মস্তক মোবারকের আশ্চর্যজনক বরকত
বর্ণিত আছে; মিসরের অধিপতি সম্রাট নাসিরকে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জানানো হলো যে, সে শাহী মহলের কোন্ স্থানে গুপ্তধন আছে তা জানে, কিন্তু কাউকে বলে না। সম্রাট তার কাছ থেকে গুপ্তধন সম্পর্কে তথ্য বের করার জন্য তাকে শাস্তি দেয়ার নির্দেশ দিলেন। যাকে শাস্তি দেয়ার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল, সে তাকে গ্রেফতার করল এবং তার মাথার উপর কয়েকটি গোবরে পোকা এবং এর উপর কয়েকটি লাক্ষা পোকা রেখে কাপড় দ্বারা মাথা বেঁধে দিল। এটা এমন এক ধরনের শাস্তি যা কোন মানুষ এক মিনিটও সহ্য করতে পারে না। যাকে এধরনের শাস্তি প্রদান করা হয় তার মস্তিষ্কের চামড়া বিদীর্ণ হতে থাকে। ফলে তীব্র যন্ত্রণায় সে গোপন তথ্য তাড়াতাড়ি বলে দেয়। আর যদি না বলে, তাহলে যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার যে, তাকে এ শাস্তি কয়েকবার দেওয়ার পরও তার মধ্যে এর কোনরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেল না এবং তাকে বিন্দুমাত্রও ঘায়েল করতে পারল না বরং প্রতিবারে পোকাগুলোই মারা গেল। লোকেরা তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, যখন হযরত ইমামে আলী মকাম সায়্যিদুনা ইমাম হোসাইন صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর মস্তক মোবারক মিশরে আনা হয়েছিল, اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ عَزَّوَجَلّ আমি ভক্তি সহকারে, শ্রদ্ধাভরে তা আমার মাথার উপর রেখেছিলাম। সে পবিত্রাত্মার মস্তক মোবারকের বরকত ও কারামতের কারণে আমার মধ্যে শাস্তির কোন ক্রিয়া অনুভূত হল না। (শামে কারবালা, ২৪৮ পৃষ্ঠা)
ফুল জখমো কি খিলায়ি হে হাওয়ায়ে দোস্ত নে,
খুন ছে ছিঁনচা গেয়া হে গুলিস্তানে আহলে বাইত।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
বিষাক্ত কীটসমূহের পরিচিতি
জানা গেল, বরকতময় বস্তু শ্রদ্ধাভরে মাথার উপর রাখলে উভয় জগতে সফলতা লাভ করা যায়। বর্ণিত কাহিনীতে গোপন তথ্য বের করার জন্য শাস্তির উপকরণ হিসাবে মাথার উপর যে দুটি পোকা রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি আপনাদের সম্মুখে পেশ করা হলো।
خَنَافِس এটা خُنْفَسَا
এর বহুবচন। ইহা এমন এক ধরনের পোকা যা গোবর ও আবর্জনাময় স্থানে জন্ম নিয়ে থাকে, এর রং সচরাচর কালো এবং এর দুটি শিং থাকে। উর্দূতে একে “গোবরিলা” এবং বাংলায় গোবরে পোকা বলা হয়। কিরমিয ছোট চনার সমপরিমাণ লাল রঙের রেশমের মত এক ধরনের পোকাকে বলা হয়। যা সাধারণত বর্ষাকালে বন জঙ্গলে জন্ম নিয়ে থাকে। একে শুকিয়ে রেশম রাঙানোর জন্য লাল রং তৈরী করা হয়। এর দ্বারা ঔষধও তৈরী করা হয় এবং এর তৈলও পাওয়া যায়। উর্দূতে একে “বিরবহুটি” এবং বাংলায় ‘লাক্ষা পোকা’ বলা হয়। তৎকালীন যুগে অপরাধের স্বীকারোক্তির জন্য অপরাধীকে এ ধরনের শাস্তি প্রদান করা হতো। মাথার উপর প্রথমে গোবরে পোকা রেখে তারপর এর উপর লাক্ষা পোকা রেখে কাপড় দ্বারা অপরাধীর মাথায় বেঁধে দেয়া হতো। গোবরে পোকা মাথার খোল কেটে কেটে তাতে ছিদ্র করে দিতো। আর সে ছিদ্রগুলোতে লাক্ষা পোকার টুকরা ও গলিত পানি প্রবেশ করে মস্তিষ্কের পর্দা ও রগসমূহ ফেটে যেত। এটা এমনই এক অসহনীয় শাস্তি ছিল, যার তীব্র যন্ত্রণায় অপরাধী তাড়াতাড়ি অপরাধ স্বীকার করে ফেলত। এ লোমহর্ষক শাস্তির কথা শুনলে মানুষের গা শিউরে ওঠে। ফলে এর আলোচনার মাঝে এর চেয়েও কঠিন ও ভয়ানক পরকালের শাস্তির কথা মনে পড়ছে। হায়! সে বিষাক্ত কীট পতঙ্গগুলোর দংশন যখন আমাদের কেউ এক সেকেন্ডের জন্যও সহ্য করতে পারছেনা, তাহলে কিভাবে কবর ও জাহান্নামে অগণিত সাপ বিচ্ছুর দংশনকে সহ্য করতে পারবে? আল্লাহ্ না করুক; যদি একটি সামান্য গুনাহের কারণেও আমরা গ্রেফতার হই এবং একটি মাত্র বিচ্ছুও আমাদের মাথার উপর তুলে দেয়া হয়, তখন আমাদের কি অবস্থা হবে?
দন্গ মচ্ছর কা বিহ্ মুজ ছে তো ছাহা জাতা নিহি,
কবর মে বিচ্ছু কে দন্গ কেইছে ছহোনগা ইয়া রব।
আফওয়া কর আওর ছদা কে লিয়ে রাজি হো জা,
ইয়ে কারম হো গা তো জান্নাত মে রহোনগা ইয়া রব।
________________
ইমাম হোসাইন رضي الله عنه এর কারামত
🖋আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা ইলয়াস আত্তার কাদেরী রযভী
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন