কুস্তুনতুনিয়ার ব্যাপারে বুখারি শরীফের মূল হাদিস



✦ ইমাম বুখারি আলাইহির রহমত স্বীয় গ্রন্থে কিতাবুল জিহাদ অধ্যায়ে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন নিম্নরুপ:

عن ام حرام انها سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول اول جيش من امتى يغزون البحر قد اوجبوا- قالت ام حرام- قلت يا رسول الله انا فيهم؟ قال انت فيهم- ثم قال النبى صلى الله عليه وسلم اول جيش من امتى يغزون مدينة قيصر مغفورلهم فقلت انا فيهم يا رسول الله؟ قال لا-

অর্থ: উম্মে হারাম রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি নবী করিম (ﷺ) থেকে শুনেছেন: নবীজি বলেছেন- আমার উম্মতের প্রথম দল যারা সাগর পথে অভিযান করবে তাদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। তখন উম্মে হারাম রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি কি তাদের সাথে থাকব? রাসূল (ﷺ) বললেন: ‘তুমি তাদের সাথে থাকবে? অতঃপর রাসূল (ﷺ) বললেন: আমার উম্মতের প্রথম দল যারা কায়সারের শহরে অভিযান করবে তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত। তখন উম্মে হারাম রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি কি তাদের সাথে থাকব? নবীজি বললেন না’। (বুখারি হাদিস নং ২৯২৪)।




বুখারি শরীফের হাদিসের ভাবার্থ ও এজিদ প্রেমীদের জালিয়াতি
____________________
বুখারি শরীফের হাদিসের ভাবার্থ ও এজিদ প্রেমীদের জালিয়াতি


বিজ্ঞ পাঠক মহলের নিকট সবিনয় আবেদন আপনারা আমুনুল্লাহ সাহেবের স্বরচিত হাদিস ও বুখারিশরীফে মূল হাদিসটি পাশাপাশি রেখে একটি খেয়াল করুন দেখেবেন উভয়ের মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান।

আবার মোয়াজ্জেম সাহেবের বক্তব্যটি ও এর সাথে তুলনা করুন দেখবেন সেখানেও চতুরতার আশ্রয় নেয়া হয়েছে। তারা উভয়েই اول جيش من امتى অর্থাৎ (আমার উম্মতের প্রথম বাহিনী) কথাটি সুকৌশলে এড়িয়ে যাবার অপচেষ্টা করেছেন। প্রথমজন তো ইবারতই পরিবর্তন করে ফেলেছেন। আর দ্বিতীয়জন ইবারত ঠিক রেখে অনুবাদের মধ্যে ধোকা দিয়েছেন।


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: আমার উম্মতের প্রথম বাহিনী যারা সাগর পথে অভিযান করবে তাদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। আবার উম্মতের প্রথম বাহিনী যারা কায়সারের শহরে আক্রমণ করবে তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত।


অথচ তারা উভয়েই প্রথম বাহিনী বা প্রথম অভিযান কথাটি বাদ দিয়ে একজন বললেন: যারাই কুস্তুনতুনিয়ার যুদ্ধে অংশ নিবে তারাই ক্ষমাপ্রাপ্ত। অন্যজন বললেন যে ব্যক্তি সাগর পথে যে কোন যুদ্ধে অংশ নিবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে।

পাঠকদের বুঝার জন্য আমি একটি উদাহরণ পেশ করতে চাই, যদি একটি প্রতিযোগিতায় ঘোষণা করা হয় যে, উক্ত প্রতিযোগিতায় যারাই অংশগ্রহণ করবে তারা প্রত্যেকেই একশত টাকা করে পুরস্কার পাবে। তাহলে ভাল মন্দ ছোট-বড় সবাই এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। কিন্তু যদি বলা হয়, শুধুমাত্র যারা প্রথম স্থান অর্জন করবে তারাই একশত টাকা করে পুরস্কার পাবে। তাহলে, প্রথম স্থান অর্জনকারী ব্যতীত অন্যান্যরা কোন পুরস্কার পাবে না।

ঠিক তেমনিভাবে হাদিসের মর্মবাণী হল শুধুমাত্র প্রথম অভিযানে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিগণই উক্ত সুসংবাদের আওতায় পড়বেন। অন্যান্য সময় অংশগ্রহণকারী কোন ব্যক্তি এর আওতায় পড়বেন না।

এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে মূল হাদিসে রাসূলেপাক (ﷺ) পৃথক দুটি অভিযানের কথা উল্লেখ করেছেন, প্রথমটি হল সাগর পথে অভিযান, যেটাতে উম্মে হারাম রাদিয়াল্লাহু আনহা থাকবেন। আর দ্বিতীয়টি হল কায়সারের শহরে অভিযান, যেটাতে উম্মে হারাম রাদিয়াল্লাহু আনহা থাকবেন না। এবং ইতিহাস ও তাই স্বাক্ষী দেয় যে, এই দুটি অভিযান ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সংঘটিত হয়েছিল।

অথচ উক্ত সালাফিগণ হাদিসের উভয় অংশটিকে একত্রিত করে গোজামিল সৃষ্টি করেছেন। তাই আমি পৃথকভাবে আলোচনা করব যে, সাগর পথে প্রথম অভিযান কখন হয়েছিল এবং কায়সারের শহরে কখন প্রথম অভিযান হয়েছিল।


_______________

কিতাব: কুস্তুনতুনিয়ার যুদ্ধে এজিদের অন্তর্ভুক্তি
লেখকঃ হাফিজ মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ ইকরাম উদ্দিন
সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন