কুরআন নাযেলের উদযাপন হতে দলিল
আল-কুরআন হচ্ছে আল্লাহতা’লার বাণী, আর এটা তাঁরই একটি বৈশিষ্ট্য হিসেবে একত্ববাচক গুণের ধারক। এর নাযেল তথা প্রকাশ হওয়াটা মানবজাতির জন্যে এক বড় আশীর্বাদ; এরই হেদায়াতের আলো দ্বারা মনুষ্যকুলকে অজ্ঞতার অন্ধকার হতে পরিত্রাণ দেয়া হয়েছে এবং মান-মর্যাদাও মঞ্জুর করা হয়েছে। এই কুরআন আমাদের মাঝে নাযেল হয়েছে এক বিশেষ (তথা অনুপম) সিদ্ধপুরুষের (পুণ্যাত্মার) মাধ্যমে। এর নূর (জ্যোতি)-কে আমাদের কাছে নিয়ে এসেছেন এক (মহান) নূর (জ্যোতির্ময় সত্তা)। সর্বশক্তিমান আল্লাহতা’লা এরশাদ ফরমান:
“নিশ্চয় তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা ‘নূর’ (অর্থাৎ, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এসেছেন এবং স্পষ্ট কেতাব (মানে পবিত্র কুরআন)।” [আল-ক্বুরআন, ৫:১৫]
ক্বুরআন মজীদের জ্ঞান দ্বারা মানবকুলকে অশেষ, অফুরন্ত (খোদায়ী) রহমত-বরকত-নেয়ামতের গ্রহীতা করা হয়েছে। তাহলে সেই মহান সিদ্ধপুরুষের মাহাত্ম্য কী হতে পারে, যাঁর প্রতি ক্বুরআন নাযেল হয়েছিল? ওই পুণ্যাত্মার মক্বাম কী হতে পারে, যাঁর শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞান-প্রজ্ঞার বিশাল রত্নভাণ্ডার ও হেদায়াতের উৎসকে মানবজাতির প্রতি মঞ্জুর করা হয়েছিল; যাঁর অন্তরে আল্লাহতা’লার কালাম (ঐশীবাণী) অবতীর্ণ হয়েছিল, এবং যাঁর সুন্দরতম আচরণের মাধ্যমে তাঁকে এর (আল-ক্বুরআনের) শিক্ষক ঘোষণা করা হয়েছিল? তাঁর উচ্চমর্যাদা সম্পর্কে কে-ই বা উপলব্ধি করতে সক্ষম? সত্য বটে, ক্বুরআন মজীদ সামগ্রিকভাবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এরই মনোরম যিকর-তাযকেরা তথা স্মরণের একটি সংকলন। তাঁরই নিখুঁত চরিত্র, সর্বোত্তম গুণাবলী ও সৃষ্টিকুলের মাঝে অনন্য বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হওয়ার যিকর এটা। কবি ইক্ববাল কী সুন্দর লিখেছেন:
“ওহে ঈমানদার, উত্তম চরিত্র গঠনে তুমি পাঠ করো আল-ক্বুরআন,
এরই দর্পণে যাঁর চেহারা দেখো তাঁকে করো অন্বেষণ, দিয়ে মন-প্রাণ।” [ভাবানুবাদ]
অতএব, আমাদেরকে এই মহা আশীর্বাদের জন্যে কৃতজ্ঞ হতে হবে; এতে বিশ্বাসী হওয়ার এবং এর প্রতি মহব্বত রাখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অত্যাবশ্যক বিষয়গুলোর একটা হচ্ছে এটা। তবু এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে, যদি আমরা যাঁর মধ্যস্থতায় এই আশীর্বাদের গ্রহীতা হতে পেরেছি তাঁরই মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্ব মূল্যায়ন করতে সক্ষম না হই। এই কারণেই যে রাতে আল-ক্বুরআন অবতীর্ণ হয়েছিল, আল্লাহতা’লার চূড়ান্ত বিধি-বিধানের নীতি-নৈতিকতা ও শিক্ষাসমূহকে উদযাপন ও স্মরণ করার জন্যে আমরা সে রাতে মাহফিলের আয়োজন করে থাকি। এমতাবস্থায় ক্বুরআন মজীদ যে মহান ও পবিত্র সত্তার আশীর্বাদে আমরা লাভ করেছি, তাঁর বেলাদত তথা ধরাধামে শুভাগমনের রাতটি কেন একইভাবে উদযাপন করবো না? তাঁর আশীর্বাদধন্য বেলাদতের রাতটি উদযাপন করা উচিত, কেননা এর পক্ষে যুক্তি আরো জোরালো এবং এর গুরত্ব-ও বেশি।
__________________
মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর উদযাপন ও অনুমতি (১ম খণ্ড)
মূল: শায়খুল ইসলাম ড: মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরী
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন