তাওয়াফ অবস্থায় দরূদ পাঠের ঘটনা

 

তাওয়াফ অবস্থায় দরূদ পাঠের ঘটনা 



হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে হযরত সুফিয়ান (রহঃ) বর্ণনা করেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) একদিন বাইতুল্লাহ তাওয়াফে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, সে তাওয়াফ অবস্থায় প্রতি কদমে দরূদ শরীফ পাঠ করছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, তুমি তাওয়াফ অবস্থায় তাসবীহ তাহলীল ও দোয়ায়ে মাছুরা বাদ দিয়ে শুধু দরূদ শরীফ কেন পড়ছ? এ ব্যপারে কি তোমার কাছে কোন দলিল প্রমাণ আছে। সে বলল আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন। আগে বলুন আপনি কে? আমি বললাম, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস। লোকটি বলল, যদি আপনি বিশেষ কোন ব্যক্তি না হতেন তাহলে আমি আমার অবস্থার কথা বলতাম না বরং গোপনে রাখতাম। অতপর সে বলল, একদিন আমি আমার পিতাকে নিয়ে হজ্জ্বে গমন করি। পথিমধ্যে এক জায়গায় অবস্থান করলাম। সেখানে আমার পিতা অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করলাম তাঁর খেদমত করতে ও তাকে বাঁচাতে। কিন্তু তাকদীর তদবীরের উপর অগ্রগামী হল। তিনি ইন্তেকাল করলেন আর তার চেহারা কালো বর্ণের হয়ে গেল। অন্য এক বর্ণনায় গাধার ন্যায় হয়ে গেল। আমি পিতার চেহারা চাদর দিয়ে ঢেকে দিলাম এবং এই চিন্তায় আমার তন্দ্রা এসে গেল। স্বপ্নে দেখলাম অত্যান্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সুন্দর চেহারা বিশিষ্ট শুভ্র পোশাক পরিধান কৃত এবং সুগন্ধিযুক্ত এক ব্যক্তি ধীরগতিতে আমার পিতার নিকট আগমন করলেন। তিনি আমার পিতার চেহারা থেকে চাদর তুলে স্বীয় হাত বাড়িয়ে পিতার চেহারায় মালিশ করেন। ফলে আমার পিতার চেহারা উজ্জল ও শুভ্র হয়ে গেল। এরপর তিনি চলে যেতে লাগলেন। আমি দৌড়ে গিয়ে তার আচল ধরে বললাম, জনাব! হে আল্লাহর মকবুল বান্দাহ! আপনি কে? এই অজানা অচেনা জনপদে আমার পিতার সাহায্য করার জন্য আল্লাহ আপনাকে পাঠিয়েছেন। তিনি বললেন তুমি কি আমাকে চিনতে পারনি? আমি মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ। যার উপর কোরআন নাযিল হয়েছিল। নি:সন্দেহে তোমার পিতা সারা জীবন নিজের উপর (গোনাহের দ্বারা) যুলুম করেছে এবং আল্লাহর নাফরমানীতে রত ছিল তবে আমার উপর বেশী করে দরূদ পাঠ করত। মৃত্যুর পর যখন আযাবে লিপ্ত হল তখন আমার নিকট ফরিয়াদ করেছে। তাই আমি সাহায্যের জন্য এসেছি। যে আমার উপর দরূদ পাঠ করে আমি অবশ্যই তাকে সাহায্য করি। অত:পর আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। আমি চোখ খোলে দেখি আমার পিতার চেহারা চাদের চেয়ে বেশী আলোকিত ও নূরানী হয়ে গেল। 


(আফযালুস সালাত- ৫৬ পৃ: নুজহাতুল মাজলিস-৮৯ পৃ: জযবুল কুলুব ফার্সী-২৫৩) (তথ্য সূত্র- বার মাসের আমল ও ফযীলত ১৭২-৭৩ পৃ:)।

________________

কিতাব :দরূদে মোস্তফা (দরূদ পাঠের উপকারিতা ও ফযিলত)

লেখক : মুহাম্মদ হোসাইন আহমেদ আলকাদেরী

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন