বহু দূরের বস্তু অবলোকন এবং সাহায্য করা

 

বহু দূরের বস্তু অবলোকন এবং সাহায্য করা-


মিশকাত শরীফের ২য় খণ্ডের بَابُ الْكَرَامَاتْ শীর্ষক অধ্যায়ে হযরত আবদুল্লাহ ইবনু উমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছেঃ হযরত উমর (رضي الله عنه) হযরত সারিয়া (رضي الله عنه) কে এক সেনা বাহিনীর অধিনায়ক নিযুক্ত করে ‘নেহাওয়ানন্দ’ নামক স্থানে পাঠিয়েছিলেন। এরপর একদিন হযরত উমর ফারুক (رضي الله عنه) মদীনা মুনাওয়ারায় খুতবা পাঠের সময় চিৎকার করে উঠলেন।



❏ হাদিসের শব্দগুলো হলঃ



فَبَيْنَمَا عُمَرُ يَخْطُبُ، فَجَعَلَ يَصِيحُ: يَا سَارِيَ! الْجَبَلَ



-‘‘হযরত উমর (رضي الله عنه) মদীনা মুনাওয়ারায় খুতবা পড়ার সময় চিৎকার করে বলে উঠলেন, ‘ওহে সারিয়া! পাহাড়ের দিকে পিঠ দাও।’’ বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর উক্ত সেনাবাহিনী থেকে বার্তা বাহক এসে জানানঃ আমাদিগকে শত্রুরা প্রায় পরাস্ত করে ফেলেছিল। এমন সময় কোন এক আহ্বানকারীর ডাক শুনতে পেলাম। উক্ত অদৃশ্য আহ্বানকারী বলেছিলেন, ‘সারিয়া! পাহাড়ের শরণাপন্ন হও।’ তখন আমরা পাহাড়কে পিঠের পেছনে রেখে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলাম। এরপর আল্লাহ আমাদের সহায় হলেন, ওদেরকে পর্যুদস্ত করে দিলেন।’’  ২৬


{২৬. খতিব তিবরিযী, মিশকাতঃ ৪/৪৪৬ পৃ. হা/৫৯৫৪, এ গ্রন্থের তাহকীকে আহলে হাদিস আলবানী এটিকে ‘হাসান’ বলে অভিহিত করেছেন। ইমাম বায়হাকী, দালায়েলুল নবুয়ত, ৬/৩৭০ পৃ., শায়খ ইউসূফ নাবহানীঃ হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামীনঃ ৬১২-৬১৩ পৃ., ইমাম আবু নাঈম ইস্পহানীঃ দালায়েলুল নবুয়তঃ পৃ. ৫১৮-৫১৯, মুত্তাকী হিন্দীঃ কানযুল উম্মালঃ ৫৭১ পৃ. হাদিসঃ ৩৫৭৮৮, ইমাম বায়হাকী, কিতাবুল ই’তিকাদঃ ২০৩ পৃ.}



আক্বিদা


সাহাবায়ে কেরামদের আক্বিদা ছিল আল্লাহর নৈকট্যবান বান্দারা অন্তরের দূরদৃষ্টি দ্বারা অনেক দূরের বস্তুকে চোখের সামনে দেখতে পেতেন এবং তারা কারামত দ্বারা বিপদে সাহায্যও করতে পারেন। যেমনটি যুদ্ধ ক্ষেত্রে জুম‘আর খুতবা চলাকালি সময়ে অসংখ্য মাইল দূর থেকে হযরত সারিয়া (رضي الله عنه) কে হযরত উমর (رضي الله عنه) করেছেন।



❏ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেন-



فِيهِ أَنْوَاعٌ مِنَ الْكَرَامَةِ لِعُمَرَ: كَشْفُ الْمَعْرَكَةِ وَإِيصَالُ صَوْتِهِ وَسَمَاعُ كُلٍّ مِنْهُمْ لِصَيْحَتِهِ وَفَتْحُهُمْ وَنَصْرُهُمْ بِبَرَكَتِهِ



-‘‘এটি হযরত উমর (رضي الله عنه)-এর কারামতের একটি, মহান রব তাঁর কাছে যুদ্ধের রণক্ষেত্র উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, তাঁর আওয়াজকে তাদের কাছে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন, যুদ্ধ ক্ষেত্রের সকলেই খুব ভালভাবেই তাঁর আওয়াজ শুনেছেন, মুসলমানগণ যুদ্ধে বিজয় লাভ করেছেন এবং আর যুদ্ধে সাহায্য প্রাপ্ত হয়েছেন হযরত উমর (رضي الله عنه)-এর বারকতে।’’ ২৭


{২৭. খতিব মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত শরহে মিশকাতঃ ৯/৩৮৪২পৃ. হা/৫৯৫৪}


 


বুঝা গেল ওলীদের কারামত এবং কাশ্ফ প্রমাণিত। ২৮


{ ২৮. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}



সবচেয়ে বড় মুফাস্সির-



❏ ইমাম আহমদ (رحمة الله) সংকলন করেন-



عَنِ ابْنِ هُبَيْرَةَ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ يَقُولُ: مَنْ كَانَ سَائِلًا عَنْ شَيْءٍ مِنَ الْقُرْآنِ، فَلْيَسْأَلْ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ



-‘‘হযরত ইবনু হুবায়রা (رحمة الله) বলেন, নিশ্চয়ই আমিরুল মু‘মিনীন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (رضي الله عنه) বলতেন, তোমাদের কোরআনের বিষয়ে কারও কোন প্রশ্ন থাকলে তোমরা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه)-এর কাছ থেকে জিজ্ঞাস করে নাও।’’  ২৯


{২৯. ইমাম আহমদ, ফাযায়েলুস সাহাবা, ২/৯৬৭পৃ. হাদিস নং.১৮৯৩, ইমাম ইবনে আসেম, আহাদ ওয়াল মাসানী, ১/২৮৬পৃ. হাদিস/৩৬০}



আক্বিদা


তাই আমরা বুঝি সাহাবায়ে কিরামদের মাঝে এটা সুপ্রসিদ্ধ ছিল যে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه) হলেন সবচেয়ে বড় মুফাস্সির। ৩০


{ ৩০. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}


____________________

আকাইদে সাহাবাহ

(সাহাবায়ে কিরামদের সাথে সুন্নি আক্বিদার সাদৃশ্য)

মূল:আল্লামা আবুল হামিদ মুহাম্মদ যিয়াউল্লাহ

ক্বাদেরী আশরাফী (رحمة الله)

বঙ্গানুবাদ: মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ আতিকুর রহমান

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন