কুরআনের আলোকে তরীকার প্রয়োজনীয়তার দলীল
১. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
إِنَّ رَبَّكَ أَحَاطَ بِالنَّاسِ-
অর্থ : নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক মানুষকে পরিবেষ্টন করে আছেন। ১৭
➥১৭. আল কুরআন : সূরা বনী ইসরাঈল, ১৭:৬০।
২. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيْدِ-
অর্থ : আমি বান্দার শাহরগ (মেরু রজ্জু) হতেও নিকটে আছি। ১৮
➥১৮. আল কুরআন : সূরা ক্বফ, ৫০:১৬।
৩. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
أَنَّ اللهَ يَحُوْلُ بَيْنَ الْمُوْءِ وَقَلْبِهِ-
অর্থ : আল্লাহ্ মানুষ ও তার অন্তরের মধ্যবর্তী হয়ে থাকেন। ১৯
➥১৯. আল কুরআন : সূরা আল-আনফাল, ৮:২৪।
৪. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
فَإِنِّىْ قَرِيْبٌ أُجِيْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ-
অর্থ : আমি তো নিকটেই। আহবানকারী যখন আমাকে আহবান করে আমি তার আহবানে সাড়া দেই।২০
➥২০. আল কুরআন : সূরা আল-বাকারা, ২:১৮৬।
৫. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُّكَلِّمَهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَاىٍ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُوْلًا فَيُوْحِىَ بِإِذْنِهِ، مَا يَشَاءُ-
অর্থ : মানুষের এমন মর্যাদা নাই যে, আল্লাহ্ তার সাথে কথা বলবেন ওহীর মাধ্যম ব্যতিত অথবা পর্দার অন্তরাল ছাড়া অথবা এমন দূত প্রেরণ ব্যতিত, যে দূত তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ব্যক্ত করেন। ২১
➥২১. আল কুরআন : সূরা আশ-শুরা, ৪২:৫১।
৬. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَفِىْ أَنْفُسِكُمْ أَفَلَا تُبْصِرُوْنَ-
অর্থ : আমার নিদর্শন তো তোমাদের মধ্যেও। তোমরা কি তা দেখ না? বা আমি তো তোমাদের সীনার (আনফাস) মধ্যেই আছি, তোমরা কি তা দেখ না? ২২
➥২২. আল কুরআন : সূরা আয-যারিয়াত, ৫১:২১।
৭. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
إِنَّ رَبِّىْ قَرِيْبٌ مُجِيْبُ-
অর্থ : নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক নিকটে, তিনি আহবানে সাড়া দেন। ২৩
➥২৩. আল কুরআন : সূরা হুদ, ১১:৬১।
৮. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَمَنْ كَانَ فِىْ هَذِهِ أَعْمَىَ فَهُوَ فِىْ الْأَخِرَةِ أَعْمَىَ وَأَضَلُّ سَبِيْلًا-
অর্থ : আর যেই ব্যক্তি এইখানে অন্ধ সে আখিরাতেও অন্ধ এবং অধিকতর পথভ্রষ্ট। ২৪
➥২৪. আল কুরআন : সূরা বনী ইসরাঈল, ১৭:৭২।
৯. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
اَلَّذِيْنَ كَانَتْ اَعْيُنُهُمْ فِىْ غِطَاءٍ عَنْ ذِكْرِى وَكَانُوْا لَا يَسْتَطِيْعُوْنَ سَمْعًا-
অর্থ : যাদের চক্ষু ছিল অন্ধ আমার নিদর্শনের প্রতি এবং যারা শুনতেও ছিল অক্ষম। ২৫
➥২৫. আল কুরআন : সূরা আল-কাহাফ, ১৮:১০১।
১০. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
فَإِنَّهَا لَا تَعْمَى اَلْاَبَصَارُ وَلَاكِنْ تَعْمَى اَلْقُلُوْبِ الَّتِىْ فِىْ الصُّدُوْرِ-
অর্থ : বস্তুত চক্ষু তো অন্ধ নয়, বরং অন্ধ হচ্ছে বক্ষস্থিত হৃদয়। ২৬
➥২৬. আল কুরআন : সূরা হজ্ব, ২২:৪৬।
১১. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
فِىْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ-
অর্থ : ‘(ধর্মদ্রোহীদের) ক্বল্বে রয়েছে অসুখ।’ তাই তারা আল্লাহকে চিনে না। ২৭
➥২৭. আল কুরআন : সূরা আল-বাকারা, ২:১০।
১২. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ اَمَنُوْا اتَّقُوْا اللهَ حَقَّ تُقَاتِهِ، وَلَا تَمُوْتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُوْنَ-
অর্থ : হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহকে যথার্থভাবে ভয় কর এবং তোমরা আত্মসমর্পণকারী না হয়ে কোন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করো না। ২৮
➥২৮. আল কুরআন : সূরা আলে ইমরান, ৩:১০২।
১৩. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَهَا، وَقَدْ خَابَ مَنْ دَسَّهَا-
অর্থ : নিশ্চয়ই যারা সেটাকে (রূহকে) জাগ্রত করেছে তারাই শুধু মুক্তি লাভ করেছে। আর তারা ধ্বংস হয়েছে, যারা (রূহকে) মাটি চাপা দিয়ে রেখেছে। ২৯
➥২৯. আল কুরআন : সূরা আশ-শামস, ৯১:৯-১০।
১৪. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ أَمَنُوْا اَدْخُلُوْا فِىْ السِّلْمِ كَافَّةُ-
অর্থ : হে মু’মিনগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর। ৩০
➥৩০. আল কুরআন : সূরা আল-বাকারা, ২:২০৮।
১৫. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
إِلَّا مَنْ أَتَى اللهَ بِقَلْبٍ سَلِيْمٍ-
অর্থ : পরিচ্ছন্ন দিল ছাড়া আল্লাহর দরবারে মুক্তি পাওয়া যাবে না। ৩১
➥৩১. আল কুরআন : সূরা আশ-শুরা, ২৬:৮৯।
১৬. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
فَأَذْكُرُوْنِىْ أَذْكُرُكُمْ وَاشْكُرُوْا لِىْ وَلَا تَكْفُرُوْنِ-
অর্থ : সুতরাং তোমরা আমাকেই স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করবো। ৩২
➥৩২. আল কুরআন : সূরা আল-বাকারা, ২:১৫২।
১৭. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُوْلَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَىَ وَيَتَّبِعَ غَيْرَ سَبِيْلِ الْمُوْمِنِيْنَ نُوَلِّهِ، مَا تَوَلِىْ وَنُصْلِهِ، جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيْرًا-
অর্থ : কারো নিকট সৎপথ প্রকাশের পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে বা মু’মিনদের পথ ব্যতিত অন্য পথ অনুসরণ করে .... জাহান্নামে তাদের দ্বগ্ধ করব। ৩৩
➥৩৩. আল কুরআন : সূরা আন-নিসা, ৪:১১৫।
১৮. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
لَيْسَ عَلىَ الَّذِيْنَ أَمَنُوْا وَعَمِلُوْا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيْمَا طَعِمُوْا إِذَا مَا اَتَّقَوْا وَأَمَنُوْا وَعَمِلُوْا الصَّالِحَاتِ ثُمَّ اَتَّقَوْا وَاَمَنُوْا ثُمَّ اتَّقَوْا وَأَحْسَنُوْا وَاللهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِيْنَ-
অর্থ : যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম (আমলে ছালেহা) করে তারা পূর্বে যা ভক্ষণ করেছে সেজন্য তাদের কোন গুনাহ নাই, যদি তারা সাবধান হয় এবং ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, সাবধান হয় ও বিশ্বাস করে, পুনরায় সাবধান হয় ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ সৎকর্ম পরায়নদিগকে ভালবাসেন। ৩৪
➥৩৪. আল কুরআন : সূরা আল-মায়িদা, ৫:৯৩।
নোট :
(১) ঈমান, সৎকর্ম ও তাকওয়ার সাথে এহসানও আবশ্যক। কারণ এহসান ব্যতিত সূফী, মোহসীন কিংবা অলী হওয়া যায় না। আর এহসানের জন্য তরীকত প্রয়োজন। সূরা বাকারার ১২২নং আয়াত অনুযায়ী মোহসীন ও সূফীগণ জান্নাতি।
(২) আল্লাহকে চিনা, আল্লাহর পরিচয় লাভ, দিলকে পরিচ্ছন্ন করা, রূহ ও অন্তর চক্ষুকে জাগ্রত করা, আল্লাহর যিকিরকে দায়েমী করা, পরিপূর্ণভাবে ইসলামে দাখিল হওয়া, দীলে হুযুরী বা একাগ্রতা সৃষ্টি করা, দীলে আল্লাহর ভয় ও মহব্বত সৃষ্টি করা, এহসান ও এখলাস অর্জন করা- এ’ সবের জন্যই প্রয়োজন তরীকত। আল্লাহ যেহেতু সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলেন না, তাই আমাদের উসিলা অবলম্বন আবশ্যক।
(৩) বর্ণমালা হতে শব্দ চয়ন করতে যেমন একজন শিক্ষক প্রয়োজন, তেমনি বর্ণিত বিষয়গুলো আয়ত্ত করতেও একজন ওস্তাদ বা পীর মুরশিদের প্রয়োজন।
_________________
কুরআন-হাদীসের আলোকে তরীকার প্রয়োজনীয়তা
গ্রন্থনা ও সংকলনেঃ
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরশীদ আলম (অবঃ)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন