মুহাক্কিক ওলামায়ে কেরাম ঈমান’র পারিভাষিক সংজ্ঞা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন-
اَ لْاِيْمَانُ فِى الشَّرْعِ هُوَ التَّصْدِيْقُ بِمَا جَآءَ بِـه الرَّسُوْلُ مِنْ عِنْدِ اللهِ وَالْاِقْرَارُ بِـه .
অর্থ: যে পথ নির্দেশিকা ও হুকুম-আহ্কাম যা আল্লাহর পক্ষ হতে রাসূল (ﷺ) নিয়ে এসেছেন তা অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা এবং মুখে স্বীকার করার নাম ঈমান।
ঈমানে মুজমাল
اٰمَنْتُ بِاللهِ كَمَا هُوَ بِاَسْمَآئِـه وَصِفَاتِه وَقَبِلْتُ جَمِيْعَ اَحْكَامِـه وَاَرْكَانِه اِقْرَارُ بِاللِّسَانِ وَتَصْدِيْقُ بِالْقَلْبِ .
উচ্চারণ: আমান্তু বিল্লাহি কা-মা হুয়া বি-আছমা-য়িহী ওয়া ছিফাতিহী ওয়া ক্বাবিল্তু জামী‘আ আহ্কামিহী ওয়া আরকানিহী ইক্রারু বিল্লিসা-নী ওয়া তাস্দীকু বি-ল্ক্বলবি।
অর্থ: আমি ঈমান এনেছি আল্লাহ্ তা‘আলার উপর, তিনি যেমন আছেন। তাঁর নাম সমূহ এবং সিফত তথা গুণাবলী সমূহের উপর এবং আমি তাঁর সকল হুকুম ও নির্দেশাবলী গ্রহণ করলাম। আর তা হচ্ছে মুখে স্বীকারোক্তি এবং অন্তরে বিশ্বাস করা।
ঈমানে মুফাস্সাল
اَمَنْتُ بِاللهِ وَمَلٰئِكَتِه وَكُتُبِه وَرُسُلِـه وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَالْقَدْرِ خَيْرِه وَشَرِّه مِنَ اللهِ تَعَالٰى وَالْبَعْثِ بَعْدَالْمَوْتِ .
উচ্চারণ: আমান্তু বিল্লাহি ওয়া মালা-য়িকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুছুলিহী ওয়াল্ ইয়াওমিল্ আখিরে ওয়াল্ ক্বাদ্রে খাইরিহী ওয়া র্শারীহি মিনাল্লাহি তা‘আলা ওয়াল্ বা‘ছে বা‘দাল্ মাওতি।
অর্থ: আমি ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং তাঁর ফেরেশতাগণের উপর, তাঁর কিতাব সমূহের উপর, তাঁর রাসূলগণের উপর, কিয়ামত দিবসের উপর এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর- যা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে নির্ধারিত এবং মৃত্যুর পর পূনরুত্থানের উপর।
ছয় কালেমা
(এখানে ‘কালেমায়ে ইস্তিগ্ফার’ সহ ছয় কালেমা উল্লেখ করা হয়েছে)
১. কালেমায়ে তৈয়্যেবা
لَا اِلٰـهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُولُ اللهِ.
উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নাই, হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল।
২. কালেমায়ে শাহাদাত
أَشْهَدُ اَنْ لَا اِلٰـهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهٗ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُولُـهٗ.
উচ্চারণ: আশহাদু আন্-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।
অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
৩. কালেমায়ে তামজিদ
سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا اِلٰـهَ اِلَّا اللهُ ، وَاللهُ اَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ الْعَلِـىِّ الْعَظِيْمِ.
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।
অর্থ: মহান আল্লাহ্ পবিত্র এবং সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্য প্রযোজ্য, আল্লাহ্ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। আল্লাহ্ মহান এবং গুনাহ থেকে পরিত্রানের (বাঁচা) শক্তি এবং ভাল ও সঠিক কাজ করার সামর্থ একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে, যিনি আলীশান এবং উচ্চ মর্যাদাবান।
৪. কালেমায়ে তাওহীদ
لَا اِلٰـهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ لَهٗ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِىْ وَيُمِيْتُ وَهُوَ حَىٌّ لاَ يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدًا ذُوْالْجَلَالِ وَالْاِكْرَامِ، بِيَدِه الْخَيْرِ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ.
উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ইউহয়ি ওয়া ইউমিতু ওয়া হুয়া হাইউন্ লা-ইয়ামুতু আবাদান্ আবাদা যুল্ যালালি ওয়াল্ ইক্রামি, বিয়াদিহিল খাইরি ওয়া হুয়া আলা কুল্লে শাইয়্যিন ক্বাদির।
অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই, তিনি একক। তাঁর কোনো শরীক নেই, সবকিছু তাঁরই রাজত্ব এবং সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনি জীবিত করেন এবং মৃত্যু করেন এবং তিনি চিরঞ্জীবী ও মৃত্যুঞ্জয়ী। তিনি উচ্চ মর্যাদাবান ও সম্মানিত। কল্যাণ ও উত্তমতা তাঁর হাতে এবং তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
৫. কালেমায়ে ইস্তিগফার:
اَسْتَغْفِرُاللهَ رَبِّـىْ مِنْ كُلِّ ذَنْبٍ اَذْنَبْتَهٗ حَمَدًا اَوْ خَطَاءً سِرًّا اَوْ عَلَانِيَّةً وَاَتُوْبُ اِلَيْهِ مِنَ الذَّنْبِ الَّذِىْ اَعْلَمُ وَمِنَ الذَّنْبِ الَّذِىْ لَا اَعْلَمُ اِنَّكَ اَنْتَ عَلَّامُ الْغُيْوُبِ وَسَتَّارُ الْعُيُوْبِ وَغَفَّارُ الذُّنُوْبِ وَلَا حَوْلَ وَلَاقُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ الْعَلِـىِّ الْعَظِيْمِ .
উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি যান্বিন্ আয্নাব্তাহূ হাম্দান্ আও খাতা-আন্ র্সীরান আও আ‘লানীয়াতান্ ওয়া আতুবু ইলাইহি মিনায্যান্বি আল্লাযি আ‘লামু ওয়া মিনায্যান্বিল্ ল্লাযী লা- আ‘লামু ইন্নাকা আন্তা আ‘ল্লামুল্ গুয়ুবি ওয়া সাত্তারুল্ উয়ুবি ওয়া গাফ্ফারুয্ যুনুবি ওয়া লা- হাওলা ওয়া-লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল্ আ‘লিয়ীল্ আ‘যীমি।
অর্থ: আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি, যিনি আমার পালনকর্তা। প্রত্যেক গুনাহ হতে, যা আমি করেছি- ইচ্ছাকৃত, অনিচ্ছাকৃত, ভুলবশত, প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে। আমি তাওবা করছি, তাঁর দরবারে আমার জানা-অজানা সকল গুনাহ হতে, নি:সন্দেহে আপনি গায়েব তথা অদৃশ্য জ্ঞান সম্পর্কে অবগত এবং দোষ-ত্রুটি গোপনকারী এবং গুনাহ ক্ষমাকারী। গুনাহ হতে পরিত্রাণের ক্ষমতা এবং ভাল কাজ করার শক্তি একমাত্র আল্লাহরই পক্ষ হতে, যিনি আলীশান ও উচ্চ মর্যদাবান।
৬. কালেমায়ে রদ্দে কুফর
اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَعُوْذُبِكَ مِنْ اَنْ اُشْرِكَ بِكَ شَيْئًا وَاَنَا اَعْلَمُ بِه وَاَسْتَغْفِرُكَ لِمَالَا اَعْلَمُ بِهِ تُبْتُ عَنْهُ وَتَبَرَّاْتُ مِنَ الْكُفْرِ وَالشِّرْكِ وَالْكِذْبِ وَالْغِيْبَةِ وَالْبِدْعَةِ وَالنَّمِيْمَةِ وَالْفَوَاحِشِ وَالْبُهْتَانِ والْمَعَاصِى كُلِّهَا وَأَسْلَمْتُ وَاٰمَنْتُ وَاَقُوْلُ لَا اِلٰـهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ .
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন আন উশরিকা বিকা শাইয়া ওয়া আনা আ‘লামু বিহি ওয়াস্তাগ্ফিরুকা লিমা লা আ‘লামু বিহি তুবতু আনহু ওয়া তার্বারায়াতু মিনাল কুফরি ওয়াশশিরকি ওয়াল কিয্বি ওয়াল গিবাতি ওয়াল বিদআতি ওয়ান নামীমাতি ওয়াল ফাওয়াহিশি ওয়াল বোহতানি ওয়াল মায়াছি কুল্লিহা ওয়া আস্লামতু ওয়া আমানতু ওয়া আকুলু লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্।
অর্থ: হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, কোনো বস্তু তোমার শরীক বানানো হতে এবং আমার নিকট যাতে এটির জ্ঞান হয়। আর আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি তোমার নিকট ঐ সকল গুনাহ হতে যার জ্ঞান আমার নিকট নেই। আর কুফর, র্শিক, মিথ্যা বলা, গীবত (পরনিন্দা), গোমরাহী, বিদ্আত, চুগলী তথা পরশ্রীকাতরতা, লজ্জাহীন কর্ম হতে, অপরাধ এবং বাকী সকল নাফরমানী হতে তোমার নিকট তাওবা করছি। আর আমি আত্মসমর্পণ করেছি ও ঈমান এনেছি এবং একথা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো মা’বুদ নেই, হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল।
___________________
গাউছিয়া আজিজিয়া নামায শিক্ষা
রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্-কাদেরী (রহ)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন