(১) প্রিয় নবী صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم হেলান দিয়ে খেতেন না। (সুনানে আবী দাউদ, ৩য় খন্ড, ৪৮৮ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৭৬৯ থেকে সংকলিত) (২) টেবিলের উপর রেখে খাবার খেতেন না। (সহীহ বুখারী, ৩য় খন্ড, ২৪ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৫৫৩৮৬ থেকে সংকলিত) (৩) যা কিছু পেতেন খেয়ে নিতেন। (সহীহ মুসলিম, ১১৩৪ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ২০৫২ থেকে সংকলিত) (৪) পরিবারের লােকদের নিকট থেকে খাবার চেয়ে নিতেন না এবং তাদের নিকট প্রয়ােজনের কথা প্রকাশ করতেন না। যদি তারা উপস্থাপন করতেন তাহলে খেয়ে নিতেন এবং তারা যা কিছু সামনে রাখতেন তা গ্রহণ করতেন আর যা কিছু পান করাতেন তা পান করে নিতেন। (আতাহাফুস সাদাতুল মুত্তাকীন, ৮ম খন্ড, ২৪৮ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত) (৫) অনেক সময় নিজে উঠে পানাহারের বস্তুগুলাে নিয়ে নিতেন। (সুনানে আবী দাউদ, ৪র্থ খন্ড, ৫পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৮৫৬ থেকে সংকলিত) (৬) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم নিজের সামনে থেকে শুরু করতেন। (শুউবুল ঈমান, ৫ম খন্ড, ৭৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৫৮৪৬ থেকে সংকলিত) (৭) এবং তিন আঙ্গুল দ্বারা আহার করতেন। (মুসান্নিফে আবী শায়বাহ, ৫ম খন্ড, ৫৫৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩ থেকে সংকলিত)
রাসুলুল্লাহ্ ﷺ ইরশাদ করেছেন: “আমার প্রতি অধিকহারে দরূদ শরীফ পাঠ কর, নিশ্চয় আমার প্রতি তােমাদের দরূদ শরীফ পাঠ, তােমাদের গুনাহের জন্য মাগফিরাত স্বরূপ।” (জামে সগীর)
(৮) আর কোন সময় চার আঙ্গুল দিয়েও খেয়ে নিতেন। (আল জামিউস সগীর, ২৫০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৬৯৪২ থেকে সংকলিত) কিন্তু দুই আঙ্গুল দ্বারা খাবার খেতেন না। তাজেদারে রিসালত, শাহানশাহে নবুয়ত, হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “এটা শয়তানের খাওয়ার পদ্ধতি।” (জামিউস সাগীর সম্বলিত কদীর, ৫ম খন্ড, ২৪৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৬৯৪০ থেকে সংকলিত) (৯) জবের (অমসৃণ) ভুষি, আলাদা করা হয়নি এমন আটার রুটি আহার করতেন। (সহীহ বুখারী, ৩য় খন্ড, ৫৩১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৫৪১০ থেকে সংকলিত) (১০) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم এর খাবার প্রায়ই খেজুর ও পানি দিয়ে হত। (সহীহ বুখারী, ৩য় খন্ড, ৫২৩ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৫৩৮৩ থেকে সংকলিত) (১১) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم দুধ ও খেজুর একত্রে ব্যবহার করতেন এবং সেটাকে উত্তম খাবার সাব্যস্ত করতেন। (মুসনাদে ইমাম আহমদ, ৫ম খন্ড, ৩৮৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৫৮৯৩ থেকে সংকলিত) (১২) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم এর পছন্দনীয় খাদ্য ছিল মাংস। (জামে তিরমিযী, ৫ম খন্ড, ৫৩৩ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৭৮ থেকে সংকলিত) (১৩) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم ইরশাদ করতেন: “মাংস কানের শ্রবণ শক্তি বৃদ্ধি করে আর দুনিয়া ও আখিরাতের খাবারের সর্দার। যদি আমি আল্লাহর নিকট চাইতাম যে, আমাকে প্রতিদিন মাংস প্রদান করুন তবে প্রদান করতেন। (আততাহাফুস্ সাদাতুল মুত্তাক্বীন, ৮ম খন্ড, ২৩৮ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত) (১৪) হুযুর পুরনূর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم মাংস ও লাউ দিয়ে তরকারী তৈরী করে খেতেন (অর্থাৎ- মাংস ও কদু শরীফের তরকারীতে রুটির টুকরা ভালভাবে ভিজিয়ে আহার করতেন।) (আততাহাফুস্ সাদাতুল মুত্তাকীন, ৭ম খন্ড, ২৩৯ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত) (১৫) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم যখন মাংস খেতেন, তখন সেটার দিকে পবিত্র মাথাকে ঝুঁকাতেন না। (আততাহাফুস্ সাদাতুল মুত্তাকীন, ৭ম খন্ড, ২৩৯ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত) বরং সেটাকে নিজের মুখ মুবারকের দিকে উঠাতেন অতঃপর দাঁত মােবারক দিয়ে কাটতেন। (জামি তিরমিযী, ৩য় খন্ড, ৩২৯ পৃষ্ঠা হাদীস নং- ১৮৪২ থেকে সংকলিত) (১৬) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم এর নিকট ছাগলের মাংসের মধ্যে রান ও ঘাড়ের মাংস পছন্দনীয় ছিল। (জামে তিরমিযী, ৩য় খন্ড, ৩৩০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৮৪২, ১৮৪৪ থেকে সংকলিত)
রাসুলুল্লাহ্ ﷺ ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি আমার উপর প্রতিদিন সকালে দশবার ও সন্ধ্যায় দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করে, তার জন্য কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ নসীব হবে।" (মাজমাউয যাওয়ায়েদ)
(১৭ ) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم গুর্দা (খাওয়া) পছন্দ করতেন না, কারণ তা প্রস্রাবের (থলির) নিকটবর্তী হয়ে থাকে। (কানযুল উম্মাল, ৭ম খন্ড, ৪১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৮২১২ থেকে সংকলিত) (১৮) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم এর নিকট প্লীহা (তিনি খাওয়ার প্রতি) ঘৃণা ছিল কিন্তু সেটাকে হারাম সাব্যস্ত করেননি। (আততাহাফুস সা'দাতুল মুত্তাকীন, ৮ম খন্ড, ২৪৩ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত) (১৯) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم এর মােবারক আঙ্গুলগুলাে দিয়ে থালা চেটে খেতেন এবং ইরশাদ করতেন: “খাবারের শেষাংশে বরকত বেশী থাকে। (শুউবুল ঈমান, ৫ম খন্ড, ৮১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং* ৫৮৫৪) (২০) হুযুর পুরনূর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم এর নিকট তাজা ফলের মধ্যে তরমুজ ও আঙ্গুর বেশি পছন্দনীয় ছিল। (কানযুল উম্মাল, ৭ম খন্ড, ৪১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৮২০০ থেকে সংকলিত) (২১) তরমুজ, রুটি ও চিনি দিয়ে আহার করতেন। (আততাহাফুস্ সাদাতুল মুত্তাকীন, ৮ম খন্ড, ২৩৬ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত) (২২) অনেক সময় ভেজা খেজুরের সাথে (তরমুজ) খেতেন। (জামি তিরমিযী, ৩য় খন্ড, ৩৩২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৮৫০ থেকে সংকলিত) (২৩) উভয় হাতের দ্বারা সাহায্য নিতেন। একদা ভেজা খেজুর ডান হাতে খাচ্ছিলেন আর বীচি বাম হাতে রাখছিলেন। একটি ছাগল পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, রাসুল صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم সেটাকে বীচি সহকারে ইশারা করলেন: সেটা হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم এর বাম হাত থেকে বীচিগুলাে খেতে লাগল এবং তিনি صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم ডান হাতে খাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত হুযুর পুরনূর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم অবসর হলেন। তখন সেটাও চলে গেল। (আততাহাফুস সা'দাতুল মুত্তাকীন, ৮ম খন্ড, ২৩৭ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত) (২৪) আল্লাহর রাসুল صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم কাঁচা রসুন, কাঁচা পিয়াজ ও গিনদানা (এক প্রকার দুর্গন্ধযুক্ত সবজী) খেতেন না। (তারীখে বাগদাদ, ২য় খন্ড, ২৬২ পৃষ্ঠা থেকে সংকলিত) (২৫) হুযুর صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَليهِ وَسَلَّم কখনাে কোন খাদ্যকে মন্দ বলেন নি। যদি ভাল লাগতাে খেয়ে নিতেন আর পছন্দ না হলে তার মােবারক হাত থামিয়ে নিতেন। (সহীহ মুসলিম, ১১৪১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ২০৬৪ থেকে সংকলিত)
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب! صَلَّى اللّٰهُ تَعَالَىٰ عَلىٰ مُحَمَّد
রাসুলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি কিতাবে আমার উপর দরূদ শরীফ লিখে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার নাম তাতে থাকবে, ফিরিশতারা তার জন্য ক্ষমা চাইতে থাকবে।” (তাবারানী)।
_______________
কিতাব : ফয়যানে সুন্নাত
লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন