ঋণ আদায়ে বিনা কারণে দেরী করা বা ঋণই আত্মসাৎ করে নেয়া কেমন?


প্রশ্ন: ঋণ আদায়ে বিনা কারণে দেরী করা বা ঋণই আত্মসাৎ করে নেয়া কেমন? 

উত্তর: ফোকহায়ে কিরামগণ (رحمة الله) শরীয়তের বিনা অনুমতিতে ঋণ আদায়ে দেরী করাকে অত্যাচার বলে ঘোষিত করেছেন, আর কারো থেকে ঋণ নিয়ে একেবারেই আদায় না করা তো এর চেয়ে আরো বড় ব্যাপার। এ সম্পর্কে কয়েকটি হাদীসে মুবারাকা পর্যবেক্ষণ করুন এবং এর থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করুন: প্রিয় নবী, রাসূলে আরবী (صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ) ইরশাদ করেন: (ঋণ আদায়ে) সক্ষমতা থাকার পরও তাল বাহানা করা অত্যাচার।(বুখারী, কিতাবুল ইসতিকরায..., ২/১০৯, হাদীস নং-২৪০০) সক্ষমদের ঋণ আদায়ে তাল বাহানা করা, তার সম্মান এবং তা শাস্তিকে হালাল করে দেয়।(বুখারী, কিতাবুল ইসতিকরায..., ২/১০৯, হাদীস নং- ২৪০০) অর্থাৎ তাকে মন্দ বলা, তাকে অপমান ও ভর্ৎসনা করা জায়িয হয়ে যায়।(ফতোয়ায়ে রযবীয়া, ২৫/৬৯)মদীনার তাজেদার, নবীদের সর্দার (صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ) ইরশাদ করেন: শহীদের (অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা পথে প্রাণ দিয়েছে) সকল গুনাহ ক্ষমা হয়ে যাবে শুধু ঋণ ছাড়া।(মুসলিম, কিতাবুল ইমারাত, ১০৪৬ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৮৮৬) হযরত সায়্যিদুনা আবু সাইদ খুদুরী (رضي الله عنه) বলেন, নবীয়ে মুকাররম,শাহান শাহে বনী আদম (صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ) এর খেদমতে নামায পড়ানোর জন্য জানাযা আনা হলো, তখন হুযুর সায়্যিদী আলম (صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ) َজিজ্ঞাসা করলেন: এই মৃত ব্যক্তির কোন ঋণ তো নেই? আরয করা হলো: জি হ্যাঁ! ঋণ আছে। হুযুর (صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ) জিজ্ঞাসা করলেন: সে কি কোন সম্পদ রেখে গেছে, যা দিয়ে তার ঋণ শোধ করা যাবে? আরয করা হলো: না। তখন হুযুর َ(صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ) ইরশাদ করলেন: “তোমরা এর জানাযার নামায পড়ে নাও (আমি পড়বো না)।” হযরত সায়্যিদুনা মওলা আলী (رضي الله عنه) তা দেখে আরয করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ (صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ) !َ আমি এর ঋণ শোধ করার দায়িত্ব নিলাম। হুযুর (صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ) َঅগ্রসর হলেন এবং জানাযার নামায পড়ালেন এবং ইরশাদ করলেন: “হে আলী (رضي الله عنه) আল্লাহ তায়ালা তোমাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং তোমার ক্ষমা হোক, যেমনটি তুমি তোমার এই মুসলমান ভাইয়ের ঋণের দায়িত্ব নিয়ে তার জান ছাড়িয়ে নিয়েছো। কোন মুসলমান এমন নেই, যে তার মুসলমান ভাইয়ের পক্ষ থেকে তার ঋণ আদায় করবে, আর আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তাকে মুক্তি দিবেন না।”(সুনানুল কুবরা, কিতাবুজ জামান, ৬/১২১, হাদীস নং- ১১৩৯৮) আমার আক্বা, আলা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খান (رحمة الله) থেকে ঋণ আদায়ে অলসতা এবং মিথ্যা 

তাল-বাহানাকারী ব্যক্তি যায়িদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো, তখন তিনি (رحمة الله) বলেন: যায়িদ ফাসিক ও গুনাহগার, কবীরা গুনাহ সম্পাদনকারী, অত্যাচারী, মিথ্যুক, আযাবের অধিকারী। এর চেয়ে বেশি আর কি উপাধী নিজের জন্য চায় সে? যদি এই অবস্থায় মরে যায় এবং মানুষের নিকট ঋণ রয়ে যায়, তার নেকী তাকে (ঋণদাতাকে) চাহিদার ভিত্তিতে দিয়ে দেয়া হবে এবং কিভাবে দেয়া হবে তাও শুনে নিন, প্রায় তিন পয়সা ঋণের বিনিময়ে সাতশত জামাআত সহকারে নামায (দিতে হবে)। যখন তার (ঋণ আত্মসাৎকারী) নিকট নেকী থাকবে না, তার (ঋণদাতার) গুনাহ এর (ঋণ গ্রহীতা) মাথায় রেখে দেয়া হবে এবং আগুনে নিক্ষেপ করে দেয়া হবে।(ফতোয়ায়ে রযবীয়া, ২৫/৬৯) প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! বান্দার হকের ব্যাপার খুবই কঠিন। যদি আপনি কারো থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন এবং আদায়ের জন্য টাকা না থাকে কিন্তু ঘরের আসবাব, ফার্নিচার ইত্যাদি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করা যায়, তবে তাও করতে হবে। ঋণ শোধ করার সম্ভাব্য পরিস্থিতি থাকার পরও যদি ঋণদাতা থেকে সময় না নিয়ে আপনি ঋণ শোধ করাতে যতদিন দেরী করবেন, গুনাহগার হতে থাকবেন। আপনি জাগ্রত অবস্থায় থাকুন বা ঘুমিয়ে থাকুন, সর্বাবস্থায় আপনার গুনাহের মিটার চলতে থাকবে। ইনশাআল্লাহ  যখন ঋণ আদায়ে দেরী করার এই শাস্তি তবে যারা সম্পূর্ণ ঋণই আত্মসাৎ করে নেয় তাদের কি অবস্থা হবে? 


মত দাবা করযা কিসি কা নাবাকার 

রোয়ে গা দোযখ মে ওয়ারনা যার যার

___________

মসজিদের আদব

মূলঃ আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন