আল্লাহর ওলীদেরকে ডাকা



শাহ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভী (رحمة الله)’র আকিদা:

শাহ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভী (رحمة الله), মাওয়াহেবে ল্লাদুন্নিয়ার মুসান্নিফ, বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা কাস্তাল্লানী (رحمة الله) এ আল্লামা শামসুদ্দিন (رحمة الله)’র উস্তাদ শায়খ আহমদ যুরওয়াক (رحمة الله)’র একটি বানী নকল করে মসলকে হক্ব তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের যথার্থতা প্রমাণ করে বলেন-

اَنَا الْمُرِيْدِىْ جَامِعٌ لِشَتَاتِه اِذَا مَاسَطَا جَوْرُ الزَّمَانِ بِنُكْبَةِ

فَاِنْ كُنْتَ فِى ضَيْقِ وَكَرْبٍ وَّ وَحْشَةٍ فَنَادِبِيَازُرُّوْقُ اٰتِ بِسُرْعَةٍ

-‘‘আমি আমার মুরিদের পেরেশানীকে সান্তনা দানকারী, যুগের দুর্দশা যখন তার উপর হামলা করবে। যখন তুমি সংকীর্ণতা এবং একাকীত্বতা অনুভব করবে তখন তুমি “ইয়া যারুকু” বলে ডাক দিবে, তৎক্ষণাৎ আমি তোমার কাছে আসবা।’’ (বুস্তানুল মুহাদ্দেসীন, ফার্সী)

প্রিয় পাঠকবৃন্দ! হানাফীদের নির্ভরযোগ্য এবং ফিক্হের প্রসিদ্ধ কিতাব শামী শরীফে ও অলী আল্লাহদের ডাকা এবং তাঁদের কাছে প্রার্থনা করার হুকুম আছে। দেওবন্দীরা নিজেদের হানাফী বলে বলে সাদা সিধে মুসলমানদেরকে ধোঁকা দেয়ার জন্য রাত দিন ব্যস্ত। বিভিন্ন মসজিদ দখল করার চিন্তায় ব্যস্ত। পাকিস্তানের বিভিন্ন শহর, গ্রাম, মহল্লার মসজিদে মসজিদে ফেতনা ছড়ানোর  কাজেই তারা নিয়োজিত। অথচ উপর্যুক্ত কুরআনে পাক, সুন্নাহ এবং নির্ভরযোগ্য মুহাদ্দিসিনে কেরামগণের কিতাব হতে দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট যে, দেওবন্দীদের আকিদা আহলে সুন্নতের আকিদা হতে অনেক দূরে। তারা না আহলে সুন্নাত ওয়াল জাম‘আত না হানাফী। বরং অলী আল্লাহদেরকে দূর থেকে আহ্বান কারী এবং তাদের থেকে সাহায্য প্রার্থনাকারী এবং আল্লাহর হুকুমে কোন কাজ সংঘটিত হয়। এ বিষয়ে অবগতকারীরাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জাম‘আত। ১২৩

টিকা━

১২৩.
❏ তবে একটি বর্ণনা রয়েছে-

إِذَا تَحَيَّرْتُمْ فِي الْأُمُورِ فَاسْتَعِينُوا بِأَهْلِ الْقُبُورِ

-“যখন তোমরা কোন ব্যাপারে পেরেশান হও, তখন কবরবাসীদের (ওলীদের) নিকট সাহায্য প্রার্থনা করো।” (মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৪/১২৫৯ পৃ. হা/১৭৬৯)


❏ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্যতম ইমাম, আল্লামা খাযেন আশ্শাফেয়ী (ওফাত.৭৪১হি.) এ বিষয়ে বলেন-

فَإِنَّ اَلإِسْتِعَانَةُ بِالمَخْلُوْقِ فِي دَفْعِ الضَّرَرِ جَائِزة

-‘‘দুঃখ কষ্ট দূর করার জন্য আল্লাহর মাখলুকের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া বৈধ।’’ (ইমাম খাযেন, লুবাবুত তাভিল ফি মা‘আনিত তানযিল, ২/৫৩০)


❏ বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম খতিবে বাগদাদী (رحمة الله) এ ঘটনাটির সনদসহ উল্লেখ করেন এভাবে-

أَخْبَرَنَا الْقَاضِي أَبُو عَبْد اللَّهِ الْحُسَيْنُ بْن عَلِيّ بْن مُحَمَّد الصيمري قال أنبأنا عمر بن إبراهيم قال نبأنا عَلِيّ بْن ميمون قَالَ: سمعت الشافعي يقول: إني لأتبرك بأبي حنيفة وأجيء إِلَى قبره في كل يوم- يَعْنِي زائرا- فإذا عرضت لي حاجة صليت ركعتين وجئت إِلَى قبره وسألت الله تعالى الحاجة عنده، فما تبعد عني حتى تقضى.

-‘‘ইমাম খতিবে বাগদাদী (رحمة الله) বলেন আমাকে.......তাকে আলী ইবনে মায়মুন (رحمة الله) বলেন, আমি ইমাম শাফেয়ী (رحمة الله) কে বলতে শুনেছি, আমি ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) এর উসিলায় প্রতিদিন তার যিয়ারত করার মানসে বরকত হাসিল করি এবং তাঁর মাজারে আসি। আমার কোন সমস্যা দেখা দিলে, প্রথমে দু’রাকাত নামায পড়ি। তাঁর মাজারের পাশে গিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তখন সহসা আমার সমাধান হয়ে যায়।’’ (খতিবে বাগদাদী, তারীখে বাগদাদ, ১/১৩৫পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, ১/৫৫পৃ. দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।)


তিনি দ্বীনের মুজতাহিদ ইমামদের থেকেও কতবড় হাদিস পন্ডিত তা সকলেরই জানা আছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই সত্য গোপনকারী আলেম হতে হেফাজত করুন। আমিন।

━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
আহলে সুন্নাত ওয়াল জাম‘আত কারা?

মূল: আল্লামা আবুল হামেদ মুহাম্মদ জিয়াউল্লাহ কাদেরী আশরাফী (رحمة الله)।

ভাষান্তর
মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ আতিকুর রহমান
বিএ অনার্স ৪র্থ বর্ষ, ইসলামিক স্টাডিজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

সম্পাদনায়, তাখরীজ, প্রকাশক:
মাওলানা মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন