আল-কুরআনে সম্মিলিত ভাবে অধিকহারে যিকির করার নির্দেশ
আল্লাহ্ তায়ালা এরশাদ করেছেন-
فَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ .
অর্থাৎ- তোমরা অধিক পরিমাণে (স্থান-কালের বিশেষীকরণ ব্যতিরেকেই) আল্লাহর যিকির কর। ফলে তোমরা অবশ্যই কৃতকার্যতা লাভ করবে।
অন্যত্র এরশাদ করেছেন-
الَّذِيْنَ يَذْكُرُونَ اللهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِهِمْ
অর্থাৎ- তারা দন্ডায়মান হয়ে, বসে এবং শূয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে... (আয়াত)। কাজেই উপরোক্ত আয়াতে বর্ণিত- فَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيرًا দ্বারা উচ্চরব বা নিম্নস্বর কিছুরই বিশেষীকরণ ব্যতিরেকেই সাধারণভাবে যিকিরের যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সে নির্দেশটাকে শুধু নীরবে যিকিরের বেলায় প্রযোজ্য বলে বিশেষিত করার জন্য অবশ্যই বিশেষ প্রমাণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। “উসুল ফিক্হ” বিদদের এ অভিমত অনস্বীকার্য ও অকাট্য। তাছাড়া, উক্ত আয়াতে فَاذْكُرُوا (তোমরা স্মরণ কর) শব্দটি হল ‘বহুবচন’। তাতে সবাই মিলিত হয়ে সম্মিলিত কন্ঠেই আল্লাহর যিকির করার নির্দেশ সহজে অনুমেয়। তদুপরি যিকির শব্দটি সাধারণ ও ব্যাপকার্থক এবং তা যে পাক কোরআনেরই নির্দেশ এতে সন্দেহেরও কোন অবকাশ নেই। আর উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সম্মিলিত সূরী ‘যিকির’ তখনই প্রযোজ্য হয়, যখন তা উচ্চস্বরে করা হয়।
কোরআন পাকে এরশাদ হয়েছে:
وَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَى تَنْفَعُ الْمُؤْمِنِينَ
অর্থাৎ-“তুমি ‘যিকির কর’! কেননা যিকির মু’মিনদের উপকার সাধন করে।”
এ ধরণের সময়- নির্বিশেষ অর্থবোধক আয়াত সমূহ দ্বারা সর্বদা যিকির করার অনুমতি প্রতিভাত হয়। তবে, যে সব স্থানে বা সময়ে বিশেষ দলিল দ্বারা যা নিষিদ্ধ করা হয়, তা না জায়েজ।
(বায়ানুল কোরআন, মৌলানা আশরাফ আলী থানভী)।
উপরোক্ত আয়াতসমূহের উদ্ধৃতি থেকে সুস্পষ্ট হয়ে উঠল যে, সর্বদা ও সর্বাবস্থায় ‘যিকির’ করার বৈধতা কোরআন-হাদিস সঞ্জাত দলিলাদি দ্বারাই প্রমাণিত; যদি না সে সময়ে বা অবস্থায় হয়, যাতে যিকির করা শরীয়ত মতে নিষিদ্ধ।
হযরত আল্লামা খাইরুদ্দীন রমলী (رحمة الله) ‘ফতোয়া খাইরিয়া’-২য় খণ্ডের ১৮১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন- واما رفع الصوت بالذكر فجائز অর্থাৎ সর্বদা উচ্চরবে যিকির করা জায়েজ; শরিয়ত মতে বৈধ।
শাহ আবদুল আজিজ মোহাদ্দেছ দেহলভী ফতোয়া আজিজি ১ম খণ্ডে লিখেছেন- কোরআন মজিদের আয়াত দ্বারা ‘সরব-যিকির’ প্রমাণিত হয় সুস্পষ্টরূপে। তাছাড়া, উচ্চরবে যিকির করলে অবসন্নতা বা অলসতা দূরীভূত হয় এবং মনে উৎসাহ সৃষ্টি হয়।
হযরত শরফুল আইম্মাহ্ মক্কী (رحمة الله) বলেছেন- هوتارك للاولى (قنية) অর্থাৎ- “উচ্চরবে যিকির করা একটা উত্তম কাজ বর্জন করা মাত্র।” সুতরাং এখানে ترك اولى শব্দটি দ্বারাই জানাজার সাথে পথ চলার সময় উচ্চরবে যিকির করার বৈধতা প্রমাণিত হচ্ছে; যদিও তা তাঁর মতে নিম্নস্বরে করাই অধিকতর উত্তম।
_____________
আল্-ক্বাওলুল হক্ব
(জানাজায় উচ্চরবে যিকির জায়েয প্রসঙ্গে)
রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল-কাদেরী (رحمة الله)
অনুবাদঃ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মন্নান (এম.এম.এম.এফ)
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন