হাদীসে পাকে যে শব্দসৃষ্টিকারী নূপুর পরিধানে বারণ করা হয়েছে তা দ্বারা কোন অলংকার উদ্দেশ্য?


প্রশ্ন:- হাদীসে পাকে যে শব্দসৃষ্টিকারী নূপুর পরিধানে বারণ করা হয়েছে তা দ্বারা কোন অলংকার উদ্দেশ্য?


উত্তর:- এর দ্বারা পায়ের ঘুঙ্গুর উদ্দেশ্য, এমন অলংকার পরিধানকারীনিদের ব্যাপারে একটি হাদীসে পাকে ইরশাদ হয়েছে: “আল্লাহ্ তাআলা শব্দসৃষ্টিকারী নুপুরের আওয়াজকে এমনিভাবে অপছন্দ করেন যেমনিভাবে গানের আওয়াজকে অপছন্দ করেন এবং যে মহিলা এমন অলংকার পরিধান করবে তার হাশর তেমনই হবে যেমনটি বাদ্যযন্ত্র বাদকদের হবে। যে মহিলা শব্দসৃষ্টিকারী নূপুর পরিধান করে তার উপর অভিশাপ অবতীর্ণ হয়।” (কানযুল উম্মাল, ১৬তম খন্ড, ১৬৪ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৪৫০৬৩)।


প্রতিটি নূপুরের সাথে শয়তান থাকে


হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ্ বিন যুবাইর رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ বলেন: আমাদের ঘরের (এক) দাসী হযরত যুবাইর رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ এর মেয়েকে নিয়ে হযরত ওমর رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ এর নিকট গেলো, এমতাবস্থায় তার পায়ে নুপুর ছিলো। হযরত সায়্যিদুনা ওমর ফারুক رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ সেটাকে কেঁটে দিলেন এবং বললেন: “আমি হুযুর صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর নিকট শুনেছি যে, প্রতিটি নুপুরের সাথে শয়তান থাকে।” (সুনানে আবু দাউদ, ৪র্থ খন্ড, ১২৪ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৪২৩০)।



নূপুর বিশিষ্ট ঘরে ফিরিশতা আগমন করে না


হযরত সায়্যিদাতুনা বুনানা رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا বলেন: আমি উম্মুল মু’মিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়েশা সিদ্দীকা رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, তখন তাঁর কাছে একটি শিশু কন্যাকে আনা হলো, যার পায়ে নুপুর ছিলো, যেটা আওয়াজ করছিল। (তা দেখে) তিনি رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا বললেন: তাকে কখনও আমার নিকট আনবেনা। কিন্তু যদি তার নুপুর ভেঙ্গে ফেলা হয় (তবে আনবে)। আমি صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কে ইরশাদ করতে শুনেছি: “যে ঘরে নুপুর থাকে সেই ঘরে ফিরিশতা আগমন করে না।” (সুনানে আবু দাউদ, ৪র্থ খন্ড, ১২৫ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৪২৩১)


এই অধ্যায়ের হাদীসে মোবারাকার টীকায় প্রখ্যাত মুফাস্‌সীর, হাকীমুল উম্মত হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: اَجْرَاسْ শব্দটি جَرْس এর বহুবচন। যার অর্থ হলো: নুপুর এবং তার ন্যায় শব্দ সৃষ্টিকারী বস্তু। উটের গলায় ঝুমুর এবং বাজ পাখির পায়ের চামড়াকেও আজরাস বলা হয়। হিন্দুস্থানেও পূর্ববর্তী মহিলাদের মধ্যে নুপুরের প্রচলন ছিলো। হাদীসে আয়েশায় رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا যেই নুপুর ভেঙ্গে ফেলার বর্ণনা রয়েছে, তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুফতী সাহেব رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: এমন ভাবে ভেঙ্গে দিবে যে, তার ভিতরের কংকর বের করে দিবে অথবা তার নুপুরকে আলাদা করে দিবে অথবা সেই নুপুরটা স্বয়ং ভেঙ্গে ফেলবে। মোটকথা হলো, তাতে যেন শব্দ না হয়। (মিরআতুল মানাজিহ, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৩৬ পৃষ্ঠা)।

______________

কিতাব : পর্দা সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর ও মাসআলা

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন