মসজিদ ব্যবহার সম্পর্কে সতর্কতা


মসজিদ ব্যবহার সম্পর্কে সতর্কতা


মসজিদ হচ্ছে সেজদার স্থান, নামাজ, জিকির, তেলাওয়াত, ইতিকাফ প্রভৃতি
ইবাদতের স্থান। সুতরাং মসজিদকে এসব ইবাদতের জন্যই নির্দিষ্ট রাখা জরুরী কর্তব্য। আর এজন্য কুরআনুল কারীম, হাদিস শরীফ ও নির্ভরযােগ্য ফতুয়ার কিতাবে নির্দেশ এসেছে। সেসব দলিলের আলােকে ৬ উসুলী তাবলীগ জামাতের কর্মীদের মসজিদে রাত্রিতে অথবা দিনে ঘুমানাে তথা মসজিদকে বিশ্রামাগার বানানাে অবৈধ কাজ। একটি পার্টির দলীয় কর্মসূচী পালনে ব্যস্ত এসব লােকের মসজিদে রাতে বা দিনে আরাম করা, ঘুমানাে বা বিশ্রাম করা মােটেও শরিয়ত সম্মত নয়। ইতিকাফের নিয়তে মৌখিক দাবী মসজিদ সমূহকে আবাসিক হােটেল বানানাে সম্পূর্ণ অবৈধ কাজ।
মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার ব্যাপারে আল্লাহ তা'য়ালার নির্দেশ রয়েছে। যেমন আল্লাহ
তা'য়ালা এরশাদ করেন,
وطهر بيتي للطايفين والقائمين والركع السجود
অর্থাৎ “আমার গৃহকে পবিত্র রাখ তওয়াফকারীদের জন্যে, নামাযে দণ্ডায়মানদের জন্যে এবং রুকু সেজদাকারীদের জন্যে (সূরা হজ্জ-২৬)। অন্যত্র আরও এরশাদ করেন-
وعهدنا إلى إبراهيم وإسماعيل أن طهرا بيتي للطابقين والعاكفين والرکع السجود
অর্থাৎ “আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তােমরা আমার গৃহকে
তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু সেজদাকারীদের জন্যে পবিত্র রাখ।” ।
(সূরা বাকারা-১২৫)
উপরােক্ত আয়াত শরীফদ্বয়ের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ইবাদতের ঘরকে নামাজ,ইতিকাফ তথা ইবাদতের জন্য পবিত্র রাখতে হবে। কেননা প্রত্যেকটি মসজিদ হলাে খানায়ে কাবার প্রতিচ্ছবি। আবাসিক হােটেল বানিয়ে তার পবিত্রতা নষ্ট করা উচিত নয়।
তাবলীগ জামাতের লােকেরা বলে থাকে আমরা যখন মসজিদে প্রবেশ করি তখন
সুন্নত ইতিকাফের নিয়ত করি। প্রকৃত পক্ষে তাদের নিয়ত কি সুন্নত ইতিকাফের জন্য?
৬ উসুলী তাবলীগ প্রচারের জন্য? আল্লাহ সর্বশক্তিমান, তিনি সব কিছুই জানেন।
আল্লাহকে ধোঁকা দেওয়া যাবে না। ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করলে আসর নামাজের পরে বা জোহর নামাজের পরে দাওয়াত দেওয়ার জন্য বের হন কেন? আবার বাজার করতে যান কেন? বাড়ীতে খোজ খবর নেওয়ার জন্য বাজারে মােবাইল করতে যান কেন? ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে ঢুকেন, কি ইতিকাফ বহির্ভূত কাজও করেন, তাহলে এটা কি ইতিকাফ, না আল্লাহকে ধোঁকা দেয়া? একটা গল্প মনে পড়ে গেল।
বাবা ও ছেলে নৌকা চালায়। একদিন নৌকা নিয়ে মাঝ নদীতে আছে। এমন সময় কাল বৈশাখী ঝড় দেখা দিল। বাবা বললাে হে আল্লাহ! যদি ঝড় না আসে তাহলে একটি মহিষ দান করবাে। সত্যি সত্যিই ঝড় আসলাে না। এখন ছেলে বাবাকে ডেকে বলে, বাবা! আমারা তাে গরীব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। মহিষ কেনার টাকা পায় কোথায়? তখন বাবা বললাে আরে বােকা! বুঝলি না। আল্লাহ আমাদের ভয় দেখালাে। আর আমি আল্লাহকে লােভ দেখালাম (নাউযুবিল্লাহ)। তাবলীগ ওয়ালাদের ইতিকাফ হলাে এই রকম অর্থাৎ ধোকা। যেহেতু ইতিকাফ ছাড়া মসজিদে অবস্থান করা বা রাত কাটানাে যাবে না। তাই মসজিদে প্রবেশের সময় ইতিকাফের নিয়ত করে প্রবেশ করে, কিন্তু প্রবেশ করার পর শুরু হয় ওহাবী চক্রান্ত। আরও একটি কথা হলাে, সুন্নত ইতিকাফ কখনও দলবদ্ধভাবে হয় না। কিন্তু তাবলীগিরা দলবদ্ধভাবে ইতিকাফ করছে। অনেক সময় রাতে মসজিদে স্বপ্নদোষ হয়ে যায়, ফলে মসজিদের পবিত্রতাও নষ্ট হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, সাহাবায়ে কেরামগণ ইতিকাফ করতেন নিজের এলাকার মসজিদে। বাড়ী-ঘর রেখে দূর দূরান্তে গিয়ে অন্য এলাকার মসজিদে ইতিকাফ করতেন না। ইলিয়াছি তাবলীগী ভাইয়েরা যে এক জেলা হতে অন্য জেলার মসজিদে ইতিকাফ করতে যান কোন দলিলের প্রেক্ষিতে? নিজের এলাকা বাদ দিয়ে অন্য এলাকার মসজিদে ইতিকাফ করা কি ইসলাম সম্মত? না এটাও ইলিয়াছ মেওয়াতীর স্বপ্নে পাওয়া তাবিজ?
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, রােজা ছাড়া ইতিকাফ হয় না। বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ মুয়াত্তা শরীফের কিতাবুল ইতিকাফ অধ্যায়ে বর্ণিত আছে, “মালেক (র) বলেন তার নিকট খবর পৌঁছিয়াছে যে, কাসিম ইবনে মুহাম্মদ (র) ও আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) এর মাওলা নাফি’ (র) বলিয়াছেনঃ ইতিকাফ জায়েজ নহে রােজা ব্যতিত, কারণ কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-
وكلوا واشروا حتى يتبين لكم الخيط الأبيض من الخيط الأسود من الفجر ثم أتموا
الصيام إلى الليل ولا ثباشروهن وانتم عاكفون في المساجد
অর্থাৎ “আর তােমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণ রেখা হতে উষার শুভ্র রেখা।
স্পষ্টরূপে তােমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। তােমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তাদের সাথে সঙ্গত হইও না'।
(সূরা বাকারা-১৮৭)।
আল্লাহ তায়ালা ইতকিাফের উল্লেখ করেছেন রােজার সাথে। তাই  রােজা ব্যতিত ইতিকাফ হয় না।" (মুয়াত্তা শরীফ, ১ম খন্ড, ইতিকাফ অধ্যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)।
আরও একটি বিষয় হচ্ছে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁচা পিয়াজ খেয়ে মসজিদের নিকটে যেতে নিষেধ করেছেন।কেননা কাচা পেয়াজে দুর্গন্ধ আছে। তাবলীগ জামাতের লােকেরা মসজিদের পাশেই রান্না করেন এবং সেখানেই পিয়াজ কাঁটে। ফলে এর দুর্গন্ধ দ্বারা অন্য মুসল্লিদের কষ্ট হয়, যা কিনা রাসূল সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হুকুমের পরিপন্থী। অনেক তাবলীগ জামাতের লােকদেরকে দেখা যায়, মসজিদের ভেতরে বসে কাচা পিয়াজ দিয়ে খিচুরী খাচ্ছে। যেখানে নবীজি কাঁচা খেয়ে মসজিদের নিকটে যেতে নিষেধ করেছেন, সেখানে তারা মসজিদের ভেতরেই কাঁচা পিয়াজ খাচ্ছে। যারা নবীর হাদিসকে অমান্য করে তারা কিভাবে দ্বীনের খেদমত করে তা আমার জ্ঞানে ধরে না।
তাবলীগ জামাতিগণ বুখারী শরীফের দুটি হাদিস দিয়ে মসজিদ ব্যবহার করতে চায়। তাই সে সম্পর্কে কিছু আলােকপাত করা যাক। বুখারী শরীফে মসজিদে পুরুষদের ঘুমানাে নামে একটি পরিচ্ছেদ আছে। তাতে মাত্র দুটি হাদিস শরীফ উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বুখারী শরীফ ১ম খন্ড, কিতাবুস সালাত বা সালাত অধ্যায়ের ২৯৯ নং পরিচ্ছেদ যার নাম 'বাবু নাউমির রিজালি ফিল মাসজিদ'।
অর্থাৎ 'পুরুষদের মসজিদে ঘুমানাে'। ২৯৯ নং পরিচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়, “আবু কিলাবা (র) আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণনা করেনঃ উকল গােত্রের কতিপয় ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলেন এবং সুফফায় অবস্থান করলেন। আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর (রা.) বলেন, সুফফাবাসিগণ ছিলেন দরিদ্র।" এ কথা বলেই দুটি হাদিস শরীফ পেশ করা হয়। হাদিস শরীফ নং ৪২৭ ও ৪২৮।
 উল্লেখ্য যে, মসজিদে নববীর বারান্দায় যারা অবস্থান করতেন তাদেরকে আসহাবে সুফফা বা বারান্দার অধিবাসী বলা হত। তারা খুবই গরীব ছিলেন এবং নবীজির পক্ষ থেকে কোন খাদ্য আসলে তা গ্রহণ করতেন। নবীজি এদেরকে মেহমান বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই দলিল দিয়ে তাবলীগী ভাইয়েরা মসজিদ ব্যবহার করতে চায়, যা বােকামী ছাড়া কিছু নয়।
۱۲۷] حدثنا من قال حدثنا يثيى عن عبيد الله قال حدث نافع قال أخبرني عبد الله بن مراثة
.
گان بنام وهو شاب أعزب لا أمل له في مسجد النبي
৪২৭ নং হাদিসঃ আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি মসজিদে নববীতে ঘুমাতেন। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। তার কোন পরিবার-পরিজন ছিল না।'
(বুখারী শরীফ, ১ম খন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)।
পাঠকগণ! একটু গভীরভাবে চিন্তা করুন। ২৯৯ নং পরিচ্ছেদে বলা হল সুফফাবাসিগণ ছিলেন দরিদ্র। আর আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) মসজিদে ঘুমাতেন। তার কোন পরিবার-পরিজন ছিল না অর্থাৎ তিনি গরীব ছিলেন। অতএব উক্ত হাদিস দিয়ে তাবলীগ জামাতিগণ কোনক্রমেই মসজিদে থাকতে পারবে না। কেননা আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) যে প্রেক্ষাপটে মসজিদে থাকতেন তা তাবলীগ জামাতিগণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়। উক্ত হাদিস শরীফ হতে বুঝা যায় যে, কোন গরীব মুসাফির যদি কোন স্থানে থাকার জায়গা না পায় তবে সে কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে মসজিদে থাকতে পারে। তাই তাবলীগ জামাতীগণ কোনভাবেই উক্ত হাদিস শরীফ দিয়ে মসজিদ ব্যবহার করতে পারে না। এবার দ্বিতীয় হাদিস অর্থাৎ ৪২৮ নং হাদিস শরীফের দিকে লক্ষ্য করি।

۲۸، حدثنا قتيبة بن سعيد قال حدثنا عبد العزيز بن أبي حازم عن أبي حازم عن سهل بن سعد قال
جاء رسول الله & بيت فاطمة فلم يجد عليا في البيت قال ابن ابن عمك قالت كان بيني وبينه شئ
تقاضيني خرج فلم يقل عندي فقال رسول الله في لاثان أنظر أين هو ، فجاء فقال يا رسول الله نو
وهو مضطجع قد سقط رداؤه عن شته واصابة ثراب فجعل
في المسجد راقد فجاء رسول الله
يمسحة عنه ويقول تم ابا تراب ، ثم أبا تراب .
رسول الله
৪২৮ নং হাদিসঃ সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, " তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমা (রা.) এর ঘরে এলেন, কিন্ত আলী (রা.) কে ঘরে পেলেন না। তিনি ফাতিমা (রা.) কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আমার চাচাত ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তার মধ্যে কিছু ঘটেছে। তিনি আমার সাথে রাগ করে বাইরে চলে গেছেন। আমার কাছে দুপুরের বিশ্রামও করেননি। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে বললেনঃ দেখ তাে সে কোথায়? সে ব্যক্তি খুঁজে এসে বললােঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি মসজিদে শুয়ে আছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন, তখন আলী (রা.) কাত হয়ে শুয়ে ছিলেন। তার শরীরের এক পাশের চাদর পড়ে গিয়েছে এবং তাঁর শরীরে মাটি লেগেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার শরীরের মাটি ঝেড়ে দিতে দিতে বললেনঃ উঠ, হে আবু তুরাব! উঠ, হে আবু তুরাব!”
 (বুখারী শরীফ, ১ম খন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন) !
পাঠকগণ! একটু গভীরভাবে চিন্তা করুন। এখানে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী (রা.) এর মসজিদ শয়ন করাকে পছন্দ করেননি, তাই তাকে উঠ, হে আবু তুরাব! উঠ, হে আবু তুরাব!" বলে মসজিদ থেকে নিয়ে আসলেন।
কেননা মসজিদ বিশ্রামের স্থান নয়, বিশ্রামের স্থান হলাে বাড়ী। আর হযরত আলী (রা.) বাড়ী আছে, তিনি মসজিদে কেন ঘুমাবেন? তাই নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মসজিদে ঘুমানাে পছন্দ করলেন না বলে তাকে মসজিদ থেকে নিয়ে আসলেন। অতএব এ হাদীস দিয়েও তাবলীগ জামাতীগণ মসজিদকে থাকার হােটেল বানাতে পারবে না।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, “তােমরা মসজিদকে ঘুমাবার স্থান বানাইও না।” (উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ৫ম খন্ড, কিতাবুত তাহাজ্জদ, বাবু ফজলে কিয়ামুল লাইল, ৪৪৬ পৃষ্ঠা)।
যেখানে মসজিদে ঘুমানাে স্পষ্ট নিষেধ রয়েছে, সেখানে অন্যান্য হাদিসগুলির মর্মার্থ এবং প্রেক্ষাপট অবশ্যই বিশ্লেষণ করতে হবে।
বিশ্লেষণ না করে যেন-তেনভাবে মসজিদ ব্যবহার করা যাবে না। কেননা ইসলামের
ইতিহাসে এমন কোন প্রমান নেই যে, সাহাবায়ে কেরাম ইসলামের দাওয়াত নিয়ে কোন মসজিদে অবস্থান করেছেন। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন রাষ্ট্রে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন চিঠির মাধ্যমে এবং সরাসরি রাষ্ট্র প্রধানের নিকট। সেখানে সাহাবায়ে কেরাম নবীজির চিঠি নিয়ে সরাসরি রাষ্ট্র প্রধানের নিকট গেছেন, কোন মসজিদ বা ধর্ম উপাসনালয়ে অবস্থান করেননি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় রােম সম্রাট হিরাক্লিয়াস এর নিকট নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলামের
দাওয়াত দিয়েছিলেন চিঠির মাধ্যমে। অতএব তাবলীগ জামাতের মসজিদ দখল কুরআন হাদিস বিরােধী। যদি কেহ হাদিস দিয়ে মসজিদ দখল প্রমাণ করতে চায়, তবে তা হবে হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা। মানুষ যখন কোন বিপদে পড়ে, তখন সে বিপদ থেকে বাঁচার জন্য কোন উপায় খুঁজতে থাকে। সেরূপভাবে তাবলীগ জামাতিগণ মসজিদ দখলের জন্য বিভিন্ন হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে।
হাদীস শরীফ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, দরিদ্র ও সামর্থ্যহীন মুসাফির মসজিদে রাতে কিছু সময় বা কয়েকদিন থেকেছেন। হাদীস শরীফ হতে জানা যায় যে, সাহাবীগণ যদি কোন কারণবশতঃ মসজিদে ঘুমাতেন তবে মসজিদে নববী ব্যতিত অন্য কোন মসজিদে তার প্রমাণ পাওয়া যায় না। তারা মসজিদকে কখনই আবাসিক হােটেলে পরিণত করেননি। এ ব্যাপারে ফতােয়া আলমগীরীতে উল্লেখ আছে, “মসজিদে না ঘুমানই উত্তম।” নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন মসজিদ
ব্যতিরেকে অন্য কোন মসজিদে সফর করতে নিষেধ করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
عن أبي هريرة رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه و سلم قال لا تشد الرحال
إلا إلى ثلاثة مساجد المسجد الحرام ومسجد الرسول صلى الله عليه و سلم ومسجد
الأقصى
অর্থাৎ ‘তিন মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে সফর করা যাবে না। মসজিদে
হারাম (মক্কা), আমার মসজিদ (মসজিদে নববী) এবং মসজিদে আল আকসা (বায়তুল
মুকাদ্দাস)” (সূত্রঃ বুখারী শরীফ, হাদিস নং-
১১২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মুসলিম
শরীফ, হাদিস নং-৩৪৫০)।
এ বক্তব্যটির অনুকূলে মুসনাদে আহমদে নিম্নোক্ত বর্ণনাটি সমর্থন হিসেবে পাওয়া যায়।
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا ينبغي للمطي أن تشد رحاله إلى مسجد يبتغی
فيه الصلاة غير المسجد الحرام والمسجد الأقصى ومسجدي هذا
অর্থাৎ হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, “মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও মসজিদে নববী ব্যতিত অন্য কোন মসজিদে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে সফর করা কোন মুসাফিরের জন্য সঙ্গত নয়। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১১৬০৯)।
কিন্তু তাবলীগী ভাইয়েরা নবীজির হাদিসকে অমান্য করে ইসলামের খেদমত করার অজুহাতে বিভিন্ন মসজিদে সফর করে বেড়ায়, যা ইসলামের পরিপন্থী। এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটিকে সচেতন হতে হবে, যেন ইলিয়াছি বাহিনী মসজিদ ব্যবহার ও মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট করতে না পারে। অবশ্য কিছু কিছু সচেতন মসজিদ কমিটি
তাবলীগ জামাত ভ্রান্ত আকিদার কারণে মসজিদে ঢুকতেই দেয় না।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন