মু'জিযাতুর রসূল ﷺ


নবীজির মু'জিযা
(১০০)
----------

যতবার চাইতাম ততবার দিতে থাকতে


        হযরত উসামা ইবনে যায়েদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা বিদায় হজ্বের সময় হজ্বের উদ্দেশ্যে নবী করিম (ﷺ) এর সাথে রওয়ানা হয়ে 'বতনে রুহা’ নামক স্থানে পৌঁছলাম। তিনি দেখলেন যে, একজন মহিলা তাঁর দিকে আসতেছে। তিনি স্বীয় সওয়ারী থামালেন। মহিলা এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটা আমার সন্তান। সে জন্মলগ্ন থেকে অসুস্থ। তিনি ছেলেটি নিয়ে স্বীয় সওয়ারীতে বক্ষ মােবারকের সামনে বসায়ে তার মুখে স্বীয় লালা মােবারক লাগিয়ে দিয়ে বললেন, اخرج یا عدو اللّٰه فانی رسول اللّٰه বেরিয়ে যা, হে আল্লাহর দুশমন। কেননা, আমি হলাম আল্লাহর রাসুল। এই বলে তিনি ছেলে মহিলাকে দিয়ে বললেন- চলে যাও আর কোন আশঙ্কা নেই।


       হযরত উসামা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূল (ﷺ) হজ্ব সমাপন করে ফিরে আসার সময় 'বতনে রুহা’ তে পৌঁছলে মহিলা পুণরায় একটি ভূনা বকরী নিয়ে আসল। তিনি আমাকে বললেন, আমাকে বকরীর সামনের পা দাও, আমি দিলাম। তিনি পুনরায় বলেন, আরেকটি দাও, আমি দিলাম। তিনি আবার বললেন, এর সামনের পা দাও। আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! বকরীর তাে দু'টি পা থাকে। আমি উভয় পা আপনাকে দিয়ে দিয়েছি। তখন তিনি বললেন, والذی نفسی بیده ما زالت تناولینی ذراعَا খােদার শপথ, যদি তুমি চুপ থাকতে তবে যতবার আমি চাইতাম ততবার তুমি দিতে থাকতে।


      এরপর তিনি আমাকে বললেন, দেখ, আশে-পাশে কোন বৃক্ষ বা পাথর দেখ কিনা? আমি আরজ করলাম, পরস্পর কাছাকাছি কয়েকটি খেজুর গাছ আর পাথরের টুকরা দেখতেছি। তিনি বললেন, তুমি বৃক্ষের কাছে গিয়ে বল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আদেশ দিচ্ছেন যে, তাঁর প্রকৃতিক প্রয়ােজন পূরণের জন্য তােমরা কাছাকাছি এসে একত্রিত হয়ে যাও। আর পাথরকেও অনুরূপ বল।


       উসামা (رضي الله عنه) বলেন, আমি ওগুলাের নিকটে গিয়ে অনুরূপ বললাম। খােদার শপথ, যিনি তাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, বৃক্ষ মাটি ছিড়ে চলতে লাগল এবং পরস্পর একস্থানে একত্রিত হয়ে গেল। আর দেখলাম পাথর নড়াচড়া করতে করতে ঐ বৃক্ষসমূহের পিছে এমনভাবে জমাট বেঁধে গেল যেন এগুলাে গেঁথে দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রয়ােজন শেষ করে ফিরে এসে আমাকে বললেন, তুমি এগুলােকে বল, যেন তারা আপন জায়গায় চলে যায়। আমি গিয়ে বললাম,


أن رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه وسلم يأمركن ان ترجعن إلى مواضعكن


অর্থ: রাসূল (ﷺ) তােমাদেরকে আদেশ দিচ্ছেন যে, তােমরা তােমাদের স্থানে চলে যাও। (অনুরূপ ঘটনা হযরত জাবের (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, লেখক)১৬৯


১৬৯. ইমাম সুয়ূতী, জালাল উদ্দিন সুয়ূতী  (رحمة الله) (৯১১হি.), আল খাসায়েসুল কুবরা, আরবী, বৈরুত, খণ্ড:২য় পৃ:৬০)।

++++++++

বিষয় ভিত্তিক মুজিযাতুর রাসূল (ﷺ)

হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ওসমান গণি

আরবি প্রভাষক,জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া,ষােলশহর, চট্টগ্রাম।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন