যুগে যুগে সচ্ছ ও নির্মল ধারায় আমার আগমন

 

যুগে যুগে সচ্ছ ও নির্মল ধারায় আমার আগমন


এভাবে ধারাবাহিক ও বিরতীহীনভাবে উক্ত অসয়ীত মোবারক প্রবাহমান হয়ে এক যুগ হতে আরেক যুগ পর্যন্ত আসতে আসতে এক পর্যায়ে মহান আল্লাহ পাক উক্ত নূরে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর দাদা খাজা আব্দুল মোত্তালেব (رضي الله عنه) হয়ে পিতা আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) এর ঔরসে স্থানান্তরিত করে আনেন।



আর মহান আল্লাহ পাক নবী বংশকে যুগে যুগে জাহিলিয়্যাতের নির্বোদ্ধিতা হতে পবিত্র রাখেন। যেমন : এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরমান :



مَا ولدني من سفاح الْجَاهِلِيَّة شَيْء وَمَا ولدني إِلَّا نِكَاح كَنِكَاح الْإِسْلَام



অর্থাৎ : জাহিলিয়্যাতের নির্বুদ্ধিতায় আমার জন্ম হয়নি বরং যুগে যুগে ইসলামী ধারার বিবাহ প্রথার মাধ্যমে আমার আগমন ঘটেছে।



ইমাম ক্বাস্তালানী (رضي الله عنه ) বলেন : আরবী ভাষায় سفح শব্দটি সীনের নীচে যের যুগে অর্থ হবে যিনা বা ব্যভিচার। আর উক্ত আলোচনায় সিফাহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, কোন কোন মহিলা পুরুষের সাথে অবৈধ যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হয় দীর্ঘ সময় এর পর চিহিৃত হওয়ার পর সে ঐ মহিলাকে বিয়ে করে।


ঐতিহাসিক ইবেন সা’দ -ইবনে আসাকীর হিসাম বিন মুহাম্মদ বিন সায়েব আল কালবী হতে তিনি স্বীয় দাদা হতে বর্ণনা করেন, তাঁর দাদা বলেন: আমি একেক করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্ববর্তী মা আমেনা (رضي الله عنه) সহ প্রায় একশ জন মায়ের কথা লিপিবদ্ধ করেছি কিন্তু তাঁদের কারও মধ্যে পবিত্রতা ছাড়া জাহিলিয়্যাতের অবৈধ ও নিবুর্দ্ধিতার চিহৃ দেখতে পাইনি এমনকি জাহিলিয়্যাতের কোন নিকৃষ্ট কর্মকান্ড ও দেখতে পাইনি।



সাইয়্যিদিনা হযরত আলী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত : তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ ফরমান : আমি যুগে যুগে যাদের গর্ভে স্থানান্তরীত হয়ে এসেছি, তাঁদের সবাই ছিলেন বিবাহিতা। এমনকি আমি বাবা আদম (عليه السلام ) থেকে নিয়ে আমার পবিত্র পিতা ও পবিত্রা মাতা পর্যন্ত জাহিলিয়্যাতের অবৈধ পন্থায় বের হয়ে আসিনি এবং জাহিলিয়্যাতের কোন নিবুর্দ্ধিতা ও আমাকে স্পর্শ করেনি। এ হাদীসটি ইমাম তাবারানী স্বীয় আওসাত গ্রন্থে এবং আবু নাঈম ও ইবনে আসাকীর স্বীয় গ্রন্থদ্বয়ে বর্ণনা করেন।



হযরত আবু নাঈম رضي الله عنه  ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে মারফু সূত্রে একখানা হাদীস বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন :



 لم يلتق ابواى قط على سفح



অর্থাৎ : আমার মাতা-পিতা কখনও জাহিলিয়্যাতের নির্বুদ্ধিতা ও অবৈধতায় লিপ্ত হননি বরং ধারাবাহিকভাবে তিনি আমাকে পুত: পবিত্র পুরুষদের মেরুদন্ড হতে পুত: পবিত্রা রমনীদের রেহেম শরীফে স্থানান্তরীত করে স্বচ্ছ ধারায় আনেন ।


এর সমর্থনে পবিত্র কুরআনে পাকে আছে :



وتقلبك فى الساجدين



যুগে যুগে আমি আপনাকে সেজদাকারীর মধ্যে স্থানান্তরীত করে এনেছি।



ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন : আয়াতের যথার্থ হচ্ছে : এক নবী হতে অন্য নবী পর্যন্ত আমাকে স্থানান্তরীত করা হয়েছে এমনকি হে রাসূল ! আমি আপনাকে শেষ নবী হিসেবে বের করে এনেছি।



ইমাম বাযযার ও আবু নাঈম অনূরূপ বর্ণনা করেছেন। এ ব্যাপারে জাতির সতর্কতার উদ্দেশ্যে বলা যায় যে, হুযুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমস্ত জাতীগণের মেরুদন্ড হতে স্থানান্তরীত হয়ে আসেন। তবে একথা বুঝানো হয়নি যে, তাঁর পূর্বপুরুষ সকলই নবী ছিলেন। কেননা এ কথা ইজমায়ে উম্মতের সম্পূর্ণ বিপরীত কথা। আর একথাও বলা যায় না যে, তাঁর পূর্ব পুরুষ সকলই মুসলমান ছিলেন বরং অধিকাংশরাই হানিফ তথা আহলে ফিৎরাতের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। তন্মধ্যে খাজা আব্দুল মোত্তালেব (رضي الله عنه) হযরত ইব্রাহীম (عليه السلام )  এর মাতা পিতা এবং তাঁর মাতা পিতা প্রমুখরা। (টিকা ২)



তাদের বিধান সম্পর্কে আমি (মুল্লা আলী কারী (رضي الله عنه ) ) স্বতন্ত্র একটি রেসালাত প্রণয়ন করেছি এবং হুযূরে পাকের মাতা-পিতা সহ সকল আহলে ফিৎরাতের আলোচনা সম্বলিত ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (رضي الله عنه ) কর্তৃক প্রণীত “রেসালায়ে ছালাছা” (টিকা ৩)  গ্রন্থের আলোকে বিস্তারিত দলীল সমূহ দ্বারা উপস্থাপন করছি।



(টিকা ২: আরম্ভ)____________________



হুযূরে পাক (رضي الله عنه) এর মাতা-পিতা ও আহলে ফিৎরাতের হুকুম : মূল গ্রন্থের ৫১নং পৃষ্টায় হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাতা-পিতা জান্নাতী হওয়া প্রসঙ্গে ১নং হাশিয়াতে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমে আসা যাক হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিতামহ খাজা আব্দুল মোত্তালেব (رضي الله عنه) প্রসঙ্গে, তিনি কি আহলে ফিৎরাতের অন্তর্ভূক্ত নাকি জাহান্নামী? সুপ্রসিদ্ধ অভিমত হচ্ছে যে, হুযূর (رضي الله عنه) এর পিতামহ আব্দুল মোত্তালেব (رضي الله عنه) ছিলেন সন্দেহাতীতভাবে আহলে ফিৎরাতের অন্তর্ভূক্ত। এ ব্যাপারে ইজমায়ে উম্মতের শতস্ফুর্ত সমর্থন রয়েছে। তাছাড়া স্বয়ং রহমতে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও স্বীয় দাদাকে নিয়ে গৌরববোধ করতেন এভাবে : .انا النبى انا لاكذب انا ابن عبد المطلب (আমি নি:সন্দেহে নবী, আমি কোন মিথ্যুক নই, আমি হচ্ছি আব্দুল মোত্তালেবের আওলাদ।


তবে কাফের পুরুষদের নিয়ে গৌরব করতে নিষেধ করা হয়েছে। তাতে প্রমাণিত হলো যে, খাজা আব্দুল মোত্তালেব (رضي الله عنه) কাফের ছিলেন না বরং নি:সন্দেহে একজন আহলে ফিতরাতের পর্যায়ভূক্ত ছিলেন।



আর কুরআনে পাকে বর্ণিত ইব্রাহীম (عليه السلام ) এর পিতার কথা যেখানে বলা হয়েছে, সেখানে আবু দ্বারা মুলত: চাচাকেই বোঝানো হয়েছে।



যেভাবে ইমাম সুয়ুতী رضي الله عنه  চাচাকে বাবা বলে বুঝিয়েছেন স্বীয় রাসায়েলে ছালাছা, নামক গ্রন্থে।


তাছাড়া পবিত্র কুরআনে পাকেও ابا. দ্বারা চাচাকে বুঝানো হয়েছে।


যেমন আল্লাহ পাকের বাণী :



أَمْ كُنتُمْ شُهَدَاء إِذْ حَضَرَ يَعْقُوبَ الْمَوْتُ إِذْ قَالَ لِبَنِيهِ مَا تَعْبُدُونَ مِن بَعْدِي قَالُواْ نَعْبُدُ إِلَـهَكَ وَإِلَـهَ آبَائِكَ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ.



অর্থাৎ : অথবা তোমরা কি উপস্থিত ছিলে যখন ইয়াকুব (عليه السلام ) এর মওত হাযীর হয়েছিল? যখন তিনি স্বীয় সন্তানদেরকে বলেছিলেন বলতো আমার তীরোধানের পরে তোমরা কার উপাসনা করবে? তারা বলেছিল আমরা কেবল আপনার ইলাহ্, আপনার পূর্বপুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাক (عليه السلام )গণের ইলাহের উপাসনা করবো।


আয়াতে বর্ণিত ইসমাইল (عليه السلام ) আবু তথা পিতা না হয়ে عم (আম) তথা চাচার অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। আর হাদীস শরীফে এসেছে- عم الرجل صو ابيه  অর্থাৎ : কোন ব্যক্তির চাচা হচ্ছেন তার পিতার সহোদরা ভাই।



কুরআনে পাকে ইব্রাহীম (عليه السلام ) এর ক্ষেত্রে যে অর্থকে বুঝানো হয়েছে সে হচ্ছে ইব্রাহীম (عليه السلام ) এর চাচা আজর বিধায় প্রথম বারে তার জন্য দোয়া করতে নিষেধ করা হয়েছে নিন্মোক্ত বাণী দ্বারা:-



  مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُواْ أَن يَسْتَغْفِرُواْ لِلْمُشْرِكِينَ



এবং শেষ জীবনে তিনি যে, দোয়া করেছিলেন সেটা সত্য এবং প্রকৃত পিতার জন্যই দোয়া করেছিলেন। যেমন কুরানে পাকে বর্ণিত আছে :



رَبِّ اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيْتِيَ مُؤْمِناً وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَلَا تَزِدِ الظَّالِمِينَ إِلَّا تَبَاراً .



হে আল্লাহ পাক, তুমি আমাকে এবং আমার মাতা পিতাকে ক্ষমা করে দাও। ক্ষমা করে দাও আমার পরিবার ভুক্ত মুমিনগনকে (যারা মুমিন রূপেপ্রবেশ করে ) সবোর্পরী সকল মুমিন মুমিনাত নরনারীদেরকে।


(টিকা ২)_সমাপ্ত


(টিকা ৩ আরম্ভ)



একটি সন্দেহের দূরীকরন



মুলগ্রন্থের ৫২নং পৃ: ১নং ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাতা পিতা আহলে ফিতরাতের অন্তর্ভুক্ত নহে এ সংক্রান্ত অভিমত যা ইমাম মুল্লা আলী ক্বারী (رضي الله عنه ) করেছিলেন এ অভিমত মূলত অগ্রহনযোগ্য। তিনি উক্ত মন্তব্য করলেও পরবতর্ীতে ”শরহে শিফা, নামক গ্রন্থে রাসূলে পাকের মাতা পিতা আহলে ফিতরাত বিধায় উভয়ে জান্নাতী, কথাটির অভিমত ব্যক্ত করার মাধ্যমে পুর্বোক্ত মত থেকে ফিরে আসেন।



তিনি রাসূলে পাকের মাতা পিতা জান্নাতী হওয়া প্রসঙ্গে, শরহে শিফা গ্রন্থের দুই স্থানে বিস্তারীত আলোচনা করেছেন। প্রথম স্থানে গ্রন্থের ৬০১ পৃষ্টায় এবং দ্বিতীয় স্থানে ৬৪৮ পৃষ্টায় উল্লেখ করেন যা ১৩১৬ হিজরীতে ইস্তাম্বুলে প্রকাশিত হয়।



প্রথম স্থানে যা আলোচনা হয়েছ তা হচ্ছে যে, ইমাম কাজী আয়াজ رضي الله عنه  স্বীয় শিফা গ্রন্থে উল্লেখ করেন : একদা খাজা আবু তালেবের সঙ্গে হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিল মাজায নামক স্থানে অবস্থান করেন। এ সময়ে খাজা আবু তালেবের খুবই পিপাসা লেগে যায়। ফলে তিনি বললেন : মুহাম্মদ! আমিতো প্রচন্ড পিপাসীত হয়ে পড়েছি আমার নিকট তো পানি নেই।


তা শ্রবণে হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় পাদুকা মোবারক দ্বারা স্বজোরে মাটিতে আঘাত মারতেই পানি বেরিয়ে আসে। এবার বললেন চাচা আপনি তা পান করুন।



ইমাম মুল্লা আলী رضي الله عنه  বলেন, আল্লামা দালাজী বলেন : হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক মাটি থেকে পানি বের হওয়ার ঘটনাটি ঘটেছিল নবুওয়্যাতের অনেক পূর্বে শিশু বয়সে। তা ছিল তাঁর বিশাল মু’জেযার পরিচয়।



হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পাদুকার আঘাতে নির্গত পানি দ্বারা প্রতীয়মান হলো যে, তাঁর পাদুকার আঘাতের বরকতের কারামত শেষ যুগে প্রায় এক হাজার বছর পরে আরাফাতে ময়দানে একটি ঝরণা প্রবাহিত হবে। আর বাস্তবিকই তাই হয়েছে।


রাসূলে পাকের বরকতের প্রভাব মক্কা ও তৎপার্শ্ববর্তী এলাকা পর্যন্ত পৌছে যাবে। এ হচ্ছে আবু তালেবের সম্মুখে হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রকাশিত মু’জেযা। অথচ আবু তালেব ইসলাম গ্রহণ করতে পারেননি। আর হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র মাতা-পিতার ইসলাম গ্রহণ নিয়ে বিভিন্ন কথা থাকলেও সুপ্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য বর্ণনায় রয়েছে যে, উভয়েই জান্নাতী। একথার সমর্থন করেছেন বড় বড় মোহাদ্দেসীনে কেরাম ও আইম্মামে কেরামগণ। বিশেষত : হাদীস বিশেষজ্ঞ ত্রয়োদশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুজতাহিদ ইমাম শায়খুস সুন্নাহ জালালুদ্দিন সুয়ুতী رضي الله عنه  স্বীয় সংকলিত “রাসায়েলে ছালাছা” নামক গ্রন্থে এ বিষয়ে স্ববিস্তারে আলোচনা করেছেন।



দ্বিতীয় স্থানে যে আলোচনা এসেছে, তা হচ্ছে শায়েখ মুল্লা আলী ক্বারী رضي الله عنه  বলেছেন যে, হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাতা-পিতাকে জীবিত করে হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁদেরকে ঈমান গ্রহণ করিয়েছিলেন। এ মন্তব্য সঠিক ও নির্ভরযোগ্য জমহুর উলামায়ে কেরামগণের অভিমত। একথার সমর্থন দিয়েছেন ইমাম সুয়ুতী رضي الله عنه  স্বীয় গ্রন্থে।



এ সুদীর্ঘ আলোচনা থেকে আমরা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছতে পারি যে, ইমাম মুল্লা আলী কারী رضي الله عنه  প্রণীত শরহে শিফা গ্রন্থটি নির্ভরযোগ্য এবং তিনি সত্য ও সঠিক পথে ফিরে আসেন। তাঁর মতো আরও বহু নির্ভরযোগ্য উলামায়ে কেরামগণ ইজতেহাদী ত্রুটি বিচ্ছুতি করার পরও সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছেন। যেহেতু অপরাধ করার পরও এর পবিত্র নিয়ন্ত্রণের মালিক কেবল আল্লাহ পাক।



(ইমাম মুল্লা আলী رضي الله عنه  বলেন) রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাতা-পিতা জান্নাতী হওয়া বিষয়ক বর্ণিত আলোচনাই কেবল যথেষ্ঠ নয় বরং এর স্বপক্ষে আরও বহু যুক্তি নির্ভর দলীলও রয়েছে।



তাঁদের নাজাতের ব্যাপারে আরও কথা হচ্ছে যে, তাঁরা উভয়েই আহলে ফিতরাতের উপর ইন্তেকাল করেছেন। কেননা তখনকার সময় তাঁদেরকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য কোন নবীও ছিলেন না এমনকি তাঁদের উপর অর্পিত আবশ্যকীয় দায়িত্ব পালনের পথ নির্দেশনার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অন্য কোন পথ প্রদর্শকও ছিলেন না। বরং ঐ হালতে দীর্ঘ যুগ অতিবাহিত হয়। তাছাড়া তারা ব্যতীত ও আরও এমন বহু লোকেরা ছিল যারা ইব্রাহীম (عليه السلام ) এর যুগ হতে রাসূলেকারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমন পর্যন্ত নবীগণের তীরোধানের পরবর্তী বিরতী সময়ে কোন নবী ছিলেন না বা তাদেরকে ভয় প্রদর্শন ও করেননি।


যেমন সমস্ত একত্ববাদে বিশ্বাসী আরববাসী। তারা আহলে ফিতরাতের অন্তর্ভূক্ত ছিল।



নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাতা-পিতা জান্নাতী হওয়ার আরেক প্রমাণ হচ্ছে নিন্মোক্ত আয়াত শরীফ। মহান আল্লাহ পাক হযরত মরইয়ম সম্প্রদায় সম্পর্কে বলছেন, যখন মরইয়ম সম্প্রদায়রা তাদের কাছে সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও বলেছিল :



يَا أُخْتَ هَارُونَ مَا كَانَ أَبُوكِ امْرَأَ سَوْءٍ وَمَا كَانَتْ أُمُّكِ بَغِيّاً



 অর্থাৎ : হে হারুনের বোন মারইয়ম! তোমার পিতা তো নিকৃষ্ট কোন কাজ করেননি এবং তোমার মাতা তো তোমার মতো নিকৃষ্ট কাজে লিপ্ত হননি। অর্থাৎ তোমার পিতা-মাতা এ নিকৃষ্ট কাজের অধিবাসী নয়।


একথাটি তারা অপবাদ স্বরূপ বলেছিল। আর পূর্বোক্ত আহলে ফিতরাত বাসী আরবের কাউকেও আজাব দিয়ে ধ্বংস করা হবে না মর্মে নিন্মোক্ত আয়াত শরীফ প্রমাণিত আছে। মহান আল্লাহর বাণী:



وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولاً



 অর্থাৎ : আমি রাসূল প্রেরণ ব্যতীত কাউকেই শাস্তি দিবনা।


অর্থাৎ : রহিত শরীয়ত ও রাসূল প্রেরণ ব্যতীত কোন জাতি তার মুল বা যে কোন প্রশাখা পরিত্যাগের দুরুন আমি আমার কোন বান্দাহকে শাস্তি দিবনা। রাসূলগণ এসে তাদেরকে আল্লাহর বিধান দেখিয়ে ভয় প্রদর্শন করবেন এ সুযোগও ছিলনা যেহেতু। সেহেতু তিনি কাউকেও অন্যায়ভাবে শাস্তি দিবেননা। যেহেতু মহান আল্লাহ পাক হচ্ছেন ন্যায় পরায়ন ও বিধান প্রবর্তনশীল বিধায় কাউকেও অন্যায়ভাবে শাস্তি দেয়া তাঁর শান নয়।



আর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাতা-পিতা আহলে ফিতরাত হওয়ার কারণ যেহেতু তাঁরা পূর্ব যুগে ছিলেন, তখন কোন নবী ছিলেন না। বরং তাঁদের তীরোধানের অনেক পরে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দীর্ঘ মেয়াদী শরীয়ত নিয়ে আগমন করেন এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন স্বীয় মাতার রেহেম শরীফে অবস্থান করেন তখন তাঁর পিতা খাজা আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) ইন্তেকাল করেন এবং তাঁর বয়স যখন ছয় বছর(৫৭৬খৃ:) তখন স্বীয় মাতাও ইন্তেকাল করেন। এজন্য এ সময়কার ভেতরে তাঁরা কোন নবী বা কিতাব পাননি বরং কেবল আল্লাহ বিশ্বাসীই ছিলেন বিধায় তাঁরাও অন্যান্য আহলে ফিতরাতের ন্যায় বিনা হিসেবে জান্নাতী। এজন্য আল্লাহ পাক অন্যান্য আহলে ফিতরাতের মতো কখনো তাদের শাস্তি দিবেননা। অধিকাংশ নির্ভরযোগ্য উলামায়ে কেরাম এর উপর একমত পোষন করেন।



এখন তুমি বলতে পার যে, হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে, ঐ সমস্ত আহলে ফিতরাতের কেউ কেউ শাস্তির উপযোগী। আমি বলবো বর্ণিত হাদীসসমূহ হাদীসে আহাদের সমপর্যায়েরই নয়। তাহলে তুমি কি কিতাবুল্লাহর দলীলের মোকাবেলায় হাদীসে আহাদের উপর নির্ভর করবে?



তুমি বলবে কশ্মিন কালেও না। তাহলে কুরানী দলীলের মোকাবেলায় কিভাবে কিয়াস গ্রহণযোগ্যতা পাবে? অতএব নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, হুযূরে পাকের মাতা-পিতা অবশ্যই জান্নাতী, যা কুরআনে পাকের অকাট্য দলীলের ভিত্তিতে সাব্যস্থ।


আর ইমাম সুয়ুতী এর স্বপক্ষে যে তিনখানা রিসালাহ প্রণয়ন করেছেন ইমাম মুল্লা আলী কারী رضي الله عنه  তা মেনে নিয়েছেন। আর ইমাম মুল্লা আলী رضي الله عنه  প্রথম পর্যায়ে হুযূরে পাকের মাতা-পিতা জান্নাতী না হওয়াসম্পর্কে যে মন্তব্য করেছিলেন ; পরবর্তীতে তিনি তা হতে ফিরে আসেন।



যদিও উক্ত মন্তব্য তার ছিল তবুও ইমাম আবু হানিফা (رضي الله عنه) এর বাণী :



ان الولدين ماتا على الفطرة اى الاسلام



(নিশ্চই হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাতা-পিতা ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করেছেন) বক্তব্য দ্বারা তাঁর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা হয়। এজন্য ইমাম (رضي الله عنه) এর বর্ণিত বক্তব্যকে শতর্স্ফুতভাবে স্বীকার করে নেন।আল্লাম আলুসী رضي الله عنه  (যিনি নির্ভরযোগ্য সলফে সালেহীনদের অন্তর্ভূক্ত) স্বীয় তাফসীরে নিন্মোক্ত বাণী :



وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ



অর্থাৎ : আমি আপনাকে সর্বদাই সেজদাহকারীদের সঙ্গে স্থানান্তরীত করে এনেছি। এ বক্তব্য দ্বারা বুঝিয়েছেন যে, উক্ত আয়াতের আলোকে আহলে সুন্নাতের সকল আলেমগণ হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাতা পিতাকে জান্নাতী হওয়া অস্বীকারকারীকে কাফের বলেও মন্তব্য করেছেন।যেমন :



 وانا اخش الكفر على من يقول فيهما



মাতা-পিতা জান্নাতী হওয়ার ব্যাপারে যে ব্যক্তি বিরূপ মন্তব্য করবে, আমি তার থেকে কুফরীর আশংকা করছি।



হুযূর পাক (স) ছিলেন আবু তালেব ও আবু লাহাবের জন্য বিশেষ রহমত। মহান আল্লাহ পাক তাঁর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছেন। আর আল্লাহর কসম বাস্তবেতো আবু তালেব ও আবু লাহাব দ্বয়ের জন্য তিনি রহমত স্বরূপ ছিলেন। অথচ তারা উভয়ে নিজ চোখে তাঁকে দেখেছে, নিজ কর্ণে তাঁর দাওয়াতের কথা শ্রবণ করেছে তবুও কুফরীর উপর অটল অবিচল থেকে মৃত্যুবরণ করেন।


উল্লেখ্য যে, খাজা আবু তালেব ও আবু লাহাব দুজনই ছিলেন হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকটাত্মীয় (আপন চাচা)। তাদের ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে যে, প্রথম ব্যক্তির (আবু তালেব) থেকে স্থায়ীভাবে আজাবকে হালকা করা হয়েছে। কেবলমাত্র এক জোড়া দোযখের জুতো পরিধান করানো হচ্ছে আর দ্বিতীয় ব্যক্তি কুখ্যাত আবু লাহাবের জন্য সাময়িক কিছু হালকা করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ : প্রতি সোমবার আসলে কিছুটা হালকা করা হয়ে থাকে।



তা হচ্ছে রাসূলের পক্ষ থেকে তাদের জন্য এক বিশাল রহমত স্বরূপ। শুধু তাই নয় বরং একদিক থেকে ব্যাপকভাবে সকল আরবীয় কাফেরদের জন্যও তিনি রহমত স্বরূপ, যারা সারাটি জীবন হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কষ্ট দিয়েছে. দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করেছে।



وَمَا كَانَ اللّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنتَ فِيهِمْ



 অর্থাৎ : হে রাসূল ! আপনি তাদের মধ্যে বিধ্যমান থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন।


কাফেরের বেলায় যদি হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রহমত স্বরূপ হন, তবে হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাতা-পিতা আহলে ফিতরাত তথা একমাত্র তাওহীদে এলাহী বিশ্বাসী হওয়া সত্ত্বেও কেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁদের জন্য রহমত হবেন না অথচ আহলে ফিতরাত বাসী এমনিতেই জান্নাতী।


অতএব, এ ব্যাপারে আমাদেরকে কোরআন-হাদীস সহ ইমাম আবু হানিফা (رضي الله عنه) ও সকল নির্ভরযোগ্য উলামায়ে কেরামগণের মতও পথে ফিরে আসা বাঞ্চনীয়।



(টিকা ৩: সমাপ্ত)____________________



অনুবাদ : আয়াতে বর্ণিত انفسكم শব্দের অর্থ হচ্ছে .من جنسكم তবে তিনি অর্থাৎ : তোমাদের জাত থেকে তোমাদের মত একজন মানব এসেছেন। তবে তিনি তোমাদের নিকট রাসূল ও মুবাল্লিাদা হিসেবে আগমন করেছন। যেমন মহান আল্লাহর বাণী :



قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ



অর্থাৎ আপনি বলুন! আমি অবশ্যই তোমাদের মত একজন মানব। আমার নিকট ওহী এসেছে এ মর্মে যে, তোমাদের ইলাহ কেবলমাত্র একজনই।



ব্যাখ্যা : আয়াতে বর্ণিত من انفسكم শব্দকে من جنسكم তথা জাত, শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য নেয়ার হেকমত হচ্ছে যেহেতু জাত একীভূত হওয়ার কারণ। যদ্বারা পরিপূর্ণ নিয়ম শৃংখল অর্জিত হয়। অনূরূপভাবে একইজন দ্বারা পরিপূর্ণভাবে অনুস্মরণ ও অনুকরণ করা সহজসাধ্য হয়।



কেননা যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মানব জাতীর অন্তর্ভুক্ত না করে বরং ফেরেস্তা জাতীর অন্তর্ভূক্ত করা হতো তবে অবশ্যই বলা হতো যে, তার ফেরেস্তা শক্তি রয়েছে এবং ঐ বৈশিষ্ঠ্যের দ্বরুন তাঁর অনুস্মরণ করা মানবিক দুর্বলতার কারণে আমাদের পক্ষে আদ্দৌ সম্ভব হতোনা।



আর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানবীয় আকৃতিতে আগমন করাটা ফেরেস্তা জাতির সম্পূর্ণ বিপরীত। যেহেতু কথায়, কাজে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এবং নিদর্শনগুলোর দ্বারা সহজে তাঁর অনুসরণ করা সম্ভব বিধায় মানবীয় গুণাবলী দ্বারা তাঁকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কেননা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন আল্লাহর পক্ষ হতে প্রেরীত এক মাধ্যম। যা আল্লাহর পক্ষ হতে অনবরত তাঁর নিকট ফয়েজে রাব্বানী তথা খোদাপ্রদত্ত ফয়েজ আসতে থাকে এবং তিনি তা জাতীর নিকট পৌছিয়ে দেন। তার মর্মার্থ কেউ উপলব্ধি করতে পারেনা। বিশেষত: কাফেরদের নিকট তা বোধগম্য না হওয়ায় তাদের একদল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করত: বলেছে ابعث الله بشرا رسولا অর্থাৎ : আল্লাহ পাক কি একজন মানুষ (মোহাম্মদ) কে রাসূল বানিয়ে প্রেরণ করেছেন? অথবা তাদের একথা সম্পূর্ণভাবে তাদের নির্বোদ্ধিতা ও বোকামীর প্রমাণ বহন করে। আর এ নির্বোদ্ধিতাও বোকামীর দ্বরুন তারা এ বিশ্বাস করতো যে, আল্লাহ পাথরও হতে পারেন। এজন্য তাদের ধারণা হচ্ছে যে, রাসূল কখনো মানবের পক্ষ হতে আসতে পারেন না, তা আদৌ সম্ভব নয়।



 মোট কথা হচ্ছে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে একজন রাসূল রূপে আগমন করেছেন তা আমাদের জন্য বিশাল এক নেয়ামত বৈই আর কিছুই নয়। তাঁর রাসূল রূপে আগমন আমাদের জন্য যেভাবে বিশাল এক নেয়ামত, তেমনি মানবীয় সুরতে, মানব জাতি হতে আগমন টাও আমাদের জন্য এক বিশাল নেয়ামত ও উপহারস্বরূপ।



কোন কোন উলামায়ে কেরাম من انفسكم বাক্যের ব্যাখ্যা من جنس العرب তথা, আরব জাতীর মধ্য হতে, শব্দে ব্যাখ্যা করেছেন যা পুর্বোক্ত আলোচনার বিপরীত নয়। এর সমর্থনে মহান আল্লাহর নিন্মোক্ত আয়াতে করীমা রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক এরশাদ ফরমান :



وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلاَّ بِلِسَانِ قَوْمِهِ



অর্থাৎ : আমরা এমন কোন নবী প্রেরণ করিনি যে, স্বীয় সম্প্রদায়ের ভাষা দিয়ে প্রেরণ করিনি। সাইয়্যিদিনা হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বিশুদ্ধ একখানা হাদীস শরীফ বর্ণিত হয়েছে যে, আরবের বনু মুদ্বার বনু রাবীআ ও ইয়ামানীর মধ্যকার এমন কোন গোত্র নেই যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ন্যায় উত্তম পুরুষ জন্মদান করেছে।



এর স্বপক্ষ মহান আল্লাহ পাক বলেন :



قُل لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْراً إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى



অর্থাৎ : বলুন হে নবী! আমি তার বিনিময়ে তোমাদের নিকট হতে আত্মীয়ের সৌহার্দ্য ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান চাই না।


(সূরা : শুরা - আয়াত :-২৩)



হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رضي الله عنه) স্বীয় মসনদে হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন : হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন :



لم يكن بطن من قريش الا ولرسول الله فيهم قرابة



অর্থাৎ : কুরাইশদের সকল শাখাগোত্রের মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সৌহার্দ্য বিরাজমান ছিল। তার সমর্থনে পুর্বোক্ত আয়াতে কারীমা অবতীর্ণ হয়।



আয়াতে বর্ণিত من انفسكم বাক্যের ف হরফে যবর যোগে পাঠ করলে অর্থ হবে من اعظمكم قدو. তথা-তোমাদের শ্রেষ্ঠজন হতে উত্তমাদর্শ হিসেবে আগমন করেছেন।

_______________

আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবাবী (ﷺ)

মূলঃ ইমাম নূরুদ্দীন মুল্লা আলী কারী আল হারুবী (رحمة الله)

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন