নবীজির মু'জিযা
(৯৪)
---------------
বৃক্ষ ভাগ হয়ে চলে আসা
আরবের বিখ্যাত শক্তিধর পলােয়ান রুকানাকে নবী করিম (ﷺ) তিন তিনবার পরাজিত করে তিনটি বকরী গ্রহণের পর বললেন, হে রুকানা! তােমার বকরীর কোন প্রয়ােজন নেই আমার। বরং আমি তােমাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি, তুমি ইসলাম গ্রহণ কর। কেননা তুমি দোযখে যাও তা আমি চাইনা। যদি তুমি ইসলাম গ্রহণ কর তবে নিরাপদে থাকবে। রুকানা বলল, যতক্ষন না আপনি কোন নিদর্শন দেখাবেন ততক্ষন আমি ইসলাম গ্রহণ করবাে না। রাসূল (ﷺ) বললেন, তােমার উপর আমি আল্লাহ তায়ালাকে সাক্ষী করছি যে, যদি আল্লাহ আমার দোয়ায় কোন নিদর্শন তােমাকে দেখায় তবে আমি তােমাকে যেদিকে আহ্বান করি তুমি তা কবুল করবে? সে বলল, হ্যাঁ, অবশ্যই কবুল করবাে। তাঁর নিকটেই শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট তরু-তাজা একটি বৃক্ষ ছিল। তিনি ঐ বৃক্ষের দিকে ইশারা করেন এবং বললেন, আল্লাহর হুকুমে আমার সামনে চলে এসাে। সাথে সাথে বৃক্ষ দু'ভাগে ভাগ হয়ে অর্ধেক স্বীয় শাখা-প্রশাখা ও তাজা পাতাসহ তাঁর ও রুকানার সামনে এসে দণ্ডায়মান। এ দৃশ্য দেখে সে রাসূল (ﷺ) কে বলল, আপনি তাে আমাকে মস্তবড় আযাব কাণ্ড দেখালেন। সে বলল, আপনি আবার হুকুম করুন যেন বৃক্ষ আপন জায়গায় চলে যায়। তিনি বললেন, হে রুকানা! তােমার উপর আমি আল্লাহ তায়ালাকে সাক্ষী করছি, যদি আমি তাঁর কাছে দোয়া করি এই বৃক্ষ চলে যেতে এবং বৃক্ষ যদি আপন স্থানে চলে যায় তবে কি তুমি তােমাকে যে দিকে আহ্বান করি তুমি কবুল করবে? উত্তরে সে বলল, অবশ্যই কবুল করবাে। এই কথা বলার সাথে সাথে বৃক্ষ স্বীয় শাখা ও পাতাসহ চলে গিয়ে স্বীয় অপর অংশের সাথে মিলে গেল। তারপর তিনি তাকে বললেন, মুসলমান হয়ে যাও তবে নিরাপদে থাকবে।
রুকানা বলল, এত বড় আশ্চার্য ঘটনা দেখে ইসলাম গ্রহণ করতে আর কোন বাঁধা রইলনা তবে আমি ভাবনায় পড়েছি যে, শহরের নারীরা বলবে যে, আমি মুহাম্মদ (ﷺ)’র ভয়ে ইসলাম গ্রহণ করছি। শহরের নারী-পুরুষ সবাই জানে যে, এই পর্যন্ত কেউ আমার বাহু মাটিতে লাগাতে পারেনি এবং জীবনে কোন দিন আমার মনে কারাে ভীতি সঞ্চার করেনি। সুতরাং আপনি শর্ত মােতাবেক বকরী নিয়ে নিন। আমি ইসলাম গ্রহণ করবাে না। তখন রাসূল (ﷺ) বললেন, তুমি ইসলাম গ্রহণ না করলে তােমার বকরীর আমার কোন প্রয়ােজন নেই।১৭৮
১৭৮. সুয়ূতী, জালাল উদ্দিন সুয়ূতী (رحمة الله) (৯১১হি.), আল খাসায়েসুল কুবরা, আরবী বৈরুত, খন্ড:১ম পৃ:২১৭ ও আবু নঈম ইস্পাহানী (رحمة الله) (৪৩০হি.), দালায়েলুন নবুয়ত, উর্দু, দিল্লী, পৃ:৩৫৫)।
+++++++
বিষয় ভিত্তিক মুজিযাতুর রাসূল (ﷺ)
হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ওসমান গণি
আরবি প্রভাষক,জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া,ষােলশহর, চট্টগ্রাম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন