মহানবী (ﷺ) হলেন আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া

 

 মহানবী (ﷺ) হলেন আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া

সূরা ইউনূসের ৫৮ আয়াতে দুটি ব্যাপারে খুশি উদযাপন করার কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো: আল্লাহতা’লার ফযল/অনুগ্রহ ও তাঁরই রহমত/দয়া। এখানে ‘অনুগ্রহ’ ও ‘দয়া’ শব্দগুলো কেন আলাদাভাবে উল্লেখিত হয়েছে, আর এগুলোর মানেই বা কী?

আল-ক্বুরআনের বাচনশৈলীগুলোর মধ্যে একটি এই যে, ‘ফযল’ (অনুগ্রহ) ও ‘রহমত’ (দয়া/করুণা) শব্দগুলো যখন উল্লেখিত হয়, তখন সেগুলো মহানবী (ﷺ)-এর মোবারক সত্তাকে উদ্দেশ্য করে, যার আরো প্রামাণিক দলিল পরবর্তী পর্যায়ে পেশ করা হবে। কিন্তু প্রথমে ‘ফযল’ ও ‘রাহমা’ শব্দগুলো দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে, তা-ই আমরা দেখি।



একটি কৌতূহলোদ্দীপক বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়


এই আয়াতটিতে দুটি বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে:

১/ – আল্লাহর অনুগ্রহ (ফযল)

২/ – আল্লাহর দয়া/করুণা (রাহমা)

এই দুটি শব্দের মাঝে ‘ওয়াও’ (এবং) অপ্রধান পদটি বিদ্যমান, যা সংযোজক অব্যয় পদ হিসেবে ব্যবহৃত। আরবী ব্যাকরণের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, ‘ফযল’ ও ‘রাহমা’ শব্দগুলো পৃথক পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেটা ইঙ্গিত করে যে সেগুলো দুটি আলাদা বিষয়। তাই উভয় শব্দকে উদ্দেশ্য করার পদ্ধতি হিসেবে ‘যা-লিকা’ (’ওই’) শীর্ষক নির্দেশাত্মক সর্বনামটি দ্বি-বচনে ব্যবহার করা উচিত ছিল; কিন্তু এখানে তা না করে এক-বচনই ব্যবহার করা হয়েছে। (ব্যাকরণের) এই নিয়ম গৃহীত হলে আয়াতটি হতো নিম্নরূপ: “সেগুলোর (মানে ফযল/অনুগ্রহ ও রাহমা/দয়ার) ওপর মুসলমানদের আনন্দ প্রকাশ করা উচিত।” অথচ এভাবে প্রকাশিত না হওয়ার দরুন আয়াতটি বরঞ্চ ঘোষণা করে: “সেটার (অর্থাৎ, এক-বচনে) ওপর মুসলমানদের আনন্দ প্রকাশ করা উচিত।” 

আরবী ভাষায় ‘যা-লিকা’ (’ওই’) শব্দটি এক-বচনে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে বোঝায়; কিন্তু আমরা দ্বি-বচন বা বহু-বচন ব্যবহার করতে চাইলে যথাক্রমে ‘যা-নিকা’ ও ’ঊলা’ইকা’ শীর্ষক নির্দেশাত্মক সর্বনামদ্বয় প্রয়োগ করে থাকি। এই নিয়ম স্মরণে রেখে আমরা যদি আয়াতখানির দিকে ফিরে তাকাই, তাহলে দেখতে পাবো যে ‘যা-লিকা’ শীর্ষক এক-বচনের নির্দেশাত্মক সর্বনামটি-ই ‘ফযল’ ও ‘রাহমা’ শব্দ দুটোর পরে প্রয়োগ করা হয়েছে।

এই বাচনশৈলীর পেছনে কী হেকমত তথা ঐশী জ্ঞান লুক্কায়িত আছে? আল-ক্বুরআন কি এর নীতিমালা পরিবর্তন করেছে? না, আসলে তা নয়। আমাদেরকে এখানে স্বীকার করতে হবে যে আয়াতটিতে এক-বচনের নির্দেশাত্মক সর্বনামটি ব্যবহৃত হয়েছে এ কারণে যে ‘ফযল’ ও ‘রাহমা’ শব্দ দুটো শুধু একজনকেই উদ্দেশ্য করেছে। ক্বুরআন মজীদের এই বাচনশৈলী হতে নিম্নের বিষয়টি যথাযথভাবে উপলুব্ধ হওয়া উচিত যে, সর্বশক্তিমান আল্লাহতা’লা তাঁরই ‘ফযল’ ও ‘রাহমা’-কে মূলতঃ একজন মহান সত্তার মাঝে সন্নিবেশিত করেছেন; আর এই মহা সম্মানিত সত্তার খাতিরেই আমাদেরকে আনন্দ প্রকাশের জন্যে আদেশ দেয়া হয়েছে।

__________________

মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর উদযাপন ও অনুমতি (১ম খণ্ড)

মূল: শায়খুল ইসলাম ড: মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরী

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন