মুশাহিদাঃ মাশায়েখগণ বলেছেন, বেলায়েতের দর্জায় পৌঁছানোর পর আহলুল্লাহদের দর্শন নফসের মধ্যে হয়ে থাকে। স্বীয় নফসের বাইরের দর্শন, যা ‘সায়ের ইলাল্লাহ’ বা আল্লাহরদিকে সায়েরের সময় পথিমধ্যে প্রকাশিত হয়, সে অবস্থা ধর্তব্য নয়। এই দরবেশের উপর যা প্রকাশিত হয়েছে, তা হচ্ছেঃ স্বীয় নফসের মুশাহিদা বা দর্শন, নফসের বাইরের মুশাহিদার ন্যায় বিশ্বাসযোগ্য নয়, এই জন্য যে, উক্ত মুশাহিদা, প্রকৃতপক্ষে হক সুবহানুহুর মুশাহিদা নয়। কেননা, হক সুবহানুহু তায়া’লা যখন তুলনাহীন এবং রূপ ও বর্ণনাহীন, তখন তিনি কীরূপে তুলনারূপ দর্পনে সীমিত হতে পারেন? যদিও উক্ত দর্পন নফসের মধ্যে অথবা বাইরে থাকে। হক সুবহানুহু তায়ালা না দুনিয়ার মধ্যে এবং না তার বাইরে; না দুনিয়ার সংগে মিলিত এবং না দুনিয়া থেকে আলাদা। আল্লাহতায়ালার দর্শন না এই দুনিয়ার মধ্যে সম্ভব এবং না এর বাইরে। আর ঐ দর্শন না দুনিয়ার সঙ্গে মিলিত এবং না দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন। এই জন্য ঐ দর্শন যা আখেরাতে হবে, জ্ঞানীগণ সে সম্পর্কে বলেছেন যে, ঐ দর্শন বেলা কায়েফ বা প্রকারহীন হবে, যা জ্ঞানবুদ্ধির সীমার বাইরে। আল্লাহ্তায়ালা এই গোপন রহস্যকে তাঁর একান্ত প্রিয় বান্দাদের নিকট এই দুনিয়াতে প্রকাশ করেছেন। যদিও তা দর্শন নয়, তথাপিও তা দর্শনের অনুরূপ। এটা সেই মহাসম্পদ, যা সাহাবায়ে কেরাম (রেদ্ওয়ানুল্লাহু তায়ালা ‘আলায়হিম আজমা’য়ীন) দের যামানার পর খুব অল্পসংখ্যক লোকেরই নসীব হয়েছে। আজও অনেকে একথা অবাস্তব বলে ধারণা করে এবং অধিকাংশ লোকই একথা গ্রহণ করবে না; তবুও এই ফকীর একথা প্রকাশ করছে। চাই অপরিণামদর্শী লোকেরা একথা কবুল করুক আর নাই-ই করুক। এই পবিত্র নেসবতটি, এই বিশেষত্বের সাথে, আগামীতে হজরত মেহেদী (আলায়হি রেদওয়ানের) সময় প্রকাশিত হবে। ইনশাআল্লাহু তায়ালা। যারা হেদায়েতের অনুসারী এবং মোস্তফা সল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ প্রতিপালনকারী তাদের প্রতি সালাম এবং তাঁর স. পরিবার পরিজন ও সাহাবীদের উপর সালাম ও রহমত নাযিল হোক।
_______________
কিতাব: মাবদা ওয়া মা'আদ
কৃত: হজরত মুজাদ্দেদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
অনুবাদ: ড. আ ফ ম আবু বকর সিদ্দীক
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন