কাঠুরিয়া কিভাবে ধনী হল?


একজন কাঠুরিয়া প্রতিদিন নদী পার হয়ে জঙ্গল থেকে কাঠ কেটে আনত এবং তা বিক্রি করে নিজের সন্তান-সন্ততির ভরণ পােষণ করত। যেহেতু নদীর উপর পুল তার ঘর থেকে অনেক দূরে ছিল তাই তার আসা যাওয়ায় বেশী সময় ব্যয় হয়ে যেত। এভাবে সে টাকা পয়সার দিক থেকে ধনী হতে পারছিল না। একদিন সে মসজিদের ভিতর এক মুবাল্লিগের বয়ানে بسم الله الر حمن الر حيم এর মহান ফযীলত সমূহ শুনলাে।  মুবাল্লিগের এ বয়ান তার মাথায় বসে গেল,بسم الله শরীফের বরকতে বড়। বড় সমস্যা সমাধান হতে পারে।


সুতরাং যখন জঙ্গলে যাওয়ার সময় হল তখন পুলের নিকট যাওয়ার পরিবর্তে সে بسم الله الر حمن الر حيم পাঠ করে নদীতে নেমে গেল আর চলতে চলতে সহজেই নদীর ওপারে জঙ্গলে পৌঁছে গেল। কাঠ কাটার পর সে পূনরায় এভাবে আমল করল। بسم الله الر حمن الر حيم এর বরকত সমূহ প্রকাশ পেতে লাগল আর কিছুদিনের মধ্যেই সে ধনী হয়ে গেল। (শামসুল ওয়াইযীন হতে সংকলিত)



প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এসব কিছু পরিপূর্ণ বিশ্বাসের ফল। যদি বিশ্বাসে কমতি হয়, তাহলে আশানুরূপ ফলাফল অর্জন হয় না। “পরিপূর্ণ বিশ্বাস" সম্পর্কে হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহম্মদ গাযালী (رحمة الله) সূরা ইউসুফ এর তাফসীরে অত্যন্ত শিক্ষণীয় একটি ঘটনা উদ্ধৃত করেন। তাহল- একবার বাগদাদ শরীফে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে



লােকদের নিকট ১টি দিরহামের আবেদন করল। প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস হযরত সায়্যিদুনা ইবনে সাম্মাক (رحمة الله) বললেন: তােমার কোন্ সূরাটি ভাল ভাবে মুখস্থ আছে? সে বলল: “সূরা ফাতিহা।” তিনি বললেন: “একবার পাঠ করে সেটার সাওয়াব আমার নিকট বিক্রি করে দাও। আমি এর পরিবর্তে আমার সমস্ত সম্পদ তােমাকে দিয়ে দেব! আবেদনকারী বলতে লাগল: হযরত! আমি দারিদ্রতার কারণে ১টি দিরহাম আবেদন করতে এসেছি। কুরআন বিক্রি করতে আসিনি। এটা বলে সেই আবেদনকারী কবরস্থানের দিকে চলে গেল। এদিকে বৃষ্টি আরম্ভ হয়। এমনকি শিলাবৃষ্টি হতে লাগল। সে তৎক্ষণাৎ একটি ছাদের নীচে আশ্রয় নেয়ার জন্য আসল।



সেখানে সবুজ পােষাক পরিহিত একজন আরােহী পূর্ব থেকেই উপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেন: “তুমি সূরা ফাতিহা বিক্রি করতে অস্বীকার করেছিলে?” সে বলল: “জ্বী হ্যাঁ।” তখন ঐ আরােহী তাকে দশ হাজার দিরহামের একটি থলে দিয়ে বলল: “এগুলাে খরচ কর। শেষ হয়ে গেলেان شاءالله عزوجلএই পরিমাণ আরাে দেবাে।" আবেদনকারী জিজ্ঞাসা করল আপনি কে? আরােহী বললেন: আমি তােমার বিশ্বাস। এটা বলে আরােহী ; চলে গেলেন।" (ইমাম গাযালী কৃত সূরা ইউসুফের তাফসীর হতে সংকলিত, ১৭, ১৮ পৃষ্ঠা)



এ থেকে ঐ সকল মানুষের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত যারা ভিক্ষা করার জন্য তিলাওয়াত করে, টাকা-পয়সা ও পানাহারের লােভে খতমে কুরআনের মাহফিল সমূহে এবং যিকির ও না'ত এর ইজতিমাতে অংশগ্রহণ করে। আর টাকা পাওয়ার আগ্রহে তারাবীতে খতমে কুরআনে পাক শুনিয়ে থাকেন। আল্লাহ্ আমাদেরকে ইখলাস ও বিশ্বাস এর অমূল্য সম্পদ দিয়ে  সৌভাগ্যশালী করুন।امين بجاه النبى الا مين صلى الله عليه وسلم


প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! সত্যিই ইখলাস অনেক বড় সম্পদ। যে অর্জন করতে পেরেছে, সে উভয় জাহানে সফলকাম। আশিকানে রাসূলদের সাথে মাদানী কাফেলা সমূহে সুন্নাতে ভরা সফর করুন।


আমলের মধ্যে ইখলাস সৃষ্টি করার “মাদানী চিন্তা ধারা" তৈরী ই হবে আর যখন আমলে ইখলাস সৃষ্টি হয়ে যাবে। তখন কাঙ্খিত বস্তু নিজেই এসে আবেদনকারীর নিকট ধরা দিবে।


জলওয়ে খুদ আ-য়ি তালিবে দীদার কি তরফ

_______________

কিতাব : ফয়যানে সুন্নাত

লেখক : আমীরে আহলে সুন্নাত মাওলানা মুহাম্মদ বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবীয়া (দা.)

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন