অসহায়ের আশ্রয়গার-
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি নবী করিম (ﷺ)’র খেদমতে এসে কিছু খাদ্য চাইল। রাসূল (ﷺ) তাকে অর্ধ ওসাক (একশ বিশ কিলোগ্রাম) যব দান করলেন।
ব্যক্তিটি তার পরিবার এবং মেহমানদেরকে নিয়ে যবগুলো খেতে রইলেন। অবশেষে একদিন ব্যক্তিটি যবগুুলো মেপে ফেলেন। তারপর সে নবী করিম (ﷺ)’র দরবারে উপস্থিত হলে, রাসূল (ﷺ) তাকে বললেন-
لَوْ لَمْ تَكِلْهُ لَأَكَلْتُمْ مِنْهُ، وَلَقَامَ لَكُمْ
-‘যদি তুমি যবগুলো ওজন না করতে, তবে তোমরা যবগুলো খেতেই থাকতে পারতে (অবিরত) এবং আজ পর্যন্ত যবগুুলো অবশিষ্ট থাকতো।’ ১৫৫
{১৫৫. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/১৭৮৪পৃ. হা/২২৮১, নবী করিম (ﷺ)’র মু‘জিযা অধ্যায়, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ৩/১৬৭১ পৃ. হা/৫৯৪১, ইমাম ইবনে আছির, জামেউল উসূল, ১১/৩৬৩ পৃ. হা/৮৯১৪, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, হা/৩১৮১২}
আক্বিদা
সাহাবায়ে কিরাম (رضي الله عنه) গণ প্রিয় নাবী (ﷺ) কে অসহায়ের আশ্রয় হিসেবে জানতেন এবং যদি কোন প্রয়োজন অথবা পেরেশানি ভোগ করতেন তবে রাসূলে কারিম (ﷺ)’র নিকট আরয করতেন। আর রাসূল (ﷺ) তাদের হাজাতপূর্ণ করতেন।
❏ কবি বলেন-
جو گدا ديكهو لئے جاتا ہے تودڑا نور كا
نور كى سركار سے كيا اس ميں توڑا نور كا
-‘নবীর দুয়ারে দেখ ভিখারী নূরের কিছু দান নিয়ে গেল,
একটু নিলেও শাহানশাহ থেকে কিবা-ই নিল!’
কাউকে ‘না’ না বলা-
❏ সায়্যিদুুনা হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন-
مَا سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا قَطُّ فَقَالَ لَا
-‘কখনো এরূপ হয়নি যে, নবী করিম (ﷺ)’র কাছে কোন কিছু চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি “না” বলেছেন।’ ১৫৬
{১৫৬. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/১৮০৫ পৃ: হা/২৩১১, রাসূল (ﷺ)’র দানশীলতা অধ্যায়, পরিচ্ছেদ:
بَابُ مَا سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا قَطُّ فَقَالَ لَا وَكَثْرَةُ عَطَائِهِ, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ৩/১৬১৭ পৃ. হা/৫৮০৫, পরিচ্ছেদ: بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم, সুনানে দারেমী, ১/২১১ পৃ. হা/৭১, মুসনাদে আহমদ, ২২/১৯৮ পৃ. হা/১৪২৯৪, মুসনাদে আবি ই‘য়ালা, হা/২০০১, ইমাম আবু নুয়াইম, হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৭/৮৯ পৃ., ইমাম বুখারী, আদাবুল মুফরাদ, হা/২৯৮, মুসনাদে আবি দাউদ তায়লসী, হা/১৮২৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩৭৭}
আক্বিদা
রাসূলে করিম (ﷺ)’র দরবার এমন এক মহান দরবার যার মধ্যে কোন কিছুর কমতি নেই এবং যে কোন ভিক্ষুক আসুক না কেন, তার থলে পূর্ণ করে নিয়ে যায়।
হুযূরে কারিম (ﷺ)’র দরবারের ভিক্ষুক হওয়া শিরিক নয়, বরং এটাই প্রকৃত ইসলাম। হযরত রাবিয়া (رضي الله عنه) এর উপর খুশে হয়ে রাসূলে আকরাম (ﷺ)’র পবিত্র ইরশাদ- سَلْ -চাও, এর পর তিনি (রাবিয়া) আরয করলেন-
أَسْأَلُكَ مُرَافَقَتَكَ فِي الْجَنَّةِ
-‘‘আমি আপনার কাছে চাই, যেন জান্নাতে আপনার সাথে থাকা।’’ ১৫৭
{১৫৭. ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ১/৩৫৩ পৃ. হা/৪৮৯, খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, ১/২৮১ পৃ. হা/৮৯৬, পরিচ্ছেদ: بَاب السُّجُود وفضله, ইমাম বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ২/৬৮৩ পৃ. হা/৪২৪২, সুনানে নাসাঈ, হা/১১৩৮ এবং আস-সুনানুল কোবরা, ১/৩৬৪ পৃ. হা/৭২৮, আবু নুয়াইম, হিলইয়াতুল আউলিয়া, ২/৩১ পৃ., সুনানে আবি দাউদ, ২/৩৫ পৃ. হা/১৩২০, তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ৫/৫৬ পৃ. হা/৪৫৭০, বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ৩/১৪৯ পৃ. হা/৬৫৫, ইমাম মুনযিরী, তারগীব ওয়াত তারহীব, ১/১৫২ পৃ. হা/৫৬৪, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ৭/৩০৬ পৃ. হা/১৯০০৬, ইবনে আছির, জামেউল উসূল, ৯/৩৯৬ পৃ. হা/৭০৫২, বায়হাকী, দাওয়াতুল কাবীর, ১/৫৩৯ পৃ. হা/৪১৯}
❏এজন্যই আ‘লা হযরত ইমামে আহলে সুন্নাত শাহ আহমাদ রেযা খাঁ বেরলভী (رضي الله عنه) বলেন-
واه كيا جود و كرم ہے شاه بطحا تيرا
نہيں سنتا ہى نهيں ما نگنے والا تيرا
-‘তুমি কত বড় দানবীর ও দয়াশীল হে আরবের বাদশাহ্
তুমি শ্রবণকারী নও, নও তুমি যাচনাকারী।’
____________________
আকাইদে সাহাবাহ
(সাহাবায়ে কিরামদের সাথে সুন্নি আক্বিদার সাদৃশ্য)
মূল:আল্লামা আবুল হামিদ মুহাম্মদ যিয়াউল্লাহ
ক্বাদেরী আশরাফী (رحمة الله)
বঙ্গানুবাদ: মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ আতিকুর রহমান
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন