জামাতী/মওদুদী আক্বীদা

 

জামাতী/মওদুদী আক্বীদা


১।        “রাসুল না অতি মানব, না মানবীয় দুর্বলতা থেকে মুক্ত। তিনি যেমন খোদার ধনভান্ডারের মালিক নন, তেমনি খোদার অদৃশ্য জ্ঞানেরও অধিকারী নন বলে সর্বজ্ঞও নন। তিনি অপরের কল্যান বা অকল্যান সাধন তো দূরে নিজেরও কোন কল্যান বা অকল্যান করতে অক্ষম।”


২।        খোলাফায়ে রাশেদার চার খলিফাকেই সুক্ষভাবে সমালোচনা করেছেন এবং তাঁদের শান খর্ব করার চেষ্টা করেছেন। অথচ তাঁদের সমালোচনা হারাম।


৩।        দাজ্জালের আবির্ভাব সম্বদ্ধে হুজুর (ﷺ)কে জানানো হয়নি। হাদীস শরীফে এই সম্বন্ধে হুজুর (ﷺ) যা বলেছেন-তা তাঁর কাল্পনিক ও অনুমান মাত্র। অথচ আল্লাহ্ বলেন তিনি (ﷺ) নিজ থেকে কিছুই বলেননি।



৪।        রাসুলে খোদা ব্যতিত কোন মানুষকে সত্যের মাপকাঠি মানা যাবে না। কাউকে সমালোচনার উর্দ্ধে মনে করা যাবে না। অর্থাৎ সে সাহাবায়ে কেরামগনে সত্যের মাপকাঠি মানতে নারাজ এবং তাঁদের সমালোচনা করা যাবে যা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ইমামগনের মতে হারাম।



৫।        আলেম ব্যক্তির জন্য ‘তাক্বলীদ’ বা মাযহাব গ্রহন কবীরা গুনাহ, বরং তার চেয়েও জঘন্য। (নাউযুবিল্লাহ)



৬।        ফাতেহা, জেয়ারত, নজর-নেওয়াজ ও ওরস ইত্যাদি শিরক। (অথচ এ’সকল অনুষ্ঠান জায়েজ এবং সওয়াব-বরকত হাসিলের মাধ্যম।)



৭।        মোরাকাবা, মোশাহাদা, কাশ্ফ ও ওজীফা পাঠ ইত্যাদি তরীকতের কার্যাদি শিরক। (ইসলামী রেনেঁসা আন্দোলন)। (অথচ হীরা পর্বত আজও হুজুর (ﷺ)-এর মোরাকাবার নিরব স্বাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে।)



৮।        ইবনে তাইমিয়া ইমাম গাজ্জালী আপেক্ষাও শক্তিশালী মোজাদ্দেদ ছিলেন। (অবশ্যই না। ইমাম গাজ্জালী মুসলিম বিশ্বের এক অনন্য নক্ষত্র। তাঁর তুলনা শুধু তিনি নিজেই।)



৯।        নবীগন ‘মাসুম’ বা গুনাহ থেকে পবিত্র নন। মূসা (عليه السلام) নবুয়তের পূর্বে এক কিবতী/মিসরীয়কে হত্যা করে কবীরা গুনাহ করেছেন। (অথচ নবীগন নবুয়তের পূর্বে ও পরে সম্পূর্ন নিষ্পাপ। মূসা (عليه السلام) কিবতীকে ন্যায় বিচারের উদ্দেশ্যে শাস্তি দিয়েছিলেন যাতে তার মৃত্যু হয়। তাই ইহা গুনাহ ছিল না।)



১০।        পীর সাহেবান ও বুজুর্গানে দ্বীনের রূহানী শক্তি থেকে কোন সাহায্য আশা করা এবং তাদের ভয় করা পরিষ্কার শিরক। (ইহা অবশ্যই জায়েয।)



১১।        কোন নবী বা অলীর মাজার জিয়ারত করার উদ্দেশ্যে সফর করা হারাম। (অথচ ইহা সর্বসম্মতভাবে বৈধ/ জায়েয এবং সওয়াবের কাজ)।



১২।        বর্তমান যুগে চারিত্রিক গুনাবলী অবনতির দিকে বিধায় অবৈধ সম্পর্কসমূহকে বেশী দোষনীয় বলে মনে করা হয়না। সেখানে যেনার অপবাদ এবং শারীরিক শাস্তি প্রয়োগ করা নিঃসন্দেহে জুলুম। (এই আক্বীদা কুরআন বিরোধী)



১৩।        কোরআনুল করীম নাজাতের জন্য নয় এবং নিছক হেদায়াতের জন্য। (অথচ কুরআন নাজাত ও হেদায়াত উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য)



১৪।        মওদুদীর মতে নবী করীম (ﷺ)-এর আরবের মধ্যে যে বিশেষ সফলতা অর্জন করেছেন, তার কারন ছিল যে তাঁর পক্ষে কিছু সাহসী লোক ছিল। (এই ধারনার মাধ্যমে সে হুজুর (ﷺ)-এর মান মর্যাদাকে খর্ব করার চেষ্টা করেছে।)



১৫।        কোরআন বুঝার জন্য কোন তাফসীরের প্রয়োজন নাই। একজন দক্ষ প্রফেসর যথেষ্ট, যিনি গভীর দৃষ্টিতে কুরআন অধ্যায়ন করেছেন। (অথচ উপযুক্ত আলেম ব্যতিত অন্যের ব্যাখ্যা/তাফসীর সঠিক হলেও তা গ্রহন/অনুসরন করা নিষিদ্ধ।)



১৬।        রাম, কৃষ্ণ, বিষ্ণু, কন্ফুশিয়াস- তারা রাসুল ছিল (বর্তমান যুগের সালাফী নেতা জাকির নায়েক এর মতে তারা নবী না ও হতে পারে, আবার হতেও পারে)।



“জামাতে ইসলাম” নামে পরিচিত দলটি আবুল আলা মওদুদী (১৯০৩-১৯৭৯খৃঃ) কর্তৃক ১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইহা ইহুদী-নাসারদের আশীর্বাদপুষ্ট একটি ‘রাজনৈতিক ইসলামি’ দল। এই দলকে যুক্তরাষ্ট্র মডারেট ইসলামি দল হিসাবে বিবেচনা করে। এই দলের ছাত্র সংগঠনের নাম হলো ছাত্র শিবির। এই দলটি উপমহাদেশের তিনটি দেশেই বিদ্যমান। এই দল যেমনিভাবে আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল, তেমনি করেছিল ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির সময়। এই দল ইসলামের নামে- আবার ইসলামেরই বিরুদ্ধে কাজ করছে। তারা অনেক প্রতিষ্ঠিত ইসলামি আক্বীদার পরিবর্তন করে আমাদের সমাজে ভীষন এক ফেৎনার সৃষ্টি করেছে। তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য হলো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে এ’ দেশে তাদের মনগড়া ও ভ্রান্ত আক্বীদাপূর্ন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা। জামাতে ইসলামের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই হক্কানী আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, মুসলিম পন্ডিত-বুদ্ধিজীবি, সবাই তাদেরে প্রত্যাখান করেছে। কিন্তু দুঃভাগ্যবশত: আমাদের দেশের সাধারন ধর্মপ্রান মুসলমানদের একটি বড় অংশই তাদের মত-পথ ও উদ্দেশ্যের বিষয়ে অন্ধকারে রয়েছে। আর এই সুযোগে সাধারন ধর্মপ্রান মানুষকে ধর্মের নামে ধোকা দিয়ে তারা বিপথগামী করছে এবং রাজনীতিক হিংসাত্বক কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। তাদের আয়ত্তে থাকা বিশাল অর্থ ভান্ডার ব্যবহার করে তারা তাদের মতবাদের ব্যাপক প্রচার প্রসার করছে।



বর্তমানে আমাদের দেশে যে বিশৃঙ্খলা ও টার্গেটেড গুপ্ত হত্যার লীলাখেলা চলছে তার পিছনে রয়েছে নাম সর্বস্ব কিছু উগ্র-জঙ্গী ইসলামি সংগঠন; যেমন-আনসার উল্লাহ্ বাংলা টিম, জেএমবি, হিজবুত তাহিরীর ইত্যাদি। আর এই সংগঠনগুলোর অধিকাংশ কর্মীই হচ্ছে জামাত-শিবিরের প্রাক্তন সদস্য। কাজেই আমাদের দেশে বর্তমান অস্থিরতা, গুপ্ত হত্যা ও সন্ত্রাসের মূলে কারা রয়েছে তা’ সহজেই অনুমেয়।

_________________

কিতাব : হক্ব-বাতিলের পরিচয় ও ঈমান রক্ষা

গ্রন্থনা ও সংকলনে:

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরশীদ আলম (অবঃ)

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন