ইদতিবা’: সর্বশেষ নবী (ﷺ)-এর সুন্নাহ

 ইদতিবা’: সর্বশেষ নবী (ﷺ)-এর সুন্নাহ

তাওয়াফ পালনকালে এহরাম-এর কাপড় ডান হাতের বগলের নিচে গোঁজা এবং এর উভয় প্রান্ত বাম কাঁধের ওপরে স্থাপন করাকেই ইদতিবা’ বলে। [ইবনে মানযূর রচিত ‘লিসা’ন আল-আরব’, ৮:২১৬]

আমরা ইতিপূর্বে ব্যাখ্যা করেছি যে, মহাসম্মানিত পয়গম্বর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) (শারীরিক) শক্তি ও সম্ভ্রম-জাগানোর এক প্রদর্শনী দিতে নিজ মহান সাহাবা (رضي الله عنه)-বৃন্দকে রামল পালন করতে আদেশ করেছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি তাওয়াফ পালনকালে এদতেবা’ পালনেরও নির্দেশ দেন, যার নজির তিনি-ই সর্বপ্রথমে স্থাপন করেন (এবং সাহাবা (رضي الله عنه)-বৃন্দকে এতে নেতৃত্ব দেন)। হজ্জ্বও উমরা’র উদ্দেশ্যে যেসব হাজ্বী সাহেব/সাহেবা সফর করেন, তাঁদের জন্যে এই প্রিয় সুন্নাহ’কে আঁকড়ে ধরা বাধ্যতামূলক। হাজ্বীবৃন্দ তাঁদের প্রিয়নবী (ﷺ)-এর অনুশীলিত এই রীতির স্মারক উদযাপন করে থাকেন।

১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তাঁর সাহাবা (رضي الله عنه)-বৃন্দ ‘জি’রা’না হতে উমরা পালন করতেন। তাঁরা কা’বা ঘরের চারদিকে রামল পালন করতেন এবং নিজেদের (এহরামের) কাপড় (ডান) হাতের বগলের নিচে গুঁজে অপর প্রান্ত বাম কাঁধের ওপরে ছেড়ে দিতেন। [আবূ দাউদ রচিত ‘আল-সুনান’: কিতাবুল মানা’সিক (হজ্বের রীতিনীতিসম্পর্কিত বই), ‘তাওয়াফ পালনকালে এদতেবা’ শীর্ষক অধ্যায়, ২:১৭৭ #১৮৮৪; আহমদ বিন হাম্বল প্রণীত ‘আল-মুসনাদ, ১:৩০৬; আল-তাবারা’নী কৃত ‘আল-মু’জাম আল-কবীর, ১২:৬২ #১২,৪৭৮; বায়হাক্বী লিখিত ‘আল-সুনান আল-কুবরা’, ৫:৭৯ #৯০৩৮-৯০৩৯; এবং আল-মাক্বদাসী রচিত ‘আল-আহা’দীস আল-মুখতা’রা, ১০:২০৭-২০৮ #২১৩-২১৫]

২. এয়া’লা বিন উমাইয়া (رضي الله عنه) বলেন, মহানবী (ﷺ) সবুজ (এহরামের) কাগড় পরা অবস্থায় এদতেবা’সহকারে তাওয়াফ পালন করেন। [আবূ দাউদ প্রণীত ‘আল-সুনান’: কিতাবুল মানা’সিক, ‘তাওয়াফ পালনকালে এদতেবা’ শীর্ষক অধ্যায়, ২:১৭৭ #১৮৮৩; আল-তিরমিযী কৃত ‘আল-জামে’ আল-সহীহ’: কিতাবুল হজ্জ্ব, ‘মহানবী (ﷺ)-এর এদতেবা’ সহকারে তাওয়াফ পালন সম্পর্কে যা যা বর্ণিত’ শীর্ষক অধ্যায়, ৩:২১৪ #৮৫৯; ইবনে মা’জাহ রচিত ‘আল-সুনান: কিতাবুল মানা’সিক, ‘এদতেবা’ শীর্ষক অধ্যায়, ২:৯৮৪ #২৯৫৪; আল-দা’রিমী লিখিত ‘আল-সুনান, ২:৬৫ #১৮৪৩; এবং আল-বায়হাক্বী প্রণীত ‘আল-সুনান আল-কুবরা’, ৫:৭৯ #৯০৩৫]

৩. আল-তিবী (رحمة الله) এদতেবা’র অন্তর্নিহিত প্রজ্ঞা ব্যাখ্যাকালে বলেন, এটা স্রেফ সাহসের নিদর্শনস্বরূপ করা হয়েছিল, ঠিক যেমনটি করা হয়েছিল তাওয়াফের সময় রামল পালনের সময়। [আযীম আবা’দী রচিত ‘আওন আল-মা’বূদ আলা’ সুনানে আবী দা’ঊদ’, ৫:২৩৬; এবং মুবা’রাকপূরী লিখিত ‘তোহফা আল-আহওয়াযী ফী শারহে জামে’ তিরমিযী’, ৩:৫০৬]

মক্কা মোয়াযযমায় কুফফার-বর্গের অস্তিত্বের সময়কাল হতে চৌদ্দ’শ বছর পরে আমাদের এই যুগেও প্রিয়নবী (ﷺ) ও তাঁর সাহাবা (رضي الله عنه)-বৃন্দের সুন্নাহ (রীতি)-এর অনুকরণে এদতেবা’ পালন করা আমাদের জন্যে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের অন্তর ও মস্তিষ্ক (আধ্যাত্মিক জ্ঞানের আলোয়) আলোকিত হয়, আর এতে আমরা ওই ধরনের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আজো অটল, অবিচল থাকার প্রস্তুতিমূলক শিক্ষা পাই।

__________________

মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর উদযাপন ও অনুমতি (১ম খণ্ড)

মূল: শায়খুল ইসলাম ড: মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরী

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন