চারটি ফিতনা হবে। আর চতুর্থবার হবে ধ্বংশ (মৃত্যু)।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮২]


হাদিস - ৮৩

কিছু প্রবীণ সৈন্য থেকে বর্ণিত, তারা বলেন একদিন খালেদ ইবনে ইয়াযিদ ইবনে মোয়াবিয়া মারওয়ান ইবনে হাকামের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং তিনি ওমর ইবনে মারওয়ানের মেহমান ছিলেন, ঐ সময় তার সাথে একটি চাকু ছিল এবং হাতে কিছু কাগজ ছিল। হঠাৎ তিনি বলে উঠলেন, পাঁচ এবং দশ অতিবাহিত হয়েছে কেবলমাত্র বিশ বাকি রয়েছে, যার ক্ষতি মাশরিক-মাগরিবের সকলকে গ্রাস করে নিবে। তার থেকে একমাত্র এন্তাবলিসের বাসিন্দা ব্যতীত কেউ মুক্তি পাবেনা। শফি ইবনে ওবাইর তাকে সেই ফিৎনা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, প্রথম ফিৎনা হচ্ছে পাঁচ, দ্বিতীয় ফিৎনা দশ বৎসরে। অর্থাৎ, ফিৎনায়ে আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর। এরপরে প্রকাশ পাবে তেইশ বৎসরের ফিৎনা মাশরিক মাগরিবকে গ্রাস করে দিবে। এন্তাবলিসের বাসিন্দা ব্যতীত কেও উক্ত ফিৎনা থেকে মুক্তি পেতে পারেনা।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৩]


হাদিস - ৮৪

আব্দুল আযীয ইবনে সালেহ হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান থেকে বর্ণনা করেন (বর্ণনাকারী বলেন, রাবী ওয়ালিদ তার মাঝে ও হুযায়ফা  (رضي الله عنه) মাঝে আরেকজন রাবীর কথা উল্লেখ করেন তবে তা আমার স্মরণ নেই) তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) এর পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত চারটি ফিতনা সংঘটিত হবে। প্রথমটি হলো ‘পাঁচ’, দ্বিতীয়টি হলো ‘দশ’, তৃতীয়টি হলো ‘বিশ’, চতুর্থটি হলো দাজ্জাল।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৪]


হাদিস - ৮৫

ইয়াযিদ ইবনে আবি হাবীব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার কাছে রাসূলুল্লা (ﷺ) থেকে সংবাদ পৌছেছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, এমন কিছু ফিৎনা প্রকাশ পাবে যা সবাইকে গ্রাস করে নিবে। তার থেকে পশ্চিমা সৈন্য ব্যতীত কেও মুক্তি পাবেনা। ➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৫]


হাদিস - ৮৬

হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন  (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, চার প্রকারের ফিতনা সংঘটিত হবে। ১. খুন করাকে বৈধ মনে করা হবে। ২. অন্যের সম্পদকে বৈধ মনে করা হবে। ৩. নারীর লজ্জাস্থানকে বৈধ মনে করা হবে। ৪. দাজ্জালের আগমন।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৬]


হাদিস - ৮৭

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ  (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ যা, এরশাদ করেছেন, আমি তোমাদেরকে আমার পরে প্রকাশিত সাত প্রকারের ফিতনা থেকে ভয় প্রদর্শন করছি। তার মধ্যে একটি পেশ আসবে মদীনা থেকে, আরেকটি প্রকাশ পাবে মক্কায়। অন্য পেশ আসবে ইয়ামান থেকে, আরেকটি শাম থেকে, আরেকটি মাশরিক থেকে, আরেকটি মাগরিব থেকে। অন্যটি প্রকাশ পাবে শামের মূলভুখন্ড থেকে এবং যেটিই হচ্ছে, ‘সুফইয়ানী ফিতনা’। এরপর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ  (رضي الله عنه) বললেন, তোমাদের মাঝে এমন অনেকে রয়েছে যারা প্রথম ফিতনাগুলো অবলোকন করবে এবং এ ওম্মতের অন্যরা সর্বশেষ ফিতনাগুলো অবলোকন করবে। ওয়ালিদ ইবনে আইয়াশ বলেন, মদীনার ফিতনা হচ্ছে, তালহা এবং যুবায়ের এর পক্ষ থেকে। মক্কার ফিতনা হলো, আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের এর ফিতনা। ইয়ামানের ফিতনা হচ্ছে, যেটা নাজদার পক্ষ থেকে সংঘটিত হয়েছিল। শামের ফিতনা সংঘটিত হবে বনূ ওমাইয়ার পক্ষ থেকে আর মাশরিকের ফিতনা হচ্ছে, এদের পক্ষ থেকে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৭]


হাদিস - ৮৮

হযরত আবু হুরাইরা  (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেছেন, আমার পরে আমার ওম্মতের মাঝে চার প্রকারের ফিতনা সংঘটিত হবে। প্রথমতঃ পরস্পর মারামারি, হানাহানি বৃদ্ধি পাবে। দ্বিতীয়তঃ মানুষকে হত্যা করা এবং মানুষের সম্পদ বৈধ মনে করা হবে।

তৃতীয়তঃ মানুষ হত্যা, অন্যের সম্পদ এবং বিনা ব্যভিচার ইত্যাদি জায়েয মনে করা হবে। চতুর্থতঃ অন্ধ বধিরের ফিতনা, যা মানুষের সাথে চামড়ার ন্যায় মিশে যাবে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৮]


হাদিস - ৮৯

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা  (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেছেন, আমার পরে তোমাদের মাঝে চার ধরনের ফিতনা প্রকাশ পাবে। এক. এমন ফিতনা যার মধ্যে লোকজন মানুষ হত্যা করাকে বৈধ মনে করবে।

দুই. মানুষ হত্যা এবং অন্যের সম্পদকে হালাল মনে করা হবে।

তিন. এমন ফিতনা যার মধ্যে মানুষ হত্যাকরা অন্যের সম্পদ দখল করা এবং বিনা-ব্যভিচারকে বৈধ মনে করা হবে।

চার. অন্ধ-বধিরের ফিতনা, যা ব্যাপক আকার ধারন করবে। সমুদ্রের ঢেউয়ের তীব্রভাবে আসতে থাকবে। কেউ তার থেকে মুক্তির কোনো উপায় খুজে পাবে না। যে ফিতনা শাম দেশকে অবরুদ্ধ করে রাখবে এবং ইরাকেও গ্রাস করবে। উক্ত ফিতনার হাত-পা দ্বারা জাযিরাতুন আরবকে শড়াতে থাকবে। তখন বিভিন্ন ধরনের বালা-মসিবত মানুষের শরীরের সাথে এমনভাবে মিশ্রিত হয়ে যাবে, যেমন চামড়া শরীরের সাথে মিশে যায়। এহেন পরিস্থিতিতে উক্ত ফিতনা প্রতিরোধ করার মত শক্তি কারো থাকবেনা। অতঃপর উক্ত ফিতনা সম্বন্ধে পরিপূর্ণ অবগত হওয়ার পূর্বেই ঝড়ের গতিতে চূর্ণবিচূর্ণ করে অন্যদিকে বের হয়ে যাবে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৯]


হাদিস - ৯০

হযরত আবু হুরাইর  (رضي الله عنه) বলেন একদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিম্নের আয়াতটি তিলাওয়াত করেন।

------- অর্থাৎ, তোমাদেরকে তিনি দলে উপদলে বিভক্ত করে পরস্পর মুখোমুখী দাড় করাবেন । (সূরা আনআম ৬৫)

এরপর রাসূলুল্লহ (ﷺ) বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে চারটি ফিতনা প্রকাশ পাবে। প্রথম ফিতনা যখন দেখা দিবে, তখন মানুষকে হত্যা করা হালাল মনে করা হবে। দ্বিতীয় ফিতনা এমন আকার ধারন করবে, মানুষ অন্যকে হত্যা করা এবং অন্যের সম্পদ দখল করাকে বৈধ জানবে। তৃতীয় ফিত্নাকালীন হত্যা, ডাকাতি এবং ধর্ষণ ইত্যাদি জায়েয মনে করা হবে। চতুর্থ ফিতনা হচ্ছে অন্ধকারাচ্ছন্ন অন্ধ ফিতনা, যা সমুদ্রের ঢেউয়ের বিস্তৃত হয়ে আছড়ে পড়বে। আরবের প্রত্যেক ঘরকে উক্ত ফিতনা গ্রাস করে নিবে।➥[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯০]

_______________

আল ফিতান

কৃত:নুয়াইম বিন হাম্মাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন