কবরের দিকে ফিরে যিয়ারত প্রসঙ্গে


কবর যিয়ারতের সুন্নাত তরিকা হল, নম্রতা ও আদবের সাথে কবরস্থানে প্রবেশ করবেন। অত: পর কবরবাসীকে সামনে রেখে যিয়ারত করবেন ও দোয়া করবেন। এ সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরাম ও ছলিফে-ছালেহীনের আমল পাওয়া যায়। যেমন নিচের বর্ণনা গুলাে লক্ষ্য করুন:

-আল্লামা কামালুদ্দিন ইবনুল হুমাম (رحمة الله) তদীয় কিতাবে বলেন,

وما عن أبي اللي أنه يقف مستقبل القبلة مزود بما روى أبو حنيقة رضي الله عنه في مسنده عن نافع ، عن ابن عمر سنده عن نافع ، عن ابن عمر رضي الله عنهما قال: من السنة أن تأتي قبر النبي صلى الله عليه وسلم من قبل القبلة وتجعل ظهرك إلى القبلة وتستقبل القبر بوجهك ثم تقول: السلام عليك أيها التي ورځمه الله وبركاته



-"ফকিহ আবুল লাইছ (رحمة الله) থেকে বর্ণিত আছে যে, যিয়ারতের সময় কেবলার দিকে ফিরে দাঁড়াবেন এই অভিমত মরদুদ বা পরিত্যাক্ত। ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) হতে তার মুসনাদে হাদিস বর্ণিত আছে যে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন: সুন্নাত হল, কেবলার দিক থেকে নবী করিম (ﷺ) এর রওজা মােবারক যিয়ারতে আসবেন ফলে কেবলাকে পিছনে রেখে ও চেহারা রাসূল (ﷺ) রওজা সামনে রেখে যিয়ারত করবেন। অত: পর বলবেন: আস-সালামু আলাইকা আইউহান্নাবি ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।"


(মুসনাদে আবী হানিফা, হাদিস নং ৩৭ ; ইমাম মােল্লা আলী: শরহে মুসনাদে আবী হানিফা, ১ ম খণ্ড, ২০২ পৃঃ ; ইবনুল মাম ; ফাতহুল কাদীর, ৩য় খন্ড, ১৮০ পৃঃ ; আল্লামা ছামহুদী: অফাউল অফা, ২য় জিলদ, ২১৩ পৃঃ)



আল্লামা ছামহুদী (رحمة الله) এর সনদ সম্পর্কে বলেন,



أخرجه الحافظ طلحة بن محمد في مسنده عن صالح بن أحمد عن عثمان بن سعيد عن أبي عبد الرحمن المقرئ عن أبي حنيفة عن نافع عن ابن عمر.



-"হাফিজ ত্বলহা ইবনে মুহাম্মদ (رحمة الله) তার মুসনাদে ইহা এভাবে বর্ণনা করেছেন: ছালেহ ইবনে আহমদ বর্ণনা করেছেন উছমান ইবনে সাঈদ থেকে, তিনি আবু আব্দুর রহমান মুকরী থেকে, তিনি আবু হানিফা থেকে, তিনি নাফে (رحمة الله) থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকে।"


(আল্লামা ছামহুদী: অফাউল অফা, ২ য় জিলদ, ২১৩ পৃঃ)



এই সনদের সকল রাবীগণ বিশ্বস্ত ও নির্ভরযােগ্য। আল্লামা সামহুদী (رحمة الله) হাদিসটিকে মারফু হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সুতরাং কবরের দিকে ফিরে যিয়ারত করা মূলত সুন্নাত।



এ বিষয়ে আরেকটি সহিহ হাদিস উল্লেখযােগ্য,



حدثنا عبد الملك بن عمرو ، تا گئیر بن يزيد ، عن داؤد بن أبي صالح ، قال: أقبل مروان يوما وجد رجلا واضعا وجهه على القبر ، قال: أتدري ما تصنع ؟ قال عليه فإذا هو أبو أيوب ، قال: نعم ، ج رسول الله صلى الله عليه وسلم ولم آي الحجر



-"দাউদ ইবনে আবী ছালেহ বলেন, একদিন মুনাফেক মারওয়ান দেখতে পেল এক ব্যক্তি নবী পাক (ﷺ) এর কবর শরীফে চেহারা রেখে বসে  আছেন। অত: পর মারওয়ান বলতে লাগল, তুমি যান কি করছ? ফলে লােকটি তার দিকে চেহারা ঘুরালেন এবং দেখলে তিনি হজরত আবু আইউব আনছারী (رضي الله عنه)! তিনি বললেনঃ হ্যা, আমি জানি কি করছি, আমি কোন পাথরের কাছে আসিনি বরং আমি আমার রাসূল (ﷺ) এর কাছে এসেছি।"


(সুবহানাল্লাহ) (মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং'২৫৮৫ ; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৮৫৭১ ; হাফিজ ইবনে কাছির: জামেউল মাসানিদ ওয়াল মাসানিদ, হাদিস নং ১১৩৫০ ; ইমাম হায়ছামী: মাজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ৫৮৪৫)



ইমাম হাকেম (رحمة الله) ও ইমাম যাহাবী (رحمة الله) বলেছেন হাদিসটি সহিহ্। মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৮৫ ৭১)



এই হাদিস থেকে স্পষ্ট করেই প্রমাণিত হয় সাহাবীরা আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর রওজা পাকের দিকে চেহারা রেখেই যিয়ারত করতেন। তাই মাজারের দিকে ফিরে যিয়ারত করাই মুস্তাহাব পর্যায়ের সুন্নাত। এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত লক্ষ্য করুন,



حدثنا أبو گریب ، قال: حدنا محمد بن الصلب ، عن أبي گية ، عن قابوس بن أبي بيان ، عن أبيه ، عن ابن عباس قال: مر النبي صلى الله عليه وسلم تمور بالمدينة فأقبل عليهم بوجهه فقال: السلام عليكم يا أهل القبور غفر الله لنا ولكم أنتم سلقنا ونحن بالأثر . رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن



-"হজরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, একদা নবী পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মদিনার কতক কবরের নিকট পৌছলেন, অত: পর তাদের কবরের দিকে ফিরে বললেন ; সালাম হউক তােমাদের প্রতি হে কবরবাসীগণ! আল্লাহ আমাদের ও তােমাদেরকে ক্ষমা করুন। তােমরা আমাদের পূর্বগামী এবং আমরা-তােমাদের পরে আসতেছি। ইমাম তিরমিজি (رحمة الله) হাদিসটিকে হাছান বলেছেন।"(তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ১০৫৩ ; ইমাম ইবনে শাহিন: আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব লি'কাওয়াইমুছ সুন্নাহ, হাদিস নং ১৫৪৪ ; মেসকাত শরীফ, ১৫৪ পৃ: হাদিস নং ১৭৬৫ ; সুবুলুছ ছালাম, হাদিস নং ৫৫ ৭ ; ইবনে মুলাক্কিন: বাদরুল মুনীর, ৫ ম খন্ড, ৩৫১ পৃ:)



এ বিষয়ে হজরত বুরাইদা (رضي الله عنه) ও হজরত আয়েশা (رضي الله عنه) থেকেও রেওয়াত বর্ণিত আছে। এই হাদিসের রাবী "কাবুছ ইবনে আবু যিবইয়ান ' সম্পর্কে কেউ কেউ দুর্বল আখ্যা দিলেও ইমাম ইবনে মাঈন (رحمة الله) বিশ্বস্ত বলেছেন। ইমাম আবু আহমদ ইবনে আদী (رحمة الله) বলেছেন “তার ব্যাপারে অসুবিধা নেই। (ইমাম মিযযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৪৭৭৭)



ইমাম আজলী (رحمة الله) বলেছেন: তার ব্যাপারে অসুবিধা নেই। (ইমাম আজলী: তারিখুছ ছিক্বাত, রাবী নং ১৪৯৩)



ইমাম ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান বলেছেন সে  বিশ্বস্ত।


(ইমাম আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ৫৫৫)



তাই এই হাদিসের সর্বনিম্ন স্তর--হাছান হবে, যেমনটি ইমাম তিরমিজি (রাহঃ) বলেছেন। এ বিষয়ে আরেকটি বিশুদ্ধ রেওয়াত উল্লেখযােগ্য,



قال أبو أحمد الحاكم: حدثنا ابن الفيض ، قال: حدثنا أبو إسحاق إبراهيم بن محمد بن سليمان بن بلال بن أبي الدرداء ، قال: حدثني أبي ، عن أبيه شليمان ، عن أم الدرداء ، عن أبي الدرداء قال: إن بلا رأي التي صلى الله عليه وسم في مایه وهو يقول: ما هذه الجفوة يا بلال ؟ أما آن لك أن تزورني ؟ فانتبه حزينة وركب راحلته وقصد المدينة فأتى قبر النبي صلى الله عليه وسلم فجعل يبكي عنده ومرغ وجهه علیه .



-"হজরত আবু দারদা (رضي الله عنه) বলেন, নিশ্চয় হজরত বেলাল (رضي الله عنه) সপ্নে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  দেখেলেন এবং প্রিয় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ হে বেলাল! এটা কিরূপ নির্দয় আচরণ করছ? এখনাে কি আমার যিয়ারতের সময় হয়নি তােমার? অতঃপর তিনি জাগ্রত হয়েই মদিনার উদ্দেশ্যে বাহনে চড়লেন। তারপর রাসূলে পাক (ﷺ) এর রওজা মােবারকে আসলেন ও তিনি কাঁদলেন এবং রওজা পাকের সাথে তার চেহারা ঘষালেন।"


(ইমাম যাহাবী: তারিখে ইসলামী, রাবী নং ৩৭ এর ব্যাখ্যায় ; তারিখে ইবনে আসাকির, ৭ ম খণ্ড, ১৩৭ পৃ:; ইমাম ইবনে আছির রঃ এর ' উছদুল গাৰা ফি মারিফাতিস সাহাবা, ১ ম খন্ড, ৪১৫ পৃঃ ; ইমাম যাহাবী: সিয়ারে আলামীন নুভালা, ৩ য় খন্ড, ২১৮ পৃঃ ; শরফুল মুস্তফা, ৩ য় খন্ড, ১৯৬ পৃ:: ইমাম ইবনে ছালেহী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১২ তম খন্ড, ৩৫৯ পৃঃ,, সিরাতে হলভিয়া, ২ য় খন্ড, ১৩৯ পৃঃ ; কাশী শাওকানী: নাইলুল আওতার, ৫ ম খন্ড, ১১৪ পৃঃ ; ফিকহু সুনানি ওয়াল আছার, ১ ম খন্ড, ৪১৪ পৃঃ হাদিস নং ১১৭১ ; সিফাউছ ছিকাম, ৩৯ পৃঃ)



এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (رحمة الله) বলেনঃ



إسناده جيد ما فيه ضعيف ،



-"ইহার সনদ অতি-উত্তম, যার মধ্যে দুর্বলতা নেই।"(ইমাম যাহাবীঃ তারিখে ইসলামী, বাৰী নং ৩৭ এর ব্যাখ্যায়)



এ সম্পর্কে আল্লামা মুহাম্মদ ইবনে ইউছুফ ছালেহী শামী (رحمة الله) { ওফাত ৯৪২ হিজরী) বলেন-



وروى ابن عساكر بسند جيد عن بلال



-"ইবনে আসাকির (رحمة الله) অতি-উত্তম সনদে হজরত বেলাল (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন।"(ইমাম ইবনে ছালেহী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১২ তম খন্ড, ৩৫৯ পৃঃ)



লা-মাজহাবীদের কথিত ইমাম মাওলানা কাজী শাওকানী বলেন,



عند ابن عساكر بسند جيد



-"ইহা ইবনে আসাকির (رحمة الله) এর নিকট অতি-উত্তম সনদে রয়েছে।"(কাজী শাওকানী: নাইলুল আওতার, ৫ ম খন্ড, ১১৪ পৃ:)



আল্লামা মুফতী আমিমুল ইহছান মুজাদ্দেদী ওয়া বারকাতী (رحمة الله) "ইবনে আসাকির (রাহঃ) অতি উত্তম সনদে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।"(ফিকহু সুনানি ওয়াল আছার, ১ ম খন্ড, ৪১৪ পৃ: হাদিস নং ১১৭১)



এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায়, রাসূলে পাক (ﷺ) এর রওজা মােবারক যিয়ারত কালে হজরত বেলাল (رضي الله عنه) কেঁদেছেন, রওজা মুখী হয়ে যিয়ারত করেছেন এমনকি রওজা পাকে নিজের চেহারাও ঘষলেন। তাই যিয়ারতকালে কবরের দিকে ফিরে যিয়ারত করা সাহাবীদের তথা হজরত বেলাল (رضي الله عنه) এর সুন্নাত।



এ সম্পর্কে আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) তদীয় কিতাবে বলেন,



وهذا أخص ما يكون من آداب الزيارة ، وأما تفصيلها فمذكور في المناسك ،



-"কবরের দিকে ফিরে যিয়ারত করাই হল নির্দিষ্ট আদব। এ বিষয়ে বিস্তারিত ' মানাসিক ' অধ্যায়ে আলােচনা করা হয়েছে।"(ইমাম মােল্লা আলী: শরহে মুসনাদে আবী হানিফা, ১ ম খন্ড, ২০২ পৃ:)



আল্লামা শিহাবুদ্দিন খাফফাজী (رحمة الله) তদীয় কিতাবে বলেন,



وقال ابن الهمام ما نقل عن أبي حنيفة انه يستقبل القبلة مردود بما روی عن ابن عمران من السنة أن يستقبل القبر المكرم ويجعل ظهره للقبلة وهو الصحيح من مذهب أبي حنيفة رحمه الله عليه



-"ইমাম ইবনে হুমাম (رحمة الله) ইমামে আজম আবু হানিফা (رحمة الله) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নিশ্চয় যিয়ারতকারী যিয়ারতের সময় কিবলার দিকে মুখকরে দাড়াবে ' এই অভিমত মরদুদ বা পরিত্যাক্ত। এ জন্যে যে, হজরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকে এ প্রসঙ্গে হাদিস বর্ণিত আছে যে, যিয়ারতকারীর সুন্নাত হল যিয়ারতের সময় রওজা মােবারক সামনে রেখে কেবলাকে পিছনে রাখবে। ইহাই হচ্ছে ইমাম আবু হানিফা (রাহঃ) এর মাজহাবের বিশুদ্ধ অভিমত।"(আল্লামা খুফফাজীঃ নাছিমুর রিয়াদ শরহে শিফা, ৩ য় খন্ড, ৫১৭ পৃঃ)



এ সম্পর্কে হানাফী মাজহাবের কিতাবে আছে,



ثم انهض متوجها إلى القبر الشريف فتقف بمقدار أربعة أذرع بعيدا عن المقصورة الشريفة بغاية الأدب مستدبرا القبلة محاذيا لرأس النبي صلى الله عليه وسلم ، ووجهه الأكرم ملاحظا نظره السعيد إليك وسماعه كلامك ورده عليك سلامك و تأمینه على دعائك



"অত: পর রওজা শরীফ মুখী হয়ে দাঁড়াবেন এবং হুজরা শরীফ থেকে চার হাত দূরে কিবলাকে পিছনে রেখে এবং নবী করিম (ﷺ) এর মাথা মােবারক ও চেহারা মােবারকের মুখােমুখী হয়ে অত্যান্ত আদবের সাথে দাঁড়াবেন এবং ঐ খেয়াল নিয়ে দাড়াবেন যে, তাঁর নেক নজর আপনার দিকে রয়েছে। তিনি আপনার কথাবার্তা শুনছেন ও আপনার সালামের জবাব দিচ্ছেন এবং আপনার দোয়ার সাথে আমিন আমিন বলছেন।"


(মারাকিল ফালাহ শরহে নুরুল ইজা, ১ ম খন্ড, ২৮৩ পৃঃ ; হাশিয়াতুত তাহতাভী, ১ ম খন্ড, ৭৪৭ পৃঃ)



অতএব, হানাফী মাজহাবের চুড়ান্ত ফাত্ওয়া হচ্ছে, যিয়ারতের আদব হল কবরবাসীকে সামনে রেখে যিয়ারত ও দোয়া করতে হবে, এটাই সুন্নাত। কেননা ফকিহ সাহাবী হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) এরূপ নিয়মে যিয়ারত করতেন বলে হাদিস দ্বারা প্রমাণ পাওয়া যায়।



এ সম্পর্কে মালেকী মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম মালেক ইবনে আনাস রব্বানী (রাহঃ) এর ফাতওয়া লক্ষ্য করুন,



وقال مالك في رواية ابن وهب إذا سلم على النبي صلى الله علیه وسم ودعا يقف ووجه إلى القبر لا إلى القبلة ويدئو وستم ولا يمس القبر بيده



-"ইবনে ওয়াহাবের বর্ণনায় রয়েছে, ইমাম মালেক (رحمة الله) বলেন: যখন নবী করিম (ﷺ) এর রওজা মােবারকের সামনে গিয়ে সালাম পেশ করবেন ও দোয়া করবেন, তখন রওজা শরীফের দিকে মুখ করে দাঁড়াবেন ও কেবলার দিকে মুখ করে দাঁড়াবেন না। রওজা মােবারকের নিকটবর্তী হয়ে সালাম আরজ করবেন কিন্তু হাত দ্বারা রওজা মােবারক স্পর্শ করবেন না।"


(কাজী আয়্যায: শিফা শরীফ, ২ য় জি: ৮৫ পৃঃ ; ইমতাউল আসমা, ১৪ তম খন্ড, ৬১৮ পৃ:; ইমাম মােল্লা আলী: শরহে শিফা, ২ য় খন্ড, ১৫৩ পৃঃ ; ইমাম কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ৩ য় খন্ড, ৬০২ পৃঃ ; শরহে যুরকানী, ১২ তম খন্ড, ২১২ পৃঃ)



এ সম্পর্কে শাফেয়ী মাজহাবের ফাতওয়া সম্পর্কে হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী শাফেয়ী (رحمة الله) তদীয় কিতাবে বলেন,



والمستحب في زيارة القبور أن يقف مستدبر القبلة مستقبلا بوجهه الميت وأن يسلم و يمسح القبر و مه ولا يقبله



-"কবর যিয়ারতের মুস্তাহাব পদ্ধতি হল, যিয়ারতকারী কিবলাকে পিছন দিয়ে, মৃত ব্যক্তির মুখােমুখি দাঁড়াবেন এবং সালাম দিবেন। কবরকে মাসেহ্ করবেনা, স্পর্শ করবেনা ও চুম্বন দিবেনা।"(ইমাম গাযযালী: এহইয়াউল উলুমুদ্দিন, ৪ র্থ খন্ড, ৪৯১ পৃ:)



সুতরাং সর্বসম্মতিক্রমে কবর যিয়ারতের সুন্নাত তরিকা হল কবরকে তথা কবরবাসীকে সামনে রেখে যিয়ারত করাই সুন্নাত। এ বিষয়ে ইমামে আজম আবু হানিফা (رحمة الله), ইমাম মালেক (رحمة الله) ও শাফেয়ী মাজহাবের অন্যতম ফকিহ ইমাম গাজ্জালী (رحمة الله) এর বক্তব্য দ্বারা ইহা স্পষ্টত যে, কবরকে সামনে রেখে যিয়ারত করাই সুন্নাত। আর ইহার তিরস্কার ও বিরুধিতা করা  সুন্নাতের বিরুধিতা করার নামান্তর।

_______________

সহিহ হাদিসের আলােকে মাজার যিয়ারত পূজা নয় ও কদমবুছির সমাধান

গ্রন্থনায়ঃ  মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আলাউদ্দিন জিহাদী 

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন