সাইয়্যেদুনা ইমাম হাসান (رضي اللّٰه عنه) যখন তাঁর তথাকথিত শী’আহ গোষ্ঠীর চপলতায় অতিশয় ক্রুদ্ধ হন


সাইয়্যেদুনা ইমাম হাসান (رضي اللّٰه عنه) যখন তাঁর তথাকথিত শী’আহ গোষ্ঠীর চপলতায় অতিশয় ক্রুদ্ধ হন, তখন তিনি আমীরে মু’আবিয়া (رضي اللّٰه عنه)’এর সাথে শান্তিচুক্তি সম্পাদন করার সিদ্ধান্ত নেন। কেউ একজন আমীরে মু’অবিয়া (رضي اللّٰه عنه)’এর সাথে শান্তি স্থাপনের ফলে শী’আহ চক্রকে অপমানিত করা হয়েছে মর্মে প্রতিবাদ করলে ইমাম হাসান (رضي اللّٰه عنه) জবাব দেন:

আল্লাহর কসম, আমি তাঁর (আমীরে মু’আবিয়া - رضي اللّٰه عنه)’এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি অন্য কোনো কারণে নয়, বরং এ কারণে যে আমি কোনো সমর্থক খুঁজে পাইনি। আমি যদি সমর্থক খুঁজে পেতাম, তাহলে তাঁর সাথে রাত-দিন লড়তাম যতোক্ষণ না আল্লাহ আমাদের মাঝে (কারো পক্ষে) সিদ্ধান্ত নিতেন। কিন্তু আমি কুফাবাসীদের জানি এবং চিনি। তাদের ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা আছে। তাদের মধ্যে মন্দ লোকেরা আমার জন্যে উত্তম নয়। তাদের নেই কোনো বিশ্বস্ততা/আনুগত্য; নেই কথা ও কাজে কোনো সততা বা ন্যায়পরায়ণতা। তাদের মধ্যে রয়েছে মতপার্থক্য। তারা দাবি করে তাদের অন্তর আমাদের (মানে আহলে বায়তের) প্রতি নিবেদিত, অথচ তাদের তরবারি আমাদের বিরুদ্ধে রয়েছে উন্মুক্ত, কোষমুক্ত। [আল-কুলাইনী, ‘রওদা’তুল কা’ফী’, ৮ম খণ্ড, ২৮৮ পৃষ্ঠা]।


ইমাম মূসা কা’যিম (رحمة اللّٰه عليه), যিনি ইমাম জা’ফর সাদিক্ব (رحمة اللّٰه عليه)’এর পুত্র ও শিয়াদের ধারণাকৃত সপ্তম ইমাম, তিনি শী’আহ গোষ্ঠী সম্পর্কে নিচের বর্ণনাটি প্রদান করেন:

আমার শী’আহ (সাহায্যকারীদের) সম্পর্কে যদি সত্যি আমাকে মূল্যায়ন করতে হয়, তাহলে আমি তাদেরকে পেয়েছি ভণ্ড বা ভানকারী হিসেবে। আমি তাদেরকে পরীক্ষায় ফেল্লে কেবল ধর্মত্যাগী (মুরতাদ্দ) হিসেবেই পাবো। আমি তাদেরকে যাচাই-বাছাই করলে হাজারে কেবল একজনকে (খাঁটি হিসেবে) পাবো। আর আমি তাদেরকে তুষ বাছাই করলে স্রেফ মুষ্টিমেয় কয়েকজনকে পাবো যারা সত্যি আমার (অনুসারী)। তারা বরাবরই গদির ওপর বসে এ কথা বলে আসছে - “আমরা ইমামে আলী (كرم اللّٰه وجهه)’এর শী’আহ/সাহায্যকারী।”



আজকে আশূরা’কে (১০ই মহর্রমকে) যদি (ন্যায়ের) সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার দিবস হিসেবে স্মরণ করতে হয়, তাহলে এ দিনটিকে আমাদের বিশ্বাসঘাতকতা ও দলত্যাগের দিবস হিসেবেও স্মরণ করতে হবে। যখন এয়াযীদ, উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ, উমর বিন সা’আদ ও শিমর ইবনে যিল জওশানের নামগুলো উচ্চারিত হবে এবং তাদের স্মৃতির প্রতি অভিসম্পাত দেয়া হবে, তখন যেনো কুফাবাসী শী’আহদের বিশ্বাসঘাতকতার কথাও আমরা ভুলে না যাই। শিয়া গোষ্ঠী কর্তৃক তাদের আশূরা অনুষ্ঠানে একটি বিষয়ের পুনঃপ্রবর্তন দীর্ঘকাল বাকি পড়েছে, আর তা হলো তওওয়াবূনের প্রথম স্মারক অনুষ্ঠানের অংশটি। সেই হারানো অংশটি হচ্ছে সাইয়্যেদুনা ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (رضي اللّٰه عنه)’এর পবিত্র রক্ত ঝরানোতে ইবনে যিয়াদ, এয়াযীদ ও অন্যান্যদের পাশাপাশি শী’আহ’দের নিজেদেরও অপরাধ স্বীকার করা।



*সমাপ্ত*  


[রেফারেন্স: এই ইতিহাসভিত্তিক গবেষণার অধিকাংশ তথ্য-উপাত্ত ইবনে কাসীরের ‘আল-বেদায়াহ ওয়ান্ নেহায়াহ’ পুস্তক হতে গ্রহণ করা হয়েছে। আবদুর রাযযাক্ব আল-মূসাভী আল-মুক্বার্রম রচিত ‘মাক্বতাল আল-হুসাইন’ (৫ম সংস্করণ, প্রকাশক- মাকতাবাহ বাসীরাতী, ক্বুম, ১৩৮২ হিজরী) শীর্ষক শিয়া ইতিহাসগ্রন্থেরও সহায়তা নেয়া হয়েছে]

_______________

কারবালার অন্যান্য দুর্বৃত্তদের মুখোশ উন্মোচন

মূল: মাহাজ্জা-ডট-কম

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]



             

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন