রাসূল (ﷺ)-এর পবিত্র নামের চর্চা এবং ঐ নামের প্রতি দরূদ পড়া কোরআন ভিত্তিক বিধান

 

রাসূল (ﷺ)-এর পবিত্র নামের চর্চা এবং ঐ নামের প্রতি দরূদ পড়া কোরআন ভিত্তিক বিধান


আসুন এবার আমি পাঠকবৃন্দের অন্যজগতে ভ্রমণ করাব।

❏ আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেনঃ وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ অর্থাৎ- আমি আপনারই সন্তুষ্টিকল্পে আপনার প্রশংসাগীতিকে বহু ঊর্ধ্বে উত্তোলন করে দিয়েছি। এই আয়াতে পাকে হুজুর পাক (ﷺ)-এর প্রশংসা করা, উনার উপর দরূদ শরীফ পাঠ করা, তাঁর নামসমূহ উচ্চরবে ডাকা সবই অন্তর্ভূক্ত। তফসীরে ‘খাজায়েনুল এরফান’ কিতাবে একটা হাদীস উদ্ধৃত হয়েছে। এতে উলে­খ হয়েছে যে, রাসূলে পাক (ﷺ) উক্ত আয়াতের ভাবার্থ সম্পর্কে হযরত জিব্রাঈল আমিনের নিকট জিজ্ঞাসা করেছিলেন। উত্তরে তিনি বলেছিলেন- আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন, “আপনার গুণগান উন্নত করার অর্থ হল যখন যেখানেই আমার জিকির করা হবে সাথে সাথে আপনারও জিকির করা হবে।” আল্লাহ্ পাকের স্মরণের সাথে সাথে রাসূলে পাক (ﷺ)-এর নামও লওয়া হবে।



❏ ভারতের হযরত জিয়াউদ্দিন (رحمة الله) তার কবিতায় কতই না সুন্দর বলেছেনঃ


قلم هر گاه رقم نام خدا كرد


رقم نام محمد مصطفٰے كرد


যেথায় কলম খোদার নাম লিখিল


পাশেতে নূরনবীর নাম লিখিল।



❏ অপর এক কবি বলেছেন:


كلمه ونماز ميں تكبير واذان ميں


هے نام الهى سے ملا نام محمد



❏ হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) ফরমান উক্ত আয়াতের ভাবার্থ হল আজান, তাকবীর, তাশাহুদ, মিম্বরের উপর খুতবা পাঠ ইত্যাদিতে কেউ যদি আল্লাহ্ পাকের ইবাদত করে, প্রত্যেক ব্যাপারে আল্লাহকে স্বীকার করে আর আকায়ে দো’আলম (ﷺ)-এর স্বীকারোক্তি না করে তা হলে সব ইবাদত বন্দেগী অকেজো, নিস্ফল, সব মাঠে মারা যাবে। ইবাদতকারী কাফেরই থেকে যাবে।



❏ হযরত কাতাদাহ (رضي الله عنه) ফরমানঃ আল্লাহ্ তায়ালা নূরনবী (ﷺ)-এর জিকিরকে ইহকাল ও পরকালে সুশোভিত করেছেন, বুলন্দ করেছেন। প্রত্যেক খুতবা পাঠকারী প্রত্যেক তাশাহুদ পাঠকারী


 أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ


(আমি মা’বুদ হিসাবে এক আল্লাহকেই স্বীকার করতেছি) পড়ার সাথে সাথে


 أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ


(আমি মুহাম্মদ (ﷺ)-কে আল্লাহর রাসূল বলে স্বীকার করতেছি) এই বাক্যটাও পাঠ করে থাকেন।



মোদ্দাকথাঃ হযরত রাসূলে পাক (ﷺ)-এর পবিত্র নাম উচ্চস্বরে বলা, ঐ নামের গুঞ্জন ও চর্চা করা এবং ঐ নামে ডাকার অভ্যাস করা ঐ নামের প্রতি দরূদ পাঠ করা পবিত্র কুরআন ভিত্তিক বিধান বলে প্রমাণিত হল। যার অন্তরে রাসূলে খোদা (ﷺ)-এর প্রতি বিদ্রূপ ও অভক্তি আছে সে-ই একমাত্র উক্ত বিধিকে অস্বীকার করতে পারে। কিন্তু খোদার প্রতিশ্রুতি আছে যে, নিজের নামের সাথে রাসূলে পাক (ﷺ)-এর নাম পাকও কিয়ামত পর্যন্ত সর্বকালে সর্বস্থানে সমুন্নত, সমুজ্জ্বল ও প্রচলিত রাখবেন। যদিও বা মুনাফিক (বিশ্বাসঘাতক)রা ঠাট্টা ও অস্বীকার করে থাকে।



❏ আ’লা হযরত বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ মাওলানা শাহ আহমদ রেজা খান (رحمة الله) কতই না সুন্দর বলেছেনঃ


مٹ گئے مٹتے هيں مٹ جائنگے اعداتيرا


نه مٹا هے نه مٹيگا كبهى چرچاتيرا


নূরনবী (ﷺ)-এর নাম মোবারক এবং দরূদ শরীফ শুনে ঐ ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হয় আর মুখ মলিন করে, যে ব্যক্তি আড়ালে মুনাফিক এবং আত্মিক জগৎ হতে হতভাগ্য ও মন্দ কপাল। যিনি মুসলমান মুমিন তিনি কখনও নাখোশ বা অসন্তুষ্ট হতে পারেন না। হবেই বা কেমনে যে মধুমাখা নাম অন্তরকে দান করে অনাবিল আনন্দ, সে নামে পাওয়া যায় ঈমানের স্বাদ। যে নামের উপর বাকবিতন্ডা করা কখনও সম্ভব নয়। এটা তো পথভ্রষ্ট ‘খারেজী’দের লক্ষণ।

_________________

কিতাবঃ আযানের আগে দরূদ পড়া জায়েয

রচনায়ঃ মুহাম্মদ আজিজুল হক আল-কাদেরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)

অনুবাদঃ গোলাম মোহাম্মদ খান সিরাজী

 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan]


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন