জানাজার নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করার বৈধতা (২)
❏ দলীল নং- ০৪:
প্রসিদ্ধ ফকীহ ইমাম কামালুদ্দীন ইবনুল হুমাম (رحمة الله) তার ফাতাওয়ার কিতাবে মুতার যুদ্ধের ঘটনা উল্লেখ করেন। হযরত আব্দুল জাব্বার বিন উমারাহ (رضي الله عنه) তিনি হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবী বাকরাহ (رضي الله عنه) থেকে তিনি বলেন যখন (শামদেশে) মুতানামক স্থানে (মুসলমান এবং কাফের) যুদ্ধ শুরু করল। তখন রাসুলে পাক (ﷺ) (মদিনা শরীফের মসজিদে নববীর) মিম্বরে বসা ছিলেন, তখন তার এবং শ্যাম দেশের মধ্যবর্তী স্থানের সকল আবরন দূর করে উন্মক্ত করে দেয়া হল। তিনি মুতার যুদ্ধ সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে লাগলেন। অতঃপর রাসুলে পাক (ﷺ) বললেন হযরত যায়েদ ইবনে হারেসা (رضي الله عنه) (ইসলামের) পতাকা হাতে নিয়েছেন। কিছুক্ষন অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি শাহাদাত বরণ করলেন।আল্লাহর হাবীব (ﷺ) তাঁর জানাযার নামায পড়লেন এবং তার জন্য দোআ করলেন ও (উপস্থিত সাহাবীদের উদ্দেশ্যে) বললেন তোমরা তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি জান্নাতে প্রবেশ করে সেখানে ঘুরাফেরা
করছেন। অতঃপর হযরত জাফর ইবনু আবী তালেব (رضي الله عنه) পতাকা নিজ হাতে নিলেন কিছুক্ষন অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি শাহাদাত বরণ করলেন। ﻓﺼﻠﻰ ﻋﻠﻴﻪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﺩﻋﺎ ﻟﻪ ﻭﻗﺎﻝ
ﺍﺳﺘﻐﻔﺮﻭﺍ ﻟﻪ
অর্থাৎ অতঃপর রসুল (ﷺ) তার জানাযা নামায পড়লেন এবং তার জন্য দোআ করলেন লোকদেরকে ও তার মাগফিরাতের জন্য দোআ করতে বললেন”।
❏ দলীল নং- ০৫:
মুতার যুদ্ধে রাসুল (ﷺ) সাহাবীরা জানাযার নামাযের পর কী করলেন তা ইমাম বায়হাক্বী (رحمة الله) সুন্দর করে সহীহ সনদে এভাবে বর্ননা দিচ্ছেন
ﻋﻦ ﻋﺎﺻﻢ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﻗﺘﺎﺩﺓ ﺍﻥ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻟﻤﺎ ﻗﺘﻞ
ﺯﻳﺪ ﺍﺧﺬ ﺍﻟﺮﺍﻳﺔ ﺟﻌﻔﺮ ﺑﻦ ﺍﺑﻰ ﻃﺎﻟﺐ ﻓﺠﺎﺀﻩ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﻓﺠﺒﺐ ﺍﻟﻴﻪ ﺍﻟﺤﻴﺎﺓ
ﻭﻛﺮﻩ ﺍﻟﻴﻪ ﺍﻟﻤﻮﺗﻰ ﻭﻣﻨﻪ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻻﻥ ﺣﻴﻦ ﺍﺳﺘﺤﻠﻢ ﺍﻻﻳﻤﺎﻥ ﻓﻰ ﻓﻠﻮﺏ
ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﺗﻤﻨﻴﻨﻰ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ؟ ﺛﻢ ﻣﻀﻰ ﻗﺪﻭﻣﺎ ﺣﺘﻰ ﺍﺳﺘﺸﻬﺪ ﻓﺼﻠﻰ ﻋﻠﻴﻪ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﺩﻋﺎ ﻟﻪ ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺳﺘﻐﻔﺮﻭﺍﻻﺧﻴﻜﻢ ﻓﺎﻧﻪ ﺷﺎﻫﺪ ﺩﺧﻞ
ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻭﻫﻮ ﻳﻄﻴﺮ ﻓﻰ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺑﺠﻨﺎﺣﻴﻦ ﻣﻦ ﻳﺎﻗﻮﺕ ﺣﻴﺚ ﻳﺸﺎﺀ ﻣﻦ ﺍﻟﺠﻨﺔ
অর্থাৎ হযরত আছিম বিন উমর বিন কাতদাহ (رضي الله عنه) বর্ননা করেন, অতঃপর রাসূল (ﷺ) তাঁর জানাযার নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোআ করলেন তারপর বললেন তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য আল্লাহর দরবারে ইস্তিগফার কর, নিশ্চয়ই সে এখন শহীদ হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করেছে এবং ইয়াকুত ডানায় ভর করে জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা সেখানে উড়ে বেড়াচ্ছেন।"
❏ দলীর নং- ০৬:
বিখ্যাত হানাফী ফকীহ ও মুহাদ্দিস আল্লামা কাসানী ওফাত ৫৮৭ হিজরী হাদীসটি দুজন সাহাবী এ ভাবে বর্ননা করেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) এবং হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্নিত-
ﻓﺎﺗﺘﻬﻤﺎ ﺻﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺟﻨﺎﺯﺓ ﻓﻠﻤﺎ ﺣﻀﺮﺍ ﻣﺎ ﺯﺍﺩ ﻋﻠﻰ ﺍﻻﺳﺘﻐﻔﺎﺭ ﻟﻪ ﻭ ﺭﻭﻱ
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺳﻼﻡ ﺍﻧﻪ ﻓﺎﺗﺘﻪ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺟﻨﺎﺯﺓ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ
ﻓﻠﻤﺎ ﺣﻀﺮ ﻗﺎﻝ : ﺍﻥ ﺳﺒﻘﺘﻤﻮﻧﻰ ﺑﺎﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻴﻪ ﻓﻼ ﺗﺴﺒﻘﻮﻧﻰ ﺑﺎﻟﺪﻋﺎﺀ ﻟﻪ –
অর্থাৎ উভয়ে এক জানাযায় গিয়ে জানাযার নামায না পেয়ে মায়্যিতের জন্য ইস্তিগফার পড়লেন বা দোআ করলেন। আরেক বর্ননায় রয়েছে একদা হযরত উমর (رضي الله عنه) এর জানাযা যখনই শেষ হয়ে গেল তখন হযরত আব্দুল্লাহ বিন সালাম (رضي الله عنه) আসলেন, তিনি বললেন হে আমার সাথীরা! তোমরা আমার পূবেই জানাযার নামায পড়ে ফেলেছো কিন্তু জানাযার পর দোআ আমাকে বাদ দিয়ে করো না অর্থাৎ আমাকে সাথে নিয়েই দোআ করো।"
উক্ত বর্ণনার দ্বারা প্রমানিত হয় যে, সাহাবায়ে কেরামগন জানাযার পর পুনরায় দোআ করতেন। এটা ছিল সাহাবাগনের সম্মিলিত আমল, সুতরাং জানাযার পর দোআ করা সাহাবীদের সুন্নাত।
_________________
জানাজার নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করার বৈধতা
সংকলক : মাসুম বিল্লাহ সানি
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন