প্রিয় নবীজি (ﷺ) এর রওজা যিয়ারত ও তার উদ্দেশ্যে সফর (৩)
যিয়ারতের ক্ষেত্রে রাসূলে পাক (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) এর রওজা মােবারক যিয়ারত করা সবচেয়ে উত্তম আমল। প্রিয় নবীজি (ﷺ) এর রওজা মােবারক যিয়ারত ও তদ্বউদ্দেশ্যে সফর করা অত্যন্ত ফজিলত ও বরকতময় আমল। বিষয়টি নিম্নোক্ত হাদিস সমূহের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। যেমন নিচের হাদিস গুলাে লক্ষ্য করুনঃ
●হাদিস নং ১১
এ সম্পর্কে আরেকটি রেওয়াত উল্লেখ করা যায়,
قال يحي الحسيني في أخبار المدينة في باب ما جاء في زيارة قبر النبي صلى الله عليه وسلم وفي السلام عليه حدثنا محمد بن يعقوب ، حدثنا عبد الله بن وهب عن رجل عن بكر بن عبد الله عن النبي صلى الله عليه وسلم قالঃ من أتى المدينة زائرا إلى وجبت له شفاعتي يوم القيامة .
رجاله لا بأس بهم وبكر بن عبد الله إن كان المديني فهو تابعي جليل فيكون الحديث مرسلا وإن كان هو بكير بن عبد الله بن الربيع الأنصاري فهو صحابي .
-”হজরত বকর ইবনে আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মদিনায় আমার যিয়ারতকারী হিসেবে আসবে কিয়ামতের দিন আমি তার সুপারিশকারী হব।
ইমাম ইবনে ছালেহী (رحمة الله) বলেন ; এর সনদের রাবীদের নিয়ে কোন অসুবিধা নেই, তবে ‘ বকর ইবনে আব্দুল্লাহ যদি মাদানী হয়ে থাকে তাহলে সে তাবেঈ ফলে ইহা মুরছাল রেওয়াত হবে। আর যদি সে ' বকর ইবনে আব্দুল্লাহ আল-আনছারী ' হয় তাহলে সে সাহাবী।”(ইমাম ইবনে ছালেহীঃ সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১২ তম খন্ড, ৩৭৭ পৃঃ ; ছারিমুল মুনকী ফি রাদ্দে আলাছ ছুবকী, ১ ম খন্ড, ১৮৪ পৃঃ)।
●হাদিস নং ১২
حدثنا سعيد بن محي الخضري ، مما قاله بن سعيد بن ژميل التأري دنا محمد بن يي الأري ، عن ابن جريج ، عن عطاء ، عن ابن عباس قالঃ قال رسول الله صلى الله عليه وسلمঃ من زارني في مماتي كان من زارني في حياتي
”হজরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেনঃ যারা আমার ওফাতের পরে যিয়ারত করবে সে যেন আমার জিবদ্দশায় যিয়ারত করল।”(হাফিজ উকাইলী ; আদ্ দোয়াফাইল কবীর, ৩ য় খন্ড, ৪৫৭ পৃঃ: বদরুল মুনীর, ৬ ষ্ঠ খন্ড, ২৯৫ পৃঃ)।
●হাদিস নং ১৩
হাদিসটি আরেকটি সূত্রে বর্ণিত আছে,
حدثنا أخمد بن رشدين قالঃ نا علي بن الحسين بن هارون الأنصاري قالঃ تحدي اللي ابن ابنة اللي بن أبي سلم قالঃ حدثني عايزه ابنه يو ، ام لي بن أبي شليم ، عن مجاهد ، عن ابن عمر ، عن النبي صلى الله عليه وسلم قالঃ من زار قبري بعد موتي ، كان من ارني في حياتي
-”হজরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) নবী পাক (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ যারা আমার ওফাতের পরে আমার যিয়ারত করবে তারা যেন আমার জিবদ্দশায় যিয়ারত করল।”(ইমাম তাবারানীঃ মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ২৮৭)
●হাদিস নং ১৪
حدثنا محمد بن موسى قالঃ حدنا محمد بن الحسن الترمذي قالঃ نا عبد الملك بن إبنراهيم الجدي قالঃ نا شعبة ، عن سوار بين ميموني ، عن هارون بني قرعة ، عن رجل ، من آل الخطاب عن النبي صلى الله عليه وسلم قالঃ من زارني متعمدا كان في جوار اللير يوم القيامة
-”হাতেব এর বংশধর নবী করিম (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন, প্রিয় নবীজি (ﷺ) বলেছেনঃ যারা আমার নিয়মিত যিয়ারতকারী হবে কেয়ামতের দিন সে আমার প্রতিবেশী হবে।”(হাফিজ উকাইলীঃ আদ দোয়াফাইল কবীর, ৩ য় খন্ড, ৪৫৭)।
●হাদিস নং ১৫
حدثنا جعفر بن جبير قالঃ ثنا محمد بن بكار بين الريابي قالঃ تا فض ب سليمان ، عن لي بن أبي شليم ، عن مجاهد ، عن ابن عمر قالঃ قال رسول الله صلى الله عليه وسلمঃ من حج فار قبري بعد موتي كان كمن زارني في حياتي
-”হজরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হজ্ব করল অতঃ পর আমার ওফাতের পরে আমার যিয়ারত করল সে যেমন আমার জিবদ্দশায় যিয়ারত করল।”
(ইমাম তাবারানীঃ মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ৩৩৭৬ ; ইমাম ফাকেহীঃ আখবারে মক্কা, হাদিস নং ৯৪৯ ; ইমাম বায়হাকীঃ সুনানে কুবরা, হাদিস নং ১০২৭৪ ; ইমাম বায়হাকীঃ শুয়াইবুল ঈমান, হাদিস নং ৩৮৫৭ ; ইমাম তাবারানীঃ মুজামুল কবীর, হাদিস নং ১৩৪৯৭ ; সুনানে দারে কুতনী, হাদিস নং ২৬৯৩ ; মেসকাত শরীফ, হাদিস নং ২৭৫৬)
সকল ইমামগণই হাদিসটি ' হাফছ ইবনে আবী দাউদ ' এর সূত্রে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন কিন্তু ইমাম ফাকেহী (رحمة الله), ইমাম তাবারানী (رحمة الله) তার ' মুখামুল আওছাতে ' ও ইমাম বায়হাক্বী (رحمة الله) তার সুনানে কুবরায় ' হাফছ ইবনে সুলাইমান আবু উমর ’ এ সূত্রে বনর্না করেছেন। মুলত নামে দুইজন বুঝলেও এগুলো একজনেরই নাম। তার ব্যাপারে ইমামদের অনেকে সমালোচনা করলেও ইমাম আহমদ (رحمة الله) বলেছেনঃ তার ব্যাপারে অসুবিধা নেই। ইমাম ওহাকী (رحمة الله) তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন। (ইমাম যাহাবীঃ মিযানুল এতেদাল, রাবী নং ২১২১)
তাই হাদিসটি হাসান হওয়ার যােগ্যতা রাখে কারণ একাধিক রেওয়ার এর পক্ষে সাক্ষ্য রয়েছে।
●হাদিস নং ১৬
أخبرنا أبو عبد الله الحافظ ، أخبرني عمر بن علي الحافظ ، مما أحمد بن مير الحافظ ، ځني داود بن يحي ، مما أحمد بن الحسن الترمذي ، حنا عبد المللي بن إبراهيم الجدي ، حنا شعبة ، عن سوار بن ميموني ، حتا هاژو بن قرعة ، عن رجل من آل الخطابঃ عين التي صلى الله عليه وسلم قالঃ من زارني متعمدا كان في جواري يوم القيامة ،
“খাত্তাব এর পরিবারের একজন (ইবনে উমর) বলেন, তিনি নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন, প্রিয় নবীজি বলেছেনঃ যারা সব সময় আমার যিয়ারত করবে তারা কেয়ামতের দিন আমার প্রতিবেশী হবে।”(ইমাম বায়হাকীঃ শুয়াইবুল ঈমান, হাদিস নং ৩৮৫৬ ; মেসকাত শরীফ, হাদিস নং ২৭৫৫ ; ইমাম হিন্দীঃ কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ১২৩৭৩)
উল্লেখিত রেওয়াত গুলাে দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর রওজা মােবারক যিয়ারত করা অতি-উত্তম আমল। কারণ এতে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর শাফায়াত বা সুপারিশ নছিব হবে ও জান্নাতের মধ্যে প্রিয় নবীজি (ﷺ) এর প্রতিবেশী হওয়ার ভাগ্য হবে। যদিও সবগুলাে রেওয়াত সহিহ নয় তথাপিও সবগুলাে বেওয়াত একত্রিত হয়ে অবশ্যই ক্বাবী বা শক্তিশালী হয়ে যাবে। কেননা এ সম্পর্কে ৭ জন সাহাবী থেকে মােট ১৫ টি রেওয়াত বর্ণিত হয়েছে।
_______________
সহিহ হাদিসের আলােকে মাজার যিয়ারত পূজা নয় ও কদমবুছির সমাধান
গ্রন্থনায়ঃ মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আলাউদ্দিন জিহাদী
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন