উপকারি মনে করা এবং ফুঁ দেওয়া-

 ৫৪

উপকারি মনে করা এবং ফুঁ দেওয়া-



قَالَ أَبُو الزُّبَيْرِ: وَسَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُولُ: لَدَغَتْ رَجُلًا مِنَّا عَقْرَبٌ، وَنَحْنُ جُلُوسٌ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللهِ أَرْقِي؟ قَالَ: مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَنْ يَنْفَعَ أَخَاهُ فَلْيَفْعَلْ



হযরত আবূ যুবায়ের (رضي الله عنه) বলেন, আমি সায়্যিদুনা হযরত জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, একদিন রাসূল (ﷺ) এর সামনে আমাদের এক ব্যক্তিকে একটি বিচ্ছু দংশন করল। তখন এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি কি তার ঝাড়ফুঁক করব? তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন,



مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَنْ يَنْفَعَ أَخَاهُ فَلْيَفْعَلْ


-‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তার ভাইয়ের উপকার করতে সক্ষম হয়, সে যেন তা করে।’’  ১৫১


{১৫১. {ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ৪/১৭৭৬ পৃ. হা/২১৯৯, ইমাম তাহাভী, শরহে মা‘আনীল আছার, ৪/৪৭৬ পৃ. হা/৬৬৮০, ই.ফা.বা, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ৩/১৬৪৫ পৃ. হা/৫৮৭৭, ইমাম হাকেম, আল-মুসাস্তাদরাক, ৪/৪৬০ পৃ. হা/৮২৭৭, নাসাঈ, আস-সুনানুল কোবরা, ৭/৭৪ পৃ. হা/৭৪৯৮, মুসনাদে আবি ই‘য়ালা, হা/১৯১৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, ২/২৯০ পৃ. হা/৫৩২, ১৭/৩৭ পৃ. হা/৭৪}



আক্বিদা


আল্লাহর সৃষ্টি থেকে উপকার লাভ করা জায়েয। এবং এটাকে আল্লাহর সৃষ্টি জেনে উপকারী জানাও জায়েয। ১৫২



কেননা রাসূল (ﷺ) নিজেই ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার আপন ভাইয়ের উপকার চায় সে উপকার দেয়ার জন্য দম করাও জায়িয। এবং এটা রাসূূল (ﷺ)’র সুন্নাত।



{১৫২. আল্লাহ রাসূল (ﷺ) আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন যে, যখন কোন ব্যক্তি অসহায় অবস্থায় কোন স্থানে পড়ে যায় তার কোন সাহায্যকারী ব্যক্তি খুজেঁ না পায় তখন মহান অলীদের আহ্বান করার জন্য। তারা আল্লাহর বান্দাদের সাহায্যের জন্য গায়েবী ভাবে চলে আসেন।



এ বিষয়ে ইমাম তাবরানী (رحمة الله) একটি হাদীস সংকলন করেন-


حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ إِسْحَاقَ التُّسْتَرِيُّ، ثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يَحْيَى الصُّوفِيُّ، ثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَهْلٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عِيسَى، عَنْ زَيْدِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ عُتْبَةَ بْنِ غَزْوَانَ، عَنْ نَبِيِّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا أَضَلَّ أَحَدُكُمْ شَيْئًا أَوْ أَرَادَ أَحَدُكُمْ عَوْنًا وَهُوَ بِأَرْضٍ لَيْسَ بِهَا أَنِيسٌ، فَلْيَقُلْ: يَا عِبَادَ اللهِ أَغِيثُونِي، يَا عِبَادَ اللهِ أَغِيثُونِي، فَإِنَّ لِلَّهِ عِبَادًا لَا نَرَاهُمْ وَقَدْ جُرِّبَ ذَلِكَ


-“ইমাম তাবরানী যথাক্রমে..............আলে রাসূল (ﷺ) ইমাম জয়নাল আবেদীনের সন্তান যায়েদ বিন আলি (رحمة الله) হতে তিনি যাহাবী উতবাতা ইবনে গাযওয়ান (رضي الله عنه) হতে তিনি আল্লাহর নবী হতে তিনি বলেন, যখন কোন স্থানে তোমরা পথহারা হয়ে যাও অথবা কোন এমন অঞ্চলে অবস্থান হল যেখানে তোমাদের কোন সাহায্যকারী সাথী নেই। অতঃপর তোমরা বলবে: হে আল্লাহর মহান বান্দাগণ (ওলীরা) সাহায্য করুন! হে আল্লাহর নৈকট্য প্রাপ্ত বান্দাগণ সাহায্য করুন!......অতঃপর তোমার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।” (তাবরানী, মু’জামুল কাবীর, ১৭/১১৭ পৃ. হা/ ২৯০, শায়খ ইউসুফ নাবহানী, ফতহুল কাবীর, ১/৭৮ পৃ. হা/ ৭৩৪, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ৬/৭০৬ পৃ. হা/১৭৪৯৮, ইমাম হাইছামী, মাযমাউয যাওয়াইদ, ১০/১৩২ পৃ., মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৪/১৬৯৩ পৃ. হা/২৪৪১)



এই হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, যখন আমরা দুরাবস্থায় পড়বো তখন আল্লাহর নবী আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন আল্লাহর মহান বন্ধু (অলীদের) আহবান করার জন্য। এই হাদিসের সনদ প্রসঙ্গে আহলে হাদিসদের ইমাম নওয়াব সিদ্দিক হাসান খাঁন ভূপালি লিখেন- رجاله ثقات -“এই হাদিসের সমস্ত রাবী সিকাহ।” (নাযলুল আবরার, ৩৩৫ পৃষ্ঠা)



অনেকে এই সনদের সমস্ত রাবীই সিকাহ অনেকে আলে রাসুল (ﷺ) যায়েদ বিন আলীকে প্রশ্ন বিদ্ধ করতে চান, ইমাম যাহাবী তার জবাব তার জীবনীতে উল্লেখ করেছেন। (যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৫/৩৮৯ পৃ. ক্রমিক নং ১৭৮, তারিখুল ইসলাম, ৩/৪১৫ পৃ. ক্রমিক নং ১১৫) আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) এই হাদিসের সনদ প্রসঙ্গে লিখেন-


قَالَ بَعْضُ الْعُلَمَاءِ الثِّقَاتِ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ يَحْتَاجُ إِلَيْهِ الْمُسَافِرُونَ


-‘‘বিশ্বস্ত উলামাগণ বলেছেন, এই হাদিসটি ‘হাসান’ এবং মুসাফিরদের জন্য দলিল।’’ (মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৪/১৬৯৩ পৃ. হা/২৪৪১)



ইমাম বাযযার (رحمة الله) সংকলন করেন যে, সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত সূত্রে সেখানে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন,


عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ:....فَإِذَا أَصَابَ أَحَدَكُمْ عَرْجَةٌ بِأَرْضِ فَلَاةٍ فَلْيُنَادِ: أَعِينُوا عِبَادَ اللَّهِ


-“যখন ভূলে মসিবতে পড়ে যাবে, যখন কোন আল্লাহর বান্দা যমীনের কোন ভুল স্থানে চলে গেল এই দূরাবস্থায় সময় সে এ বলে আহবান করবে, হে আল্লাহর বান্দাহ (ওলীগণ) সাহায্য করুন।’’ (ইমাম বাযযার, আল-মুসনাদ, ১১/১৮১, হা/৪৯২২, ইমাম হাইছামি, মাযমাউত-যাওয়াহিদ, ১০/১৩২ পৃ. হা/১৭১০৪, ইমাম বায়হাকি, আদাব, ১/২৬৯ পৃ. হা/৬৫৭, এবং শুয়াবুল ঈমান, ১/৩২৫ পৃ. হা/১৬৫, ইমাম ইবনে আবি শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ, ৬/৯১ পৃ. হা/২৯৭২১, ইমাম নুরুদ্দীন হাইছামি, কাশফুল আশতার, ৪/৩৪ পৃ. হা/৩১২৯) হাফেজুল হাদিস ইমাম নুরুদ্দিন ইবনে হাজার হাইছামী (رحمة الله) এই সনদ সম্পর্কে বলেন- رَوَاهُ الْبَزَّارُ، وَرِجَالُهُ ثِقَاتٌ. -“ইমাম বাযযার (رحمة الله) হাদিসটি বর্ণনা করেছেন আর সনদের সমস্ত রাবী সিকাহ।” (ইমাম হাইছামী, মাযমাউদ-যাওয়াইদ, ১০/১৩২পৃ. হা/ ১৭১০৪) এজন্য আল্লামা ইমাম খাযেন আশ্শাফেয়ী (ওফাত.৭৪১হি.) আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদা প্রসঙ্গে এ স্থানে লিখেন-


فَإِنَّ اَلإِسْتِعَانَةُ بِالمَخْلُوْقِ فِي دَفْعِ الضَّرَرِ جَائِزة


-‘‘দুঃখ কষ্ট দূর করার জন্য আল্লাহর মাখলুকের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া বৈধ।’’ (খাযিন, লুবাবুত তাভিল ফি মা‘আনিত তানযিল, ২/৫৩০ পৃ.)}


____________________

আকাইদে সাহাবাহ

(সাহাবায়ে কিরামদের সাথে সুন্নি আক্বিদার সাদৃশ্য)

মূল:আল্লামা আবুল হামিদ মুহাম্মদ যিয়াউল্লাহ

ক্বাদেরী আশরাফী (رحمة الله)

বঙ্গানুবাদ: মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ আতিকুর রহমান

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন